• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

উচ্ছেদ নয়, পুনর্বাসন

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / উচ্ছেদ নয়, পুনর্বাসন
November 8, 2016

আমার দাদা প্রায় ৫০-৬০ বছরেরও বেশি সময় আগে তার ছোট ভগ্নি এবং ভগ্নিপতি মারা গেলে দুই এটিম ভাইগ্নাকে নিজের কাছে এনে রেখেছিলেন। নিজের বাড়িতেই ঘর তুলে দিয়েছিলেন। তারপর তারা বিয়েশাদি করেছেন, ছেলেমেয়ে হয়েছে, নাতিপুতি হয়েছে। ওনারা অনেককাল আমাদের সংসারেই একসাথে খেতেন। বলতে গেলে তখন উনারাই আমাদের বিশাল সংসারটাকে টেনে নিয়েছেন। তারপর চাচারা বড় হয়ে বিয়ে করার পরে সংসারের হাল ধরলে উনারা আলাদা হয়ে গেলেও আমাদের বাড়িতেই থেকে গেছেন। আমরা ছোটোবেলায় কোনোদিন বুঝতে পারিনি যে উনারা আমাদের আপন চাচা নন।

দাদা মারা যাওয়ার পরে তাদের সন্দেহ হয়েছে আমাদের মধ্যে কেউ না কেউ তাদেরকে যে কোনো সময় উচ্ছেদ করতে পারে। ভয়টা অমূলক নয়। কাছাকাছি থাকলে মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাটি লাগে চাচীদের সাথে। তখন এক চাচী প্রায়ই এই হুমকি দেয়। সেই ভয়ে তারা মাঝে মাঝেই তাদের থাকার জায়গাটা তাদের নামে লিখে দিতে বলে। চাচারা মাঝে মাঝে তাদের এই ‘সাহস’ দেখে অবাক হয়; বেশিরভাগ সময় হেসে উড়িয়ে দেয়। এমন নয় যে উনাদের জমিজমা নেই। উনাদের পৈত্তিক বাড়িতে অনেক জায়গাজমি। কিন্তু ঝামেলা হলেও আমার আপন কোনো চাচাই আজ পর্যন্ত উনাদেরকে সেখানে চলে যাওয়ার কথা বলেন নাই।

২) কাউকে উচ্ছেদ করতে চাইলে আগে তার পুনর্বাসনের চিন্তা করতে হয়। এটা মানবতার পর্যায়ে পড়ে। সিরিয়ানরা কেন নিজেদের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে–এর কারণটা অমানবিক, অগ্রহণযোগ্য–আমাদের নোংরা রাজনীতি ও মনুষত্বহীনতার পরিচয়। আবার সিরিয়ার শরনার্থীদের এত সমস্যা থাকার পরেও কেউ কেউ জায়গা দিতে চায় বা দিচ্ছে, এর মূলে মানবতা। এই পৃথিবী আমাদের সবার। সবার খেয়েপড়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আমার জায়গাজমি-ধনসম্পত্তি-ক্ষমতা আছে, অন্যদের নেই–তারা জাহান্নামে যাক–এই ধরনের চিন্তাভাবনা কখনোই মনুষত্বের পরিচয় বহন করে না। বরং যাদের ক্ষমতা আছে, দায়িত্ব-কর্তব্য তাদেরই বেশি।

৩) অন্তরাত্মার সন্ধানে নিজের মধ্যে ডুব দিলে যে মানুষগুলোর সাথে নিজের সবচেয়ে বেশি মিল পাই, তারা হলেন সাঁওতাল। নৃতাত্ত্বিক বা জনতত্ত্বের দিক দিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও মনে হয় বাঙালীদের সাথে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক সাঁওতালদের সাথে, যাদেরকে ‘অন্ত্যজ’ পর্যায়ের মানুষ বলে গণ্য করেন আধুনিকেরা। যারা এসব নিয়ে গবেষণা করেন তারা এর সত্যতা আরো ভালো করে বলতে পারবেন।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চিনিকলের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির দখল নিয়ে সাঁওতালদের সঙ্গে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সংঘর্ষ চলছে। জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে সাঁওতালদের ঘরবাড়ি, বসতভিটে, পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তাদের গবাদিপশু থেকে শুরু করে সব সম্বল। গুলি করে মারা হচ্ছে তাদেরকে।

খবরে দেখলাম–সাঁওতালদের দাবি, ওই জমি অধিগ্রহণ করার সময় তাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, চিনিকলের কাজে না লাগলে জমি তাদের ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে চিনিকল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই জমি চিনিকল বা খামারের কাজে না লাগলে সরকারের কাছে চলে যাবে জমি অধিগ্রহণের চুক্তিনামায় বলা হয়েছে। এই চুক্তিটা নাকি ১৯৬২ সালের। তার মানে সাঁওতালরা ওখানে অনেককাল ধরে বসবাস করে আসছে।

যদি ইতিহাস ঘাটেন, তাহলে দেখবেন অনেক আগে থেকেই ক্ষমতাবানরা এদের উপর অত্যাচার করত, এদেকে এদের জায়গা-জমি থেকে উচ্ছেদ-উৎখাত করত, ফলে সাঁওতালরা অনেকটা যাযাবর টাইপের জীবনযাপন করতে বাধ্য হত এবং এই জমিজমা বিষয়-সম্পত্তির ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন। এক সময় পৃথিবীর পুরোটাই এদের ছিল। যখন যেখানে ইচ্ছা সেখানে থাকতে পারতেন। আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সেটা অনেককাল আগে থেকেই সম্ভব না। চালাক-চতুর মানুষগুলো যার যার পাওনা বুঝে নিয়েছে, কিন্তু ওই উদাসীন মানুষগুলো পড়েছে ‘চিনির গ্যাড়াকলে’।

আইন সবসময় ক্ষমতাবানদের পক্ষে যায়। তাই আইন দিয়ে এদের সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে হয় না। এদের পক্ষে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে মানবতার দায় নিয়ে। এদেরকে এভাবে পুড়িয়ে, গুলি করে মেরে উচ্ছেদ করাটা শুধু অমানবিকই নয়, পূর্ব প্রজন্মের প্রতি আমাদের অকৃতজ্ঞতাও। এরা বেশিকিছু চান না, চান শুধু একটু থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। যদি মনে করেন পূর্ব-প্রজন্মের প্রতি কিছুটা হলেও দায় আছে, তাহলে এদের পক্ষে এগিয়ে আসুন।

gaibandha-sugar-edit-2
gaibandha-sugar-dit-3
gaibandha-police-edit
gaibandha-sugar-edir-4

(ছবি সূত্র : বিডিনিউজ২৪ ডট কম)

Category: পাল্লাব্লগTag: বাংলাদেশ
Previous Post:বিবিধ বই-লেখকেরা
Next Post:হাওয়ার পোলা ও “মানুষ রূপি পশুরা”

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top