লিখেছেন : কবিতা রায়
নিজেরাই মরবেন, কারণ ভুলটা আপনাদের নিজেদেরই। আর সেই ভুলটা একেবারে গোড়াতেই করেন, যাকে বলে গোড়ায় গলদ।
নিজেহাতে বানিয়ে দেওয়া দলগুলো বাদে বাকিদেরকে ইংরেজরা টেররিস্ট বলেই ডাকত। খুব বেশি ভুল বলত এমন নয়। ভগত সিং তো ইংরেজদেরকে মেরেধরে ভয় দেখিয়ে ভারতছাড়া করতে চাইতেন, অতএব ইংরেজরা টেররিস্ট বলতেই পারে। ভগত সিং বা নেতাজীর চোখে ইংরেজরা ছিল বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা আপদ। তাই তাদেরকে তাড়ানোর জন্য বলপ্রয়োগকে ওনারা কোনো অন্যায় ভাবতেন না। যারা বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে ছিল, অর্থাৎ টেররিস্টদের বিরোধী ছিল তারাও কিন্তু ইংরেজদের বিদেয় করার বিরুদ্ধে ছিল না। তাদের পদ্ধতিটা হয়ত আলাদা ছিল, নিজেরা বোমা-বন্দুক চালায়নি। তবে ইংরেজরা বিদেয় হলে তারা অন্তত দুঃখ পেয়ে কাঁদত না।
এখন আপনি যাকে সন্ত্রাসবাদী বলে মনে করেন তার চোখেও আপনি কিন্তু বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা আপদ। আপনি নিজে যাইই ভাবুন, কোরানে কিন্তু পরিষ্কারভাবে সেটাই লেখা আছে। পৃথিবীর এক ইঞ্চি জায়গাতেও আপনার কোনোরকম অধিকার নেই। পুরো পৃথিবীটাই আসলে মুসলিমদের সম্পত্তি। আপনি সেখানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন, ঠিক ইংরেজ দখলদারদের মতোই। তাই আপনাকে যেকোনো উপায়ে তাড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। সবাই হয়ত আপনাকে মারতে আসবেনা, কিন্তু আপনি বিদেয় হলে সকলেই খুশি হবে।
ইংরেজের নিয়ন্ত্রণে আপনার দেশটা পরাধীন দেশ ছিল। ইংরেজের তৈরি আইন আপনার অপছন্দের ছিল। তেমনই কাফেরদের দ্বারা পরিচালিত দেশে কাফেরদের তৈরি আইন মেনে বাস করাটা ইসলামের চোখে পরাধীন হয়ে থাকা। কাফেরগুলো হচ্ছে নিকৃষ্টতম জন্তু আর তাদের আইনকানুনও শরিয়তী আইনের তুলনায় অতি নিকৃষ্ট। তাই এই উড়ে এসে জুড়ে বসা দখলদারদের যেকোনো উপায়ে বিদেয় করাটা কোনোভাবেই অন্যায় নয়। কোনো কোরান অনুসারী এর বিরোধীতা করবে না। এরই নাম আজাদী। যেটা কাশ্মীরে হয়েছে আপনারও হবে।
আপনি নিজেও এর বিরোধীতা করেন না। আপনাদের গুরু রামকৃষ্ণ বলে দিয়েছেন সব ধর্মই সত্য, কালী, খিস্ট আল্লা সবই এক। আপনাদের আরেক গুরু ইস্কনী প্রভুপাদ বলেছেন মহম্মদ আর কৃষ্ণ একই। আপনাদের গুরু অনুকূল বলেছেন মহম্মদ একজন অবতার। আপনারই ভোটে নির্বাচিত নেতারা এগুলোকে সঠিক বলে মেনে নিয়েছে। আপনারই নির্বাচিত সরকার ইসলামকে একটা মহান ধর্ম মনে করে, কোরান-হাদিস শেখানোর জন্য মাদ্রাসায় টাকাপয়সা দেয়। অতএব আপনারাই নিজেদের পয়সা খরচ করে এগুলো শেখাচ্ছেন। নিজেরাই মেনে নিয়েছেন যে দুনিয়ার সবটাই ওদের, আপনারা উড়ে এসে জুড়ে বসা নিকৃষ্ট আপদ। এই শিক্ষাটা ওদের মাথায় ঢোকানোর সময় কেউ বিরোধিতা করছেন না। উলটে যথেষ্ট সম্মান দিচ্ছেন, সাহায্য দিচ্ছেন।
আপনারা নিজেরা যেটাকে সন্ত্রাসবাদ বলেন সেটার বীজ নিজেরাই ছড়াচ্ছেন। সার-জল দিয়ে নিজেরাই বড় করছেন। নিজেরাই সন্ত্রাসবাদী তৈরি করছেন। আপনাদের সেকুলারিজমই সন্ত্রাসবাদের আসল গোড়া।
Leave a Reply