আপনার পাছায় গু লেগে আছে, কিংবা আপনার কাপড়ে ময়লা লেগে আছে, কিংবা আপনার প্যাণ্টের জিপার খোলা, কিংবা আপনার চুলে কেউ চুইংগাম লাগিয়ে দিয়েছে, কিংবা আপনি ঘুষ খান, আপনি ধর্ষণ করেন, আপনি খুন করেন–এগুলো যদি কেউ বলে, তার মানেই আপনার প্রতি বিদ্বেষ দেখানো নয়, আপনাকে ঘৃণা করা নয়, বা আপনাকে গালাগালি করা নয়। এগুলো জাস্ট তথ্যগুলো তুলে ধরা। যদি উপরোক্ত কথাগুলো সঠিক না হয়, তাহলে আপনি পালটা প্রমাণ দেখাতে পারেন যে অন্যের দেয়া তথ্যগুলো ভুল। আর ঘুষ, ধর্ষণ, খুন–এগুলো গ্রহণযোগ্য নয় বলে কেউ হয়তো বড়জোর সমালোচনা করতে পারে যে এগুলো খারাপ কাজ যা করা আপনার ঠিক হয়নি।
এভাবে কেউ যদি বলে যে, আপনার ধর্মগ্রন্থে বলা আছে–সূর্য রাতের বেলা আরশের তলায় সিজদারত থাকে, বায়ুহীন স্থানে দীপ জ্বলে, মেরুদণ্ড থেকে বীর্যের উৎপত্তি, যজ্ঞ থেকে মেঘের উৎপত্তি হয়, পৃথিবী সমতল, আকাশ খুটিবিহীন ছাদ, সূর্য রথে চড়ে ঘুরে বেড়ায়, একজন মনু বা দুজন আদম-হাওয়া থেকে মাত্র ৬ হাজার বছরে এত জাতের এত মানুষের সৃষ্টি হয়েছে, অন্য ধর্মের মানুষ আমার ধর্ম গ্রহণ না করলে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে, নবী ছ বছরের মেয়ে বিয়ে করেছিল, পালিত পুতের বউকে বিয়ে করেছিল, ইত্যাদি কথাগুলো বলা মানে আপনার ধর্মের প্রতি বা আপনার প্রতি বিদ্বেষ দেখানো নয় বা ঘৃণা করা নয়, গালাগালি করাও নয়। এগুলো জাস্ট “ধর্মীয় তথ্যগুলো” তুলে ধরা। তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে নিতে পারেন আপনার ধর্মগ্রন্থ খুলে। কথাগুলো মিথ্যা বলে প্রমাণসহ মিথ্যা প্রমাণ করবেন। আর সত্য হলে নিজের কমনসেন্স খাটিয়ে যা বোঝার বুঝে নেবেন।
এই সামান্য বিষয়টা নিয়ে যদি আপনারা গালাগালি করতে আসেন, হেন করে দেবেন-তেন করেন দেবেন বলে চিল্লাতে থাকেন, চাপাতি হাতে নিয়ে খুনোখুনির পর্যায়ে চলে যান, তাহলে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ, যারা শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকতে চায়, তারা আপনাদের এই অশান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডে একদিন বিরক্ত হতে বাধ্য, এবং আপনাদের ত্যাগ করে অন্য দিকে চলে যাবে, এবং এটাই হচ্ছে। এরপরেও আপনারা বলতে পারেন, দুনিয়ায় আপনাদের ধর্মের লোকের সংখ্যাই বাড়তেছে–হ্যাঁ বাড়তেছে, তবে সেটা আপনাদের ধর্মীয় পরিবারে জন্ম নেয়ার ফলে তাদের উপর ধর্ম চাপিয়ে দিচ্ছেন বলে।
অনন্তদের হত্যা করে আপনার ধর্মের কোনো লাভ হয়নি, বরং প্রচুর লোকে অনন্তদের চিনেছে, তাদের লেখা পড়েছে, ধর্মের অসংগতিগুলো জেনেছে। আর জেনেছে–আপনার ধর্ম মুখে শান্তির কথা বললেন বাস্তবে মানুষ খুন, যুদ্ধ, হানাহানিসহ আরো অনেক অসংগতি, অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড করতে উৎসাহিত করে।
ধর্মগ্রন্থ তার জায়গায় ছিল, আছে, থাকবে। সেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়া নিয়ে ভয় পাবেন না, এগুলো হেফাজতের দায়িত্ব এখন ইন্টারনেটের। আপনারা পড়ে জানুন সেগুলো আসলে কী বলে। নিজের মাথা খাটান, কমনসেন্স কাজে লাগান, ধর্মান্ধ-ধার্মিক থেকে মানুষ হয়ে উঠুন।
Leave a Reply