লিখেছেন কাফের
অনেকদিন থিকাই হাত নিশপিশ করতাছে। মনে হইতাছিলো কাউরে পিটানো দরকার। কিন্তু কারে পিটামু? প্রথম কথা হইলো, পুরুষ কাউরে পিটাইতে গেলে আগে তার মতো শক্তি থাকা দরকার। অতো শক্তি কি আমার আছে? তাছাড়া, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কাউরে পিটাইলে উল্টা নিজেই আবার গলধোলাই খাওয়ার সম্ভাবনা। তাই ভাবতেছিলাম, কী করা যায়? নিজের ছোট ভাই-বোন কাউরে তো আর পিটানো যায় না। হাজার হইলেও তারা নিজের ভাই-বোন। তাগো প্রতি দয়া-মমতা-স্নেহ-ভালোবাসা বইলা একটা কথা আছে না? তাগো কি এমনি এমনি পিটানো যায়? পড়াইতে বইলে অবশ্য পিটানো যায়, কিন্তু মাথায় কি আমার অতো বিদ্যা বুদ্ধি আছে?
এই সমস্যায় আমি একেবারে কাহিল হইয়া পড়লাম। ভাবতে লাগলাম কী করা যায়। কিন্তু পিটাইতে কাউরে আমার হইবোই। অবশেষে আমি সমাধান পাইলাম। আমাগো যৌনাঙ্গ, থুক্কু পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান ইছলামের মইদ্যে।
কোরানের সূরা নিসার ৩৪ নং আবর্জনায় আল্লা পরিষ্কার বইলা দিছে, প্রয়োজনে বউদের পিটাইতে পারবা। এখন ত্যাড়া লোকরা কইতে পারে, বউ যদি সেরম কোনো কাম না করে, তাইলে কেমনে পিটামু?
– হ, এইডা এটা প্রশ্ন। কিন্তু জ্ঞানী লোকের মতো বলি, দূরাত্মার কি ছলের অভাব হয়? জবাব হইলো, হয় না। আমারও হইবো না। চা বেশি গরম হইলে একদিন পিটামু, কম গরম হইলে একদিন পিটামু। আর একদিন পিটামু দেরী কইরা চা দেওনের লাইগা।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে পারে, এত পিটাইলে বউ তো বাপের বাড়ি চইলা যাইতে পারে।
– যাউকগা। পরথমে এক লগে চাইরডা বিয়া করুম। কারণ সূরা নিসার চার নম্বর ময়লায় আল্লা কইছে, এক লগে চারডা বউ রাখতে পারবা। এইখানে অনেকেই ভুল করে। কোরানে অবুঝ মূর্খ বান্দারা অনেকেই মনে করে, শুধু চারডা বিয়া করা যাইবো। আসলে তা না, এক লগে চারডা বউ রাখা যাইবো। একটা গেলে আরেকটারে বিয়া করুম। সব সময় চারডা ঠিক থাকবো । আমার তো ট্যাকার অভাব নাই। আমার বাড়ির নিচে ত্যালের খনি আছে। ত্যাল উঠাই আর বেচি। তাই ট্যাকার কোনো সমস্যা নাই। বউ পিটানোর জন্যি হাতের কাছে সবসময় একটা না একটারে পামুই।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে পারে, অকারণে বউ পিটাইলে হ্যারা যদি রাইতে তোমার লগে এক বিছানায় না শোয়?
– হ, এডাও এটা পোরোশনো। কিন্তু এরও সমাধান আল্লা দিছে। হাদিসে আছে, যে-স্ত্রী তার স্বামীর বিছানা ছাইড়া অন্য জায়গায় রাত কাটায়, ফেরেশতারা তারে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দেয়। এই ভয়েই বউয়েরা অন্য জায়গায় রাত কাইটাইবো না।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে পারে, বউয়েরা না হয় এক বিছনায় থাকলো, কিন্তু তারা যদি তোমারে কাম করতে না দেয়?
– দিবো না মানে! একশ বার দিবো। আল্লা ডাস্টবিনের সূরা বাকারার ২৩৩ নং আবর্জনায় কইছে, তোমাগো বউয়েরা তোমাগো চাষের জমি, যেমন কইরা খুশি সেহানে হাল চালাইবা। কেউ না করতে আরবে না। তাইলে আল্লা তাগো প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়া তাগো বেহেশত ব্যান কইরা দিবো।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে আরে, তারা নাহয় তোমারে চাষ করতে দিলো, কিন্তু চাষের জমি এমন ময়লা আর জঙ্গলে ভরা রাখলো যে তোমার তাতে চাষ করতে ইচ্ছাই হইলো না, তখন? এইভাবেই তো তারা তোমাকে শাস্তি দিবার পারে?
– অসম্ভব। আমি শুইনা ঈমান আনি নাই। আমি কোরান-হাদিস পইড়া বুইঝ্যা-জাইন্যা ঈমান আনছি। শরিয়া আইনে আছে, হ্যাগো কামের জায়গা পাক পরিষ্কার রাখতে কওনের এবং তাতে চাপ দেওনোর অধিকার আমার আছে। সুতরাং চাষের জমি জঙ্গলে ভরা থাকপার পারে না।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে পারে, এমনি এমনি যে তুমি বউদের পিটাবা, আল্লা যদি তোমারে পরকালে এ নিয়ে প্রশ্ন করে যে, কেনো তুমি অকারণে তোমার বিবিদের পিটাইছিলে? তখন?
– অসম্ভব। আল্লা এই পোরোশনো করবারই পারে না। কারণ, আমাগো নবীর চাচাতো ছোট ভাই, আলী, যার লগে নবী তার বেটি ফাতেমারে বিয়া দিছিলো। সেই আলী কইছে, পরকালে কোনো মরদকে কোনো পোরোশনো করা হইবে না, কেনো সে কোনো মাগি মানুষরে পিটাইছিলো।
ত্যাড়া লোক আবার কইতে পারে, কেনো আমি আমার বিবিদের অযথা পিটামু। তারা তো আমার চাইতে বিদ্যা বুদ্ধিতে ধন-সম্পদে বেশিও থাকতে পারে।
– আমার চাইতে বড়লোক কোনো মাইয়ারে আমি বিয়া করুম না। কারণ ইছলামে মানা আছে। আর বিদ্যা বুদ্ধিতে তো মাইয়ারা কোনো পুরুষের চাইতে বেশি হইবারই পারে না। কারণ নবী নিজে কইছে, একজন পুরুষের সমান দুইজন নারীর সাক্ষী। তাইলে ঘটনা কী দাঁড়াইলো? মাইয়াগো বুদ্ধি মরদের অর্ধেক না হইলে কি নবী এমনি এমনি এই কথা কইছে?
আমি জানি, এরপর ত্যাড়ালোকদের আর কোনো পোরোশনো আমার প্রতি থাকবো না। কারণ ইছলাম চিরতরে ওগো মুখ বন্দ কইরা দিছে। হ্যারা না বুইঝ্যা মাঝেমইদ্যে এরম পোরোশনো করে, ভবিষ্যতেও করবো। আমার মতো নবীর পেয়ারি উন্মাদদের উচিত ধীরে-সুস্থে তাগো পোরোশনের জবাব দেওয়া, জাকির নায়েক যেমন দেয়; তাইলেই ওগো মুখ চিরতরে বন্দ হইয়া যাইবো।
এখন আমার ঘোষণা, যেসব মুমিনা আমারে বিয়া করতে ইচ্ছুক। তারা আমারে লাইক দ্যান, থুক্কু সারা দ্যান। ফেসবুকের যুগ তো, মিসট্যাক হইয়া গ্যাছে।
আমার একটা গোপন অভিলাষ এইখানে না বইলা পারতাছি না। আলী তার ভাতিজিরে বিয়া করছিলো। হ্যারা অবশ্যি পালাইয়া যাইয়া বিয়া করে নাই। নবীই তার ভাইয়ের লগে মাইয়ার বিয়া দিছিলো। আমারও কয়েকটা সুন্দরী ভাতিজি আছে। তাগো দেখলে বুকের মইদ্যে মোচড় দিয়া উঠে। কিন্তু সমাজ সংসার বদলাইয়া গেছে, কিছু বলবার পারি না। মুখে কই না, মনে মনে ভাবি, এই মালগুলারে কে চাষ করবো কে জানে ? নিজের জিনিস পরার হাতোত দিয়া কি শান্তি হয়! তাই ভাবতেছিলাম আমার ভাই দুইডা যদি নবীর সুন্নতটা পালন করতো। তাইলে না কতোই ভালো হইতো! মাইয়াগুলাও বাড়িতে নিজেদের মইদ্যে থাকতো, আবার সম্পত্তিও বাইরে যাইতো না। আল্লা কি আমার খায়েশ পুরা করবো না?
পাঠকরা ভাবতে পারেন, আমি ইছলামের এমন মহান সুবিধা নিতেছি; আবার সেই ইছলামেরই কোরানকে ডাস্টবিন, মদের (সূরার) আয়াতকে আবর্জনা কইতেছি। এ কেমন মুনাফেকি। আপনারা ঠিকই কইছেন। যে-ইছলাম এমন পচা-গলা-দুর্গন্ধযুক্ত কথা কইবার পারে, সেটা ডাস্টবিন ছাড়া আর কী? আমি ইছলামের এই নোংরা সুবিধা নিতে পারি, কিন্তু আমি তো মানুষ; ভালোকে ভালো আর খারাপকে খারাপ বলার মতো বিবেক-বুদ্ধি কি আমার নাই?
Leave a Reply