“…কালার ভরমে হাম, জলদে না হেরি গো, ত্যজিয়াছি কাজরের সাধ…”–বিরহী রাধা কহিতেছে, শ্রীকৃষ্ণের রূপ মেঘের মত, সেই জন্য লজ্জায় আমি মেঘের দিকে তাকাই না। কাজরও আর পরি না, কেন না কাজর দেখিতে শ্রীকৃষ্ণকে মনে পড়ে।
এছাড়া আরো আছে–চুল আঁচড়ায় না, কেননা চুলও কালো; কালিন্দি নদীতে স্নানে যায় না, কেননা কালিন্দির জল কালো; আয়না দেখে না, কেননা কালো চোখ আর গালের কালো তিলটাও কালার কথা মনে করিয়ে দেয়।
বিরহের কালে রাধার মত এরকম যেসব জায়গায় একসাথে ঘুরছেন, সেসব রুমে রুমডেট করেছেন, সেসব বিছানায় সেক্স করেছেন, সেসব ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলতে পারলেই জ্বালা কিছুটা হলেও ভুলে থাকা সম্ভব।
কিন্তু কল্পনার বা ভার্চুয়াল প্রেমে আরো জ্বালা–কারণ তাকে আশেপাশে সব কিছুর সাথে জড়িয়ে ফেলছেন–পরিচিত রাস্তায় হাঁটার সময় হাত ধরে হাঁটছেন, পার্কে গলা ধরে চলছেন, এক সাথে রান্না করছেন, খাচ্ছেন, ঘুরতে গেছেন, সিনেমা দেখছেন, টিভি দেখছেন, টিভি দেখতে দেখতে কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ছেন কিংবা বুকের ভিতর জড়িয়ে ধরে মাথার চুলের মধ্যে মুখ গুঁজে দিয়ে ঘ্রাণ নিয়ে মন ভরাচ্ছেন, কাজের সময়ও ভেবেছেন কখন এসে চমকে দেবে, রাতে ঘুমাতে গিয়েও মনে মনে বালিশে তার গন্ধ পেয়েছেন, সেই সাথে সারাক্ষণের চিন্তা-চেতনায় সব কিছুর সাথে মিশিয়ে ফেলেছেন। স্বপ্নটা ভেঙে গেলে তখন যা দেখবেন, যা ভাববেন–তাতেই তার কথা মনে পড়বে। কোনো ভাবেই পালিয়ে বাঁচা সম্ভব নয়। মনে হয় এই জন্যই পেয়ে হারানোর চাইতে না পেয়ে হারানোর কষ্টটা বেশি।
২) কতটা ভালোবাসেন, এসব এই মোবাইল, ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপসের যুগে কেউ কেয়ার করে না। বিশ্বাস করেন, আসলেই কেউ আর ভালোবাসা জিনিসটা কেয়ার করে না। সবাই চায় লাইফ এঞ্জয় করতে–স্বপ্নের ক্যারিয়ার, ভালো গাড়ি-বাড়ি, প্রভাব-প্রতিপত্তি, খাওয়া-দাওয়া, কাম-কাজ, ঘোরাফেরা-ফূর্তি… কয়েকজন বিশ্বস্ত লাগানোর পার্টনার। আপনি যদি বিশ্বস্ত হতে পারেন যে কিনা ব্লাকমেইল করবে না, ছবি-ভিডিও তুলে বাজারে ছাড়বে না…মোটামুটি এই টাইপের হলেই “লাইফ এঞ্জয়” করার হাজারটা সাথী পেয়ে যাবেন।
৩) মোবাইল প্রজন্মের যতগুলা সিম, একসাথে তার বেশি আলগা-প্রেম।
৪) মোবাইল প্রজন্ম প্রেম করে, বিছানায় যায়, লাইফ এঞ্জয় করে, কিন্তু ভালো আর বাসেনা!…এদের জন্য এত্তগুলা লাইক।
৫) প্রেমের যোনিতে থুক্কু খনিতে থুক্কু নদীতে আর উথাল-পাথাল ভালোবাসার বন্যা বয় না, পলিও পড়ে না। চারদিকে শুধু বালি আর বালি…বাকিসব চরের জমিন…
৬) নারীবাদীরা না ক্ষেপলে একটা কথা বলি–আমরা প্রায়ই অবাক হই যে, সব হিন্দু মেয়েই কৃষ্ণকে, এবং সব মুসলিম মেয়েই মহাম্মদকে পছন্দ করে; কিন্তু তাদের স্বামীরা কৃষ্ণ বা মহাম্মদের মত আচরণ করুক, সেটা তারা কখনোই চায় না। ওদিকে বেশিরভাগ মেয়েরা প্রেম করার সময় যে ঠিকই মুহাম্মদ-কৃষ্ণের মত সোদাইতে-ওস্তাদ-টাইপ পাবলিকদেরই অগ্রাধিকার দেয়, সেটা কি কখনো খেয়াল করে দেখেছেন?
Leave a Reply