ভারত দাবী করে ভারত একটি ‘সহিষ্ণু’ দেশ এবং ভারতে ‘বাক-স্বাধীনতা’ আছে। ভারতের নাগরিক হিসাবে ভারত আমির খানকে বাক-স্বাধীনতা দিয়েছে। এবার আমির খান সেই বাক-স্বাধীনতার আওতায় নিজের ‘বাক প্রদান’ করছেন। তিনি বলেছেন–ভারত ‘অসহিষ্ণু’ হয়ে উঠছে এবং ‘বাক-স্বাধীনতা’ নেই।
এবার তার মন্তব্য অন্যদের পছন্দ না হলে তারাও তার বাক-স্বাধীনতার আওতায় নিজেদের পালটা মন্তব্য দিতেই পারেন। অর্থাত কথার পিঠে কথা, যুক্তি-তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু কেউ যদি বলেন, আমির খানের ওই কথা বলার অধিকার নেই, তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে, আর বিরুদ্ধে মামলা হবে, আর একটা কথা বললে তার খবর আছে, হেন তেন–তাহলে এগুলো অন্যায় কথা, এবং প্রমাণ হয়ে যায় আমির খানের কথাই ‘সত্য’। প্রচুর লোকে আমির খানের বিরোধিতা করতে এসে উলটা আমির খানের কথাগুলোকেই সত্য বলে প্রমাণ করে দিচ্ছে এবং তাদের কথার সাথে সেই ঐতিহাসিক চিরশান্তির কথাটার ব্যাপক মিল পাওয়া যাচ্ছে–আমার ধর্ম শান্তির ধর্ম, বিশ্বাস না করলে কল্লা ফেলাই দিমু।
ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, আমির খানের কথার সবচেয়ে উচিত পালটা জবাব হতে পারত এরকম–হাহাহা, সহিষ্ণুতা আর বাক-স্বাধীনতা আছে বলেই আপনি নির্ভয়ে ওই কথাগুলো বলতে পেরেছেন এবং এখনো জীবিত আছেন। (এরপর আমির খানের আর কোনো কথা থাকতে পারত বলে মনে হয় না।)
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গ–এটা ঠিক যে, আগে যখন বাক-স্বাধীনতার উপর আঘাত এসেছে তখন আমির খান চুপ করে ছিলেন। আজ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেই আঘাত আমির খানের উপর এসে পড়ছে। এবার আপনি যদি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ না করেন, বা এই অন্যায় না থামাতে সচেষ্ট হন, বা আমির খানের আগে প্রতিবাদ করেন নাই–এই অজুহাতে এড়িয়ে যান তাহলে কাল এই অন্যায় আপনার উপরে হবে, তখন অন্যরাও চুপ থাকবে এই অজুহাতে যে আপনিও আগে চুপ ছিলেন।
কে আগে কী করছেন না করছেন, সেই হিসাব না করে অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে স্থান কাল পাত্র দেশ ধর্ম বর্ণ জাত-পাতের উর্ধ্বে উঠে বর্তমানের যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন।
Leave a Reply