শুরু হয়েছিল নাস্তিক দিয়ে। বোরখাওয়ালী, হিজাবওয়ালী, টুপিধারী, টাকনুখালি থেকে শুরু করে মিয়া খলিফার ঈমানদার মুরিদসহ সবাই নাস্তিক কোতলে মজা পেয়ে বেশ হাততালি দিচ্ছিল। তারপর নানা ধর্মের, বর্ণের, জাতের, পেশার মানুষ থেকে শুরু করে কোপটা পুলিশের বোরখা-হিজাব পরা বউয়ের উপর এসে পড়তেই সেই হাততালি দেওয়া সবার মনেই কমবেশি ভয় ধরে গেছে। কারণ কেউই সহিহ ইসলাম পালন করে না। আর কোনটা যে সহিহ ইসলাম, সেটা ওই চাপাতিবাজরা ছাড়া আর কেউ জানেও না। তাই এখন কোপ খাওয়ার টার্গেট হতে পারে যে কে-উ।
আর সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, যে কেউ যে কোনো অবস্থায় যে কোনো জায়গায়, এমনকি বেডরুম তো বটেই, সিসি ক্যামেরার সামনে বসেও কোপ খেতে পারে। কেউ কোপ খেলে বাকিরা বাংলা সিনেমার দর্শক হয়ে যায়। হয়তো নাটক-সিনেমার স্যুটিং হচ্ছে মনে করে হাততালিও দেয়। আর কাজ শেষে চাপাতিবাজেরা নিরাপদে পালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশেরও ক্ষমতা নেই তাদের ধরার।
অবশ্য পুলিশের ক্ষমতা নেই–এটা বলা বোধহয় একটু ভুল হবে। আসল কারণ হলো–পুলিশের মধ্যেও চাপাতিবাজদের সমর্থক আছে। খুব বেশি পরিমানেই আছে। লতায়-পাতায় আত্মীয়তার সূত্রে জানি যে এসপি বাবুল আক্তারের জঙ্গীবিরোধী মনোভাব তার অনেক সহকর্মীরই পছন্দ ছিল না। এরপর তার মেডেল পাওয়া, পদোন্নতি পাওয়া–এসবও অনেকের গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছিল। এর আগে থেকেও তাকে তার সহকর্মীরা পছন্দ করত না, কারণ সে ঘুষ খেত না।
মোটকথা, ঈমানদার পুলিশ আর চাপাতিবাজ জঙ্গীর মধ্যে পার্থক্য নেই বললেই চলে। চাপাতিবাজ জঙ্গীদের সাথে মানসিক ভাবে পার্থক্য নেই কোনো ‘ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম’ মনে করা শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের সাথে। জঙ্গীরা চাপতি চালায়, আর এই শান্তিপ্রিয় মুসলমানরা নীরবে এই চাপাতিবাজিকে সমর্থন জানায়। এই সমর্থন করাটাই তাদের কাছে এক ধরনের ‘জিহাদে অংশ নেয়া’।
যা হোক, চাপাতিবাজদের অন্যতম শ্লোগান হলো–নেক্সট টার্গেট ইজ লোডিং। টার্গট হওয়ার জন্য এখন আর নাস্তিক হতে হচ্ছে না। কে জানে, সহিহ সম্মত ভাবে ইসলাম পালন না করার জন্য আপনিও হয়তো টার্গেট হয়ে আছেন, আর তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় আছে। সুযোগ পেলেই ‘কোপা সামসু কোপা বাংলাদেশ’ চাপাতি খেলা শুরু হয়ে যাবে, আর বাকিরা ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’ আওরাতে আওরাতে শান্তির সায়াতলে পরবর্তী টার্গেট হিসাবে ঘুম দেবে।
সবার উপর চাপাতি বর্ষিত হউক। আমিন।
Leave a Reply