৭:৫৪ নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্। তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র স্বীয় আদেশের আনুগামী। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ্ বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
৪০:৬৪ আল্লাহ্ পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ্, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ্ বরকতময়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
৪১:৯ বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থির কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
৪১:১০ তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন—পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
৪১:১১ অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
৪১:১২ অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ্র ব্যবস্থাপনা। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
২:২৯ তিনিই সে সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য যা কিছু জমীনে রয়েছে সে সমস্ত। অতঃপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ্ সবিষয়ে অবহিত। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন বাংলা (অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
১৯:৩৫ আল্লাহ্ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন, তখন একথাই বলেন: হও এবং তা হয়ে যায়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
এ আয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে, যে মহান আল্লাহ্ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সাতটি আকাশ নির্মাণ করেছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অট্টালিকা নির্মাণের এটাই নিয়ম যে, প্রথমে নির্মাণ করা হয় নীচের অংশ এবং পরে উপরের অংশ। মুফাস্সিরগণ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যা ইনশাআল্লাহ এখনি আসছে। কিন্তু এটা বুঝে নেয়া উচিত যে, আল্লাহ্ পাক অন্য স্থানে বলেছেনঃ “আচ্ছা! তোমাদেরকে সৃষ্টি করাই কি কঠিন কাজ, নাকি আসমান? আল্লাহ্ ওটা (এরূপে) নির্মাণ করেছেন যে, ওর ছাদ উঁচু করেছেন এবং ওকে সঠিকভাবে নির্মাণ করেছেন। আর ওর রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন ওর দিনকে প্রকাশ করেছেন এরপর জমীনকে বিছিয়ে দিয়েছেন। তা হতে পানি ও তৃণ বের করেছেন এবং পর্বত সমূহ স্থাপন করেছেন। (তিনি এসব কিছু করেছেন) তোমাদের ও তোমাদের পশুপালের উপকারের জন্যে।” [৭৯:২৭-৩৩]। এ আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, তিনি আকাশের পরে যমীন সৃষ্টি করেছেন। [তাফসীর ইব্নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ২১৪]।
কেউ কেউ বলেছেন যে, পরবর্তী আয়াতটিতে আসমানের সৃষ্টির পরে যমীন বিছিয়ে দেয়া ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে, সৃষ্টি করা নয়। তাহলে ঠিক আছে যে, প্রথমে যমীন সৃষ্টি করেছেন, পরে আসমান। অতঃপর যমীনকে ঠিকভাবে সাজিয়েছেন। এতে আয়াত দু’টি পরস্পর বিরোধী আর থাকলো না। এ দোষ হতে মহান আল্লাহ্র কালাম সম্পূর্ণ মুক্ত। [তাফসীর ইব্নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ২১৪]।
২:১১৭ তিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের উদ্ভাবক। যখন কোন কার্য সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে একথাই বলেন, ‘হয়ে যাও’, তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়। [তফসীর মাআরেফুল কোরআন (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর), হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী’ (রহঃ), অনুবাদ মাওলানা মুহিউদ্দীন খান]
সেই আল্লাহ্র ক্ষমতা ও প্রভাব ও প্রতিপত্তি এতো বেশী যে, তিনি যে জিনিসকে যে প্রকারের সৃষ্টি ও নির্মাণ করতে চান তাকে বলেন—‘এভাবে হও এবং এরকম হও’ আর তেমনই সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ্ পাক বলেন:
অর্থাৎ ‘যখন তিনি কোন জিনিসের (সৃষ্টি করার) ইচ্ছে করেন, তখন তাঁর রীতি এই যে, ঐ বস্তুকে বলেন—‘হও’ আর তেমনই হয়ে যায়।’ (৩৬:৮২)
অন্য জায়গায় বলেন:
অর্থাৎ “যখন আমি কোন বস্তু (সৃষ্টির) ইচ্ছে করি তখন আমার কথা এই যে, আমি তাকে বলি—‘হও’ আর তেমনই হয়ে যায়।” (১৬:৪০)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ “চোখের উঁকি দেয়ার মত আমার একটি আদেশ মাত্র।” (৫৪:৫০) [তাফসীর ইব্নে কাসীর, খণ্ড ১, ২, ৩, পৃঃ ৩৭৯]।
‘আবদুল্লাহ্ ইবন্ ‘আমর ইবনুল ‘আস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ্পাক আকাশমণ্ডলী ও ভূখণ্ড সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে তাক্দীরসমূহ নির্ধারণ করে রেখেছেন। (মুসলিম, তাবারাণী ও তিরমিযী, তিনি হাদীসটি হাসান ও সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন।) [মুসনাদে আহমদ: প্রথম খণ্ড: তকদির অধ্যায়, পৃঃ ১০৩, হাদীস ১]
Leave a Reply