মূল রচনা: আবুল কাশেম (সেক্স এন্ড সেক্সুয়ালিটি ইন ইসলাম)
অনুবাদ: খেলারাম পাঠক
(সতর্কতা: নরনারীর যৌনাচার নিয়ে এই প্রবন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই কামসম্পর্কিত নানাবিধ টার্ম ব্যবহার করতে হয়েছে প্রবন্ধে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভাষার মধ্যেও তাই অশালীনতার গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কাম সম্পর্কে যাদের শুচিবাই আছে, এই প্রবন্ধ পাঠে আহত হতে পারেন তারা। এই শ্রেনীর পাঠকদের তাই প্রবন্ধটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। পূর্ব সতর্কতা সত্বেও যদি কেউ এটি পাঠ করে আহত বোধ করেন, সেজন্যে কোনভাবেই লেখককে দায়ী করা চলবে না।)
পর্ব ০১ > পর্ব ০২ > পর্ব ০৩ > পর্ব ০৪ > পর্ব ০৫ > পর্ব ০৬ > পর্ব ০৭ > পর্ব ০৮ > পর্ব ০৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮
একজন স্ত্রীলোক তরুণ বয়স্ক কোনো পুরুষকে তার বুকের দুধ খেতে দিলে তরুণটি তার জন্যে হারাম হয়ে যায়।
সহি মুসলিম, বুক নং-০০৮, হাদিস নং-৩৪২৬:ইবনে আবু মুলায়েকা বর্ণনা করেছেন যে আল কাশেম বিন মহম্মদ বিন আবু বকর তার কাছে বলেছেন যে আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে সাহলা বিনতে সুহাইল বিন আমর আল্লাহর রাসুলের (দঃ) কাছে আসল এবং বলল- রাসুলুল্লাহ। সেলিম (আবু হোজাইফার মুক্ত ক্রীতদাস) আমাদের গৃহে আমাদের সাথে থাকে, এবং একজন পুরুষ যা অর্জন করে তা সে অর্জন করে ফেলেছে (অর্থাৎ সাবালকত্ব), এবং সেই জ্ঞান অর্জন করেছে যে জ্ঞান একজন পুরুষ অর্জন করে (অর্থাৎ যৌনবিষয়কজ্ঞান)। তদুত্তরে তিনি বললেন- তাকে তোমার বুকের দুধ খাওয়াও, এতে সে তোমার জন্যে মেহরিম হয়ে যাবে। সে (ইবনে মুলায়েকা) বলেন- আমি ভয় বশতঃ এই হাদিসটি বছর খানেকের জন্যে কারও কাছে বলিনি। অতঃপর একদিন কাশেমের সাথে আমার দেখা হলে আমি তাকে বললাম- আপনি আমাকে যে হাদিসটি বলেছিলেন আমি তা কারও কাছে বলিনি। তিনি বললেন- কোন্ হাদিস? আমি হাদিসটির কথা উল্লেখ করলে তিনি বললেন- আমার কথা বলে তুমি হাদিসটি বর্ণনা করতে পার যে আয়েশার (রাঃ) কাছ থেকে আমি উহা শুনেছিলাম।
সহি মুসলিমঃ বুক নং-০০৪, হাদিস নং-৩৪২৮:জয়নাব বিন্তে আবু সালামা হতে বর্ণিতঃ আমি রাসুলুল্লাহর (দঃ) স্ত্রী উম্মে সালামাকে আয়েশার কাছে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহর কসম, আমি এমন তরুন পুরুষের সামনে যেতে চাই না যে ফষ্টারেজ পিরিয়ড পার করেছে (বুকের দুধ খাওয়ার মেয়াদ পার করেছে)। তখন আয়েশা বললেনঃ ‘কেন? সাহলা বিন্ত সুহাইল রাসুলুল্লাহর (দঃ) কাছে এসে বলেছিল- ইয়া রাসুলুল্লাহ। আল্লাহর কসম, সেলিম (আমাদের ঘরে) ঢুকে বিধায় আবু হুযাইফার মুখে আমি চরম বিরক্তি দেখেছি। প্রতিউত্তরে আল্লাহর রাসুল (দঃ) বললেন- তাকে তোমার বুকের দুধ খাওয়াও। সে বলল- তার মুখে যে দাড়ি। কিন্তু তিনি (আবারও) বললেন-তাকে বুকের দুধ খাওয়াও, তা’হলেই আবু হুযাইফার মুখে যা আছে দুর হয়ে যাবে (অর্থাৎ বিরক্তি চলে যাবে)। (পরবর্তীতে) সে (সাহলা) বলেছিল- (আমি সেরূপ করেছিলাম) এবং আল্লাহর কসম করে বলছি, এর পরে আর আমি আবু হুযাইফার মুখে (বিরক্তির) চিহ্ন দেখতে পাইনি।
(হুবহু একই ঘটনা নিয়ে আরও দু’টি হাদিস- সুনান আবু দাউদঃ ভলিউম-২, হাদিস নং-২০৫৬, পৃ-৫৪৯ এবং মুয়াত্তাঃ সেকশন-৩০, হাদিস নং-১২, পৃ-২৪৫-২৪৬; কলেবর বড় হওয়ায় হাদিসগুলি উল্লেখ করা গেল না)।
এ এক আজব নিয়ম! বক্ষ নারীদেহের সর্বশ্রেষ্ঠ কামকেন্দ্র, পুরুষ তো দুরের কথা যুবতী নারীর উত্তাল বুক দেখে অচেতন গাছপালাও নাকি ভির্মি খায়। রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা কাব্যে পড়েছি, রূপসী চিত্রাঙ্গদা বিজন বনে ফুলগাছের নীচে শুয়ে আছে। পাহাড়ের মতো উচু কিন্তু নবনীর মতো কোমল বস্তু দুটির মোহনীশক্তি এতই বেশী যে থোকায় থোকায় ফুটে থাকা ফুলগুলিও তা দেখে মুর্ছিত হয়ে পড়ল এবং চিত্রাঙ্গদার বুকে পড়ে আত্মহত্যা করল।
“স্তনতটমুলে ফুলগুলি বিছাইল আপনার মরণ শয়ন”; অথচ ইসলামের সমাধান কতোই না সরল। বুক খুলে অনাত্মীয় পুরুষকে এক চুমুক ‘ডুডু’ খাইয়ে দাও, ব্যস, সে মেহরিম হয়ে গেল। এতে করে হিজাব পড়ার ঝামেলাও অংশত কমে যাবে বলে মনে হয়। কোরান-হাদিস যেহেতু আল্লাহপাকের অপরিবর্তনীয় বিধান যা কেয়ামতের আগ পর্যন্ত পালন করে যেতে হবে, সুতরাং সহি হাদিস বর্ণিত এই সুন্দর নিয়মটি আমাদের ইসলামপন্থী ভাইয়েরা তাদের স্ত্রীকন্যাকে পালন করতে উদ্বুদ্ধ করবেন আশা করি।
ক্রীতদাসী কিংবা যুদ্ধবন্দিনী একজন মুসলমান পুরুষের জন্যে পুরোপুরি বৈধ, এদের সাথে যৌনসঙ্গম করায় ইসলামী আইনে কোনো বাধা নেই। তবে একজন মুসলিম মেয়ের ক্ষেত্রে নিয়মটা কী? ছেলেদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে একজন মুসলমান মেয়ে কি পারে তার ক্রীতদাসের সাথে সেক্স করতে? না, মেয়েদেরকে এরূপ যৌন-উৎসবে গা ভাসানোর অনুমতি দেয়া হয়নি।
সুতরাং সে যখন দেখবে, তার স্বামী ক্রীতদাসী কিংবা কোনো মালে গনীমত মেয়ের সাথে অবাধে সেক্স করছে, তার মনে ঈর্ষা জাগাটা খুবই স্বাভাবিক। স্বামীকে এই অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখতে সে কী করতে পারে? সে কি স্বামীকে থামাতে রিযার নিয়ম প্রয়োগ করতে পারে? সে যদি তরুণী ক্রীতদাসীটিকে তার বুকের দুধ খাওয়ায়, তাহলেই তো ক্রীতদাসীটি তার স্বামীর জন্যে হারাম হয়ে যাবে। হ্যা পাঠক, ঠিক এমনই একটা ঘটনা ঘটেছিল একবার। একজন ঈর্ষাপরায়ণ স্ত্রী তার তরুণী ক্রীতদাসীকে বুকের দুধ খাইয়ে দিয়েছিল এই আশায় যে, তার কামার্ত স্বামীটি আর তার কাছে যেতে পারবে না। কিন্তু হায়, মেয়েটির ফন্দি কাজে লাগেনি, উল্টো ইসলামী শাস্তির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছিল তাকে। খলীফা উমর মেয়েটিকে প্রহার করার আদেশ দিয়ে মুসলমান পুরুষের জন্যে ক্রীতদাসী ভোগের অপ্রতিহত অধিকার সংরক্ষণ করেছিলেন। ঘটনাটি আপনার কাছে জন্যে হৃদয়বিদারক বলে মনে হচ্ছে, তাই না? ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ মুয়াত্তা থেকে জেনে নিন। চার মাজহাব সুন্নী মুসলমানদের চারটি স্তম্ভ, এর অন্যতম প্রধান রূপকার হযরত ইমাম মালিক (রঃ) মুয়াত্তা গ্রন্থের প্রনেতা। মুয়াত্তা মালেকি মাজহাবের প্রধান আইন বই।
মুয়াত্তা, বুক নং-৩০, হাদিস নং-৩০.২.১৩:
আব্দুল্লাহ ইবনে দিনার বলেন- “লোকদেরকে যেখানে বিচার করা হয় সেখানে একদিন আমি আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের সাথে বসা ছিলাম। তখন একজন লোক তার কাছে আসল এবং বয়স্ক লোকদেরকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করল। উত্তরে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর বলল-‘একবার এক লোক উমর ইবনে খাত্তাবের কাছে এসে বলল-‘আমার একটি ক্রীতদাসী আছে, তার সাথে আমি নিয়মিত যৌনসঙ্গম করি। আমার স্ত্রী তার কাছে গিয়ে তাকে বুকের দুধ খাইয়েছে। এরপর যখন আমি মেয়েটির কাছে গেলাম, আমার স্ত্রী আমাকে বের হয়ে যেতে বলল, কারন সে নাকি তাকে বুকের দুধ খাইয়েছে’।উমর লোকটিকে স্ত্রীকে প্রহার করার আদেশ দিলেন এবং (আগের মতোই) সে তার দাসীমেয়েটির কাছে যেতে পারবে বললেন। কারণ বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে যে আত্মীয়তা প্রতিষ্ঠিত হয় তা কেবল ছোটদের বেলায়।”
(চলবে)
Leave a Reply