বিয়েপ্রথা-বিরোধী হয়েও নিজে বিয়ে করে ফেলেছিলাম। তারচেয়ে বড় কথা–ধর্মবিরোধী হয়েও বিয়েটা সেই ধর্মমতেই করতে হয়েছিল। নিজের স্ববিরোধিতার অন্যতম বড় উদাহরণ। তবে আমার অজুহাত হলো–বিয়ে যে কী জিনিস, আগে বুঝতাম না; আর ধর্ম নিয়ে তখন হালকা ফান-ফাইজলামি করলেও এতটা হার্ডলাইনে ছিলাম না। আর যেহেতু আজকালকার ছেলেমেয়েদের মত রুমডেট করার মত ‘স্মার্ট’ ছিলাম না, তাই ‘বিয়ে না করলে খাবো কী?’–এই ভাবনাটাও ছিল। বিয়ে করাটা ভুল ছিল–পরে বুঝেছি আমি সংসারী না; এবং একটা মেয়ের ‘স্বপ্নভঙ্গ’ করেছি–এরকম একটা অপরাধবোধ কাজ করে।
২) আমাদের দেশে হিন্দু মেয়েরা বিয়ের পরে শাখা-সিঁদুর পরে, মুসলমান মেয়েরা অনেকে নাকে নাকফুল পরে; কিন্তু পুরুষেরা বিয়ের কোনো চিহ্ন বহন করে না। তবে পশ্চিমে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই বাম হাতের অনামিকায় আংটি পরে। আমি কিছুই পরি না। বিয়ের অনেক আগেই শুনছিলাম, একজন ফান করে বলেছিল–ওই আংটি পরাটা হলো বিয়ের পক্ষে এক ধরনের বিজ্ঞাপন। বিয়েপ্রথার বিরোধী হয়ে আবার বিয়ের আংটি পরাটা হলো আরেকটা বড় হিপোক্রেসি, তাই আর বিয়ের বিজ্ঞাপনও দেই না।
৩) অনেকে বিয়েকে দিল্লিকা লাড্ডুর সাথে তুলনা করেন। খেলেও পস্তাতে হবে, না খেয়েও পস্তাতে হবে! (আচ্ছা বিয়ে করে মানুষ কী খায়? যারা বিয়ে করে তারা কি ওই ‘বিয়ে না করলে খাবো কী?’–এর চিন্তা থেকেই বিয়ে করে?) যা হোক, দিল্লিকা লাড্ডু খেয়ে যারা পস্তায়, তারা সাধারণত চায় আর সবাইও তাদের মত পস্তাক। লেজ কাটা শিয়ালেরা যা করে আরকি! আমি সাধারণত উলটা–পস্তাচ্ছি, তবুও সবাইকে বলি একান্তই উপায় না থাকলে বিয়ে করার দরকার নেই।
=====আপডেট=====
৪) সংসারে অনীহা, অযোগ্যতা বা বিদ্বেষ–যা-ই থাকুক না কেন, অন্যের ‘সুখের’ সংসারে ‘আগুন দেয়া’ বা প্রেমের সম্পর্ক ভাঙাকে গর্হিত কাজ বলে মনে করি। এ জন্য অন্যের স্ত্রী বা জিএফদের প্রতি ক্রাশ খাওয়া থেকে বিরত থাকি, বা ক্রাশ খেলেও যদি বুঝতে পারি সে বা তারা অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়িত, বা অন্য কারো প্রতি আসক্ত, তাহলে শত হাত দূরে থাকার চেষ্টা করি। আর এজন্য কেউ যখন ফুটবল-গোলপোস্টের কৌতুকটা বলে, তখন চরম কুৎসিত লাগে দৃশ্যটা।
৫) ছ্যাকা খাওয়া, বা হিংসায় জ্বলেপুড়ে যাওয়া নিজের আরেকটি স্ববিরোধিতা–
জ্বালাইয়া অ্যাপসের বাতি
তুমি জেগে থাকো দিবারাতি গো,
তুমি কও কথা কাহার সনে গো ভোমরা…
Leave a Reply