(Isa Nobi-র ওয়াল থেকে নেয়া)
ইসলাম পুর্ব আরবের অন্যতম প্রধান তিন দেবী আল-লাত, আল-উজ্জা, আল-মানাত–যারা শক্তিশালী দেবতা আল্লাহর তিন কন্যা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
নবী মুহাম্মাদ ইসলাম ঘোষনার পর মক্কায় থাকা কালীন সময়ে কুরআনের কিছু আয়াত মক্কার পেগান দেবতা, লাত, উজ্জা এবং মানাতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছিলো। পরবর্তিতে মুহাম্মদ উক্ত আয়াতগুলো কে শয়তান কর্তৃক অনুপ্রাণিত হয়েছে বলে তা বাতিল করে দেন।
* আল-লাতঃ তাকে বলা হয় ভুগর্ভের দেবী। তাবুক যুদ্ধের পর ৬৩০ সালে নবী মুহাম্মদের এর নির্দেশে আবু সুফিয়ান ইবনে হার্বের নেতৃত্বে তায়েফে লাতের মন্দির ধ্বংস করা হয়।
* আল-উজ্জাঃ প্রাক-ইসলামী যুগের যুদ্ধের দেবী এছাড়া সমৃদ্বি ও কল্যাণের আশায় কুরাইশরা উজ্জার পূজা করত । মক্কা বিজয়ের পর নবী মুহাম্মদের নির্দেশে খালিদ বিন ওয়ালিদ তার একটি অভিযানের মাধ্যমে নাখলা নামক স্থানে উজ্জার প্রতি উৎসর্গীকৃত একমাত্র মন্দির ও তার ভেতরে অবস্থিত উজ্জার মূর্তি দুটোই ধ্বংস করে দেন। মক্কার অদুরে নাখলা নামক স্থানে উজ্জার মুর্তিসহ একটি মন্দির ছিল যেখানে কুরাইশ ও অন্য একটি গোত্র উজ্জার পুজা করত। মুহাম্মদ খালিদ বিন ওয়ালিদকে নির্দেশ দিলেন সেটিকে ধ্বংস করে দিতে। ৮ই হিজরী রমজান মাসে খালিদ বিন ওয়ালিদ ৩০ জন ঘোড়াসওয়ারী সৈন্যসহ সেখানে যান। পূরাহিতরা তাকে বাধা দিতে চাইলে তাদের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে খালিদ ও তার সেনারা মন্দির ও মুর্তিটিকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে ফিরে আসেন। ফিরে এসে নবী মুহাম্মদকে সব কথা বললে নবী মুহাম্মদ খালিদকে প্রশ্ন করেন সেখানে সে কিছু দেখতে পেয়েছে কি না। খালিদ না সূচক উত্তর দিলে তিনি খালিদকে আবার ফিরে গিয়ে কিছু খুঁজে দেখতে বলেন। নির্দেশমতে খালিদ ফিরে গেলে এক জীর্ণাকৃতি চুলের কৃষ্ণাঙ্গ নগ্ন মহিলাকে সেখানে দন্ডায়মান দেখতে পান। তখন খালিদ বিন ওয়ালিদ মহিলাটিকে তার তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে সরাসরি মাথা থেকে পা পর্যন্ত চিরে দ্বিখন্ডিত করে ফেলেন। ফিরে এসে নবী মুহাম্মদকে ঘটনা বললে নবী বলেন যে, হ্যা এবার ঠিক আছে ।
* আল-মানাতঃ তিন দেবীর মধ্যে মানাত সবচেয়ে প্রাচীন, প্রাক ইসলামি যুগের আরবগণ তাঁকে ভাগ্যের দেবী হিসেবে পূজা করত । আউস, খাজরায, মক্কা-মদিনা ও তাঁর আশেপাশের নাগরিকরা তাঁর পূজা করত, তাঁর কাছে বলি দিত এবং তাঁকে নৈবেদ্য প্রদান করত । আউস, খাজ্রায এবং ইয়াশ্রিবরা তীর্থযাত্রায় নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে নিশিপালন করত কিন্তু মস্তক মুণ্ডন করত না । তীর্থযাত্রার পরে তারা বাড়ি ফিরত না বরং যেখানে মানাত পূজা হয়েছিল সেখানে মস্তক মুণ্ডন করত এবং কিছু সময় অতিবাহিত করত । মানাত দর্শন না করা পর্যন্ত তারা তীর্থযাত্রা অসম্পূর্ণ মনে করত। মানাতের মন্দির মুহাম্মদের নির্দেশে সাদ ইবনে যায়িদ আল আশহালি জানুয়ারি ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে ধ্বংস করেন।
Leave a Reply