১. শপিং মলে গেছিলাম। সিটি থেকে অনেকটা দূর–পূর্বদিকে, লং আইল্যাণ্ড। ঢুকতেই বিশাল হলওয়ে। দুদিকে সারি সারি দোকান। পথের মাঝখানে ছোটখাটো খেলনার দোকানের পাশাপাশি ঘড়ি সানগ্লাসের দোকানও আছে। হেঁটে হেঁটে সামনের দিকে আগাচ্ছি, হঠাত থমকে গেলাম–একটা উল্লুক ভাল্লুক কিংবা কুকুরের বাচ্চা জায়গার উপর ডিগবাজি দিচ্ছে! ভালো করে খেয়াল করতেই বুঝলাম ওটা একটা খেলনা। একটা চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া, জনম ভইরা একই জায়গায় ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চার মত লাফাচ্ছে তো লাফাচ্ছেই…কোনো পরিবর্তন নাই…
২. যে-ই যায় লংকায়, সে-ই হয় রাবণ–একটা ভালো মানুষও ক্ষমতা পেলে ডিগবাজি খেয়ে খারাপ হয়ে যেতে পারে–এমনই একটা ইঙ্গিত। সংখ্যাগুরুরা হাতে ক্ষমতা পেলে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে…মমিনদের দেশে মমিনরা সেই অত্যাচার করা নিয়ে আবার গর্ববোধও করে। মডারেট মুসলমানদের এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঠোঁটে একটা বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে বলে থাকে–সংখ্যাগুরুদের একটা আলাদা পাওয়ার তো থাকবেই হেঁ হেঁ…
৩. সংখ্যাগুরুদের এই পাওয়ার নিয়ে তর্ক করতে গেলে এক পর্যায়ে মমিনরা এ-ও বলে থাকে, সব জায়গাতেই নাকি সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের উপর এমন একটু-আধতু অত্যাচার করেই থাকে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে তাদের এই কথাটা সত্য নয়। সভ্য মানুষেরা সংখ্যাগুরু হলে, তাদের হাতে ক্ষমতা গেলে তারা কখনোই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে না। উদাহরণ হিসাবে নাস্তিকপ্রধান দেশগুলোর কথা বলা যেতে পারে। যেমন ডেনমার্ক বা সুইডেন। সেখানে ৮৩ থেকে ৮৮ শতাংশ মানুষ নাস্তিক। এরা কখনো অন্যদেরকে ধর্মপালনে বাধা দিচ্ছে বা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করছে–এমনটি কখনো শোনা যায় না। বরং বর্তমানে এই দুইটি দেশ সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস-যোগ্য দেশের লিস্টে একেবারে উপরের দিকে অবস্থান করছে। দিক দিন এসব দেশে খারাপ লোকের সংখ্যা এতটাই কমে যাচ্ছে যে জেলখানা পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।
৪. এরকম উদাহরণ আরো দেয়া যেতে পারে, যেখানে সভ্যরা সবসময় সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে সচেতন ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু সভ্যদেরেই এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কেউ যদি উলটো তাদেরই ক্ষতি করার চেষ্টা করে, কিংবা নিজেদের পরিবর্তন বা সংশোধন না করে সেই ১৪০০ বছর আগে চাবি মাইরা দেয়া উল্লুক-ভাল্লুক-কুত্তাদের মত ১৪০০ বছর আগের সেই একই ব্যবহার করতে থাকে তখন ব্যাপারটা অন্যরকম হলে সেটার দায় কাদের হবে?
৫. এবার মুসলিম মেজরিটি দেশগুলোর দিকে তাকানো যাক–শান্তির বন্যায় রক্তগঙ্গা বইয়ে যাচ্ছে।
Leave a Reply