লিখেছেন গোলাপ
করুণাময় আল্লাহ!
ক) তিনি ভুমন্ডলকে করেছেন বিস্তৃত :
১৩:৩– তিনিই ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড় পর্বত ও নদ–নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দু’দু প্রকার সৃষ্টি করে রেখেছেন। তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন।
১৫:১৯– আমি ভু–পৃষ্ঠকে বিস্তৃত করেছি এবং তার উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রত্যেক বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি।
৫০:৭ – আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালার ভার স্থাপন করেছি এবং তাতে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ উদগত করেছি।
৫১:৪৮ – আমি ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম।
খ) পৃথিবীকে করেছেন শয্যা :
২০:৫৩ – তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে শয্যা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি।
৪৩:১০, ৭১:১৯ –যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্যে করেছেন পথ, যাতে তোমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার।
মহা জ্ঞানী আল্লাহ, নিখুঁত তার সৃষ্টি!
উপরে খুঁটি–হীন আকাশ (ছাদ)। নীচে উত্তমরূপে বিছানো পৃথিবী! মাঝখানে বিক্ষুব্ধ প্রকৃতির তাণ্ডব, ঝড়, ভূমিকম্প – যা যে কোন মুহূর্তে পৃথিবীকে (বিছানা) লন্ড–ভণ্ড করে দিতে পারে! উপায়? মহাজ্ঞানী আল্লাহ পাক সৃষ্টি করলেন পাহাড়–পর্বত! কেন?
ক) যেন পৃথিবী স্থির থাকে:
২৭:৬১– বল তো কে পৃথিবীকে বাসোপযোগী করেছেন এবং তার মাঝে মাঝে নদ–নদী প্রবাহিত করেছেন এবং তাকে স্থিত রাখার জন্যে পর্বত স্থাপন করেছেন এবং দুই সমুদ্রের মাঝখানে অন্তরায় রেখেছেন। অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তাদের অধিকাংশই জানে না।
৭৮:৬–৭– আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা এবং পর্বতমালাকে পেরেক?
খ) যেন তা ‘তোমাদেরকে‘ নিয়ে (ভরের আধিক্যে) হেলে–দুলে না পড়ে:
১৬:১৫– এবং তিনি পৃথিবীর উপর বোঝা রেখেছেন যে, কখনো যেন তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে–দুলে না পড়ে এবং নদী ও পথ তৈরি করেছেন, যাতে তোমরা পথ প্রদর্শিত হও।
গ) যাতে তা ঝুঁকে না পড়ে:
২১:৩১– আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুঁকে না পড়ে এবং তাতে প্রশস্ত পথ রেখেছি, যাতে তারা পথ প্রাপ্ত হয়।
ঘ) যাতে ‘তোমাদেরকে‘ নিয়ে তা ঢলে না পড়ে:
৩১:১০– তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বপ্রকার জন্তু। আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছি, অতঃপর তাতে উদগত করেছি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদরাজি।
আকাশ ও ভূ-তত্বের সংক্ষিপ্তসার:
মহাজ্ঞানী করুণাময় আল্লাহ মানুষের জন্য ভূমিকে বিস্তৃত করে পৃথিবীকে করেছেন সমতল বিছানা (৮৮:২০)। যেমন করে আমরা মেঝেতে কার্পেট বা তোষক বিছায়ে বিছানা তৈরি করি! তিনি তা করেছেন খুবই উত্তমরূপে, “(তিনি) কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম (৫১:৪৮) [বিছানা কখনোই গোলাকৃতি হয় না। আর গোলাকৃতি বস্তুর উপর বিছানা বিস্তারও অসম্ভব!] পৃথিবীকে স্থির রাখার জন্য তিনি পর্বতমালাকে পেরেক রূপে তৈরি করেছেন যাতে সে আমাদেরকে নিয়ে হেলে দুলে, ঝুঁকে বা ঢলে না পড়ে। তিনি আকাশকে করেছেন মজবুত ছাদ (৭৮:১২) এবং তা স্থাপন করেছেন খুঁটি ব্যতীত (১৩:২, ৩১:১০), যাতে না আছে কোন ছিদ্র (৫০:৬) অথবা ফাটল (৬৭:৫)। তিনি আকাশকে সংরক্ষিত করেছেন প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে “জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের মাধ্যমে”,যাতে শয়তানরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে না পারে (৩৭:৬-৯)।
মনে রাখবে, ‘এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই (২:২)’।
আধুনিক বিজ্ঞান
আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)এর “দাবীকৃত” অহি-প্রাপ্ত বাণীর আলোকে কুরানে বিগ্যানের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে আকাশ ও ভূ-তত্বের বর্ণনাগুলো পড়ে অবিশ্বাসীরা “হাসি-তামাসা” করে। বলে, আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে আল্লাহর বয়ানকৃত তথ্য রূপকথার চেয়েও বেশী উদ্ভট ও বানোয়াট। প্রমাণ, আধুনিক বিজ্ঞানের প্রমাণ-পরীক্ষালব্ধ তথ্যগুলো:
১) আধুনিক বিজ্ঞান এ বিষয়ে কী তথ্য দিচ্ছে, তা বিস্তারিত জানা যাবে এই ঠিকানায়: Cosmicevolution-from Big Bang to Humanity
২) পাহাড় কোন পেরেক নয়। হেলে দুলে বা ঝুঁকে পরার হাত থেকে পৃথিবীকে স্থির রাখার ব্যাপারে পাহাড়ের যে শুধু কোন ভূমিকায় নেয় তাইই নয়, পাহাড় অধ্যুষিত এলাকায় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। দেখুন এখানে: Earthquakes and Plate Tectonics
“Plate tectonics tells us that the Earth’s rigid outer shell (lithosphere) is broken into a mosaic of oceanic and continental plates which can slide over the plastic aesthenosphere, which is the uppermost layer of the mantle. The plates are in constant motion. Where they interact, along their margins, important geological processes take place, such as the formation of mountain belts, earthquakes, and volcanoes.”
[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর।]
(চলবে)
Leave a Reply