সিন্ডিকেট ব্লগিং–যারা ভার্চুয়ালে একটু পুরানো তারা শুধু টার্মটার সাথেই পরিচিত নন, এই ধরনের ব্লগিংও তারা সবাই কমবেশি করছেন। ব্লগ ছেড়ে যখন সবাই ফেসবুকের দিকে ঝুঁকতে শুরু করল, সেই প্রথমদিকে ফেসবুকেও ওরকম ‘সিন্ডিকেট ফেসবুকিং’ হত।
শুধু আস্তিক নয়, নাস্তিকরাও এগুলো প্রচুর করেছে। একজন ব্লগে একটা পোস্ট দিয়ে গ্রুপে লিঙ্ক দিয়ে বলতেন যে তিনি অমুক বিষয়ে একটা পোস্ট দিয়েছেন, কিন্তু অনলাইনে থাকতে পারছেন না, বাকিরা যেন তার হয়ে কমেণ্টে সেকশনে ডিফেন্ড করে।
বেশিরভাগ সময় নাস্তিকদের এধরনের পোস্টে আস্তিকরা এসে ঝামেলা করত, আর গ্রুপের বাকি নাস্তিকরা যা অনলাইনে থাকত তারা আস্তিকদের সাথে লড়ত। আস্তিকরাও এ ধরনের পোস্ট দিত, সেখানেও বাকি আস্তিকরা দলবেঁধে ডিফেন্ড করতে আসত।
ফেসবুকেও অনেকদিন ধরে এরকম হয়ে আসছিল। কিন্তু পরের দিকে নাস্তিকদের বিভিন্ন দলাদলি আর গ্রুপিং-এর ফলে সেই সিন্ডিকেট ব্লগিং করা নাস্তিকরাই অন্য কেউ যদি ব্যক্তিগত অপছন্দের কাউকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করে বা পোস্টে সামান্য লাইক দেয় বা পক্ষে কমেন্ট করে, তাহলে তাদের সেসব কমেন্টের যুক্তি দেখে না–তাদেরকে সরাসরি মুরিদ, অন্ধভক্ত, পা চাটা কুত্তা ইত্যাদি ট্যাগ দেয়া শুরু করল। অথচ এরা নিজেরাও কারো না কারো পা চাটে, কিংবা নিজেরাই পীর-নবী-বড়ভাই-দাদা-দিদি সেজে বসে আছে, সেইটা খেয়াল নেই!
সবারই একটা কমফোর্ট জোন আছে, সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই পছন্দের বা প্রিয় মানুষও আছে। ঝামেলা হলে তর্ক-বিতর্কের কিছু হলে এরা এগিয়ে আসবে–সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে গিয়ে কারো বক্তব্য যৌক্তিক বা অযৌক্তিক কি না, বক্তব্যের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ আছে কি না, কথার জবাব কথায় না দিয়ে সরাসরি যে ট্যাগিং-এর গেমটা খেলা শুরু করল, সেগুলা আজ নাস্তিকদের জন্যই বুমেরাং হয়ে গেছে।
এখন এক নাস্তিক মারা খেলেও তার মুরিদ বা পা চাটা কুত্তা ট্যাগ খাওয়ার ভয়তে কেউ আর সেভাবে এগিয়ে আসছে না। এক সময় বলা হত–কমেন্ট হলো ব্লগিং-এর সৌন্দর্য–তথ্য ভিত্তিক আলোচনা বা সুঁচালো, তীক্ষ্ণ, তীর্যক, সরস, কটাক্ষ, ইত্যাদি মন্তব্যে জমে ওঠা তর্ক-বিতর্ক আর নাই। ট্যাগিয়ের ফলে এই পরিবেশটা অনেকদিন ধরে নষ্ট হতে শুরু করছে, সেই সাথে ব্যক্তিগত গ্রুপিং, বিদেশ-এসাইলাম-ফাণ্ড ইত্যাদির সংযোজনে একে একে পচতে শুরু করছেে এককালের রথী-মহারথী ব্লগার-ফেসবুকাররা।
Leave a Reply