লিখেছেন : কবিতা রায়
আমাদের বাঙালী হিন্দুরা বেদ-উপনিষদ পড়েনা কেন? সংস্কৃত শেখেনা কেন? কারণ এসবের পিছনে সময় নষ্ট করতে গেলে সাবজেক্টের পরীক্ষায় ৯০% নম্বর আসবেনা। কম্পিটিশনের বাজারে বেকার থাকতে হবে। বাপের একমাত্র কি দুইমাত্র সন্তান বেকার থাকলে বিয়েও হবেনা। তারপর একেবারে বংশলোপ।
কিন্তু বাপের নাম ভুলে গিয়ে মুখে রক্ত তুলে নাহয় ৯৫% নিয়ে পাশ করছেন। তারপর নাহয় চাকরির পরীক্ষা দিতে আরেকবার ভেনেজুয়েলার খনিজ সম্পদ থেকে ইরাকের সর্বোচ্চ পর্বত অবধি যাবতীয় জ্ঞানের ভান্ডার হয়ে উঠছেন। তাতেই বা লাভ কী হচ্ছে? আপনাদের মধ্যে ৯৫% জ্ঞানীরা সেই বেকারই তো থাকছেন। চাকরি চাইতে রাস্তায় নামলে সরকার তো লাথি মেরে তাড়িয়েই দিচ্ছে। কীসের কাজে লাগছে এত জ্ঞান?
আসলে আপনাদের এই অতিরিক্ত আধুনিক জ্ঞানের কেউ এক পয়সাও দাম দেয়না। কিন্তু মাদ্রাসায় আরবির সাথে কোরান হাদিস পড়ে তথাকথিত সময় নষ্ট করা সম্প্রদায়ের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন। চার বিবি আর চোদ্দ বাচ্চার যাবতীয় জ্ঞানের ভান্ডার যোগ করেও আপনার চেয়ে কম হবে। কিন্তু তারা আপনার মতো বেকারও নেই, কাল কী খাবে তার দুশ্চিন্তাও নেই। তারা আপনার মতো সিঙ্গেল মরে গিয়ে বংশলোপও করছে না। তারা বেঁচেও আছে, বেড়েও চলছে।
জ্ঞানের বাটখারা হতে গিয়ে বাপের নাম ভুলে এই তো লাভ হল। এর চেয়ে যদি ভোটব্যাঙ্ক হতে পারতেন তাহলে দেখতেন এর অর্ধেক নম্বরে পাশ করলেও আপনাকে চাকরি দেবার জন্য সরকার কোটা বাড়িয়ে দিত। কিন্তু সেটা তো হবার নয়। আপনারা প্রাচীন গ্রীস আর রোমের ইতিহাস জানবেন। ইংলন্ডের রাজতন্ত্র বুঝবেন। আমেরিকার গৃহযুদ্ধ বুঝবেন। রাশিয়ার বিপ্লব বুঝবেন। দেশের সংবিধানও মুখস্ত করে রাখবেন। কিন্তু আপনার জ্ঞানের চেয়ে আপনার ভোটের দাম বেশি এই কথাটা বুঝবেন না। পয়সা খরচ করে জ্ঞান নিয়ে বেড়াবেন, কিন্তু পয়সা না লাগলেও একজোট হয়ে ভোট দিতে পারবেন না।
Leave a Reply