লিখেছেন: আরিফুর রহমান
গতকাল সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা যেভাবে ‘আমরা সঅঅব মুছলমান’ নাস্তিক বললে গোঁসা হই… জাতীয় পোঁ ধরলেন, এবং তার পরক্ষণেই পুরো বাংলাদেশ জুড়ে আওয়ামী-জামাতী মিলিত হুল্লোড় বয়ে গেলো, এতে করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় আরো দৃঢ় হলো।
কথিত আছে শেখ মুজিব নাকি ৪৭এর আগে দাঙ্গায় মুসলিম হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর আদর্শের বর্তমান উগ্র মুসলিম দল আওয়ামী লীগ হয়তো নামের মাঝখানের ‘মুসলিম’ শব্দটি খৎনা করে ফেলে দিয়েছিলো, কিন্তু চরিত্রে দ্রুত জামাতের চেয়েও কড়া মুসলিম হয়ে পড়েছে।
এটা খুবই সম্ভব, যে আওয়ামী লীগ আসলে জামাতের সবচেয়ে সুশীল মুখোশ। বুঝতে কষ্ট হলো?
এভাবে দেখুন…
জামাত সবচেয়ে বেশি ইসলামী, মানে সউদি এজেন্সির সিপাহসালার।
বিনপি তৈরি হয়েছে একটু নরম করে, মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তৈরি হয়েছে তথাকথিত স্বাধীনতার ‘গুষক’ মেজর জিয়ার হাত ধরে, কিন্তু জামাতের সাথে মিলেমিশে থাকে। মাঝে মাঝে চেনাই যায় না কে যে কার ওপর চড়ে আছে।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ আসলে জামাতের সবচেয়ে দুরবর্তী ফ্রন্ট। যে সব বান্দাদের জামাত এবং বিনপি দিয়ে ভোটে নাম লেখানো যায় না, তাদেরই আওয়ামী লীগার বানানো হয়।
ভাবছেন এসব কি বলছি??
একটু ভেবে দেখুন…
জামাতের সত্যিকারের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজটা আওয়ামী লীগ করেছে??
একটা রাজাকারেরও বিচার হয়েছে? শাস্তি কার্যকর হয়েছে?
জামাত নিষিদ্ধের দাবির উত্তরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার কি জবাব দিয়েছে জনগনকে? মনে পড়েছে তো?
হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ জনগনের হতভম্ব মুখের ওপর সোজা বলে দিয়েছে… ‘জামাত নিষিদ্ধ হবে না’
যদিও জামাত বিদেশী একটি সংগঠনের বাংলাদেশ শাখা, যদিও আওয়ামী লীগ নিজেই বিদেশে শাখা রাখায় বিশ্বাস করে না (গঠনতন্ত্র মোতাবেক)।
তাহলে বলুন…. জামাতের সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা কে করছে??
গত বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, আপনাদের মনে আছে কি? ট্রাইবুন্যাল চেয়ারম্যনের কম্পিউটার হ্যাক্ হলো! সরকারের আচরন খেয়াল করেছেন কি??
সেই ডিসেম্বর থেকে আমারদেশ হলুদ পত্রিকাটি ক্রমাগত আইন ভঙ্গ করে যাচ্ছে, ট্রাইব্যুনালের সুরক্ষায় সরকারকে (পড়ুন আওয়ামী লীগকে) কোন ব্যবস্থা নিতে দেখেছেন কি?
দেখবেন না।
কারন আমার ধারনা, সরকার নিজেই বিচার প্রক্রিয়ার অতি ত্বরণ বন্ধ করতে সরকারী নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের ভেতরে বাস করা ট্রাইব্যুনাল চেয়ারমেনের ল্যাপটপ হ্যাক হতে দিয়েছে। অনন্তঃ সরকার অবগত ছিলো বলেই আমার মনে হয়।
এবার আসুন, শাহবাগ আন্দোলনকে নষ্ট করতে দেশ জুড়ে যে আস্তিক নাস্তিক ম্যা ম্যা শুরু হয়েছিলো… তাতে সরকার কোন বাগড়া দিয়েছিলো কি?
না, সরকার দিনের পর দিন চুপচাপ দেখেছে, আমারদেশ পত্রিকাটা কিভাবে দেশজুড়ে দাঙ্গা বাঁধালো.. কিভাবে পুলিশ এবং নিরীহ জনসাধারন শিবিরের হাতে নিহত হলো।
আমার ধারনা, সরকারী অঙুলিহেলনেই এই মাহমুদুর রহমান এসব করেছে।
আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন, এতো অপকর্ম করার পরেও মাহমুদুর রহমানের নামে কি কেস হয়েছে??
ঘটনা ঠান্ডা হবার পরে আওয়ামী ব্লগার বাহিনী শুরু করেছে উগ্র নাস্তিকদের জন্যই এতো সমস্যা।
খেয়াল করে দেখুন, তাদের মুল ভয় বাম/প্রগতিশীল চিন্তার রাজনৈতিক ধারাটিকে। কিন্তু তাদের অতি সরল মনে বাম এবং নাস্তিক মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
অথচ সত্য কি জানেন.. এই যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতো গর্ব করে আওয়ামী লীগ… তা ছিলো জনগনের যুদ্ধ, যার সত্যিকার নেতৃত্ব দিয়েছিলো এই ‘উগ্র নাস্তিক’ বাম ঘরানার লোকেরাই।
‘৭৫এ যাদের জেলের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছিলো।
কাজেই আমাদের চোখ খুলে দেখবার সময় এসেছে এবার… আওয়ামী লীগ যতোই মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ চেল্লাক না কেন.. মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এই আওয়ামী লীগের সময়েই ভুলুন্ঠিত হয়। আমরা এতোদিন অবাক বিষ্ময় নিয়ে দেখতাম.. কিন্তু এবার উপরের লেখাগুলি পড়ুন..
আর হিসাব মেলাতে থাকুন….
Leave a Reply