লিখেছেন লুক্স
৩০১.
এই দায়িত্ব অবশ্যই আল্লাহকে নিতে হবে – তার ভুলে ভরা কোরান, তার সাম্প্রদায়িক বান্দা, আর মানুষের ১৪০০ বছরের অপব্যবহার।
৩০২.
আমার দশ বছরের ইউরোপ জীবনে, ইউরোপের কোনো না কোনো দেশের কোনো না কোনো টিভি চ্যানেলে একটা খবর প্রায় প্রতিদিনই দেখি। একজন (বা একাধিক) ইসলামিক টেরোরিস্টকে বোমা তৈরির সময় অথবা বোমা পরিবহনের সময় অথবা বোমা ফোটানোর পরিকল্পনা করার সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। রিপোর্টে তার পরের যে অংশটা দেখায়, তা হাস্যকর। গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীর পরিবার, বন্ধুবান্ধব অথবা পরিচিত এলাকাবাসী মুসলমানদের সাক্ষাৎকার। সাক্ষাৎকারে এই নিরীহ মুসলমানরা প্রতিবারই যে হাস্যকর কথাটি বলে, তা হচ্ছে – ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম, ইসলাম সন্ত্রাস সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করেছে, ইসলাম অন্য ধর্মের মানুষকে ভালবাসতে বলেছে, সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে বলেছে, গ্রেফতারকৃত এই একজন সন্ত্রাসীর কারণে ইসলামকে দোষ দেয়া যাবে না। রিপোর্টটা এখানেই যায় শেষ হয়ে। আমার মেজাজ খারাপ হয় রিপোর্টারের ওপর। রিপোর্টারকে তারপরে যে প্রশ্নটি কখনই করতে দেখা যায় না, আমার তখন সেই প্রশ্নটিই করতে ইচ্ছে করে: ভাই, ইসলাম এই সুন্দর সুন্দর কথাগুলো কোথায় বলেছে? আমাকে একটু কোরান খুইল্ল্যা দেখান। মুসলমানদেরকে এই একটি প্রশ্ন করার জন্যই আমার একদিনের জন্য হলেও ক্রাইম রিপোর্টার হতে ইচ্ছে করে।
৩০৩.
মানুষকে যদি আল্লাহু আকবার বলে শিরচ্ছেদ করা যায়, যদি জিহাদের নামে বোমা মেরে মারা যায়, তবে মানুষকে আল্লাহর নামে কোরবানি দেয়া যাবে না কেন?
৩০৪.
মধ্যযুগে ঘরে ঘরে নবী ছিল। আর এখন ঘরে ঘরে নাস্তিক।
৩০৫.
প্রায়ই একটা পরিচিত এবং পুরোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হই। ”ভাই, আপনি ইসলামের পিছে লাগছেন কেন?” অথবা অনেকেই মেসেজে জিজ্ঞেস করে, ”দেশে এত সমস্যা থাকতে আপনি শুধু ইসলামের সমালোচনা করেন কেন?” আমিও তখন জিগ্যেস করি, দেশে কী কী সমস্যা আছে? ওনারা তখন বলেন, কেন? দূর্নীতি, অপরাজনীতি, চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাস, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, খুনাখুনি, ধর্ষণ, যুদ্ধ, বোমাবাজি – এসব সমস্যা আপনার চোখে পড়ে না? আমি বলি, পড়ে, অবশ্যই চোখে পড়ে। সে কারণেই ইসলামের সমালোচনা করি। কারণ ইসলাম এসব সমস্যাকেই প্রশ্রয় দেয়। কখনো কখনো সরাসরি অনুমোদনও দেয়। আপনারা শুইন্ন্যা মুসলমান; কোরান, হাদিস আর মোহাম্মদের জীবনী পড়েন না, তাই জানেন না।
৩০৬.
অশিক্ষিত আর ধর্মান্ধ জাতির জন্য গণতন্ত্র কখনো কখনো বিপদজনক হতে পারে; বিশেষ করে যে মানুষগুলোর কাছে ধর্মীয় পোশাক জ্ঞানের প্রতীক হিসাবে কাজ করে।
৩০৭.
কোনো পশ্চিমা ফর্সা নারী যখন আমাদের দেশে এসে শাড়ী পরে ঘুরে বেড়ায়, খালি পায়ে ফুল হাতে শহীদ মিনারে যায়, মাথায় ঘোমটা দিয়ে আমাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে, কিংবা বিদেশী ভাঙা-ভাঙা উচ্চারণে আমাদের জাতীয় সংগীত গায়, আমরা তখন আনন্দিত হই, আবেগে আপ্লুত হই, নিজের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব অনুভব করি। সেই বিদেশিনীকে টেলিভিশনে দেখাই, কিংবা সংবাদপত্রে হেডলাইন করি। আর আমরা যখন কোনো পশ্চিমা দেশে যাই, তখন কিন্তু তাদের সংস্কৃতির প্রতি এভাবে শ্রদ্ধা দেখাই না। উল্টো তাদের সব কিছুতে ভুল ধরি আর হারাম খুঁজি।
৩০৮.
ধর্মান্ধদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তি একটা বিরাট সমস্যা। এরা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে শুধুই মধ্যযুগীয় ধর্মকে রক্ষা করতে, জাতীর শিক্ষা ও প্রগতিশীল কাজে নয়। বানরের হাতে খুন্তি যেমন নিরাপদ নয়।
৩০৯.
যাঁরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলেন, তাদের অনেকে নিজেই সাম্প্রদায়িক মনোভাবমুক্ত নন, অথবা ”সাম্প্রদায়িকতা” শব্দের অর্থ বোঝেন না। যেমন, তাদের প্রধান শ্লোগান হচ্ছে – বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালি। শ্লোগানে ধর্মহীন বা নাস্তিকদের কথা বলা হয় না। তার মানে নাস্তিকরা বাঙালি না, অথবা বাঙালি হতে হলে তার একটা ধর্মে বিশ্বাস থাকতেই হবে। আমার বন্ধুরা কেউ কেউ হয়ত বলবেন, নাস্তিকদের অধিকারের কথা উচ্চারণ করার পরিবেশ এখনো দেশে তৈরি হয়নি অথবা অতটা সাহস আমাদের হয়নি। আপনারা না করলে নাস্তিকদের অধিকারের কথা বলার পরিবেশ তৈরী করবে কারা? আর সাহস না থাকলে ”সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী” আন্দোলনের নামে ভুল কথা বলার কী দরকার?
৩১০.
আব্রাহাম-এর গবাদিপশুর ব্যবসা ছিল। তিনি জানতেন, ব্যবসা জমানোর জন্য তাকে কখন কী স্বপ্ন দেখতে হবে। নবী-রসুলদের উম্মতরা স্বপ্ন দেখতে জানেনা। হুরের স্বপ্ন এমন বিশাল এক স্বপ্ন, মাথায় অন্য স্বপ্নের জায়গাই নাই।
Leave a Reply