লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭
বিশিষ্ট আদি মুসলিম ঐতিহাসিকদের মতে, আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মদিনায় হিজরত করেন সেপ্টেম্বর ২৪, ৬২২ সালে (১২ ই রবি আল-আউয়াল)। মদিনায় বহিরাগত মুহাম্মদ ও তাঁরই নির্দেশে মদিনায় হিজরতকারী বহিরাগত মক্কাবাসী অনুসারীদের (মুহাজির) জীবিকাহীন পরনির্ভর চালচুলাহীন বেকার জীবন। তারা ছিলেন সম্পূর্ণভাবে মদিনা-বাসী মুহাম্মদ অনুসারীদের (আনসার) স্বল্প আয়ের ওপর নির্ভরশীল! অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ! এমত পরিস্থিতিতে দলপতি মুহাম্মদের নেতৃত্বে জোরপূর্বক অপরের সম্পত্তি লুণ্ঠনের মাধ্যমে পার্থিব উপার্জন ও ভোগ-দখলের “মুহাম্মাদী ঐশী ফর্মুলার মন্ত্রে” মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা ক্রমান্বয়ে জড়িত হয়ে পরে। প্রথমে রাতের অন্ধকারে বাণিজ্য-ফেরত কুরাইশ কাফেলার ওপর অতর্কিত হামলা করে তাদের মালামাল লুণ্ঠন এবং পরবর্তীতে মদিনার ধনী ইহুদি গোত্র এবং তাঁর বশ্যতা অস্বীকারকারী চারপাশের অন্যান্য অমুসলিম জনপদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে তাদের সমস্ত সম্পত্তি মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা লুণ্ঠন করেন। সেই লুণ্ঠিত উপার্জন সামগ্রী মুহাম্মদ নিজে গ্রহণ করেন ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে তাঁরই আবিষ্কৃত এক বিশেষ নিয়মে ভাগাভাগি করে দেন। ভাগ-বাটোয়ারার সেই বিশেষ নিয়মটি হলো:
১) “হামলা–লব্ধ” লুণ্ঠিত উপার্জন সামগ্রী
৮:৪১ – আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু–সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনিমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্মীয়–স্বজনের জন্য এবং এতীম–অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; —
>>> দলপতির অধিকার বলে আল্লাহর নবীর জন্য বরাদ্দ কৃত হিস্যা এক-পঞ্চমাংশ। আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর এই “পার্থিব উপার্জনপন্থা”-কে ন্যায্যতা দিয়েছেন ঐশী বাণীর সহায়তায়! মহানবী মুহাম্মদ তাঁর হিস্যার এই অংশ প্রথমেই গ্রহণ করেন (“সাফি”), তারপর বাকি চার-পঞ্চমাংশ হামলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য অনুসারীদের মধ্যে করেন বণ্টন। লুণ্ঠিত যাবতীয় সম্পদের এক-পঞ্চমাংশ নবীর জন্য সংরক্ষণ করা তাঁর অনুসারীদের জন্য অবশ্য কর্তব্য (৮:৪১), আল্লাহর নবীর অনুপস্থিতিতে তাঁর অনুসারীরা “নবীর এই অধিকার” কে প্রথমেই রাখে সংরক্ষিত। তারপর বাকি চার-পঞ্চমাংশ হামলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য অনুসারীদের মধ্যে হয় ভাগাভাগি।
২) “বিনা হামলায়” লুণ্ঠিত উপার্জন সামগ্রী [Fai]
৫৯:৬–৮ – আল্লাহ বনু–বনুযায়রের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যে ধন–সম্পদ দিয়েছেন, তজ্জন্যে তোমরা ঘোড়ায় কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি, কিন্তু আল্লাহ যার উপর ইচ্ছা, তাঁর রসূলগণকে প্রাধান্য দান করেন। —- আল্লাহ জনপদ–বাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়–স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। —এই ধন–সম্পদ দেশত্যাগী নিঃস্বদের জন্যে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টিলাভের অন্বেষণে এবং আল্লাহ তাঁর রসূলের সাহায্যার্থে নিজেদের বাস্তুভিটা ও ধন–সম্পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছে। তারাই সত্যবাদী।
>>>”আল্লাহ” কী লুটের মালের ভাগ নেন? পুরোটাই (“Fai”) মুহাম্মদ ও তাঁর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য।[ 1] নৃশংস সন্ত্রাসী কায়দায় আকস্মিক হামলায় (Raid) অবিশ্বাসীদের পরাস্ত, খুন অথবা বিতাড়িত করে তাদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠিত ও করায়ত্ত করে সেই সম্পদের অধিকারী হওয়া ১০০% বিশুদ্ধ হালাল উপার্জন! পরাজিত জনগোষ্ঠীর সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিই শুধু নয়, তাদেরকে বন্দী করে দাস ও দাসীতে পরিণত করে মহানবী মুহাম্মদ তা নিজে গ্রহণ করেন ও হামলায় অংশগ্রহণকারী অনুসারীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেন। ইসলামের পরিভাষায় এই দাসীরা হলেন বিজিত মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীর দক্ষিণ হস্তের অধিকার। তাদের সাথে যৌনসম্ভোগের অবাধ অধিকার মুহাম্মাদী (ইসলামী) বিধানে সম্পূর্ণ নৈতিক! পিতা–মাতা–ভ্রাতা–স্বামী–শ্বশুর ও অন্যান্য আত্মীয়–স্বজনদের খুন কিংবা পরাস্ত করে বন্দী অসহায় এ সকল ধৃত “গণিমতের মালগুলোকে” মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের যৌনকার্যে ব্যবহার করে পার্থিব যৌনসুখানুভূতি চরিতার্থ করেন।
জোরপূর্বক অপরের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি লুণ্ঠন ও আত্মসাতের মাধ্যমে ধনী হওয়া এবং একই সঙ্গে পরাজিত জনগোষ্ঠীর জায়া, কন্যা, ভগিনী, মা ও বোনদের সাথে যৌনসুখানুভূতির লালসাকে চরিতার্থ করার অবাধ সুযোগের ব্যবস্থা আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর ঐশী বাণীর মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। মুহাম্মদের ভাষায়,
৮:৬৯–সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে|
২৩:৫-৬ – এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।
৩৩:৫০ – হে নবী! আপনারজন্য আপনারস্ত্রীগণকে হালালকরেছি, যাদেরকেআপনি মোহরানাপ্রদান করেন।আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন। —
৪:২৪ – —এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়– এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম।[Also (forbidden are) women already married, except those (captives and slaves) whom your right hands possess].
>>> রাতের অন্ধকারে ওৎ পেতে অতর্কিতে কুরাইশ বাণিজ্য-কাফেলার ওপর হামলা ও আরোহীদের হতাহত ও খুনের মাধ্যমে তাদের বাণিজ্য-সামগ্রী লুণ্ঠন (ডাকাতি) এবং জীবিত আরোহীদের ধরে নিয়ে এসে তাদের প্রিয়জনদের কাছ থেকে অর্থ-প্রাপ্তির বিনিময়ে (মুক্তিপণ) ছেড়ে দেয়ার লাভজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শুরুতে শুধু মদিনায় বহিরাগত মুহাজিররাই জড়িত ছিল। নাখলায় মুহাজিরদের সফল ডাকাতির পর (বিস্তারিত পরের পর্বে), পরবর্তীতে আনসাররাও মুহাজিরদের সাথে “জীবিকা উপার্জনের এই সুবর্ণ ঐশী ফর্মুলায়”আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। ক্রমান্বয়ে সহায়-সম্বল ও জীবিকাহীন বহিরাগত এ সকল মুহাজির ও স্বল্প-আয়ের অসচ্ছল মদিনাবাসী আনসাররা মদিনার ইহুদি ও পরিপার্শ্বের সমস্ত অমুসলিম জনপদের ওপর হামলা ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে অল্প সময়েই পার্থিব সচ্ছলতার অধিকারী হন।
মুহাম্মদ তাঁর মদিনায় হিজরতের অল্প কিছুদিন পরেই জীবিকার প্রয়োজনে কীভাবে তাঁর এই সন্ত্রাসী নবযাত্রা শুরু করেছিলেন, তা নিবেদিতপ্রাণ আদি মুসলিম ঐতিহাসিকরা তাঁদের লিখিত মুহাম্মদের জীবনী গ্রন্থে (সিরাত) অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় লিপিবদ্ধ করেছেন। বিশিষ্ট আদি মুসলিম ঐতিহাসিক মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ সাল) [2], আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ বিন ওমর ইবনে ওয়াকিদ আল আসলামি [সংক্ষেপে, আল ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ সাল)], মুহাম্মদ ইবনে সা’দ (৭৮৪-৮৪৫ সাল) এবং আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে জারির আল তাবারীর [সংক্ষেপে, আল তাবারী (৮৩৮ -৯২৩ সাল)] বর্ণনা অনুযায়ী সেই ঘটনাগুলো ছিল নিম্নরূপ। [3] [4] [5]
নাখলা পূর্ববর্তী সাতটি ব্যর্থ হামলার সংক্ষিপ্তসার
রাতের অন্ধকারে বাণিজ্য-ফেরত কুরাইশ কাফেলার উপর অতর্কিত হামলা করে তাদের মালামাল লুণ্ঠনের অভিযান মুহাম্মদ শুরু করেছিলেন তাঁর মদিনা আগমনের মাস সাতেক পরেই! তিনি সর্বপ্রথম যে দলটি পাঠান, তা ছিল তাঁর সমবয়সী চাচা হামজার নেতৃত্বে। ইতিহাসের পাতায় তার নাম “সিফ-আল বদর”।পরবর্তীতে মুহাম্মদ ও মুহাজিরদের দ্বারা আরও পর পর সাতটি অনুরূপ ডাকাতি চেষ্টা চলানো হয়। সবগুলোই হয় ব্যর্থ! অষ্টমবারের হামলায় আসে সফলতা, নাখলা নামক স্থানে। ইসলামের ইতিহাসে তা “নাখলা অভিযান” নামে অভিহিত। কোনো মদিনাবাসী মুহাম্মদ অনুসারীই (আনসার) এই আটটি হামলার কোনটিতেই অংশগ্রহণ করেনি। নাখলা পূর্ববর্তী সাতটি ব্যর্থ হামলাগুলো ছিল নিম্নরূপ [ক্রমানুসার ও সময় (সাল ও তারিখ) এর ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে মত পার্থক্য আছে।]:
১) সিফ-আল বদর অভিযান – নেতৃত্বে ছিল হামজা, মার্চ-৬২৩ সাল
“হিজরতের সাত মাস পরের ঘটনা। তারিখটি ছিল মার্চ, ৬২৩ সাল। আল্লাহর নবী হামজা বিন আবদ আল-মুত্তালিবের নেতৃত্বে ৩০ জন মুহাজিরের এই দলটিকে পাঠান। এই দলে কোনো আনসারই জড়িত ছিল না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কুরাইশদের বাণিজ্য ফেরত কাফেলা আক্রমণ ও পাকড়াও করা। আবু জেহেলের নেতৃত্বে ৩০০ জন কুরাইশ দলের একটি বাণিজ্য কাফেলার মুখোমুখি হয় হামজা ও তার দল। মজিদ বিন আমর আল যুহানী তাদের মাঝখানে হস্তক্ষেপ করে এবং দল দুইটি বিনা যুদ্ধেই বিযুক্ত হয়ে যায়”।
২) রাবী অভিযান – নেতৃত্বে ছিল উবাইদা বিন আল-হারিথ, এপ্রিল, ৬২৩ সাল
“হিজরতের আট মাস পরের ঘটনা। তারিখ টি ছিল এপ্রিল, ৬২৩ সাল। আল্লাহর নবী উবাইদা বিন আল-হারিথ বিন আবদ আল-মুত্তালিব বিন আবদ মানাত এর নেতৃত্বে ৬০ জন মুহাজিরের এই দলটিকে পাঠান। একজন আনসার ও এই হামলায় জড়িত ছিল না। তারা আহিয়া (Ahya) নামক এক জলসেচনের স্থানে কুরাইশদের সম্মুখীন হয়। তারা একে অপরকে লক্ষ্য করে তীর নিক্ষেপ করে, কিন্তু কোনো হাতাহাতি যুদ্ধ হয়নি। কুরাইশদের এই বাণিজ্য কাফেলা দলের নেতৃত্বে কে ছিল, এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। আনেকে বলেন আবু সুফিয়ান বিন হারব ছিলেন নেতৃত্বে, অন্যরা বলেন নেতৃত্বে ছিলেন মিখরাজ বিন হাফস। আল ওয়াকীদির মতে কুরাইশদের এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন আবু সুফিয়ান বিন হারব এবং তাঁর দলে ছিল ২০০ জন কুরাইশ”।
৩) আল খাররার অভিযান – নেতৃত্বে ছিল সা‘দ বিন আবি ওয়াককাস
“এই বছর (হিজরতের প্রথম বর্ষ) জিল–হজ মাসে আল্লাহর নবী সা‘দ বিন আবি ওয়াককাসকে একটি সাদা ব্যানারসহ আল খহাররার অভিযানে পাঠান। সা‘দের দলের সবাই ছিল মুহাজির।
আবু বকর বিন ইসমাইল < তার পিতা < আমির বিন সা‘দ < তার পিতা (সা‘দ বিন আবি ওয়াককাস) হতে বর্ণিত:
আমি ২০-২১ জনের একটি দলকে নিয়ে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছিলাম। যাত্রার পঞ্চম দিন সকালে আল খাররার পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত আমরা দিনের বেলায় আত্মগোপন করে থাকতাম এবং রাত্রি বেলা পুনরায় যাত্রা শুরু করাতাম। আল্লাহর নবী আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন আমি যেন আল খাররার অতিক্রম না করি। কিন্তু আমাদের আল খাররার পৌঁছার এক দিন আগেই বাণিজ্য কাফেলা টি আল খাররার অতিক্রম করে। সেই কাফেলার দলে ৬০ জন লোক ছিল”।
৪) আল আবওয়া অভিযান – নেতৃত্বে ছিলেন মুহাম্মদ, আগস্ট ৬২৩ সাল
“হুমায়েদ < সালামাহ বিন আল ফদল < মুহাম্মদ বিন ইশাক হতে বর্ণিত:
আল্লাহর নবী ১২ই রবি আল-আউয়াল তারিখে (সেপ্টেম্বর ২৪, ৬২২ সাল) মদিনায় আসেন এবং সেখানে তিনি — জিল-হজ, যে মাসে পৌত্তলিকদের (Polytheist) তত্বাবধানে তীর্থ যাত্রা সম্পাদিত হয়, ও মহরম মাস পর্যন্ত অবস্থান করেন। হিজরতের প্রায় ১২ মাস পর সফর মাসে (যার শুরু হয়েছিল অগাস্ট ৪, ৬২৩ সালে) তিনি কুরাইশ এবং বানু দামরাহ বিন বকর বিন আবদ মানাত বিন কেনানা গোত্রকে আকস্মিক হামলার (Raid) উদ্দেশ্যে ওয়াডেন পর্যন্ত বিচরণ করেন। এটি ছিল আল আবওয়া অভিযান। তারপর বিনা যুদ্ধেই আল্লাহর নবী মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং সেখানে তিনি সফর মাসের অবশিষ্ট সময় ও রাবি আল-আউয়াল মাসের শুরুর দিনগুলি পর্যন্ত অতিবাহিত করেন”।
৫) প্রথম বদর (সাফওয়ান) অভিযান – নেতৃত্বে মুহাম্মদ, সেপ্টেম্বর ৬২৩ সাল
“এর আগে রবি আল-আউয়াল মাসে (যার শুরু হয়েছিল সেপ্টেম্বর ২, ৬২৩ সাল) তিনি (মুহাম্মদ) মুহাজিরদের দলপতি রূপে কুরজ বিন যাবির আল-ফিহিরের পশ্চাদ্ধাবনের উদ্দেশ্যে অভিযানে বের হোন। এই লোকটি মদিনায় আল জুমা তৃণভূমির একদল পশুকে ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল। আল্লাহর নবী তার পশ্চাদ্ধাবনে বদর প্রান্তের সাফয়ান নামক এক উপত্যকা পর্যন্ত গমন করেন। কিন্তু কুরজ তাঁকে সুকৌশলে এড়িয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এটি ছিল প্রথম বদর অভিযান (যাকে সাফওয়ান অভিযান ও বলা হয়)”।
৬) বুওয়াত অভিযান – নেতৃত্বে মুহাম্মদ, অক্টোবর ৬২৩ সাল
“আল্লাহর নবী রবি আস-সানি মাসের (যার শুরু হয়েছিল অক্টোবর ২, ৬২৩ সাল) কুরাইশদের অনুসন্ধানে অভিযানে বের হোন। তিনি রাদওয়া অঞ্চলের বুওয়াত পর্যন্ত অগ্রসর হোন এবং বিনা যুদ্ধেই প্রত্যাবর্তন করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল উমাইয়া বিন খালফের নেতৃত্বে আগত বাণিজ্য কাফেলার যাত্রাপথ আক্রমণ করা। কুরাইশদের এই কাফেলায় ১০০ জন লোক ও ২৫০০ টি উট ছিল।”
৭) আল উশায়েরা অভিযান – নেতৃত্বে মুহাম্মদ, অক্টোবর ৬২৩ সাল
“তিনি রবি আল-আখির (রবি উস-সানি) মাসের পরবর্তী দিন গুলি এবং জুমাদা আল-উলা (যার শুরু হয়েছিল অক্টোবর ৩১, ৬২৩ সাল) মাসের কিয়দংশ পর্যন্ত মদিনায় অবস্থান করেন। তারপর কুরাইশদের সন্ধানে আর একটি অভিযানে –আল উশায়েরা পর্যন্ত পৌঁছানোর পর যাত্রাবিরতি দেন। তিনি মুহাজির দলের অধিপতি রূপে সিরিয়া হতে প্রত্যাবর্তনকারী এক কুরাইশ বাণিজ্য কাফেলার উপর অতর্কিত হামলার নেতৃত্বে ছিলেন। এটি ছিল আল-উশায়েরাহ অভিযান এবং এই অভিযানে তিনি ইয়ানবু পর্যন্ত যাত্রা করেন। তিনি সেখানে জুমাদা আল-উলা মাসের পরবর্তী দিন গুলি ও জামাদ উস-সানি মাসের (যার শুরু হয়েছিল নভেম্বর ৩০, ৬২৩ সাল) অল্প কিছু দিন অবস্থান করেন। তারপর তিনি বিনা সংঘর্ষেই মদিনা প্রত্যাবর্তন করেন।”
– অনুবাদ (ও নম্বর যোগ): লেখক
ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি।
Events in the First and Second years of Hizrat: there are controversies in time and sequences of these expeditions:
- Expedition of Sif Al badar – led by Hamza on March, 623 CE
In this year, in Ramadan, seven months after the Hijrah (about March, 623), the Messenger of God entrusted a white banner to Hamza bin Abd Al- Muttalib with the command of thirty Emigrants. Their aim was to intercept the caravans of Quraysh. Hamza met Abu Jahl at the head of three hundred men. Majdi b Amr sl-Juhani intervened between them, and they separated without battle.
- Expedition of Rabigh – led by Sa’d bin Abi Waqqas on April, 623 CE
In this year, eight months after the Hijrah, in Shawal (April, 623), the Messenger of God entrusted a white banner to Ubaydah b Al Harith b Abd Al Muttalib b abd Manaf at the head of sixty Emigrants without a single Ansar among them and ordered him to march to Batn Rabeigh. They met the polytheist at a watering place called ‘Ahya’. They shot arrows at one another but there was no hand to hand fighting.
There is a difference in opinion as to who was the commander of the Meccan expedition. Some say that it was Abu Sufyan b Harb and some that it was Mikhraz b Hafs. Al Waqid – Abu Sufyan, at the head of 200 polytheists.
- Expedition to Al Kharrar – led by Sa’d bin Abi Waqqas
In this year, in Dhu al-Qadah, the Messenger of God entrusted to Sa’d bin Abi Waqqas a white banner (for an expedition) to al Kharrar.
According to Abu Bakr bin Ismail <his father <Amir bin Sa’d <his father:
I set out on foot at the head of twenty men (or twnty one men). We used to lie hidden by day and march at night until we reached Al Kharrar on the fifth morning. The Messenger of God had enjoined me not to go beyond al-Kharrar, but the caravan had got to al-Kharrar a day before me; there were sixty men with it. Those who were with Sa’d were all from the Emigrants.
- Expedition to Al Abwa – led by Muhammad on August, 623 CE
According to Humayd < Salamah bin Al-Fadl <Muhammad bin Ishaq:
The Messenger of God came to Medina on the twelfth of Rabi al-Awal (September 24, 622 CE) and remained there for the rest of Rabi al-Awal, Rabi al-Akhir, two Jumadas, Rajab, Shaban, Ramadan, Shawwal, Dhu al-Qadah, Du al-Hijjah- the pilgrimage in that month was directed by the polytheists-and Muharram. In Safar (which began August 4, 623CE), nearly twelve months after his arrival in Medina on the twelfth of Rabi al-Awwal, he went out on a raid as far as Waddan, searching for Quraysh and the Banu Damrah bin Bakr bin abd Manat bin Kenana. This was the expedition of al Abwa. Then the Messenger of God returned to Medina without any fighting and remained there for the rest of Safar and the beginning of Rabi al-Awwal.
- Expedition of First Badr – led by Muhammad on September, 623 CE
Earlier in Rabi al-Awal (which began September 2, 623 CE), he went on an expedition at the head of the Emigrants in pursuit of Kurz bin Jabir al-Fihri. This man had raided the flocks of Medina which were pastured in al Jamma and had driven them off. The messemger of God went out in pursuit of him and reached a valley called Safwan in the region of Badr. But, Kurz eluded him and was not caught. This was the 1st expedition of Badr (also know as expedition of Safwan).
- Expedition to Buwat – led by Muhammad on October, 623 CE
Then the Messenger of God led an Expedition on Rabi al-Akhir (which began October 2, 623 CE) in search of Quraysh. He went as far as Buwat in the region of Radwa and returned without any fighting. His intention was to intercept the caravan of Quraysh led by Umayyah b Khalf with a hundred men of Quraysh and 2500 camels.
- Expedition to Al Ushayra – led by Muhammad on October, 623 CE
He stayed in Medina for the rest of Rabi al-Akhir and part of Jumada al Ula (which began October 31, 623 CE) and then led another expedition in search of Quraysh—until he halted at al-Ushayrah. He set foth at the head of Emigrants to intercept the Caravan of Quraysh when it set off for Syria. This was the expedition of Al-Ushayrah, and it went as far as Yanbu. He stayed there for the rest of Jamada al Ula and a few days of Jama al-Akhira (which began November 30, 623 CE). Then he went back to Medina without any fighting.
Referrences:
- The Life of Muhammad — A Translation of Ibn Ishaq’s (704-768 CE) Sirat Rasul Allah – A. GUILLAUME, Oxford University Press, Karachi, 1955, ISBN 0-19-636033-1, Page (Leiden) 415-423
- The History of Al-Tabari (838-923 CE) – “Tarikh al-rasul wa’l –muluk”
– Translated and annoted by W. Montogomery Watt and M.V. McDonald (University of Edinburg), State University of New Yok press 1987, ISBN 0-88706-344-6 [ISBN 0-88706-345-4 (pbk)], Volume VII, Page 1265-1272
- Ketab al-Maghazi- by Al-Waqidi (748-822 CE), Ed Marseden Jones, London 1966, Page 9-12
- [Similar narration] Kitab Al-Tabaqat Al-Kabir – by Muhammad Ibn Sa’d (784-845 CE)– Translated by S Moinul Haq, Published by Ketab Bhavam, New Delhi, Year 2009 (3rd reprint). ). ISBN 81-7151-127-9 (set). Volume II, Part I- Page 1-7. [6]
>>> উন্মুক্ত শক্তি প্রয়োগে পরাভূত করে সেই পরাজিত গোষ্ঠীর সকল মুক্ত মানুষকে চিরদিনের জন্য দাস-দাসীতে রূপান্তরিত করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে তাদেরকে নিজ-কর্মে (মেয়েদের যৌনদাসী রূপে) ব্যবহার ইসলামী বিধানে সম্পূর্ণ নৈতিক! আর এই নৈতিকতার শিক্ষাকে মনে প্রাণে ধারণ, পালন এবং যে কোনো উপায়ে তা প্রচার ও প্রসার করা (প্রয়োজনে মুহাম্মদের মতই শক্তি প্রয়োগে) সর্বকালের সকল ইসলাম বিশ্বাসীরই ইমানী দায়িত্ব! এই অবশ্যকর্তব্য ইমানী দায়িত্বকে মুহাম্মদ “জিহাদ” বলে প্রচার করেছিলেন। এ সকল নৃশংস হামলায় মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ প্রত্যক্ষ (Ghazawat) অথবা পরোক্ষভাবে (Sarawa) নেতৃত্ব দিয়েছিলেন! তিনি তাঁর সকল অনুসারীদের উৎসাহিত করেছিলেন পার্থিব ও অপার্থিব (মৃত্যু-পরবর্তী) প্রলোভন, হুমকি ও ভীতি প্রয়োগের মাধ্যমে। আদি মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণিত এ সকল তথ্যের পর্যালোচনায় যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট তা হলো:
“এখানে আক্রমণকারী ও আগ্রাসী হলেন মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ও তাঁর অনুসারী, কুরাইশরা নয়।”
(চলবে)
[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি–বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।
———————————————————–
রেফারেন্স:
[ 1] Fai : সহি বুখারি: ভলুউম ৬, বই ৬০, নম্বর ৪০৭
“Narrated By Umar : The properties of Bam An-Nadir were among the booty that Allah gave to His Apostle such Booty were not obtained by any expedition on the part of Muslims, neither with cavalry, nor with camelry. So those properties were for Allah’s Apostle only, and he used to provide thereof the yearly expenditure for his wives, and dedicate the rest of its revenues for purchasing arms and horses as war material to be used in Allah’s Cause”.
নাখলা পূর্ববর্তী সাত টি ব্যর্থ হামলার সংক্ষিপ্তসার
[2] মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪–৭৬৮ খৃষ্টাব্দ) – লেখক: “সিরাত রসুল আল্লাহ”
সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা (Leiden) ৪১৫–৪২৩
[3] আল–ওয়াকিদি (৭৪৮–৮২২ খৃষ্টাব্দ) – লেখক: “কিতাব আল–মাগাজি”
ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬, পৃষ্ঠা ৯–১২
[4] আল–তাবারী (৮৩৮–৯২৩ খৃষ্টাব্দ) – লেখক: “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”
ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ভলুউম ৭, ISBN 0-88706-344-6 [ISBN 0-88706-345-4 (pbk) ,
পৃষ্ঠা (Leiden) ১২৬৫–১২৭২
[5] মুহাম্মদ ইবনে সা‘দ (৭৮৪–৮৪৫ খৃষ্টাব্দ) – লেখক: “কিতাব আল–তাবাকাত আল–কাবির”
http://muslim-library.blogspot.com/2011/09/tabqaat-ibn-e-saad.html#!/2011/09/tabqaat-ibn-e-saad.html
[6] Ibid, অনুবাদ – এস মইনুল হক, প্রকাশক- কিতাব ভবন, নয়া দিল্লি, সাল ২০০৯ (3rd Reprint).
ISBN 81-7151-127-9 (set). ভলুউম ২, পার্ট– ১, পৃষ্ঠা ১–৭।
পারভীন
চমৎকার পরচর্চা করতে পারেন আপনারা। শয়তান ও লজ্জা পাবে আপনাকে দেখে। বড়ই দরদ আপনার আরব কুরাইশদের জন্য।ইতিহাস জেনে তবে লিখুন।এদের তো নবী কিছুই করেননি আপনার কথায় মুখোমুখি হলেন আর কিছু আলোচনার পর চলে ও গেলেন।আর তারা দীর্ঘ ১৩টি বছর ধরে আমার নবীও তার অনুসারীদের অত্যাচার করল দেশ ত্যাগে বাধ্য করল।আমির কে ফকিরের বেশে রাস্তায় নামতে বাধ্য করল।স্ত্রী সন্তান কে কখনো কেড়ে নিল বা নির্যাতন করল। শীবে আবু তালিবে তিন বছর বন্দি করে রাখল।হাজার হাজার শিশু নাখেতে পেয়ে মৃত্যুবরন করল।শত শত মুসলিম যখন নিজের ভিটা মাটি থেকে বিতাড়িত হল তখন কষ্ট লাগেনি।যেই তারা তাদের অধিকার আদায় করতে ওই সব নেতাদের কাফেলাকে উদ্যেশ্য করে অভিযান করল অমনি দরদ উথলে উঠল।আপনি কি প্রমান করতে চান জানিনা তবে আমার নবী ও তার অনুসারী দের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল তারা জিহাদ করেই অধিকার আদায় করে নিয়েছেন। অধিকার আদায় করে নেবার লড়াই ই জিহাদ।কোন ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ না রেখে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তাকে খোঁজার চেষ্টা করুন। তিনি আপনাকে পথ দেখাবেন। জাজাকাল্লাহু খয়রান