• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

বিশু কর্মকারের ডায়েরি – ০২ : ভর্তিপরীক্ষা

You are here: Home / পাল্লাব্লগ / বিশু কর্মকারের ডায়েরি – ০২ : ভর্তিপরীক্ষা
September 8, 2016

[প্রথম পর্বে ভর্তির পরের থেকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ১ তারিখের পরের থেকে লিখে দিয়েছিলাম।  আগস্টের ১১ থেকে ৩১ বিস্তারিত ভাবে লেখা নেই; শুধু উল্লেখযোগ্য পয়েণ্টগুলো ডায়েরিতে টুকে রাখা দেখতে পাচ্ছি। বিশুর সাথে এগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে কথা হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু কিছু বলেছিল। সেগুলো গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করব।]

আগস্ট ১১, শুক্রবার
নটরডেম কলেজের ভর্তি পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত ছাত্রদের ফল প্রকাশ। 

[ভর্তি ফরম কেনা, ফিল-আপ করা, জমা দেয়া–এগুলো বিশুর মনে নেই ভালো করে। খুব সম্ভবত তার ছোটো কাকা ঢাকা থেকে ফরম কিনে বাড়িতে এনে ফিল-আপ করে সাইন করিয়ে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ফরম ফিল-আপের সময় একটি কাহিনী হয়েছিল–ফরম ছিল ইংরজিতে। একটি ঘর ছিল Religion এবং আরেকটি ঘর ছিল Caste-এর জন্য. Religion-এর ঘরটায় Hindu লিখলেও Caste-এর ঘরটা ফিল-আপ করতে পারছিলেন না। Caste-এর ইংরেজিটা ‘শিডিউল কাস্ট’–এটা বের করতে পারলেও শিডিউল কাস্ট-এর ইংরেজি বানানটা লিখতে পারছিলেন না। শেষে বাজারে গিয়ে এক পরিচিত প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টারকে বলাতে তিনি ইংরেজি বানানটা লিখে দিয়েছিলেন। সিলেক্টেড ছাত্রদের লিস্টটা খুব সম্ভবত ইত্তেফাক বা কোনো একটা দৈনিক পত্রিকায় বের হয়েছিল।]

আগস্ট ১৩, মঙ্গলবার
সকালে স্কুলের বন্ধুদের সাথে সাক্ষাত এবং কাকার সাথে ঢাকা যাত্রা।

[এই প্রথম সচেতন ভাবে বিশুর ঢাকা যাওয়া। এর আগে ৩/৪ বার ঢাকা যেতে হয়েছে। তবে সেটা প্রাইমারি লেভেলে থাকতে, চিকিৎসাজনিত কারণে। ঢাকায় সিদ্ধেশ্বরীতে দূর সম্পর্কের এক কাকার বাসায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা।]

আগস্ট ১৪, বুধবার
নটরডেম কলেজে ভর্তিপরীক্ষা এবং রামকৃষ্ণ মিশন হোস্টেলের ভর্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ।

আগস্ট ১৬, শুক্রবার
নটরডেমে মৌখিক পরীক্ষা এবং মিশনে ভর্তি পরীক্ষা।

আগস্ট ১৮, রবিবার
সকালে মিশনে এবং বিকেলে কলেজে ভর্তি।

আগস্ট ১৯, সোমবার
বাড়ি ফিরলাম।

আগস্ট ২৩, শুক্রবার
সকাল ৭:৩০-এর গাড়িতে ঢাকা যাত্রা।

আগস্ট ৩১, মঙ্গলবার
বিকেলে মিশনের হোস্টেলে উঠলাম।

[এর পরের দিন থেকে লেখাগুলো প্রথম পর্বে দেয়া হয়েছিল। এই আগের লেখাগুলোও খুব সংক্ষিপ্ত, একটা পাতায় লেখা। জিজ্ঞেস করেছিলাম–আলাদা আলাদা পাতায় না লিখে এভাবে একলাইন করে এক পাতায় লেখা কেনো। বলছিল–যদি ভর্তি হতে না পারি তাহলে তো বাকিগুলো লেখা হত না, তখন শুধু এই একটা পেজ ছিঁড়ে ফেলতাম। তাতে ডায়েরিটাও বাঁচত।
এরকম আরো কিছু কথা হয়েছিল, বিশুর মুখেই শোনা যাক–]

নটরডেমে টিকবো–ঢাকার কাকাটা অতটা ভাবেননি। তাই প্রথম দিকে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি আমার ব্যাপারে। নিজের ছোট কাকুই প্রথমদিকে আমাকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিল। কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে যখন বুঝলাম প্রথম দিকের গ্রুপে না হলেও শেষের দিকে টিকে যাব, তখন ঢাকায় থাকার চিন্তা মাথায় এলো।

বাবা দেশের বাইরে থাকতেন। ফোন করে বলে দিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের হোস্টেলে ভর্তির চেষ্টা করতে। তাই মিশনে গেলাম ভর্তি-ফরম সংগ্রহ করতে। কত টাকা নিয়েছিল খেয়াল নেই, তবে মনে আছে–ফর্মের দাম শুনেই ঘাবড়ে দিয়েছিলাম প্রথমে। তারপর বলল যে ভর্তি-পরীক্ষা হবে, এবং সেটা তাদেরই নির্ধারিত কিছু বই থেকে প্রশ্ন করা হবে, আর বইগুলো তাদের কাছ থেকেই কিনতে হবে–তখন আরো ঘাবড়ে না দিয়ে অবাক হয়েছিলাম অনেক। তবুও বাবা যখন ফোন করে বলেছেন, যত টাকা লাগুক… তখন ফরম ফিল-আপ করে বই কিনে বাসায় আসি।

তিনটি বই–রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, সারদা–তিন জনের জীবনী, সাথে আরো ছোট ছোট দুইটি বই মিশন এবং ধর্ম সম্পর্কিত। মাঝে একটা দিন। এর আগেই কাকার বাসায় কয়েক আলমারি বোঝাই বই দেখে লোভ লেগে গেছে। পরিচয় হয়ে গেছে শার্লক হোমসের সাথে। তাই আর অন্য কিছু পড়তে ভালো লাগছিল না। তবুও ওই বইগুলো একটু নেড়েচেড়ে দেখলাম।

পরের দিন সকালে কলেজে মৌখিক পরীক্ষা। দুইজন স্যার ছিলেন। একজনকে মনে আছে–রসায়ণের মনোরঞ্জন স্যার, অন্য জন একটু ছোটখাটো হালকা-পাতলা, খুব সম্ভবত ইংরেজি পড়াতেন–নামটা মনে পড়ছে না। গ্রাম থেকে এসেছি শুনে বলছিলেন, কলেজে অনেক খরচ, তারপর ঢাকায় থাকা-খাওয়াতেও অনেক খরচ… তাদের কথার মধ্যেই বলে দিয়েছিলাম, বাবা দেশের বাইরে থাকেন, খরচ চালাতে সমস্যা হবে না। হেসে ফেলেছিলেন। আর কিছু জিজ্ঞেস করেননি।

দুপুরে বাইরে খেয়েদেয়ে বিকেলে মিশনে পরীক্ষা হলো। বলছিল সন্ধ্যার পরেই ফলাফল জানিয়ে দেবে। ততক্ষণে মন্দিরের সন্ধ্যারতি দেখে প্রসাদ নিতে বলল। রাতে ফলাফলের লিস্ট টাঙিয়ে দিল। ওয়েটিং লিস্টে রাখছে। ওদিকে আমাদের এলাকারই আরেক ছাত্র যে আগের বার নটরডেমে চান্স না পেয়ে এবার আবার চেষ্টা করে চান্স পেয়েছে, তার নামটা দেখলাম উপরের দিকেই। এর কাকাও একসময় নটরডেমের ছাত্র ছিলেন এবং মিশনেই থাকতেন। তখন বিদেশে ছিলেন পড়াশোনা করতে। তিনি মহারাজদের বলে নাকি ওকে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে মিশনে।

কলেজে চান্স পাওয়ার আনন্দ, আর মিশনে না পাওয়ার নিরানন্দের এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি নিয়ে বাসায় ফিরলাম। সব শুনে কাকা সান্ত্বনা দিলেন যে মিশনে না হলে উনার বাসাতেই থেকে কলেজ করতে পারব। তাই মিশনে না হলেও থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। ওদিকে আবার আমার দিকের লোকজন চায় না যে এই কাকার বাসায় থেকে পড়াশোনা করি। ইগো প্রবলেম! যা হোক, কাকা যখন পরে আমাদের এলাকার আরেক ছাত্রের মিশনে ভর্তির কথা শুনলেন, তখন ক্ষেপে গেলেন–ও তো অত ভালো ছাত্র না…তাহলে ও মনে হয় ওর কাকার সুপারিশে চান্স পেয়েছে…।

পরেরদিন কাকা নিজে লেগে গেলেন উনার পাওয়ারের দিব্বা খুলে। জানাশোনা অনেকরে বলে, তাদেরকে দিয়ে মিশনে কল করিয়ে, উনার কোন এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় মিশনে কাজ করেন, তাকে দিয়ে বলিয়ে, নিজে সাথে করে নিয়ে এসে প্রায় পুরো এক বছরের থাকা-খাওয়ার খরচ দিয়ে তার পরের দিন সকালে মিশনে ভর্তি করিয়ে দিয়ে গেলেন। যারা ভর্তি হতে পেরেছিল আগেই, তাদের নামের লিস্ট দেখে পরে বলছিলেন, সবগুলো টাকাওয়ালা হায়ার কাস্ট, আমরা লোয়ার কাস্ট বলে পাত্তা দিচ্ছিল না। সেবার মিশনে দুজন লোয়ার কাস্টের ছাত্র ছিল, তার মধ্যে আমি একজন।

মিশনে ভর্তি করিয়ে দিয়ে কাকা নিজের অফিসে নেমে গেলেন। ড্রাইভারকে বললেন আমরা যেখানে যেখানে যেতে চাই, সেখানে সেখানে নিতে যেতে। দুপুরে বাইরে খেয়ে বিকেলে কলেজে ভর্তি সম্পন্ন করে কাকাকে উনার অফিস থেকে পিক-আপ করে বিজয়ের হাসি নিয়ে বাসায় ফিরলাম।

মাঝখানে অনেকদিন সময় থাকলেও তারপর দিন বাড়ি ফিরেই আবার ঢাকা যাওয়ার জন্য মন ছটফট করছিল। কারণ ওখানে শার্লক হোমস্‌কে রেখে এসেছিলাম। তাছাড়া কলেজের বইপত্র কেনা, মিশনের থাকার জন্য যাবতীয় জিনিসপত্র কেনা–এটাও একটা ব্যাপার ছিল। বিকেলে এসব কেনাকাটা করতে বের হতাম, আর সারাদিন সোফায় শুয়ে গল্পের বই নিয়ে ডুবে থাকতাম।

[এই হলো মোটামুটি ভর্তির দিনগুলো। তবে এর মাঝে এক বালিকার একটু কাহিনী ছিল, তার কথা আরেকদিন হবে।]

ram-krishna-mission21
Category: পাল্লাব্লগTag: বিশু কর্মকার
Previous Post:রাজা-বাদশার গল্প
Next Post:এ যেন আরেক বাংলাদেশ

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top