মস্তকাবরণ নিয়ে ধর্মগুলোর উৎকট যে-বাতিকগ্রস্ততা আছে, সেটিকে চরমভাবে ব্যঙ্গ করেছেন অস্ট্রীয় নাস্তিক Niko Alm. প্রকারান্তরে তিনি ধর্মগুলোর তথাকথিত “ড্রেস কোড”-গুলোকেই হাস্যস্পদ করে তুলেছেন। তিনি স্প্যাগেটির জন্য ব্যবহৃত ছাঁকনি মাথায় বসিয়ে তোলা ছবি ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন।
ভাবছেন, পৃথিবীতে এতো কিছু থাকতে স্প্যাগেটির ছাঁকনি মাথায় দিতে হবে কেন? ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবার আগে একই প্রশ্নের মুখোমুখি তাঁকেও হতে হয়েছিল নিশ্চয়ই। যে কারণে তাঁর লাইসেন্সপ্রাপ্তি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটেনি।
কোত্থেকে আর কী ক’রে
ঈশ্বর-ধারণার উদ্ভটত্ব, অবাস্তবতা, অলীকতা ও ভিত্তিহীনতাকে প্যারোডি করে আরও একটি ঈশ্বরের জন্ম দেন পদার্থবিদ ববি হেন্ডারসন। বিবর্তনবাদের পাশাপাশি ভুঁইফোড় তত্ত্ব ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন স্কুলে পড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তিনি ক্যানসাস শিক্ষাবোর্ডের উদ্দেশের লেখা একটি খোলা চিঠিতে এই নতুন ঈশ্বর-ধারণার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ফ্লাইং স্প্যাগেটি মন্সটার এবং এই তত্ত্বও স্কুলে পড়ানোর দাবি তোলেন তিনি। কারণ ইনটেলিজেন্ট ডিজাইন তত্ত্বের সঙ্গে তাঁর প্রস্তাবিত তত্ত্বের চরিত্রগত কোনও ফারাক নেই।
ফ্লাইং স্প্যাগেটি মন্সটারের ছবি। স্প্যাগেটি ঘিরে রেখেছে দুটো মীটবলকে।
আরও অজস্র ছবি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
হেন্ডারসন প্রস্তাবিত আইডয়াটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জনতা লুফে নেয় এই অভিনব ধারণাটি। এর অনুসারী এখন অগণ্য। এখন তা ‘আন্দোলনে’ পরিণত হয়েছে। তাদের “ধর্মের” নাম পাস্তাফারিয়ানিজম (জ্যামাইকায় উদ্ভুত খ্রিষ্টীয় সংস্কৃতি রাসতাফারিয়ানিজম স্মর্তব্য)। একটি মজাদার ছবি দেখুন।
এই জাতীয় আরও ছবি এখানে।
তাদের ওয়েবসাইট আছে। টেনেসির একটি আদালতপ্রাঙ্গনে এই ঈশ্বরের মূর্তিও স্থাপন করা আছে। ভিডিওতে দেখুন।
আবার অস্ট্রিয়ায়
অস্ট্রিয়ার আইন অনুযায়ী, ডকুমেন্টে ব্যবহার্য ছবিতে কোনও মস্তকাবরণ বিধিসিদ্ধ নয়। ব্যতিক্রম হতে পারে শুধু ধর্মীয় কারণে। আইনের এই ফাঁকটি ব্যবহারের চিন্তা Niko Alm-এর মাথায় আসে তিন বছর আগে।
তখন তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলে মাথায় স্প্যাগেটির ছাঁকুনি দিয়ে ছবি তোলা বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, তিনি পাস্তাফারিয়ানিজমের অনুসারী এবং তাঁর ধর্মে এমন মস্তকারবণ ব্যবহারের বিধান আছে। Niko Alm-এর মানসিক সুস্থতা বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সন্দিহান হয়ে ওঠে (অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে এই সন্দেহ জাগে না কেন?)। তাঁকে বলা হয় সংশ্লিষ্ট ডাক্তারি সার্টিফিকেট দেখাতে, যেখানে উল্লেখ থাকবে, গাড়ি চালনার মানসিক যোগ্যতা তাঁর আছে।
Niko Alm হাল ছেড়ে দেননি। তিন বছর পর তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।
Niko Alm-এর ব্যক্তিগত ব্লগ: জার্মান ভাষায় ও গুগল অনূদিত।
Leave a Reply