পুন্দানো শব্দের সূচনা হয় বাংলা ব্লগিং-এর প্রথম দিকে “ছাগু-পুন্দানো” উপলক্ষ্যে। ছাগুদের পক্ষে “ল্যাঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড”…ল্যাঞ্জা দেখা মাত্রই তখন পুন্দানি চলত।
২। সামুব্লগের মডুরা এইসব পুন্দানি ডিলিট মারত বইলা আমুব্লগের সৃষ্টি। সেখানে কোনো মডারেশন আছিল না। বরং মডুরা নিজেরাও ছাগুদের পুন্দানি দিতে কার্পণ্য করত না। এভাবেই পুন্দানি জায়েজ হয়ে গেল।
৩। ছাগুরা তাদের কর্মকাণ্ডরে ডিফেণ্ড করার জন্য ধর্মরে ঢাল হিসাবে টেনে আনত। স্বাভাবিক ভাবেই তখন তাদের ঢাল ভেঙে দিতে ধর্মও পুন্দানির শিকার হয়।
৪। গত বছরের প্রথম আদি ঐতিহাসিক নবী-পুন্দানি ইভেণ্ট নিয়া এখনো যাদের এলার্জি, মনে করিয়ে দেই, সেটা শুরু হয়েছিল “শার্লি এবদু” ইস্যুতে। সেটা মূলত ছিল নবীর কার্টুন আঁকা নিয়ে।
৫। সামুব্লগে ২০১২তে দেড় ডজনের মত কিছু কোলাজ কার্টুন-এর বাংলা করে পোস্ট দেয়া হয় কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই। ফলাফলে সামুর সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। কী কাহিনী? ওটাই নাকি বাংলা ব্লগের প্রথম সরাসরি নবী পুন্দানি পোস্ট! অথচ বিষয়গুলো ছিল জাস্ট জোকস। আস্তিকতা জোকস নিতে পারে না, অথচ “ধর্মই সকল কৌতুকের উৎস”–ধর্মকারীর স্লোগান।
৬। তারপর থেকেই শুনে আসছি–ধর্মের সমালোচনা করেন, কিন্তু ধর্ম পুন্দায়েন না। ধর্ম পুন্দালে নাকি আস্তিকদের ধর্মানুনুভোদায় আঘাত লাগে, ফলাফলে তারা জঙ্গী হয়ে যায়! তারপর থেকে অনেকবার আস্তিকদেরকে অনুরোধ করলাম–কী কী বললে বা কী কী করলে তাদের ধর্মানুনুভোদায় আঘাত লাগে, তার একটা লিস্ট দিতে। কিংবা কিভাবে ধর্মানুনুভোদায় আঘাত না দিয়া ছহিহ উপায়ে ধর্মের সমালোচনা করা যায়, তার কিছু উদাহরণ দিতে। আস্তিকদের কাছ থেকে এরকম কিছু পাই নাই এখনো।
৭। আস্তিকদের হেল্পাইতে বামাতিরা সবসময় হাজির। ধর্মরে কেমনে পুন্দাইতে হইবে এই নিয়া অনেক বামাতি ছহিহ নীতিমালা প্রণয়ন শুরু করতেছেন। তাদের বইলা রাখি, নাস্তিকতা কোনো ধর্ম না যে তার নির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে, আর সেগুলা মাইনা ধর্ম পুন্দানিতে হইবে। সো, আপনাগো নীতিমালার আমিনারে মুত্তালিব।
৮। এবার আসেন, সমালোচনা আর পুন্দানির মধ্যে কিছু পার্থক্য দেখা যাক–
সমালোচনাঃ নবি ৯ বছরের আয়েশাকে বিছানায় তুলেছিলেন।
পুন্দানিঃ নবী শিশুকামী ছিল।
সঃ নবী শ’ খানেকের বেশি যুদ্ধ করেছিলেন।
পুঃ নবী একটা যুদ্ধবাজ আছিল।
সঃ নবী মারিয়ার গর্ভে ইব্রাহিমকে জন্ম দেন।
পুঃ নবী দাসী লাগাইত।
সঃ ৩০ হর্স পাওয়ারের নবী এক রাতেই পালা কইরা বিবিদের লগে ছহবত করত।
পুঃ নবী একটা সেএণ্ডক্সম্যানিয়াক আছিল।
সঃ নবী রাতের আঁধারে অতর্কিতে বিধর্মীদের উপর হামলা করত।
পুঃ নবী ডাকাইত আছিল।
(আপনারাও কিছু এড করতে পারেন)
৯। আলোচনা-সমালোচনায় মমিনগো ছাই দিয়া চাইপা ধরার পরেও পিছলাইয়া যাইবে নয়তো আনলিমিটেড ত্যানা প্যাচাইবে। যেমন, আপনি যদি কোরান-হাদিসের রেফারেন্স দিয়া দেখান যে আয়েশারে বিয়ার সময় তার বয়স আছিল ৬, আর বিছানায় নেয়ার সময় ৯, তখন তারা জোকার নালায়েকের রেফারেন্স দিয়া কইবে আয়েশার বয়স আছিল ১৮। তখন সংক্ষেপে পুন্দানি দেয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না।
১০। পুন্দানি দেয়া মাত্রই মমিনরা নবীর খাস বান্দায় রূপান্তরিত হয়। মানে তখন রক্ত উঠে যায় মাথায়, আর মগজ চলে যায় হাঁটুতে… পাইলেই কোতল করবে–এইরাম অবস্থা…পায় না বলে মা বোন তুলে গালাগালি শুরু করবে।
১১। আস্তিকরা নাস্তিকদের মা বোন তুইলা গালাগালি দেয়। বদ নাস্তিকের পাল্লায় পড়লে তারা নাস্তিকদের নামের জায়গায় নবীর নাম বসাইয়া সেই একই গালি আস্তিকদের ফিরাইয়া দেয়। এইটারে বলে “ডাইরেক্ট পুন্দানি”।
১২। এখানে খিয়াল কৈরা–নাস্তিকরা সবসময় মজা নেয়ার মুডে থাকে। তাদের আগ বাড়াইয়া গালি দেয়ার দরকার হয় না। কিন্তু আস্তিকরা গালি দেয় বইলাই তখন তাদের দেখানো হয়ে যে, তারা যদি এমনে গালি দেয়, তাহলে নবীরেও এমনে গালি দেয়া হবে। যেমন, আপনি গালি দিলেন–তোর মায়রে সুদি। তখন পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন–নবীর মায়রে সুদি। সো গালাগালি বাদ দিয়া, মাথা ঠাণ্ডা কইরা রেফারেন্সসহ যুক্তি-তর্ক করেন।
১৩। অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে মেরে ফেললেও নাস্তিকরা সংযত ছিল। কিন্তু এক মাসের মধ্যে আবার ওয়াশিকুর বাবু খুন হলে প্রতিবাদস্বরূপ কেউ একজন নবী পুন্দানি ইভেণ্ট খুলে বসে। সেটা তেমন সাড়া ফেলে নাই। বরং নাস্তিকরাই তার প্রতিবাদ করেছে। পরে সেটার নাম পরিবর্তনও করা হয়েছে।
১৪। এই ইভেণ্টটা নিয়ে যাদের চুলকানি উঠে তাদের চোখে ওয়াজের সময়ে অন্য ধর্ম নিয়া যা বলা হয়, বা আস্তিকদের বানানো ১৫ হাজার লাইকের “চটির মা মহাভারত, চটির বাপ রামায়ণ” টাইপের পেজে অন্য ধর্ম নিয়া কী ধরনের গালাগালি দেয়া হয়, তা কখনো চোখে পড়বে না।
১৫। সেই ছাগু-পুন্দানো দিয়ে এই পুন্দানির কাহিনীর সূত্রপাত। ছাগুত্বও অনেকদিন হয় ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ছে সুবিধাবাদী বালছালদের মধ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই এরা পুন্দানি জিনিসটারে লাইক করবে না। আর পুন্দানি শব্দে যাদের এলার্জি আছে, বুঝবেন সামথিং ইজ রং…ল্যাঞ্জা বের হয়েছে অথবা এলার্ট থাকেন, যে কোনো সময় ল্যাঞ্জা বের হবে।
Leave a Reply