ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আরো কিছু জেলাতে মন্দির-মূর্তি ভাঙা, লুটপাত করা, আগুন দেয়া, হিন্দুদের ভারতে পাঠানোর মত সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডের পরে অনেকেই বিশেষ করে ভালো মুসলমানরা ইসলাম ধর্মের ইয়ে বাঁচাতে ব্যস্ত। অনেকেই বলছেন যারা ও কাজ করছে তারা মুসলমান নয়; মুসলমান হলেও সহিহ মুসলমান হয়, ইসলাম ধর্ম এগুলো সমর্থন করে না… হ্যান ত্যান…
ইসলাম ধর্ম এগুলো সমর্থন করে না–এই কথাটার বিপরীতে কোরান হাদিস থেকে ভুরি ভুরি উদাহরণ দেখানো যেত। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী, মুসলমান না পড়ে কোরান-হাদিস। তাই সেদিকে গেলাম না। শুধু একটা উদাহরণ দেই–ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কাবার ৩৬০টা মূর্তি ভাঙার মধ্যে দিয়ে, আর নবী নিজের হাতে এই কাজ করেছিল।
এবার ভালো মুসলমানদের বেলায় আসি–ইসলামে ভালো মুসলমান খারাপ মুসলমান বলে কিছু হয় না। এরা সবাই মুসলমান। সুযোগের অভাবে পুরুষ যেমন চরিত্রবান, তেমনি সুযোগের অভাবে মুসলমানরাও একটু ভালো সাজার ভান ধরে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হামলায় দল-মত নির্বিশেষ সব ধরনের মুসলমান অংশ নিয়েছে। এমনকি লুটপাতে মুসলমান নারীরাও ছিল।
এবার ভালো মুসলমান সুযোগ পেলে কী করে তার একটা ছোট উদাহরণ দেই। একাত্তরে রাজাকাররা, খারাপ মুসলমানরা লুটপাত করেছিল–এটা বলার অপেক্ষায় রাখে না। কিন্তু ভালো মুসলমানরা সুযোগ পেলে কি করে নাই? করেছিল।–যাদের তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনীর প্রথম খণ্ড ‘আমার মেয়েবেলা’ পড়া আছে তাদের জানার কথা। যাদের মনে পড়ছে না বা জানা নেই, তারা ‘আমার মেয়েবেলা’-এর শেষ অধ্যায়ে ‘যুদ্ধের পর‘ শিরোনামের লেখাটায় চোখ বুলাতে পারেন। ভালো মুসলমানদের কর্ম কী রকম হয়, তার সামান্য একটু অংশ তুলে দিচ্ছি–
//গুড়ের ড্রামগুলো দেখে আমিও অবাক বনেছিলাম। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল বাবা অন্যের বাড়ি থেকে জিনিসগুলো না বলে নিয়ে এসেছেন। যে বাবা প্রদীপ নামের এক হিন্দু ছেলেকে যুদ্ধের সময় বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন, আলম নাম নিয়ে ছেলেটি যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও দিব্যি থেকে গেছে বাড়িতে, বাবা তাকে ওষুধের দোকানে রীতিমত ক্যাশে বসার কাজও দিয়েছেন আর সেই বাবা কি না হিন্দুদের ফেলে যাওয়া জিনিসে লোভ করেছিলেন! একাত্তরে এ বাড়িতে বড়দাদা, রিয়াজউদ্দিন আর ঈমান আলী ছিলেন। এরকমও হতে পারে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ওঁরাই।//
Leave a Reply