মোটা দাগে আইডি খাওয়া, পোস্ট খাওয়া, ব্যান খাওয়া, ব্লক খাওয়া–মোটা দাগে ফেসবুকে রিপোর্টিং রিপোর্টিং খেলা শুরু হয় শাহবাগ আন্দোলনের পর থেকে, ২০১৩ সালে–নতুন করে প্রগতিশীলদের (সব প্রগতিশীল এক নয়) বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত হানতে শুরু করে আস্তিকরা (সব আস্তিক এক নয়)…থাবাবাবাকে হত্যা করার মাধ্যমে। এরপর একেরপর এক আরো প্রগতিশীলদের উপর আক্রমন করা হয়, তাদেরকে হত্যা করা হয়। অনেকে ভয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, কেউ কেউ এসাইলাম নিয়েছেন।
যাদেরকে হাতের কাছে পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের বাকস্বাধীনতার উপর আক্রমন হতে শুরু করল একটু ভিন্ন ভাবে–ফেসবুকে তাদের পোস্ট রিপোর্ট করে উড়িয়ে দেয়া, আইডি রিপোর্ট করে উড়িয়ে দেয়া… নাস্তিকরাও বিভিন্নপন্থা অবলম্বন করতে শুরু করে। একবার পোস্টের সাথে ছোট ব্লাঙ্ক ইমেজ আপলোড করে পোস্টগুলোকে রিপোর্টের হাত থেকে রক্ষা করা হত।
মনে আছে ব্যক্তিগত ভাবে সবচেয়ে বেশি ঝামেলায় পড়ি ২০১৪ সালের দিকে। সামু ব্লগের পাশাপাশি ফেসবুকও মনে হয় তখন নতুন একটা রুল বানায়–“ধর্মীয় সত্য” নিয়ে নো কচলাকচলি! আগে থেকেই এসব নিয়ে অনেক চুতরাপাতার ডলা দিয়ে ফেলাতে সেসব পোস্টে রিপোর্ট পড়তে লাগল, ফেসবুক সেসব পোস্ট ডিলিট করে প্রথমে ২৪ ঘণ্টার জন্য ব্লক করা শুরু করল। ধীরে ধীরে ৩ দিন, ৭ দিন হয়ে পরের দিকে কিছু একটা হলেই ৩০ দিনের কমে ব্লক করত না। এরপর শুরু হয় আইডিতে রিপোর্ট। তখন প্রায়ই ফটো আইডি, নিজের ছবি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, ইত্যাদি সাবমিট করে একাউন্ট ফেরত আনা লাগত। এতেও প্রায় সপ্তাহখানেক লেগে যেত। এরকম প্রায়ই হত। ফলে লেখালেখি প্রায় বন্ধ হওয়ার মত অবস্থা।
ধর্মান্ধদের (সব ধর্মান্ধ এক নয়) এহেন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত দেশের ‘একমাত্র’ বাকস্বাধীনতার ধারকবাহক দলের প্রতগিশীল সরকার জারি করে ৫৭ধারা–বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত কাহাকে বলে, উহা কত প্রকার ও কী কী, সেটা উদাহরণসহ বুঝিয়ে দিতে শুরু করল।
#ঘাস্ফুল্লতাপাতা টাইপের স্ট্যাটাস দিয়ে কোনোরকমে একাউন্টটা চালু রাখছিলাম। কিন্তু ২০১৭-এর শেষের দিকে নাস্তিকদের সাথে ক্যাচালে পড়ে আসল একাউন্টটা বড় ঝামেলায় পড়ল। ট্রল করার জন্য বাকস্বাধীনতার ঝাণ্ডাধারী এক বাকবাকুম তো প্রকাশ্যে হুমকিও দিল যে পায়ের তলায় মাটি রাখবে না। অন্যান্য বাকবাকুমদের যতটা না সমস্যা হল সেই ট্রল নিয়ে, তার একভাগও দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেলো না সেই হুমকির ব্যাপারে। তো সব ধরনের ফটো আইডি, ছবি, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, দেয়ার পরেও, এমনকি ফেসবুকের অফিসে গিয়ে আইডেন্টিটির প্রমাণ দেয়ার পরেও আসল একাউন্টটা এখন পর্যন্ত ফেরত দিল না। জানতাম ফেইক আইডি টিকিয়ে রাখতে পারব না, তাই অন্য কারো আইডি কার্ড, ছবি দিয়ে জেনুইন একাউন্ট খুলে চালানোর চেষ্টা করলাম। সেগুলোও একই ভাবে রিপোর্টের কারণে ঝুলে আছে–একাধিকবার ফটো আইডি, ছবি সাবমিট করার পরেও ফেসবুক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
কয়েকদিন আগে শুনলাম নাস্তিক-প্রগতিশীল-বাক-স্বাধীনতার পক্ষের কয়েকজনের পোস্ট রিপোর্ট খেয়েছে, ফলে ফেসবুক নাকি তাদের পোস্ট সরিয়ে দিয়ে ৩০ দিনের জন্য ব্লক করেছে। বাক-স্বাধীনতার উপর আঘাত–কোনো সন্দেহ নেই।
অনেক বাকবাকুমরে দেখলাম এই ঘটনাগুলোর জন্য অর্থাৎ কথার জবাব কথা দিয়ে না দিয়ে এভাবে রিপোর্ট করে ব্লক খাওয়ানোর জন্য পিনাকি শিবিরকে দায়ী করেছে। এর মধ্যে আবার পিনাকির একাউন্টেও রিপোর্ট হচ্ছে। তবে জেনুইন আইডি বিধায় এখনো একাউন্ট টিকে আছে, তবে তার পোস্টগুলোকে কপিরাইট ভায়োলেশন ক্যাটাগরিতে রিপোর্ট করে উড়িয়ে দিয়ে পিনাকিকে বাধ্য করা হয়েছে সব পোস্ট ‘অনলি মি’ করে দিতে। অভিজ্ঞতা বলে–কয়েকমাস ধরে কয়েকদফা এরকম এট্যাক চালিয়ে গেলে জেনুইনের বাপের আইডিও গায়েব হয়ে যাবে একসময়।
এইবার শুরু হয়েছে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। পিনাকি ফান্দে পড়াতে পিনাকিশিবির ফেসবুকের নাস্তিক প্রগতিশীল বাকবাকুমদের দিকে আঙুল তুলে বলছে–ছিঃ ছিঃ ছিঃ এই তুমাদের বাক-স্বাধীনতার নমুনা! ওদিকে বাকবাকুম শিবির থেকে পালটা–যখন পিনাকির বিরুদ্ধে লিখলেই পিনাকি তার পা চাটা কুত্তা বাহিনীকে লেলিয়ে দিত আইডিতে রিপোর্ট করার জন্য, তখন তুমরা কুতায় ছিলে গরু!
একেবারে প্রথম দিকেই ‘পা চাটা কুত্তা’ ট্যাগটা খাইয়া বইসা আছি। এখন কী আর করার… বইসা বইসা দেখতেছি কে কার নু… ইয়ে মানে ঈমানদণ্ড আর বিচি চাটে, কে কার ভো… ইয়ে মানে ইয়ে চাটে… কেউ কেউ আবার এই চাটাচাটির আগে সযত্নে অয়েলিং কইরা নিতেছে… দেখতেছি আর বিমলানন্দ লাভ করতেছি!
গেবন চুন্দর!
Leave a Reply