লিখেছেন দ্রাক্ষা রস
জাতক নামক গাঁজাখুরি কাহিনী বৌদ্ধধর্মের প্রচলিত গৌতম বুদ্ধের অতীত জন্মকাহিনী হিসেবে। যেখানে নারীদেরকে দেওয়া হয়েছে যথেষ্ট অসম্মান এবং অপমান করা হয়েছে অত্যন্ত জঘন্যভাবে। কোনো ধর্মই নারীকে সম্মান দেয়নি, দিতে পারবেও না।
(সূত্র – মৃদুপানি জাতক )
কাহিনী পিতা ও কন্যার। পিতার ইচ্ছে ছিল কন্যার সাথে বিয়ে দেবেন নিজের আপন ভাগ্নের। তাই তিনি মেয়েকে ছোটবেলা থেকে সেই ভাগিনার সাথে একসাথে মানুষ করলেন। তারা জানতো, তাদের বিয়ে হবে। কিন্তু সময়ের সাথে পিতার মনের পরিবর্তন হয়ে গেলো। এবং ভাগ্নের সাথে মেয়ের সকল বন্ধুত্ব-ভাব-ভালবাসা এক হুকুমে বন্ধ করে দিলেন (বাংলা সিনেমার গন্ধ পাই!!) মেয়ে ধাত্রী মায়ের সাহায্যে দেখা করলো প্রেমিকের সাথে। মেয়ে ছিল বাপের চেয়ে চালু মাল। মেয়ে এক রাতে বাপকে বোকা বানিয়ে রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়ে যায় সেই হাঙ্ক-এর সাথে।
মেয়ের পলায়নের সংবাদ শুনে রাজা বললেন, নারী অরক্ষণীয়া, নারী চরিত্র উপলব্ধির অগম্য, বোঝা দুষ্কর! (নিজের মেয়ে সম্পর্কে এই মন্তব্য পিতার!)
এখন ঘটনা হল, সেই রাজা ছিলেন গৌতম বুদ্ধ এবং সেই ভাগিনা গৌতম বুদ্ধের অনুসারী সন্ন্যাসীদের মধ্যে একজন। যে উতলা হয়েছিল তার গৃহী জীবনে ফেলে আসা স্ত্রীর জন্য, বুদ্ধ তাকে ঠাণ্ডা করার জন্য এই কাহিনী শুনিয়ে নিবৃত্ত করেছিলেন। নির্বাণের পথে ঠেলা মেরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন !
নারীদের হেয় করা হয়েছে অরক্ষণীয়া বলে। পিতার সিদ্ধান্ত অমান্য করাকে মেয়েদের কু-প্রবৃত্তি বলা হয়েছে। অথচ পিতার দোষ হয়নি , প্রেমিক পুরুষের দোষ হয়নি। পিতা মেয়েকে এক ছেলের সাথে ছোটবেলা থেকে বড় করলেন সেই ছেলের সাথে তাকে বিয়ে দেবেন বলে (মেয়ের জীবনের পিতার পর দ্বিতীয় পুরুষ ছিল সেই ছেলে), পূর্ণ যৌবনে তাদের মধ্যে প্রেম এলে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন পিতা। (শালার জালিম!) প্রেমিক পুরুষের সিদ্ধান্তে মেয়ে সম্মত হলে দোষের ভাগীদার হতে হল সেই মেয়েকে। ভিক্ষু গৃহী জীবন ছেড়ে সন্ন্যাস জীবনে এসে স্ত্রীর জন্য কাতর হয়েছে, তাও দোষ হয়েছে নারীর!
নারীকে এরকম সম্মান দিয়ে বৌদ্ধধর্ম শ্রেষ্ঠ হওয়ার গৌরব নিতে চায়! মানুষকে এখনো হাজার বছর আগের বেকুব ভেবেছে! এ ধরনের অপমানজনক কথাবার্তা একজন মহাপুরুষ কীভাবে বলতে পারে?
নারীকে যদি পুরুষরা বুঝতে না পারে, সেটা তাদের ব্যর্থতা, মহাপুরুষের ব্যর্থতা, ধর্মের ব্যর্থতা!
Leave a Reply