লিখেছেন কজমিক ডাস্ট
আজকাল ফেসবুকে ইসলামিক পেজগুলিতে একটা চেইন মেসেজ প্রায় দেখা যাচ্ছে, যাতে দাবী করা হচ্ছে যে, নারীরাও ইসলামের একটি বড় অংশ। কিন্তু আসলেই কি তাই?
প্রিয় বোনেরা….. তোমরা জান কি?
♥ পবিত্র কোরআনে তোমাদের নামে একটি সূরার নাম রয়েছে (সূরা নিসা)
=> কুরআনে সুরাহ নিসার থেকেও বড় একটা সুরাহ আছে যার নাম গরু (বাকারা); এছাড়াও আছে গবাদি পশু (আনআম), মৌমাছি (নাহল), মাকড়শা (আনকাবুত), হাতি (ফীল)। তাছাড়া সুরাহ নিসা পড়লেই বোঝা যায় যে, এটা নারীদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়নি, বরং পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে যে, নারীদেরকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নারীদের ব্যাপারে কুরআনে লেখা বেশীরভাগ অবমাননাকর কথাগুলি এই সুরাহ থেকেই পাওয়া যায়। এখানে পুরুষদেরকে বলা হচ্ছে যে, তারা কয়টি বিয়ে করতে পারবে, নারীরা জেনা করলে তাদেরকে কী শাস্তি দিতে হবে, কোন ধরনের নারীকে বিয়ে করা যাবে, কাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে (যার মধ্যে দাসীরাও আছে), তারা অবাধ্য হলে তাদের প্রহার করতে হবে। মানে অনেকটা পণ্যের সাথে আসা নির্দেশিকার মত। আর সুরাহটির বাকি অংশ কাফের, খ্রিষ্টান ও ইহুদীদের ব্যাপারে কথা বলছে।
♥ ইসলামের জন্যে প্রথম শহীদ একজন মহিলা (হযরত সুমাইয়া)
=> সুমাইয়া বিন খায়ইয়াতকে আর তার স্বামী ইয়াসিরকে একই সাথে বেঁধে রেখে ইসলাম ছাড়ার জন্যে কুরায়শরা অত্যাচার করে যাচ্ছিল। সুমাইয়াকে হত্যা করার সাথে সাথে তার স্বামী ইয়াসিরকেও হত্যা করা হয়। এ ক্ষেত্রে নারীদের কীভাবে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হল? শহীদ নির্বাচন ইসলাম ধর্ম করেনি, করেছিল কুরায়েশগণ।
♥ হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর উপরে প্রথম বিশ্বাস স্থাপন করে ঈমান এনেছিলেন একজন মহিলা (হযরত খাদিজা রাঃ)
=> কারণ সেই মহিলা তাঁর পত্নী ছিলেন। এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। সাধারণত সেইযুগের স্ত্রীদের কাছে, তাদের স্বামী যা বলতো তা চোখ বুঝে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।
♥ মৃত্যুর পূর্বে হযরত মুহম্মদ (সঃ) মুসলমান জাতির উদ্দেশ্য যে কথা বলে গিয়েছিলেন সেখানে মহিলাদের সাথে ভাল আচরনের সদুপদেশ দিয়ে গিয়েছিলেন।
=> ঠিক কোন ধরনের ভাল আচরণের কথা তিনি বলেছিলেন? যেমনটি তিনি তার নিজের বিবিদের সাথে করতেন? সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস (৪:২১২৭) থেকে আমরা জানতে পারি যে, একরাতে মুহাম্মাদ বিছানা থেকে উঠে বাইরে গেলেন আর মুহাম্মাদ কোথায় যাচ্ছে সেটা জানতে আয়েশাও চুপিচুপি তার পিছু নিলেন। বাইরে গিয়ে মুহাম্মাদ বেশ কিছুক্ষণ কবরস্থানে বসে ছিলেন। তারপর তাকে ফিরে আসতে দেখে আয়েশা দৌড়ে নিজের বিছানায় শুয়ে পড়েন। কিন্তু মুহাম্মাদ বুঝে যান যে, আয়েশা তার পিছু নিয়েছিল। তাই ফিরে এসে তাঁর বুকে জোরে আঘাত করেন যার কারনে আয়েশা প্রবল ব্যথা পান।
এছাড়াও আবু দাউদের একটা হাদিস (১১:২১৩৯-২১৪২) থেকে আমরা জানতে পারি যে, একজন স্বামীকে কখনই প্রশ্ন করা হবে না যে, সে কেন তার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলত। সুতরাং যেসব মহিলা স্বামীর অত্যাচার নীরবে সহ্য করে অপেক্ষা করছেন যে, আল্লাহ্ এটার বিচার করবেন, তাঁরা কোনোদিনই এই বিচার পাবেন না এবং তাঁদের উচিত দেশের আইন ব্যবস্থার কাছে বিচার চাওয়া।
♥ সমাজের অর্ধেকই তো তোমরা এবং বাকী অর্ধেকের সাথে মিলেই তো তোমরা সমাজকে উচ্চতায় নিয়ে যাও।
=> কাজী নজরুল ইসলামের চিন্তা-চেতনাকে ইসলামের মধ্যে ঢুকিয়ে যেসব টেডি মুসলমান ইসলামের মূল বাণীর বিকৃতি ঘটাচ্ছে, তাদের প্রতি আল্লাহ্তায়ালা বড়ই নাখোশ হবেন। কারণ ইসলাম বলে যে, নারীরা সমাজের এক-চতুর্থাংশ। ইসলামে নারীদের সাক্ষ্যর মূল্য পুরুষদের অর্ধেক। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে ফরমায়েছেন যে, “দুজন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্যে থেকে। যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা।” [সুরাহ বাকারাহ, আয়াত ২৮২]
এর পেছনে অবশ্য আমাদের রহমতের নবী ভাল একটা যুক্তি দিয়েছেন। সহিহ বুখারির একটি হাদিস (১:৬:৩০১) পড়লে আমরা জানতে পারি যে মহিলাদের সাক্ষ্য পুরুষদের অর্ধেক হওয়ার কারণ হচ্ছে মহিলাদের নির্বুদ্ধিতা।
এছাড়াও মহান আল্লাহপাক বলেন যে “তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান।” [সুরাহ নিসা ৪:১৭৬]
শুধু তা-ই না, বাচ্চাদের জন্মের পরে আকিকার সময়ও ছেলে শিশুর জন্যে দুইটা ছাগল কোরবানি দেওয়া হয় আর মেয়ে শিশুর জন্যে একটা।
তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, মহান রব্বুল আলামিন তার প্রতিটি হিসেবে নারীদেরকে পুরুষদের অর্ধেক করে রেখেছেন। সমাজে নারী ও পুরুষ অর্ধেক অবস্থান নিয়ে রেখেছে। কিন্তু যেহেতু ইসলামের দৃষ্টিতে নারীরা পুরুষের অর্ধেক, সে হিসেবে ইসলামিক সমাজে নারীদের স্থান হচ্ছে এক-চতুর্থাংশ।
♥ মহান আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অবস্থান এতটাই উচ্চতায় পৌছে দিয়েছেন যে তোমাদের পায়ের তলায় জান্নাতকে স্থান দিয়েছেন।
=> জান্নাতের অবস্থান কি তাহলে জাহান্নামের ভেতরে? কারণ বুখারি:ভলিউম ১, বই ২, নাম্বার ২৮; বুখারি : ভলিউম ১, বই ২, নাম্বার ৩০১; আর মুসলিম: বই ১, নাম্বার ১৪২ হাদিসগুলি অনুযায়ী – নবীজি বেশিরভাগ নারীকে দোজখে দেখতে পেয়েছেন এবং এর পিছনে তিনি একটি দারুণ যুক্তি দিয়েছেন, আর তা হল যে, নারীরা তাদের স্বামীর ব্যাপারে অকৃতজ্ঞ।
এছাড়াও সহিহ মুসলিম ৩৬:৬৬০০ অনুযায়ী বেহেশতে খুব কমই নারী থাকবে। তার মানে কী দাঁড়াল? যার পায়ের তলে বেহেশত, সে-ই বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না?
♥ এবং যেহেতু তোমাদের সামাজিক মূল্য অনেক বৃদ্ধি করে দেয়া হয়েছে অন্য সকল মূল্যবান জিনিসের মতোই তোমাদের হেফাজত করার জন্যেই হিজাবের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
এটা অবশ্য ঠিক কথা। নারীরা ইসলামের দৃষ্টিতে মূল্যবান পণ্যের মত। নবীজি নারীদেরকে গবাদি পশুর সাথে তুলনা করেছেন, ওদিকে আল্লাহ্ আরেক কাঠি বাড়া। তিনি তো সুরাহ বাকারাহর ২২৩ নাম্বার আয়াতে নারীদেরকে শস্যখেতের সাথে তুলনা করেছেন। নিজের শস্যখেতকে পোকামাকড়ের হাত থেকে উদ্ধার করা প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব।
♥ সুতরাং কেন তোমরা হিযাব এর পালন করবে না! ….যখন হিযাবের অভাবে সর্বক্ষেত্রেই তোমাদের অবমূল্যায়ন হচ্ছে।
=> দেখুন, এই কথা লিখেছে কারা! যারা নিজেরাই শত শত ওড়না পেজের অ্যাডমিন/মেম্বার। নিনজাদের মতন কালো একটা কাপড় পরে, কড়া রোদে ঘামতে ঘামতে, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট নিয়ে, পেঙ্গুইনের মতন হেলেদুলে, কথা বলার সময় মুখে নেকাব আটকে যাওয়া অবস্থায় কোন মহিলা যদি ভাবে যে, তার যথেষ্ট মূল্যায়ন হচ্ছে তবে আমাদের আর কী বলার আছে।
Leave a Reply