ধার্মিকদের সাথে তর্কে যাওয়ার আগে নিজে কিছুক্ষণ ত্যানা প্যাঁচিয়ে ঠিক করে নেন যে তর্কে নামাটা উচিত হবে কিনা। না হলে পরে নিজেই ধার্মিকদের ত্যানা প্যাঁচানির তলে পড়ে দম বন্ধ হয়ে মারা পড়বেন।
যেমন ধরেন, মুসলমানদের সাথে তর্কে নামার আগে ত্যানা প্যাঁচিয়ে জেনে নেন–সে শুধু কোরান মানে, নাকি হাদিস-তাফিসীর-সীরাত–এসবেও বিশ্বাস করে। শুধু কোরান মানলে কার অনুবাদ মানে, কেন মানে, সেইটাই সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য অনুবাদ কিনা, হইলে কিসের ভিত্তিতে–এসব জেনে নেন। তারপর কোরানে যা আছে, তার মধ্যেই তর্ক-আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করেন। সে কোরানের বাইরে কোনো ব্যাখ্যা টেনে আনলে সাথে সাথে আলোচনা বন্ধ করেন, কারণ তালগাছবাদী-ত্যানা-প্যাচানো শুরু হয়ে গেছে।
তাফসীর বা শানে নুজুল লেখা হইছে হাদিস থেকে তথ্য নিয়ে। কোন আয়াত কবে কখন কিভাবে নাজিল হইছে, সেই আয়াতের ব্যাপারে নবী-সাহাবি-বিবিদের কী মত–এসব নিয়া একেকজন তাফসীর রচিয়তা নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে একেক রকম ব্যাখ্যা করছে। কিছু চালাক-চতুর তাফসীরকারী আবার ভেজাইল্যা আয়াতের মানে পুরাই ১৮০ ডিগ্রি পাল্টাইয়া দিছে। তাই এখন কার তাফসীর সহিহ, কেন সহিহ, সেটা নিয়ে আরেক প্রস্থ ত্যানা প্যাঁচান।
তাফসীর পছন্দ না হইলে সরাসরি হাদিস আসবে। এখানেও আগে ত্যানা প্যাঁচিয়ে সহিহ হাদিসের লিস্ট জেনে নিতে হবে। না হলে একবার তাদের জাল-হাদিসের জালে আটকা পড়ে গেলে সেই জাল আর ছাড়াইতে পারবেন না।
তারপর ধরেন নবীর চেহারা-চরিত নিয়ে তর্ক বা আলোচনায় গেলে সীরাত আসবে। আসা মাত্রই ত্যানা প্যাঁচাতে অবশ্যই ভুলবেন না, কারণ এইটা খুবই সেন্সিটিভ ইস্যু–কার সীরাত সহিহ এবং সর্বাপেক্ষা বেশি গ্রহণযোগ্য, ত্যানা প্যাঁচিয়ে সেটা নির্ধারণ করে তারপর ফুলের মত চরিত্র নিয়া টানাটানি শুরু করেন। এখানে ক্যাচাল লাগলে আবার হাদিসের সাহায্য নিতে পারেন। কারণ এইসব সীরাত, অর্থাৎ নবীর জীবনীগ্রন্থগুলাও লেখা হইছে হাদিস অবলম্বনেই।
এরপর কথা হবে ‘বোঝার ভুল’ নিয়া। আপনি ‘ভুল’ ধরলেই তারা ত্যানা প্যাঁচাবে যে, এসবই হচ্ছে আপনার ‘বোঝার ভুল।’ তাই মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে আরো কয়েক প্রস্থ স্পেশাল ত্যানা প্যাঁচিয়ে নেন যে, কোন ধরনের ভুলকে তারা “ভুল” বলে মেনে নিতে রাজি। সাংঘর্ষিক বা স্ববিরোধী ধর্মীয়-তথ্য-আয়াত-হাদিস? বৈজ্ঞানিক ভুল? কমনসেন্সের ভুল? হাস্যকর ভুল? ব্যাকরণগত ভুল? মোট কথা, ঠিক কী ধরনের ভুলকে তারা ভুল বলে মানতে রাজি, সেটা অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই জেনে নিতে হবে। এখানে কোনো ভুল করা চলবে না।
তারপর মনে রাখবেন, জাতীয় কবি কইয়া গেছেন–ধর্মগ্রন্থ সব মানুষের লেখা; আর জাতীয় নবী কইয়া গেছেন–মানুষ মাত্রই ভুল হয়। অর্থাত ভুল নাই এমন কোনো ধর্মগ্রন্থ নাই। তাই তর্কে নামার আগে আপনাকে অবশ্যই ধর্মগ্রন্থগুলো ভালো করে পড়তে হবে; নোট নিয়ে রাখতে হবে; ভুল-ভ্রান্তিগুলোকে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে; এসব ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে আপনার আগেও আরো অনেকেই ক্যাচাল করে গেছেন, সেখানে কী ধরনের যুক্তি-পালটা-যুক্তি আসছে, সেগুলা মাথায় রাখতে হবে; যুক্তি খণ্ডনের জন্য নিজের যুক্তি প্রস্তত রাখতে হবে; প্রশ্ন, পাল্টা প্রশ্ন, উত্তর, আবার পালটা প্রশ্ন রেডি রাখতে হবে। ছাগলদের ল্যাদানোর সুযোগ দেন। যত বেশি ল্যাদাইবে, তত বেশী ভুল করবে–ভুল করা মাত্রই সেখানে ছাই দিয়া চাইপা ধরেন।
আর অবশ্যই যেটা বেশি জরুরী–মাথা ঠাণ্ডা রাখা! সেই সাথে প্রচুর ধৈর্য এবং সময় হাতে নিয়ে তালগাছবাদীদের সাথে তর্কে নামতে হবে। মনে রাখবেন, তালগাছবাদীরা এসে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে–আমার ধর্মের একটা ভুল দেখান, আমি নাস্তিক হয়ে যাব–ভুলেও এই ধরনের কথায় চিড়া ভিজাবেন না। একটা কেন, আপনি হাজারটা ভুল দেখালেও এদের মধ্যে কোনো ভাবান্তর আসবে না যতক্ষণ না সে তার নিজের ধর্মের ভুল নিজে না ধরতে পারছে। তাই এসব তর্ক-বিতর্কে সহজে আউটপুট আসবে না। শেষে গালাগালি আসার সম্ভাবনা আছে ৯৯%। তবে গালাগালি অফ রাইখা এই কথা চালাচালি, তর্ক-বিতর্ক-আলোচনা–এসব চালাইয়া যাইতে পারলে এসব অন্যরা দেখবে, তারা হয়তো কিছুটা ভাবতে শিখবে। তাই এই ধরনের আলোচনা কখনোই ইনবক্সে করতে যাবেন না, পাবলিকে করেন। নাইলে পুরাই টাইম লস!আরেকটা টেকনিক্যাল বিষয়–এই ধরনের আলোচনায় “রিপ্লাই অপশন” ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ তার কমেণ্টের নীচে যদি “রিপ্লাই” দেন, তাহলে চতুর তালগাছবাদী হলে এক পর্যায়ে সে তালগাছ বগলে নিয়ে লেজ তুলে তার প্রথম-মূল কমেণ্ট ডিলিট দিয়ে পালাইতে পারে। তাতে আপনার সব কমেণ্টগুলাও ডিলিট হইয়া যাইবে।
একই কথা হিন্দুধর্মসহ আর সব ধর্মের ধার্মিকদের সাথে তর্কের সময়ও প্রযোজ্য। হিন্দুরা সবচেয়ে বেশি পিছলা হয়, তাই এদের সাথে তর্কে নামার আগে এককুলা ছাই পাশে রাখা অবশ্যই কর্তব্য।
আর অবশ্যই যেটা বেশি জরুরী–মাথা ঠাণ্ডা রাখা! সেই সাথে প্রচুর ধৈর্য এবং সময় হাতে নিয়ে তালগাছবাদীদের সাথে তর্কে নামতে হবে। মনে রাখবেন, তালগাছবাদীরা এসে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে–আমার ধর্মের একটা ভুল দেখান, আমি নাস্তিক হয়ে যাব–ভুলেও এই ধরনের কথায় চিড়া ভিজাবেন না। একটা কেন, আপনি হাজারটা ভুল দেখালেও এদের মধ্যে কোনো ভাবান্তর আসবে না যতক্ষণ না সে তার নিজের ধর্মের ভুল নিজে না ধরতে পারছে। তাই এসব তর্ক-বিতর্কে সহজে আউটপুট আসবে না। শেষে গালাগালি আসার সম্ভাবনা আছে ৯৯%। তবে গালাগালি অফ রাইখা এই কথা চালাচালি, তর্ক-বিতর্ক-আলোচনা–এসব চালাইয়া যাইতে পারলে এসব অন্যরা দেখবে, তারা হয়তো কিছুটা ভাবতে শিখবে। তাই এই ধরনের আলোচনা কখনোই ইনবক্সে করতে যাবেন না, পাবলিকে করেন। নাইলে পুরাই টাইম লস! আরেকটা টেকনিক্যাল বিষয়–এই ধরনের আলোচনায় “রিপ্লাই অপশন” ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ তার কমেণ্টের নীচে যদি “রিপ্লাই” দেন, তাহলে চতুর তালগাছবাদী হলে এক পর্যায়ে সে তালগাছ বগলে নিয়ে লেজ তুলে তার প্রথম-মূল কমেণ্ট ডিলিট দিয়ে পালাইতে পারে। তাতে আপনার সব কমেণ্টগুলাও ডিলিট হইয়া যাইবে। 👌 😆