লিখেছেন অনিগিরি
রমজান মাসে নিচ পানে চেয়ে সাবধানে পথ চলা
মোমিনরা, দেখি, যেখানে-সেখানে থুতু ফেলে দলা দলা।
কবিতাটা পড়ে মনে পড়ল, আমার এক বন্ধু একদিন গল্প করছিল, ছোটবেলায় রমজান মাসে নাকি তাকে এক হুজুর বিকাল বেলা পড়াতে আসত। সিপারা আমপাড়া পড়ার বয়স তখন। তো সেই হুজুর যখন বিকালে আরবী পড়াত, তখন একে তো ছিল থুতু ফেলা দলা দলা, তার সাথে যোগ হতো মুখ থেকে নির্গত বিকট দুর্গন্ধ (বেহেস্তি হুরপরীদেরও এমন সুগন্ধ থাকার সমূহ সম্ভাবনা, যেহেতু এই দুর্গন্ধ আল্লাহপাকের বড়ই পছন্দ )।
হুজুরের প্রতি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে যে দুর্গন্ধ বের হতো, তাতে বমন ঠেকানোই নাকি দায় ছিল। সেই পূতদুর্গন্ধময় রোজাদার হুজুরের মুখের বাতাস এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, এরপর থেকে নাকি তার আরবি, সিপারা, আমপাড়া কথাগুলো শুনলেই দুর্গন্ধময় মনে হতো।
আমাদের নবীজীর অতি পছন্দের তালিকায় নাকি নারীদের সাথে সুগন্ধীও ছিল। খালি পেটে দাঁত ব্রাশ না করে সারাদিন থাকলে বায়োলজিক্যাল প্রসেসে হাজারো ব্যক্টেরিয়া নানান দুর্গন্ধ তৈরি করবে, সেইটাই স্বাভাবিক। তাই নবীজীর কেরামতিতে দুর্গন্ধের বদলে যে সুগন্ধ আসবে, তা তো আর সম্ভব না। আর তিনি যেহেতু ছিলেন একজন সুগন্ধীর সমঝদার লোক, তাই কী আর করা, অদৃশ্য ঘোড়ায় শওয়ার হওয়াই শ্রেয়, চালিয়ে দিলেন যে এই রোজাদারের দুর্গন্ধই আল্লাহর কাছে আতর মেসকাতের সুগন্ধের চেয়েও শ্রেয়!!
হায়রে আমার আল্লাহ রে!! তোমার ব্যবহার নবীজীর জীবনে যেমন অনস্বীকার্য (বিয়া সাদি, দাস-দাসী, গনিমত, হাক্বীকত, তরিকত, সম্পদ প্রতিটা পরতে পরতে) তেমনই যে কোনো ভণ্ডামির জগৎ টিকিয়ে রাখার জন্য সেটা সংসার জগৎ থেকে শুরু করে বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় জগতে তুমি খোদা আসলেই অনস্বীকার্য, তোমার মত অদৃশ্য ঘোড়ার কোনো তুলনাই হয় না। আর এজন্যই জগতে যার যার স্বার্থ মত তোমাকে নিয়ে ভণ্ডামী চলছেই চলছে।
ঈশ্বর যদি একজন থেকেই থাকেন, তবে তিনি নানান ধর্মের স্রষ্টা/প্রবক্তা থেকে শুরু করে সকল অন্ধ সমর্থকগুলোর জন্য অবশ্যই কিছু না কিছু শাস্তির ব্যবস্থা রাখবেন, এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই।
যাই হোক ধর্মের নামে ভণ্ডামি বন্ধ হোক, সারাদিন না খেয়ে হাজার হাজার শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ মানুষের যে দুর্ভোগ, কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে নৈতিক ও শারীরিক যে অপূরনীয় ক্ষতি, তার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে হবে। সমাজ থেকে এসব অনাচার, অত্যাচার আর নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে অবশ্যই সোচ্চার হতে হবে। এখনই সময় রুখে দাড়ানোর। ধর্মীয় নিষ্পেষণ থেকে যতদিন মুক্তি মিলবে না, ততদিন মানুষ কখনোই সত্যিকারের মানুষ হয়ে বাঁচতে পারবে না, পারে না।
Leave a Reply