১) নাস্তিক হলে তাদেরকে খুন করতে হবে, ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিলে খুন করতে হবে, নাস্তিকদের বই প্রকাশ করলে খুন করতে হবে, মাজারপন্থী হলে খুন করতে হবে, লালনপন্থী হলে খুন করতে হবে, বিধর্মী হলে খুন করতে হবে, মূর্তি ভাঙতে হবে, উচ্ছেদ করতে হবে, তলপেটে লাত্থি মেরে গর্ভপাত করতে হবে–এধরনের কথা কি কোনো দেশের আইনে বা কোনো ধর্মের ধর্মগ্রন্থে বলা আছে? থাকলে কোন দেশের, কোন ধর্মের?
২) দেশজুড়ে একের পর এক খুন হয়েই চলেছে। কিন্তু কোনো বিচার নেই। এ দেখে দীপনের বাবা বলেছেন তিনি তার ছেলের হত্যার বিচার চান না। আচ্ছা যদি সুন্নতি দাড়ি নেই, টাকনুর উপর প্যাণ্ট পরে না–এরকম ‘ইসলামিক অপরাধে’ শেখ হাসিনার ছেলেকে হত্যা করা হয় তাহলে শেখ হাসিনা কি সেই খুনের বিচার চাইবেন? চাইলে কার কাছে চাইবেন?
৩) ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুললে, মহাম্মদকে নিয়ে কটুক্তি করলে, অবৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিয়ে হাসাহাসি করলে, কুসংস্কার নিয়ে লেখালেখি করলে আল্লাহর মনোনীত ধর্মের কী এমন ক্ষতি হয়? ধর্মের ভিত নড়ে যায়? আরশ কেঁপে ওঠে? ঈমান ঢিলা হয়ে যায়?
সামান্য একটা নাস্তিকের কলমে এত শক্তি? আল্লাহ যাদের পক্ষে, তারা নাস্তিকদের লেখালেখিকে এত ভয় পায়?
৪) সূর্যের ধর্ম সে পূর্বদিকে ওঠে, পশ্চিমে অস্ত যায়। সূর্যের এই ধর্মটা দিনের আলোর মত সত্য। কেউ যদি উলটা বলে–সূর্য পশ্চিমদিকে ওঠে, পূর্বে অস্ত যায়–তাহলে সেই সত্যের কিছু যায় আসে না, সূর্যের কিছু যায় আসে না, কারো কিছু যায় আসে না। ইসলাম ধর্মটা কি সূর্যের ধর্মের মত সত্য?
যদি সত্য হয়, তাহলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে “উলটা-পালটা” কিছু বললে মুসলমানদের এত কিছু যায় আসে কেন? কেউ উলটা-পালটা কিছু বললে ইসলাম ধর্মটাও কি সেই সাথে উলটা-পালটা হয়ে যায়?
৫) ফুটপাত, তারপর বাসা। বাসার পরে অফিস। ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। তাহলে অফিসের পরে কবে নাগাদ সংসদ ভবনে ঢুকে চাপাতি চলবে?
———————
১) নাস্তিকরা কী কী বললে কী কী করলে ধার্মিকদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে? একটা লিস্ট হবে?
২) আজ পর্যন্ত নাস্তিকরা ধর্ম নিয়ে কী কী মিথ্যা কথা বলেছে, কী কী গল্প লিখেছে, কী কী কল্পকাহিনী লিখেছে?
৩) নাস্তিকরা কি রেফারেন্স ছাড়া কিছু বলছে? আস্তিকরা ধর্মের কাহিনী বলার সময় কি রেফারেন্স দেয়? মুসলমানদের শুরুটা যেখান থেকে, অর্থাত আদম-হাওয়া-হাবিল-কাবিলের কাহিনীর ইসলামিক রেফারেন্স হবে?
৪) ধর্ম নিয়ে ক্যাচালের এক পর্যায়ে অনেকেই বলেন ধর্ম বৈজ্ঞানিক বিষয় নয়, এটা জাস্ট বিশ্বাসের ব্যাপার। এখানে প্রমাণ-তর্ক-বিতর্কের স্থান নেই।
তাহলে যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন, তারা নাস্তিকদের পোস্টে এসে ক্যাচাল করেন কেন?
৫) যে ধর্ম রক্ষা করতে চাপাতি ব্যবহার করা লাগে, তাহলে সেই ধর্ম কিভাবে শান্তির ধর্ম হয়?
৬) খুনিরা চাপাতি ব্যবহার করে নিজেদেরকে মুসলমান দাবী করলে কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে না?
৭) ছহিহ ইসলাম কারে কয়? ছহিহ মুসলমান কারা?
৮) আপনি কি ছহিহ ইসলাম পালন করেন? যদি না করেন, তাহলে একদিন তো আপনাকেও চাপাতি দিয়ে কোতল করতে পারে, নাকি না?
৯) মুসলমানদের একমাত্র লক্ষ্য আল্যার আইন কায়েম করা। নাস্তিক কোতল না করে আল্যায় আইন কায়েম করার লক্ষে রাস্তায় নামেন না কেন?
১০) প্রেম করেন? ইসলামে প্রেম করা জায়েজ? প্রেম করার অপরাধে কোতল করা শুরু হলে কয়জনে বাঁচবেন?
১১) ইসলামে হাত মারা হারাম। হাত মারার অপরাধে কোতল করা শুরু হইলে কী করবেন?
১২) শরিয়া আইনে মেয়েরা বাবা-ভাই-ছেলে-স্বামী ছাড়া বাইরে বের হতে পারবে না। কয়টা মেয়ে এই আইন মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন?
১৩) শরিয়া আইনে ধর্ষণের প্রমাণ হিসাবে চারজন পুরুষ সাক্ষী লাগবে। কয়জনে এই আইন মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন?
১৪) স্বামী ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজন ছাড়া স্ত্রীকে ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতিই দিতে পারবে না। কয়জন মেয়ে এই আইন মেয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন?
১৫) মেয়েদের শুধু ঘরে থাকতে হবে, স্বামীর সেবাযত্ন করতে হবে, সবসময় সেএণ্ডক্সের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। স্বামী চাহিবা মাত্র কাপড় খুলে চিত হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। প্রস্তুত আছেন?
১৬) ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম। আসেন আগে হাসিনা-খালেদারে ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য সবার আগে কোতল করি।
আসেন হিপোক্রেসি বাদ দিয়া সরাসরি শরিয়া আইন কায়েমের জন্য ঘরে ঘরে আন্দোলন গড়ে তুলি।
===============
সংযুক্তি : আমরা নিজ থেকে কিছু বলব না। কোরান হাদিস শরিয়া আইন আর অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ থেকে শুধু লেখা কপিপেস্ট করে পোস্ট করব–সহ্য করতে পারবেন? নাকি তাতেও চাপাতি নিয়ে কোপাতে আসবেন?
—————
১) ‘কে হবে আমাদের পরবর্তী টার্গেট’ এ শিরোনামের তৃতীয় বিবৃতিতে আট ধরনের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পরবর্তী সময়ে ‘টার্গেট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আনসার আল ইসলাম। বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ না করে আনসার আল ইসলাম বলেছে, তাদের ‘টার্গেট’ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা; কোনো এলাকার মেয়র, মোড়ল ও মাতব্বর; কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান; কোনো বিচারক, আইনজীবী ও চিকিৎসক; কোনো গল্পকার, ঔপন্যাসিক, কবি, বুদ্ধিজীবী, কোনো পত্রিকার সাংবাদিক ও সম্পাদক; নাট্যকার, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পী ইত্যাদি। কারণ এগুলার কোনো কিছুই ইসলামি শরিয়তের সাথে যায় না। আপনার সব কিছু কি ইসলামি শরিয়তের সাথে যায়?
২) যারা মনে করছেন আমরা আগের পোস্টে শরিয়া আইনের কিছু ধারা তুলে ধরে মুসলমানদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি, তারা একটু ভেবে দেখুন আপনাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে শরিয়ত বিরোধী কত কী করেন। যে কেউ স্বীকার করবে বর্তমান যুগে কারো পক্ষেই ১০০% শরিয়ত মেনে চলা সম্ভব নয়। তাহলে একদিন না একদিন আপনাদের পালাও আসবে। আমরা মোটেই ভয় দেখাচ্ছি না, শুধু বাস্তবতাটুকু তুলে ধরছি। (ছহিহ ইসলাম কারে কয়? ছহিহ মুসলমান কারা?)
৩) নাস্তিকদের পরে এখন চাপাতি দিয়ে কোতল করা হচ্ছে নাস্তিকদের বই প্রকাশকদের। তারপর কি নাস্তিকদের বইয়ের পাঠকদের কোতল করা হবে? নাস্তিকদের লেখা পাবলিশ করার জন্য ফেসবুকের মালিকরে কবে কোতল করা হবে? ফেসবুকে নাস্তিকদের পোস্টে লাইক-শেয়ার করার জন্যও অনেক কাহিনীর ইতিহাস আছে। তো নাস্তিকদের লেখা পড়া আস্তিক-ধার্মিকদের কবে নাগাদ কোতল করা হবে?
৪) ধর্মে কোনো যুক্তি-তর্ক-প্রমাণ চলে না। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার। আপনার বিশ্বাস আপনি ব্যক্তিগত গণ্ডির মধ্যে রাখেন। কেউ আপনার বিশ্বাস নিয়ে হাসাহাসি করবে না। শান্তির ধর্ম নিয়া মনে মনে শান্তিতে থাকেন। তারপরেও কেউ আপনার ধর্ম পালনে বাঁধা দিলে নাস্তিকরাই সবার আগে প্রতিবাদ করবে, যেমন করতেছে ভারতে।
৫) আস্তিকদের জন্য একটি ফ্রি উপদেশ : চাপাতির কোপ থেকে কল্লা বাঁচাইতে চাইলে নাস্তিকদের লেখা বই ব্লগ স্ট্যাটাস পোস্ট পড়া বাদ দেন। না হলে এখন প্রকাশকরের পালা চলছে, দুদিন পরে পাঠক হিসাবে আপনাদের পালা চলবে।
Leave a Reply