[হাতে যে ডায়েরিটা পেয়েছি, তার শুরুটা অক্টোবরের ১১ থেকে। অক্টোবরের ৩১ পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু লেখা নেই। শুধু উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর কথা এবং তারিখ উল্লেখ করা। ঘটনাগুলো একটু বিস্তারিত শুনে তারপর এই সময়টার ঘটনা পরের পোস্টে সাজিয়ে লেখার চেষ্টা করব।
বিস্তারিত লেখা, সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকে। তবে প্রথম পাতাটা হিজিবিজি করে কালিতে কেটে দেয়া। অনেক চেষ্টা করেও লেখাগুলো উদ্ধার করতে পারিনি। বিশুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কী লেখা ছিল। সে বলল, মনে নেই। নাকি ইচ্ছে করে এড়িয়ে গেল, বুঝতে পারলাম না। যাহোক, সেপ্টেম্বরের এক তারিখের থেকে শুরু করা যাক–]
সেপ্টেম্বর ০১, বুধবার
খুব ভোরে এক সহপাঠীর ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। বোধ হয় তখন ৪:৩০/৫:০০ AM. উঠে হাত-মুখ ধুয়ে জীবনে ২য় বারের মত ধুতি-পাঞ্জাবি পরলাম। ১ম বার পরেছি গতকাল সন্ধ্যায়। ২য় বর্ষের এক ছাত্র প্রথমবার ধুতি পরা শিখিয়ে দেন। ৫:১৫ AM-এ প্রার্থনায় গেলাম। প্রার্থনা শেষে ফিরে এসে পুনরায় পায়জামা ও গেঞ্জি পরলাম। ৭:00 AM-এ নাস্তা। ৭:৪৫ AM-এ কলেজের পথে পা বাড়ালাম। ৮:০০ AM-এ কলেজে গেটে পৌঁছলে কলেজের পুরাতন ছাত্ররা স্বাগত জানালেন, এবং বললেন, অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। হাতে ‘নবীনবরণ’ অনুষ্ঠানের সূচিপত্র ধরিয়ে দিয়ে কোন পথে যেতে হবে, দেখিয়ে দিলেন। সূচিপত্র ছিল এরকম :
প্রথম পর্ব :
সকাল : ৮:০০ – জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলন।
৮:০৫ – সভাপতির মঞ্চে আসন গ্রহণ।
৮:০৩ – পুষ্পিত আবাহন।
৮:১৫ – অধ্যক্ষের ভাষণ।
৮:২৫ – ছাত্রদের পক্ষ থেকে আবাহনী বক্তব্য।
৮:৩০ – শিক্ষক পরিচিতি।
৮:৩৫ – কলেজ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মীবর্গ ও স্টাফদের পরিচিতি।
৮:৪০ – শিক্ষা-বহির্ভূত কার্যক্রমের পরিচিতি।
৮:৪৫ – শিক্ষকদের পক্ষ থেকে স্বাগত ভাষণ।
৮:৫৫ – কলেজ প্রশাসনিক সেক্রেটারীর ভাষণ।
৯:০০ – নবাগত ছাত্রদের পক্ষ থেকে বক্তব্য।
৯:০৫ – শপথ গ্রহণ।
৯:১০ – ধন্যবাদ জ্ঞাপন।
শপথ বাণীটি ছিল এরকম :
‘আমি শপথ করিতেছি যে, আজ হইতে আমি নিজেকে নটরডেম পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য করিব। আমি কলেজের নিয়মনীতি শ্রদ্ধার সঙ্গে মানিয়া চলিব, পড়াশোনায় মনোযোগী হইব, শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রী ও প্রশাসক মণ্ডলীর বাধ্য থাকিব, সহপাঠীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করিব। আমি আমার জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব ও নৈতিকগুণাবলী বিকাশে সচেষ্ট থাকিব এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়িয়ে তুলিব।
কলেজ ও কলেজের বাহিরে আমি নম্র, ভদ্র ও শিষ্টাচারী হইব। আনি এমন কিছু করিব না যার ফলে কলেজের সুনাম নষ্ট হয় বা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়।
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তা আমার এই প্রতিজ্ঞা পালনে বিশ্বস্ত থাকতে আমাকে সাহায্য করুন।’
দ্বিতীয় পর্ব :
৯:১০ – সূর্যোদয়ের শপথ।
তৃতীয় পর্ব :
১০:০০ – ঘোষণা।
১০:০৫ – ছাত্রদের শ্রেণীকক্ষে গমন, শিক্ষকদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য।
১০:১৫ – কলেজ পরিদর্শন।
সকল কর্মকাণ্ড খুব আনন্দের সহিত উপভোগ করলাম। ১২:৩০ PM-এ মিশনে ফিরে হাত-মুখ ধুয়ে খেতে গেলাম। অতঃপর অন্যান্যদের সাথে একটু গল্পগুজব করে বিশ্রাম—। ৫:০০ PM-এর পর হাত-মুখ ধুয়ে মিশনের অভ্যন্তরে একটু হাঁটাচলা করলাম। সন্ধ্যার আগে আবার হাত-মুখ ধুয়ে প্রার্থনায় গেলাম। প্রার্থনা শেষে ফিরে এসে অনেকক্ষণ গল্পগুজব করে ৯:০০ PM-এ খেতে গেলাম। ৯:৪৫ PM-এ এম মহারাজ আমাদেরকে নানা বিষয়ে উপদেশ দিলেন ১০:৩০ PM পর্যন্ত। অতঃপর রুমে এসে লেখা শুরু করলাম।
এখন ১২:৩০ AM.
Leave a Reply