লিখেছেন নীল নিমো
আজকে সকালবেলা ডেনমার্কের আমার বাসায় মুরিদদের উদ্দেশে বয়ান দিচ্ছিলাম, “ইহুদি, খ্রিষ্টান, নাস্তিকরা বিজ্ঞান নিয়ে যতই লাফালাফি করুক না কেন, এরা তাদের নারীদেরকে নিরাপত্তা দিতে পারে নাই। গুগলে সার্চ দিয়ে দেখুন, পরিসংখ্যানে অনুসারে ইউরোপ-আমেরিকাতে নারীধর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়। আর সৌদি আরবে নারী ধর্ষণের কোনো রেকর্ডই নাই। নিশ্চয়ই ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়েছে।”
মুরিদের ভিতরে এক নোয়াখাইল্লা নাস্তিক ছিল। সে আমাকে থামিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করিল, “কিন্তু, হুজুর, ইসলামের ধর্ষণের সংজ্ঞা আর ইউরোপিয়ানদের ধর্ষণের সংজ্ঞা তো এক রকম নয়। তাই ইউরোপে যেটা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে, সেটা সৌদি আরবে ধর্ষণ বলে গণ্য হবে না। ধর্ষণ ঈ জিনিস, এইটাই তো সৌদিরা বুঝে না। তাই সৌদি আরবে কোনো ধর্ষণ হয় না।”
আমি রেগে গিয়ে বলিলাম, “ওরে জাহান্নামি নাস্তিক, নমরুদের বংশধর। তুই কী বুঝাইতে চাস?”
নাস্তিক বলিল, “হুজুর, অমুসলিমদের ধর্ষণের সংজ্ঞা হইল: Unlawful sexual intercourse or any other sexual penetration of the vagina, anus, or mouth of another person, with or without force, by a sex organ, other body part, or foreign object, without the consent of the victim… মোট কথা হইলো – কোনো পুরুষ মানুষ যদি কোনো নারীকে তার অনুমতি ব্যতিত জোর করে যৌনকার্য করে, তাকে ধর্ষণ বলে।
“অমুসলিমদের এই সংজ্ঞা অনুসারে যে কোনো বিবাহিত নারী, তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করতে পারে। এরজন্য তার কোনো সাক্ষী লাগবে না। মেডিকেল রিপোর্টই যথেষ্ট।
“হত্যা করা এবং ধর্ষণ করা হল সবচেয়ে বড় অপরাধ। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপর হল, কোরান শরীফে ধর্ষণ বা রেপ শব্দটির কোনো উল্লেখ নাই। বরং কোরান শরীফে আল্লাহপাক মুমিনদেরকে নিজ নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণ করার জন্য উৎসাহ দিয়ে এরশাদ করেন:
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। (সুরা বাকারা ২:২২৩)
“এই আয়াতটি দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, নিজ স্ত্রীর ক্ষেত্রে অমুলিমদের ধর্ষণের সংজ্ঞাটি কার্যকর হবে না। আপনার স্ত্রী যদি সেক্স করার মুডে না থাকে, কিংবা সে যদি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে, তারপরেও কোরান অনুসারে আপনি আপনার স্ত্রীকে জোর করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করতে পারেন।
“শুধু নিজ স্ত্রী কেন? ইসলাম অনুসারে, আপনি অন্য কোনো লোকের স্ত্রীকেও স্বামীর সামনে ধর্ষণ করতে পারেন। সেটাও ধর্ষণ বলে গন্য হবে না, যদি ৪ জন্য পুরুষ মানুষ সাক্ষী না থাকে। কারন ইসলামিক শরিয়া বলে যে, জিনা বা ধর্ষনের অপরাধ প্রমাণের জন্য ৪ জন ভাল চরিত্রের চাক্ষুষ পুরুষ সাক্ষী ছাড়া অন্য কোনো প্রমাণ গ্রহণযোগ্য নয়।
“হুজুর, সৌদিরা এত বড় বোকা না যে, যে চারজন সাক্ষী রেখে কোনো নারীকে ধর্ষণ করবে। আর ইউরোপের ৮০% ধর্ষণের মামলা স্ত্রী কৃর্তক স্বামীর বিরুদ্ধে হয়ে থাকে। যেখানে কোনো পুরুষ মানুষের সাক্ষী লাগে না। ইউরোপ-আমেরিকা যদি কোরানকে অনুসরন করে ধর্ষণ শব্দটা তাদের আইন থেকে মুছে দেয়, তাহলে ইউরোপ-আমেরিকাতেও ধর্ষণের সংখ্যা শূন্য হয়ে যাবে।”
আমি উত্তর দিলাম, “আস্তাগফিরুল্লাহ। কোরানে বেহেস্তের হুরীদের স্তনের বর্ননা থাকলেও ধর্ষণ শব্দটা উল্লেখ নাই। আল্লাহপাকের কাছে ধর্ষণের চেয়েও নারীর স্তন বেশি গুরুত্বপুর্ন। এইটা কোরান শরিফের একটা মুজেজা। সোবাহান আল্লাহ।”
Leave a Reply