১। বিগ ব্যাং: বিজ্ঞানের এই ধারণার সঙ্গে তুলনা করা যায় শ্রীমদ্ভাগবতে কথিত সৃষ্টি বর্ণনা – “সকল পদার্থ ক্ষুভিত হইয়া পরস্পর মিলিত হইল। তাহার পর সেই সকল হইতে একটি অচেতন অণ্ড উৎপন্ন হইল। … ঐ অণ্ড বহির্ভাগে ক্রমশ দশগুণ বর্ধিত প্রধাণাদি জলাদি দ্বারা পরিবৃত। সেই অণ্ডেই ভগবান হরির মূর্তিস্বরূপ লোকসমূহ বিস্তৃত আছে। আবার তিনি দশাঙ্গুলি পরিমিত হইলেও এই বিশ্ব আবৃত করিয়া আছেন। মায়ার অধীশ্বর সেই ভগবান বিবিধ রূপ ধারণ করিতে ইচ্ছা করিয়া আত্মমায়া দ্বারা যদৃচ্ছাক্রমে প্রাপ্তকাল, অদৃষ্ট ও প্রকৃতি আশ্রয় করিয়াছিলেন।
২। ব্ল্যাক হোল: ব্ল্যাক হোল (কৃষ্ণ গহ্বর) জাতীয় মহাশূন্যের তথাকথিত সিঙ্গুলারিটিতে (গাণিতিক উৎসবিন্দু), যেখানে নতুন পদার্থ জন্ম নিচ্ছে, আধুনিক বিজ্ঞানে ভাবা হয় যে, সময় সেখানে স্তব্ধ হয়ে থাকে। সাধারণের মধ্যে বহুল প্রচলিত কথা ‘ ব্রহ্মার এক মুহূর্তে পৃথিবীর সহস্র বছর’ এরই প্রতিধ্বনি।
৩। নবজাতক শিশু (Test-Tube Baby), বিকল্প মা (Surrogate Mother):
এইসব আধুনিক বিজ্ঞানের দান বলে আমরা মনে করলেও তা আসলে প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার কাছে নতুন নয়। দ্রোণ ও দ্রোণীর জন্মকথা, সত্যবতীর জন্মকথা, এসব পুরাণের ঘটনা তারই প্রমাণ।
৪। পেট্রিয়ট মিসাইল (Patriyot missile): পেট্রিয়ট মিসাইল নামের বিধ্বংসী অস্ত্র (উপসাগরীয় যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল) আবিষ্কারের পর প্রমাণিত হয়ে গেছে ‘বরুণ-বান’ ও ‘অগ্নি-বান’ আদৌ কোনো কল্পনা ছিল না।
১। বিজ্ঞানের সব নবতর আবিষ্কারই বাস্তবে নতুন কোন আবিষ্কারই নয়। এ’সবই প্রাচীন যুগে হিন্দুরা আবিষ্কার করেছিল। প্রাচীন হিন্দু পুরাণে, মহাকাব্যে (রামায়ণ, মহাভারত প্রভৃতি) এই সব আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলোর উল্লেখ আমরা পাই।
২। প্রাচীন হিন্দু পুরাণ, ধর্মশাস্ত্র, মহাকাব্যে আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলোর উল্লেখ রয়েছে রূপক আকারে। প্রয়োজন রূপকগুলোর ব্যাক্ষার। প্রয়োজন আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে রূপকথাগুলোর পুনর্ব্যাখ্যার।
৩। হিন্দু ঋষিদের আধ্যাত্মবাদী জ্ঞান ও ঈশ্বরবাদী জ্ঞান যা আসলে বিজ্ঞান, সেই বিজ্ঞান দ্বারা পাশ্চাত্যের অসম্পূর্ণ বিজ্ঞানকে অপসারণ করতে হবে। এবং এভাবেই আত্মবিসৃত জাতিকে (হিন্দু জাতিকে বোঝানো হয়েছে) উঠে দাঁড়াতে হবে।
৪। ঈশ্বরে বিশ্বাস ও যুক্তিমনস্কতা বা বিজ্ঞানমনস্কতার মধ্যে কোন বিরোধ নেই।
৫। হিন্দু দর্শন অবশ্যই পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের চেয়ে অনেক বড় বিজ্ঞান। (যদিও সেটা প্রমাণ করার জন্য হিন্দু মৌলবাদীরা পাশ্চাত্য বিজ্ঞানকেই ব্যবহার করছে…)
বেদান্তে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মডেল হিসেবে ‘উর্ণনাভ’ বা মাকড়সার উল্লেখ আছে। দেশ পত্রিকা বর্তমান বাস্তবিক মহাবিশ্বের সাথে মকড়সার মিল খুঁজে পেয়েছে। বিশ্বব্রাহ্মাণ্ড যেমন শূণ্য থেকে প্রসারিত হতে শুরু করে আবার সংকুচিত হয়ে শূণ্যে পরিণত হবে, থিক তেমনি মাকড়সা না হলেও মাকড়সার জালও প্রসারিত হয়ে এবং এটাকে গুটিয়ে নেয়া যায়। সুতরাং দেখুন বেদান্তে মহাবিশ্বার সাথে মাকড়সার কি অদ্ভুত এবং চমৎকার মিল খুঁজে পাওয়া গেল…
১। ফতেহ মোহাম্মদ: ইনি পাকিস্তানের একজন বিজ্ঞানী। কোয়ান্টাম মেকানিকস থেকে জিন সবই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানের আলোকে ব্যাক্ষা করা যায় এই প্রসঙ্গে তিনি একটি ঢাউস বই লেখেন। সরকার বইটির দারুন প্রশংসা করে। বইটিতে ব্যাখ্যা সহকারে দেখানো হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিটি আবিষ্কারই নানা রূপকের আকারে রয়েছে কোরানে। তিনি নানা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন (অনেক মুসলিম এর মতে প্রমাণ করে সেরেছেন) ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বর হল কোরানে বর্ণিত দোজখ বা নরক।
২। পারভেজ আমিরালী হুদোভয়: ইনি পাকিস্তানের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী । তিনি ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিজ্ঞান সম্মেলন-এ একটি গবেষণাপত্র পাঠ করেন। তাতে তিনি জানিয়েছেন:
(i) প্রতি সেকেণ্ডে আলোর যা গতি, তার চেয়েকম গতিবেগ হওার কারণে বেহেস্ত বা স্বর্গ আক্ষরিক অর্থেই বর্তমান অবস্থান থেকে সরে গেছে।
(ii) শবেবরাতের পূণ্য রজনীর এক উপাসনা সাধারণ রাতের সহস্র উপাসনার চেয়ে শ্রেয়। ডঃ পারভেজ তার এই বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আপেক্ষিক তত্ত্বকে টেনে এনেছেন।
(iii) কোরানে বর্ণিত সাত আসমান তত্ত্ব বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো পরমাণুর কোয়ান্টাম স্তরের মত। যেভাবে শক্তি শোষণ বা বর্জন করে পরমাণু স্তর পরিবর্তন করে, সেভাবে পাপ বা পূণ্য করেও এক আসমান থেকে অন্য আসমানে যাওয়া যায়।
৩। ডঃ বি. এম.: ইনি পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি কমিশনের উঁচু পদে অধিষ্ঠিত। তিনি তার এক প্রবন্ধে বলেছেন,
(i) কোরানে বর্ণিত অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন অগ্নিময় জীব আসলে জিনের অস্তিত্বের রূপকাকার।
(ii) ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব আধুনিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নতুন হলেও হাজার বছর আগে রচিত কোরানে এর উল্লেখ আছে ।কোরানে যে বেহেস্ত এর উল্লেখ আছে তা আসলে কৃষ্ণ গহ্বর। (লক্ষ্য করুন, বিজ্ঞানী ফতেহ মহাম্মদ কিন্তু এই ব্ল্যাক হোলকেই দোজখ বলেছেন )
৪। মোহাম্মদ মুনির: পাকিস্তানী লেখক মোহাম্মদ মুনির তার বই ‘গড, ইউনিভার্স অ্যান্ড লাইফ’ এ বলেছেন, ‘ আমাদের মনে রাখতে হবে, পারমাণবিক অবদানগুলো আধ্যাত্মিক। বস্তুবাদীরা আমাদের যেভাবে প্রোটন ও নিউট্রনে আকর্ষণের ক্ষেত্রে তড়িৎ চুম্বকীয় শক্তিকে বিশ্বাস করতে বলেন, আসলে তা কিন্তু সত্যি নয়। ভাবতে অবাক লাগে, যখন নর ও নারী একে অপরের পিছু ছুটছে, প্রেমে লিপ্ত হচ্ছে, তখন নর-নারীরাই এই বৈজ্ঞানিক সত্যটি উপলব্ধি করতে পারেন নি, যে প্রোটন ও নিউট্রন দুই লিঙ্গে বিভক্ত। ( বুঝুন ব্যাপারটা। পরমাণুর মধ্যে আত্মার আবিষ্কার এবং প্রোটন ও নিউট্রনে দুই বিপরীত লিঙ্গের আবিষ্কার! মুনির সাহেব তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারকে বিজ্ঞানের দরবারে পেশ করতে পারলে অবহেলে নোবেল জিততে পারতেন…)
৫। ডঃ রাশাদ খলিফা: মিশরের এই প্রখ্যাত বিজ্ঞানী অত্যাধুনিক কম্পিউটারের সাহাহ্যে লোরান বিশ্লেষণ করে, বিশ্লেষিত তথ্যের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, কোরান নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর রচনা এবং কোরানই অলৌকিকের অস্তিত্বের প্রমাণ। ডঃ খলিফা এই বিশয়ে একটি বইও লিখে ফেলেছেন। সেটি হল ‘ দি কম্পিউটার স্পিকন গডস মেসেজ টু দি ওয়ার্ল্ড’। খলিফা সাহেব আবিষ্কৃত তথ্যের ভিত্তিতে মোঃ আব্দুর রাজ্জাক্লিখেছেন, ‘আল-কোরান সর্বশ্রেষ্ঠ মজেযা এবং ঊনিশ’। ‘মোজেযা’ কথার অর্থ হল ‘অলৌকিক ব্যাপার’। মোজেযা এবং ঊনিশশব্দ দু’টি নামকরণের সঙ্গে যুক্ত হবার সার্থকতা এই যে খলিফা সাহেব কম্পিউটারের সাহায্যে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন – ঊনিশ সংখ্যাটি পরম বিস্ময়কর ও চরম অলৌকিকত্বের চাঞ্চল্যকর তথ্যের বিস্তারিত নির্ভূল বর্ণনা।
Leave a Reply