বাস্তবতার সঙ্গে সংশ্লেষহীন অলীক একটি শব্দবন্ধের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় প্রায়ই। শব্দবন্ধটি হলো – “গোঁড়া নাস্তিক”।
ব্যবহারকারীরা, অনুমান করতে পারি, ‘নাস্তিক’ শব্দটির সংজ্ঞা সঠিকভাবে জানেন না। জানলে তাঁরা বুঝতে পারতেন, “গোঁড়া” শব্দটির সঙ্গে “নাস্তিক”-এর সহাবস্থান অর্থগতভাবে সম্ভব নয় কোনওভাবেই।
বুঝিয়ে বলা যাক।
তাকেই নাস্তিক বলা হয়, যে-ব্যক্তি একেবারে কোনও ধরনের তথ্য-প্রমাণ না থাকার কারণে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষীয় দাবিতে অনাস্থা জ্ঞাপন করে। এর বেশি কিছু নয়। হ্যাঁ, নাস্তিকতা মানে প্রমাণহীনতার কারণে ঈশ্বরের অস্তিত্বের দাবিতে অবিশ্বাস। ব্যস।
এখন কেউ কি আমাকে বুঝিয়ে বলবেন, যুক্তি-তথ্য-প্রমাণহীন দাবিতে অবিশ্বাস প্রকাশের ভেতরে গোঁড়ামির স্থানটি কোথায়?
গোঁড়ামি কাকে বলে? প্রকট প্রমাণ, জুতসই যুক্তি, তর্কাতীত তথ্য উপেক্ষা করে (“বুঝি, কিন্তু মানি না” ধরনের) ভিত্তিহীন বিশ্বাস আঁকড়ে ধরে থাকাটাই কিন্তু গোঁড়ামি।
অতএব ভুয়া দাবিকে দৃঢ়ভাবে অবিশ্বাস করার ভেতরে গোঁড়ামির গ-ও নেই।
তবে হ্যাঁ, যদি কখনও ঈশ্বরের অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়, এবং তারপরেও যদি এই ধরাধামে থেকে থাকে এমন কোনও নাস্তিক, যে তার মত পরিবর্তনে ঘোর অনীহ, শুধু তখনই তাকে “গোঁড়া নাস্তিক” বলা যাবে, তার আগে নয়। কোনওমতেই।
Leave a Reply