• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

পবিত্রতার পাঠ : (ধমাধমের স্বভাববিরুদ্ধ একটি আঁতলামি)

You are here: Home / চুতরাপাতা / পবিত্রতার পাঠ : (ধমাধমের স্বভাববিরুদ্ধ একটি আঁতলামি)
February 19, 2014

ইউরোপে ঠাণ্ডার মধ্যে যখন ফুটবল খেলা হয়, প্রায়ই দেখা যায় প্লেয়াররা হ্যাণ্ড গ্লোভস পরে খেলতে নামছে। সাধারণত হাত পা এবং কান দিয়ে তাপ বের হয়ে শরীর আরো ঠাণ্ডা বানিয়ে দেয়। তাপ বেরিয়ে গিয়ে শরীর যাতে ঠাণ্ডা না হয়ে যায়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।

“গ্লোবাল ওয়ার্মিং” মনে হয় উলটা পথে হাঁটা শুরু করছে। আমেরিকায় বুড়াবুড়িরা মরার আগে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকার আশায় শেষ সম্বল নিয়ে নাকি অপেক্ষাকৃত উষ্ণ স্টেট ফ্লোরিডায় পাড়ি জমায়। এখানে সারা বছরই তাপমাত্র সহনীয় পর্যায়ে থাকে। সেই ফ্লোরিডাতেও নাকি এখন প্রায়ই বরফ পড়ছে।

আমাদের দেশেও শীতের প্রকোপ বছর বছর বাড়ছে। এই কারণে বেশী ঠাণ্ডা পড়লে আমি আগে মোজা পরি। বাইরে বের হলে মাফলার দিয়ে ভালো করে কান ঢাকি। জলীয় আবহাওয়া বলে মাফলার দিয়ে মাথাটাও ঢাকি; দরকার হলে চাদরটাও মাথার উপর টেনে দেই। হাত চাদরের ভিতরেই থাকে।

আমাদের দেশে মনে হয় না এত ঠাণ্ডা ছিল। এই সেদিনও উত্তম কুমারের দেখাদেখি আমাদের নায়ক রাজও ইন করে প্যাণ্ট-শার্ট পড়লেও পায়ে থাকত স্যাণ্ডেল। জুতা পড়া মানুষ খুব কমই দেখা যেত। এখন প্রায় বারো মাসই রাস্তাঘাটে প্রচুর জুতা পড়া মানুষ দেখা যায়। সেই সাথে শীতে শুধু চাদরে হচ্ছে না, বাড়তি গরম পোশাকেরও দরকার হচ্ছে।

এতক্ষণ যা প্যাচাল পড়লাম, পুরাটাই ভূমিকা। ভূমিকা হয়তো আরো বাড়তে পারত। কিন্তু… যাক সে কথা। এবার প্রসঙ্গে আসি–

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সাথে হয়তো শরীর এবং পোশাক-আশাকের সম্পর্ক থাকতে পারে, কিন্তু “পবিত্রতা”র সাথে পোশাক-আশাকের সম্পর্কটা কিভাবে আসে, সেটা অনেক ভেবেও বুঝে উঠতে পারিনি। পবিত্রতা হলো মনের ব্যাপার। গীর্জা, মন্দির, মসজিদ–দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষের কাছে তিনটা পবিত্রতম স্থান। গীর্জার মালিকানা ইউরোপিয়ানরা নিয়ে নিয়েছে। তাদের ঠাণ্ডার দেশ। জুতা ছাড়া ঘরের বাইরে এক পাও ফেলা এদের পক্ষে সম্ভব নয়। পবিত্রতার সাথে সম্পর্ক মনের–এই তত্ত্বে বিশ্বাসী হয়ে অথবা ঠাণ্ডার দেশের মানুষ হয়ে বাধ্য হয়েই এরা গীর্জায় জুতাসহ প্রবেশ অনুমোদন করে দিয়েছে।

ইউরোপের তুলনায় আরব ঠাণ্ডা না হলেও সেখানে মরুভূমির বালুর উত্তাপ থেকে রক্ষা পেতে হয়তো জুতার প্রচলন ছিল। কিছু হাদিস থেকে জানা যায়, ইহুদীরা জুতা বা চামড়ার মোজা পরে নামাজ পড়ত না। হয়তো ঘরের মধ্যে তাদের দরকার হত না বলেই তাই। নবীর ইসলাম ধর্ম প্রচারের একটা অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শুধু ইহুদিদের প্রভাবমুক্ত হওয়াই নয়, তাদের থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ ইহুদিরা যা করবে, মুসলমানরা করবে তার বিপরীত। হাদিস থেকে জানা যায়, নবী আদেশ দিয়েছিলেন, যেহেতু ইহুদিরা নামাজ পড়ার সময় জুতা পড়ে না, সেহেতু মুসলমানরা জুতা পড়েই নামাজ পড়বে এবং মসজিদে এসে জুতা উলটিয়ে দেখে নিতে বলেছেন যদি জুতায় ময়লা থাকে তবে তা মাটির সাথে ঘষে সাফ করে নিতে হবে। এর পর মুসলমানরা কিভাবে জুতা ছাড়াই ইহুদিদের মত নামাজ পড়া শুরু করল, সেটা নিয়ে আলাদা গবেষণা হতে পারে। তবে আমার মনে হয় যেহেতু অধিকাংশের জুতাই ছিল না (অনলাইনে মাঝে মাঝে নবীর এক পাটি স্যাণ্ডেল মুবারকের ছবি দেখা যায়। তা-ও নাকি বহুত কাহিনী করে বানানো হয়েছিল। সেখানে অধিকাংশ গরিব মানুষের জুতা না থাকাটাই স্বাভাবিক।), তাই তাদের জুতা ছাড়া নামাজের ব্যাপারটাই বেশি প্রচলন হয়ে যায়, ঠিক যেমনটি হয়েছে ভারত উপমহাদেশে হিন্দুদের বেলায়।

ভারত উপমহাদেশও গরমের দেশ। এখানে এখনো প্রচুর লোক পাওয়া যায় যারা জুতা তো দূরের কথা, জীবনে কোনোদিন স্যাণ্ডেল পড়েছে কিনা, তাও সন্দেহ। প্রাচীন কালে শুধু উচ্চ শ্রেণীর মুনি-ঋষিদের মধ্যে কাঠের খড়মের প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। এর বাইরে আর কেউ পাদুকা ব্যবহার করত বলে জানা যায় না। তাছাড়া নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দরকারও বোধহয় হত না। তাই মন্দির-মসজিদে আলাদা ভাবে জুতার ব্যবহার নিয়েও তেমন উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় না। এটা এমনিতেই প্রচলন হয়ে গেছে। শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছনতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। যদিও এখন নিয়ম করে দেয়া হয়েছে যে এসব জায়গায় পাদুকা নিষিদ্ধ।

শুধু মন্দিরের ভিতরেই নয়, মন্দিরের বাইরেও কোনো অনুষ্ঠান (নাচ, গান) হলে কাউকে জুতা পড়তে দেখা যেত না। প্রণাম করার সময়ও সবাই জুতা খুলে প্রণাম করত। এখন খেয়াল করে দেখবেন, জুতা পড়েই নাচগান চলছে; প্রণাম করতে গেলেও অনেকে জুতা খোলে না। মসজিতে নামাজ পড়তে গেলেও অনেকে জুতা চুরি যাওয়ার ভয়ে জুতা কাছে রেখেই নামাজ পড়ে। আবার অনলাইনে মাঝে মাঝে দেখা যায় শীত প্রধান অঞ্চলে রাস্তায় নামাজ পড়ার সময় অনেকে জুতা পড়েই নামাজ পড়ছে।

যা বলছিলাম, পবিত্রতার সাথে হলো মনের সম্পর্ক আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সাথে শরীর এবং পোশাক-আশাকের। প্রার্থনাস্থলে ঢুকে কুচিন্তা-কুভাবনা, অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা, বিষয়-সম্পত্তির চিন্তা–এগুলোই মনকে অপবিত্র করে দেয়। প্রসঙ্গক্রমে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ল–রামকৃষ্ণ নাকি মন্দিরের মধ্যে রানী রাসমনির গালে চড় মেরেছিলেন কারণ রানী নাকি মন্দিরে বসেও বিষয়-সম্পত্তির চিন্তায় মগ্ন হয়ে ছিলেন।

আমি বলছি না যে গীর্জায় জুতা পড়ে ঢোকার অনুমতি আছে বলে মন্দির-মসজিদেও জুতা পড়েই ঢোকা হোক। কিন্তু ভাবনার বিষয়, যেখানে আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে আচার-অনুষ্ঠান-প্রথা গড়ে উঠছে, দিন দিন অনেক আচার-অনুষ্ঠানের পরিবর্তন হচ্ছে, সেখানে পবিত্রতার দোহাই দিয়ে আমরা আর কতদিন এই জুতা না পড়ে মন্দির-মসজিদ পবিত্র রাখার প্রথা চালু রাখতে পারব! একই কথা খাটে শহীদ মিনারের মত পবিত্র জায়গাগুলোর ক্ষেত্রেও।

Category: চুতরাপাতাTag: মন্দির, মসজিদ
Previous Post:নোয়ার ফুটোবহুল গল্প
Next Post:হুজুরের দরবারে একদিন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top