“এবং তাহারা মূক ও বধির এক ব্যক্তিকে তাঁহার নিকট লইয়া আসিল… এবং তিনি… ব্যক্তিটির কর্ণে আঙুল ঢুকাইয়া দিলেন, থুতু নিক্ষেপ করিলেন, এবং জিহ্বাস্পর্শ করিলেন… এবং তৎক্ষনাৎ উহার কর্ণ উন্মুক্ত হইয়া গেল, এবং যেই দড়ি জিহ্বা আটকাইয়া রাখিয়াছিল তাহা ঢিলা হইয়া গেল, এবং সে পরিষ্কার কথা বলিয়াউঠিল।” (মার্ক ৭:৩২-৩৫)
“এবং তাহারা অন্ধ এক ব্যক্তিকে তাঁহার নিকট লইয়া আসিল… এবং তিনি… তাহার চক্ষুতে থুতু প্রদান করিলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন সে দেখিতে পাইতেছে কিনা।এবং সে চক্ষু তুলিয়া তাকাইল, এবং বলিল, আমি মানুষসকলকে বৃক্ষের ন্যায় দেখি, চলন্ত। তিনি তারপর তাঁহার হস্ত পুনরায় সেই ব্যক্তির চক্ষুর উপর রাখিলেন, এবং তাহাকে পুনরায় দৃষ্টিপাত করাইলেন, এবং ব্যক্তিটি সকল মানুষকে পরিষ্কার দেখিতে পাইল।” (মার্ক ৮:২২-২৫)
“এবং যিশু পথ চলিতে গিয়া জন্মান্ধ এক ব্যক্তিকে দেখিলেন। এবং তাঁহার অনুসারী প্রশ্ন করিল, এই ব্যক্তি অথবা তাহার পিতামাতা, কাহার পাপের ফলে অন্ধটির এই জন্মান্ধতা? যিশু উত্তর করিলেন, এই ব্যক্তি বা তাহার পিতামাতা, কেহই পাপ করে নাই, তথাপি, ঈশ্বরের মহত্ত্ব এই ব্যক্তির উপর প্রকাশিত হইবে… ইহা বলিয়া যিশু মাটিতে থুতু ফেলিলেন, এবং থুতু মাখাইয়া কর্দম তৈয়ার করিলেন, এবং সেই কর্দম অন্ধের চোখে মাখাইয়া দিলেন, এবং তাহাকে বলিলেন, যাও, সিলোয়াম জলাধারে ইহা ধৌত করিয়া আইস… ব্যক্তিটি… ধৌত করিল, এবং দেখিতে পাইল।” (জন ৯:১-৭)
“ফুদাইকের পুত্র হাবিব বলেন তাহার পিতার চক্ষুদ্বয় এতই শ্বেতবর্ণ ছিল যে তিনি কিছুই দেখিতে পাইতেন না। আল্যার নবী নিজের মুখ হইতে নির্গত লালা উহার চক্ষুতে নিক্ষেপ করেন এবং তৎক্ষণাৎ উহার দৃষ্টি ফিরিয়া আসে। আশি বছর বয়সেও উহাকে সুঁইয়ের ছিদ্রে সুতা প্রবেশ করাইতে দেখা যায়।” (পৃষ্ঠা- ১৮৮)
“খাইবারের যুদ্ধে আলীর চক্ষুতে বেদনা হইয়াছিল। নবীজী কিছু থুতু উহাতে নিক্ষেপ করিলেন এবং চক্ষু সারিয়া গেল।” (পৃষ্ঠা- ১৮৮)
“খুত’আম হইতে আগত এক জেনানার পুত্র ছিল মূক। নবীজী পানি লইয়া আসিতে বলিলেন এবং সেই পানিতে মুখ ও হাত ধুইলেন। অতঃপর তিনি তা সেই মাতাকে দিলেন এবং পুত্রকে সেই পানি দিয়া ধৌত করিতে ও মুছিয়া দিতে বলিলেন। মাতা নবীজীর নির্দেশমত কার্য সম্পাদন করিলেন এবং পুত্র আর মূক রহিল না এবং অন্য মানুষের তুলনায় অধিক জ্ঞানী হইল।” (পৃষ্ঠা- ১৮৯)
“আল বারা’ কহেন, হুদায়বিয়ায় ১৪০০০ লোক বাস করিত, এবং তাহারা পানির যে কূপ পাইল তাহা পঞ্চাশটি ভেড়াকে পানি খাওয়াইবার জন্যও যথেষ্ট নহে। সাহাবীগণ কূপের চারিপার্শ্বে জমায়েত হইলেন যতক্ষণ এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট না থাকে। তৎপরে আল্যার নবী আসিলেন এবং কূপের পার্শ্বে উপবিষ্ট হইলেন। তাহার হস্তে একটি পাত্র আনিয়া দেওয়া হইল এবং তিনি পাত্রটিতে থুতু ফেলিলেন এবং নির্দেশ করিলেন। সালাম বর্ণনা করেন যে, তিনি হয় নির্দেশ প্রদান করেন অথবা তাহার থুতু নিক্ষেপ করেন এবং উহা হইতে পানি উৎক্ষিপ্ত হইল এবং সকলের জন্য যথেষ্ট পানি হইল এবং সকলের পাত্র পানিতে পূর্ণ হইল।” (পৃষ্ঠা- ১৭০)
“মুলা’ইবের পুত্রের শরীরে পানি আসিয়া ফুলিয়া গিয়াছিল। মুলা’ইব নবীর নিকট এক বার্তাবাহক পাঠাইলেন এবং পুত্রের অবস্থা ব্যক্ত করিলেন। নবী (ইহা শুনিয়া) মাটি হইতে কিছু ধূলি তুলিয়া লইলেন এবং তাহাতে থুতু প্রদান করিয়া মুলা’ইবের বার্তাবাহকের হস্তে দিলেন। বার্তাবাহক ইহা পাইয়া আশ্চর্য হইল অন্যরা এই লইয়া হাসিবে এই আশঙ্কা করিয়া গমন করিল। বার্তাবাহক মুলা’ইবের মৃত্যুপথযাত্রী পুত্রের নিকট ইহা প্রদান করিল। পুত্র তাহা খাইয়া লইল এবং আল্যা তাহাকে সুস্থ করিয়া দিলেন।”
“আব্বাসের পুত্র বর্ণনা করেন, এক জেনানা তাহার পুত্রকে লইয়া নবীজীর নিকট আসিলেন, এবং নবী তাহার বক্ষে আঘাত করেন। ইহার পরে পুত্রটি বমি করে এবং সেই বমি দেখিতে একটি কৃষ্ণবর্ণ কুকুরশাবকের ন্যায় দেখায়, এবং পুত্রটি তৎক্ষণাৎ সুস্থ হইয়া যায়। ইহাও জানা যায় যে, হাতিমের শিশুপুত্রের বাহুর উপর ফুটন্ত পানির পাত্র উপুড় হইয়া পড়ে। নবী তাহাতে ঘর্ষণ করিয়া মোনাজাত করেন এবং তাহার উপর থুতু নিক্ষেপ করেন এবং তাহা অনতিবিলম্বে সুস্থ হইয়া যায়।” (পৃষ্ঠা- ১৮৯)
“অর্শরোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি নবীর নিকট আসিয়াছিল। নবী একটি ঝর্ণার পানিতে থুতু নিক্ষেপ করিলেন এবং এবং লোকটিকে নির্দেশ করিলেন যেন সে অর্শের উপর সেই পানি ছিটাইয়া ধৌত করিয়া দেয়। ইহা করিবার পরে লোকটি সুস্থ হইয়া গেল।” (পৃষ্ঠা- ১৯৬)
“নবীজীর খিদমতে নিযুক্ত এক জেনানা একদা নবীজীর খাদ্যগ্রহণকালে তাহার খাদ্যের কিছু অংশ চাহিল। নবীজী কদাপি কাহাকেও ফিরাইতেন না এবং তিনি তিনি নিজের সম্মুখ হইতে খাদ্য লইয়া সেই জেনানাকে প্রদান করিলেন। কিন্তু জেনানা ধৈর্য বজায় রাখিল এবং কহিল, আমি আপনার মুখের অভ্যন্তর হইতে খাদ্য প্রার্থনা করি। অতএব তিনি নিজের মুখের ভিতর হইতে খাদ্য বাহির করিয়া তাহাকে দিলেন। জেনানা তাহা ভক্ষণ করিল এবং তাহার আদব-স্বভাব ভাল হইয়া গেল এবং সকলেই তাহার পরিবর্তন লক্ষ্য করিল। এবং সে মদিনার সকল জেনানার ভিতর সর্বাপেক্ষা ভাল স্বভাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হইল।” (পৃষ্ঠা- ১৮৯)
“আবু সা’ইদ আল খুদরি বর্ণনা করেন, নবীজী তীরের আঘাতে তৈরি ক্ষতের উপর থুতু লেপন করিয়াছিলেন এবং আবু কাতারা তাহাকে বলেন যে উহাতে আর কোনো পঁচন বা সংক্রমণ ঘটে নাই।” (পৃষ্ঠা- ১৮৭)
“উহুদের যুদ্ধের সময়কালে কুলসুম হোসেনের পুত্র কন্ঠে আঘাতপ্রাপ্ত হইয়াছিল। আল্যার নবী ক্ষতস্থানে থুতু দিয়া দেন এবং তৎক্ষণাৎ ক্ষত সারিয়া যায়। আনিসের পুত্রআবদুল্লাও এই যুদ্ধে আহত হন এবং তাহার মাথায় ক্ষতস্থান বর্তমান ছিল। নবীজী উহাতে থুতু দেন এবং উহাতে সংক্রমণ ঘটে নাই।” (পৃষ্ঠা- ১৮৮)
“আল আকওয়ার পুত্র সালাম যুদ্ধকালে জঙ্ঘাদেশে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতদক্ষেত্রেও নবীজী একইরূপ কেরামত ঘটান এবং সে সুস্থ হইয়া উঠে।” (পৃষ্ঠা- ১৮৮)
“বদরের যুদ্ধকালে আবু জেহেল কর্তৃক আফরাপুত্র মু’আউধ এর হস্ত কর্তিত হয়। মু’আউধ কর্তিত অঙ্গটি লইয়া নবীর নিকট গমন করেন। নবী উহাতে থুতু দিয়া স্বস্থানে বসাইয়া দেন এবং আশ্চর্য কুদরতের চিহ্নস্বরূপ উহা জোড়া লাগিয়া যায়। ওহাবের পুত্র বর্ণনা করেন, একই যুদ্ধকালে ইউসুফের পুত্র খুবাইবি কন্ঠে ভয়ানক আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং উহা অর্ধেক বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। আল্যার নবী উহার উপর থুতু ছিটাইয়া দেন এবং তৎক্ষণাৎ উহা সারিয়া যায়।” (পৃষ্ঠা- ১৮৮-৯)
Leave a Reply