ঘি খাওয়ার অভিজ্ঞতা খুব একটা নেই। যেটুকু খেয়েছি, বেশিরভাগই অন্যের বাড়িতে–সবাই মোটামুটি বড়লোক। আর বড়লোকদের বাড়িতে ঘি উঠানোর জন্য সামান্য একটা চামচ থাকবে না–এ কেমন কথা! কিংবা চামচ হাতের কাছে না থাকলে ঘি ঢেলে দিতে দেখেছি… তাই ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাতে হয়’–শুধু শুধু আঙুলে কেন ঘি মাখিয়ে পরে আবার হাত ধোয়াধুয়ির ঝামেলায় যাবে–বুঝি না। সাহিত্য সিনেমা সিরিয়ালে এই কথাটা অনেকবার আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু এই ধরনের কথার কোনো মানে হয় না। ঘিয়ের উপকারিতা থাকতে পারে, তবে ওই কথাটার তেমন কোনো উপকারিতা নেই, আমাদেরকে কোনোভাবে সচেতনও করে না; আর ধনী লোকদেরকে আঙুল দিয়ে ঘি উঠানোর উপদেশ দেয়ার তো আরো মানে হয় না।
গরীবদের কপালে থুক্কু মুখে (নাকি পেটে?) ঘি খুব একটা জোটে না। কিন্তু কখনো তাদেরকে দেখেছেন হুট করে কোমরে ব্যথা পেতে? কেউ হয়তো সারাদিন মাটি কাটে, কেউ হয়তো ধান কাটে, সেগুলো মাথায় তুলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেয়, কিন্তু কোমরে কখনো ব্যথা পেতে দেখি নাই। তারা জানে কীভাবে ভারী জিনিস তুলতে হয়।
ওদিকে ধনীদের দেখেন–মাটি থেকে কিছু একটা তুলতে গিয়েই শুনবেন কোমরে ব্যথা পেয়েছে। এরা সারা বছর ঘি খেলেও জানে না কীভাবে কোনো জিনিস মাটি থেকে তুলতে হয়। আসলে তখন কোমরটা একটু বাঁকা করতে হয়, পিঠটা টান রাখতে হয়। তাহলে কোমরে বা পিঠে ব্যথা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। [যারা ওয়েট লিফটিং ব্যায়াম করে, তারা ব্যাপারটা আরো ভালো করে বুঝিয়ে দিতে পারবে।]
তো, ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাতে হয়’–এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় কথা প্রচার না করে ‘ভারী জিনিস তুলতে গেলে কোমর বাঁকা করতে হয়’ বা ‘পিঠটা টান রাখতে হয়’–এরকম উপকারী টিপস এন্ড টেকনিকের কথা বেশি প্রচার করা জরুরী। তাতে অন্তত ঘি খাওয়া লোকগুলার মাজাটা কম ভাঙবে।
Leave a Reply