লিখেছেন: অনন্ত বিজয়
মানুষের অসহায় অবস্থা বা দুর্বলতা নিয়ে রঙঢঙ করা, মশকরা আমি পছন্দ করি না। কিন্তু অসহায় মানুষের দৃষ্টি কবে খুলবে, কবে বুঝতে পারবে মানুষের নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে–এইটা নিয়ে চিন্তিত আমি!
গত কিছুদিন ধরে ভারতের উত্তরখণ্ড রাজ্যটি খবরের শিরোনাম। বন্যায় ভেসে যাচ্ছে বাড়িঘর। ইতোমধ্যে ১৫০ শতাধিক মানুষ মারা গেছেন বলে শুনেছি। কিন্তু এই স্ট্যাটাসে যে বিষয়টি আমি বলতে চাচ্ছি, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই রাজ্যটি হিন্দু ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত। অনেকে একে দেবতালয় বলেও ডাকে। তীর্থ আর মন্দিরের অভাব নেই এখানে। কেদারনাথের মন্দির এই রাজ্যে খুবই বিখ্যাত। প্রতি বছর প্রায় দশ লক্ষাধিক দর্শনার্থী এই মন্দির পরিদর্শনে আসে।
খবর থেকে জানা গেল এই কেদারনাথের মন্দিরটিও বন্যায় ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্দিরের আশেপাশের বাড়িঘর তছনছ হয়ে গেছে। রাজ্যসরকার উদ্ধারকর্মী পাঠিয়ে তীর্থযাত্রীসহ প্রচুর দর্শনার্থীকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীও যোগ দিয়েছে। বন্যায় মন্দিরের অবস্থা এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে আগামী দুইতিন বছর এর পুনর্গঠনের জন্য লাগতে পারে। এসময় তীর্থযাত্রীরা মন্দির এলাকায় ঢুকতে পারবেন না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হে মানুষ সকল, হে হিন্দুরা, বন্যায় যে এত্তো ক্ষয়ক্ষতি হলো, কেদারনাথ বাবা থেকে শুরু করে অন্যান্য দেবদেবীরা তখন কোথায় ছিলেন? দেখা যাচ্ছে ভক্তদের রক্ষা করতে দেবদেবীরা তো এলেনই না, বরং নিজেদের ঘর পর্যন্তও তারা রক্ষা করতে পারলেন না! শেষমেশ উদ্ধারকর্মী পাঠিয়ে ভক্তদের উদ্ধার করতে হলো। তাও শতশত মানুষ মৃত্যুর পর। তোমাদের মনে কী একটু প্রশ্ন জাগে না, আদতে দেবতারা কি করলেন এই ভয়ঙ্কর দুযোর্গের মুহূর্তে? তারা যদি অলৌকিক শক্তিমান হতেনই তবে কেন এই ভয়ঙ্কর দুর্যোগকালে নিজে ঠুটোঁ, নিধিরাম, নিস্পৃহ হয়ে বসে রইলেন? দেবতারাজ্যে অসহায় ভক্তদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতেও কী দেবতার মন গলে না? ভক্তের পাশে সহায় হতে কেন মানুষকে এগিয়ে আসতে হলো?
Leave a Reply