লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪
বদর যুদ্ধ জয়ের পর স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) লুণ্ঠিত মালামাল ও ৭০ জন বন্দী কুরাইশকে নিয়ে মদিনায় উদ্দেশে যাত্রা করেন। মদিনা পৌঁছার আগেই পথিমধ্যে তিনি দু’জন ধৃত বন্দীকে খুন করার আদেশ জারি করেন। সেই হতভাগ্য দু’জন বন্দীর নাম:
১) আল নাদর বিন আল-হারিথ, এবং
২) ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত
আলী ইবনে আবু তালিব নৃশংস ভাবে হত্যা করেন আল নাদর বিন আল-হারিথকে। আর ওকবা বিন আবু মুয়ায়েতকে হত্যা করেন আসিম বিন থাবিত বিন আবু আকলাহ আল-আনসারি। অপরাধ? অপরাধ হলো মুহাম্মদের মক্কায় অবস্থানকালে তাঁরা মুহাম্মদের আগ্রাসী আক্রমণাত্মক প্রচারণার সমালোচনা ও বিরুদ্ধাচরণ করেছিলেন।
মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ সাল), আল তাবারী (৮৩৯-৯২৩ সাল) ও ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা:
পথিমধ্যে বন্দী ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত এবং আল নাদর বিন আল-হারিথকে খুন
‘তারপর আল্লাহর নবী অবিশ্বাসী বন্দীদের নিয়ে মদিনায় যাত্রা করেন। বন্দীদের মধ্যে ছিল ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত এবং আল নাদর বিন আল-হারিথ। মুশরিক (Polytheist) কুরাইশদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত সামগ্রী আল্লাহর নবীর সাথে ছিল, যার দায়িত্বে ছিলেন আবদুল্লাহ বিন ক্বাব। তারপর আল্লাহর নবী সামনে অগ্রসর হয়ে আল-সাফরার গিরিপথ ও আল-নাযিয়ার মধ্যবর্তী সায়ার বৃক্ষ নামক এক বালির স্তূপে এসে যাত্রাবিরতি দেন। সেখানে তিনি আল্লাহ প্রদত্ত লুণ্ঠন সামগ্রী মুসলমানদের মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করেন। তাঁরা রাউহা নামক স্থানে পৌঁছলে মুসলমানেরা তাঁদেরকে তাঁদের বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান।’
[ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ <] মুহাম্মদ ইবনে ইশাক <আসিম বিন আমর বিন কাতাবা এবং ইয়াজিদ বিন রুমান বলেন, “তোমরা আমাদের কী কারণে অভিনন্দন জানচ্ছো? আল্লাহর কসম, আমরা কিছু টাক-পড়া বৃদ্ধার দেখা পেয়েছিলাম যারা বলীর উটের মত খুঁড়িয়ে চলছিল, যাদেরকে আমরা হত্যা করেছি।” আল্লাহর নবী হাসলেন এবং বললেন, “কিন্তু ভাইপো, তারা ছিল নেতৃস্থানীয়।”
যখন আল্লাহর নবী আল-সাফরায় ছিলেন তখন আল-নাদর বিন আল-হারিথকে খুন করে আলী,যা আমি (মুহাম্মদ ইবনে ইশাক) মক্কাবাসীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।
যখন তিনি ইরকুল-জাবিয়ায়, ওকবা বিন আবু মুয়ায়েতকে খুন করা হয়। তিনি আবদুল্লাহ বিন সালিমার হাতে বন্দী হয়েছিলেন।
আল্লাহর নবী ওকবা বিন আবু মুয়ায়েতকে খুন করার আদেশ জারী করলে ওকবা বলেন,
“হে মুহাম্মদ, তাহলে আমার সন্তানদের কে দেখাশোনা করবে?”
মুহাম্মদ জবাবে বলেন, “জাহান্নাম”।
আসিম বিন থাবিত বিন আবু আকলাহ আল-আনসারি তাকে হত্যা করে, যা আবু ওবায়েদা বিন মুহাম্মদ বিন আম্মার বিন ইয়াছির আমাকে [মুহাম্মদ বিন ইশাক] বলেছেন। আল্লাহর নবী বন্দীদের আগমনের এক দিন আগেই মদিনায় পৌঁছেন।‘ [1]
>>> পাঠক, আপনি যে বয়সেরই হউন না কেন, যে ধর্ম বা বর্ণের মানুষই হোন না কেন; মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একটু কল্পনা করুন!
একজন ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষকে লুণ্ঠনকারীরা বন্দী অবস্থায় ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সেই অবস্থায় লুণ্ঠনকারী দল নেতা সেই মানুষটিকে খুন করার আদেশ জারি করলো। তা শুনে সেই ভীত সন্ত্রস্ত মানুষটি তাঁর ফেলে আসা সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় আকুল আবেদন করছেন, “তাহলে কে আমার সন্তানদের দেখাশোনা করবে?” ভীত সন্ত্রস্ত মানুষটির এই করুণ আকুতি শুনে দস্যু দলপতি সেই মানুষটির এতিম বাচ্চাদের উদ্দেশে চরম অবমাননায় তাচ্ছিল্য করে বলছে, “জাহান্নামের আগুনই তাদের দেখাশুনা করবে!”
মুহাম্মদের এই সন্ত্রাসী, অমানুষিক, নৃশংস চরিত্রকে বর্তমানের ইসলাম-বিশ্বাসীরা অস্বীকার করুন; বিভিন্ন কসরতের মাধ্যমে তার ন্যায্যতা প্রতিপাদনের চেষ্টা করুন; এ সকল বর্ণনার জন্য ইবনে ইশাক, আল-তাবারী সহ সকল ইসলাম-বিশ্বাসী আদি ও বিশিষ্ট নিবেদিতপ্রাণ স্কলারদের ইচ্ছেমত গালি-গালাজ করুন; সত্য হলো মুহাম্মদের এই চরিত্র নথিভুক্ত (well recorded)। এটিকে বাতিল করতে চাইলে মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের চাইতেও প্রাচীন কোনো ইতিহাসবিদদের রেফারেন্স হাজির করতে হবে। পথিমধ্যে বন্দী অবস্থায় ওকবা বিন আবু মুয়ায়েতকে নৃশংসভাবে কেন হত্যা করা হয়েছিল, তা আমাদের জানিয়েছেন ইসলামের ইতিহাসের আরেক দিকপাল আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল [ ইমাম বুখারী]। ইমাম বুখারীর বর্ণনা:
সহি বুখারী, ভলিউম ১, বই ৯, নম্বর ৪৯৯
আমর ইবনে মাইমুয়িন হইতে বর্ণিত:
আবদুল্লাহ বিন মাসুদ বলেছেন, “যখন আল্লাহর নবী কাবার পাশে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে কিছু কুরাইশদের কিছু লোক জমায়েত হয়ে বসেছিল। তাঁদের একজন বলেছিল, ‘তোমরা কি দেখো না (সে লোক দেখানো কাজ করে)? তোমাদের মধ্যে কে গোবর ও অমুকের জবেহ করা উটের নাড়ি-ভুঁড়ি (intestines, etc) নিয়ে আসতে পারবে এবং সিজদা করার সময় তা তার ঘাড়ের ওপর রাখতে পারবে?’ তাদের মধ্যে সবচেয়ে হতভাগ্য (ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত) উঠে গিয়েছিল (এবং তা নিয়ে এসেছিল) এবং আল্লাহর নবী সেজদা করার সময় তা তাঁর ঘাড়ের উপর রেখেছিল। আল্লাহর নবী সেজদায় পড়েছিলেন এবং তারা এত হাসা হাসি করেছিল যে তারা একে অপরের গায়ে ঢলে পড়ছিল। এক পথিক ফাতিমার কাছে যায়, সে সময় ফাতিমা ছিলেন অবিবাহিতা কিশোরী। তিনি দৌড়ে এসে দেখেন যে তখনও নবী সেজদায় পড়ে আছেন। তিনি [ফাতিমা] তা অপসারণ করেন এবং কুরাইশদের মুখের ওপরই তাদের অভিশাপ দেন। আল্লাহর নবী নামাজ শেষ করে বলেন, “হে আল্লাহ, কুরাইশদের ওপর প্রতিশোধ নাও।” তিনি তা তিনবার উচ্চারণ করেন এবং আরও বলেন, “হে আল্লাহ প্রতিশোধ নাও আমর বিন হিশাম, ওতবা বিন রাবিয়া, সেইবাহ বিন রাবিয়া, আল-ওয়ালিদ বিন ওতবা, উমাইয়া বিন খালাপ, ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত এবং উমর বিন আল-ওয়ালিদ এর বিরুদ্ধে।” আবদুল্লাহ আরও বলেন, “আল্লাহর কসম! বদর যুদ্ধের দিন তারা সকলেই খুন হয় এবং তাদের সবার লাশই টেনে এনে বদরের কালিবে (কুপে) নিক্ষেপ করা হয়: তারপর আল্লাহর নবী বলেন, ‘আল্লাহর অভিশাপ কালিব-বাসীদের (কুপ-বাসীদের) ওপর অবতরণ করেছে।'” [2]
>>> আর আল-নাদর বিন আল-হারিথকে খুন করা হয়েছিল এই কারণে তিনি মক্কায় আল্লাহর নবীকে উপহাস ও সমালোচনা করেছিলেন এবং তাঁর বিপক্ষে কবিতা ও গল্প লিখেছিলেন। পুরাকালের ইতিহাস বিষয়ে তিনি সম্যক অবগত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে, আল্লাহর নামে মুহাম্মদের এই কথাগুলো “পূর্ববর্তী ইতিকথা (Tales of ancient)” ছাড়া আর কিছুই নয় । তিনি মুহাম্মদের প্রচারণার বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে। কোনরূপ শারীরিক আঘাতকারী হিসেবে নয়। [3] [4] [5]
“মক্কায় মুহাম্মদের বাণী ও কর্মকাণ্ড ছিল শান্তিপ্রিয়” – এ দাবীর যে আদৌ কোনো ভিত্তি নেই, তা মুহাম্মদের ব্যক্তিমানস জীবনীগ্রন্থ (কুরান), সিরাত ও হাদিসের পর্যালোচনায় অত্যন্ত স্পষ্ট! ইসলামের প্রকাশ্য যাত্রা শুরু হয়েছে নিজেরই চাচা আবু-লাহাব ও তাঁর স্ত্রীকে মুহাম্মদের অভিশাপের মাধ্যমে (পর্ব-১২)! মক্কায় ক্ষমতাহীন অবস্থায়ও মুহাম্মদ তাঁর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ শাপ-অভিশাপ করেছেন (পর্ব-১১); করেছেন যথেচ্ছ হুমকি-শাসানী-তাচ্ছিল্য ও ভীতি প্রদর্শন (পর্ব ২৬-২৭)। মদিনার ক্ষমতাধর মুহাম্মদের অমানুষিক নৃশংস কর্মকাণ্ডে অবাক হবার কোনো কারণ নেই। মদিনায় এসে হঠাৎ করে মুহাম্মদের চরিত্রের এ পরিবর্তন ঘটেছে বলে যে দাবী করা হয়, তার কোনোই সত্যতা নেই। মুহাম্মদ তাঁর প্রচারণায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সর্বাবস্থায় ছিলেন কঠোর ও আগ্রাসী।
কুরাইশ ও তাঁদের পূর্ব পুরুষ ও দেব দেবীদের প্রতি মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, শাপ-অভিশাপ, ভীতি-প্রদর্শন ও প্রচারণার বিরুদ্ধে সমালোচনা করার কথিত অপরাধে সমালোচনাকারীকে বন্দী অবস্থায় পথিমধ্যেই যে মানুষ ঠাণ্ডা মাথায় খুন করার আদেশ জারি করতে পারে, সে যে এক প্রচণ্ড প্রতিহিংসাপরায়ণ নৃশংস ব্যক্তি, তাতে কি কোনো সন্দেহ আছে?
বন্দী আবু ইয়াজিদ সুহায়েল বিন আমরকে “সওদার” সমবেদনা ও নবীর ধমক
‘ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ < মুহাম্মদ ইবনে ইশাক < আবদুল্লাহ বিন আবু বকর আমাকে (মুহাম্মদ ইবনে ইশাক) বলেছেন যে তিনি ইয়াহিয়া বিন আবদ আল-রাহমান বিন আসাদ বিন জুরারা তাঁকে বলেছেন:
যখন বন্দীদেরকে আনা হয়, নবী-পত্নী সওদা বিনতে জামা শোকাহত আফরার পরিবারের সাথে ছিলেন। আফরা তাঁর দুই ছেলে আউফ এবং মুয়ায়িদের জন্য বিলাপ করছিলেন। এটি ছিল মেয়েদের পর্দা প্রথা চালু হওয়ার আগের ঘটনা। সওদা বলেন, “যখন আমি তাদের সাথে ছিলাম, হঠাৎ বলা হলো, ‘বন্দীদের আনা হয়েছে’। আমি আমার বাড়িতে ফিরে আসি, যেখানে আল্লাহর নবীও ছিলেন। সেখানে ঘরের এক কোণায় ছিল দুই হাত ঘাড়ের সাথে বাঁধা অবস্থায় আবু ইয়াজিদ সুহায়েল বিন আমর। আমি তাকে এমন অবস্থায় দেখে অনেক কষ্টেও নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে বললাম, ‘হে আবু ইয়াজিদ, তুমি সহজেই ধরা দিয়েছ। এর চেয়ে মহৎ মৃত্যুই তোমার উচিত ছিল।’
অকস্মাৎ আল্লাহর নবীর আওয়াজ শুনে আমি চমকে উঠি, ‘সওদা, তুমি কি আল্লাহ ও তার নবীর বিরুদ্ধে ঝামেলা করবে?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহর কসম, আমি আবু ইয়াজিদকে এমন অবস্থায় দেখে নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে এমনটি বলেছি।”
[6][7]
বন্দী আবু আজিজ বিন উমায়ের বিন হাশিমের প্রতি তাঁর নিজ ভাইয়ের নিষ্ঠুরতা
[ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ বিন আল ঋাদল <] মুহাম্মদ ইবনে ইশাক < বানু আবদ আল-দারের ভাই নুবায়েহ বিন ওহাব:
আল্লাহর নবী তাঁর সহকারীদের মধ্যে বন্দীদের ভাগাভাগি করে দিলেন এবং বললেন, “তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করবে।” সেখানে ঐ বন্দীদের একজন ছিলেন মুসাব বিন উমায়েরের ভাই আবু আজিজ বিন উমায়ের বিন হাশিম। তিনি [আবু আজিজ] বলেছেন:
“একজন আনসার আমাকে বেঁধে ফেলার সময় আমার ভাই মুসাব আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে [মুসাব] বলে, ‘তাঁকে শক্ত করে বাঁধো, কারণ তার মা খুবই সম্পদশালী মহিলা, সম্ভবত: সে মুক্তিপণের মাধ্যমে তাকে তোমার কাছ থেকে মুক্ত করাবে।”’
বদর যুদ্ধে আল-নাদর এর পর আবু আজিজ ছিলেন মুশরিকদের পতাকাবাহী। আবু আল ইয়াসার তাকে বন্দী করেন। যখন আবু আল ইয়াসারকে আবু আজিজের ভাই মুসাব এই কথাগুলো বলে তা শুনে আবু আজিজ বলেন, “ভাই, আমার সম্বন্ধে তুমি তাকে এ কী পরামর্শ দিচ্ছো?” মুসাব জবাবে বলে, “এখন তোমার স্থানে সে-ই আমার ভাই।” [8]
ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। – অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ – লেখক।]
Killing of two captives Uqba b Abu-Muayt and al-Nadr b al-Harith in route
‘Then the apostle began his return journey to Medina with the unbelieving prisoners, among whom were Uqba b Abu-Muayt and al-Nadr b al-Harith. The apostle carried with him the booty that he had taken from polytheists and put Abdullah b Ka’b in charge of it.
Then the apostle went forward until when he came out of the pass of al-Safra, he halted on the sandhill between the pass and al-Naziya called Sayar tree. There he divided the booty which God had granted to the Muslims equally. Then he marched until he reached Rauha when the Muslims met him congratulating him and the Muslims on the victory of God had given them.
According to [Ibn Humayd <Salamah <] Muhammad Ibn Ishaq <Asim b Umar b Qataba and Yazid b Ruman said, “What are you congratulating us about? By God, we only met some bald old women like the sacrificial camels who are hobbled, and we slaughtered them!” The apostle smiled and said, “But nephew, those were the chiefs.”
When the apostle was in al-Safra, ‘al-Nadr b al-Harith’ was killed by Ali, as I [Ibn Ishaq] learned Meccan told me.
When he was in Irqul-Zabya ‘Uqba b Abu-Muayt’ was killed. He had been captured by Abdullah b Salima. When the apostle ordered him to be killed Uqba said,
“But who will look after my children, O’ Muhammad?”
“Hell”, Muhammad replied.
He was killed by Asim b Thabit b Abu al-Aqlah al-Ansari according to what Abu Ubayda b Muhammad b Ammar b Yasir told me [Ibn Ishaq]. The apostle arrived in Medina a day before the prisoners’. [1]
Muhammad’s warning to Sawda for her Sympathy to captive Abu Yazid
‘According to [Ibn Humayd <Salamah <] Muhammad b Ishaq < Abdullah b Abu Bakr told me that Yahya b Abdullah b Abd al-Rahman b Asab b Zurara told him that:
When the captives were brought in, Sawda binte Zamaa, the wife of the prophet’ was with the family of ‘Afra’ participating in their mourning for her sons, Auf and Muawwiddh. This was before the veil was imposed on women. Sawda said, “As I was with them, suddenly it was said: ‘Here are the prisoners’ and I returned to my house where the apostle was. And there was Abu Yazid Suhayl b Amr in a corner of the room with his hands tied with his neck. I could hardly contain myself when I saw Abu Yazid in this state and I said, ‘O’ Abu Yazid, you surrendered too readily. You ought to have died a noble death!’
Suddenly the prophet’s voice startled me, “Sawda, would you stir up trouble against God and his apostle?” I said, “By God, I could hardly contain myself when I saw Abu Yazid in this state and that is why I said what I did.”’
Abu Yazid is from Meccan clan of Amir (to which Sawda belonged), and brother of her former husband. [6][7]
Cruelties of Brother of Captive Abu Aziz bin Umayr
‘According to [Ibn Humayd < Salamah b al-Fadl<] Muhammad Ibn Ishaq < Nubayh b Wahb, the brother of Banu Abd al-Dar:
The apostle divided the prisoners amongst his companioins and said, “Treat them well.” Now Abu Aziz b Umayr b Hashim, brother of Musab b Umayr, was among the prisoners and he said, “My brother Musab passed by me as one of the Ansar was binding me and he said: ‘Bind him fast, for his mother is a wealthy woman, perhaps she will redeem him from you.’
Abu Aziz was the standard-bearer of the polytheist at Badr after al-Nadr. When his borther Musab said these words to Abu Al-Yasar who had captured him, Abu Aziz said, “Brother is this the sort of advice you give about me?” Musab answered, “He is now my brother in your place.” [8]
>>> প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে পৃথিবীর সিংহভাগ তথাকথিত মডারেট মুসলমানেরা দাবী করেন যে, ইসলামে কোনোই সন্ত্রাস নেই। আর তা প্রমাণ করতে বিভিন্ন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সভা-সমিতিতে তাঁরা বক্তৃতা করেন, বিবৃতি দেন, টেলিভিশন টক-শো করেন, সংবাদ-মাধ্যমে প্রবন্ধ লেখেন। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে তাঁরা জেনে বা না জেনে যে চাতুরীর আশ্রয় নেন, তা হলো পেশীশক্তিহীন মুহাম্মদের মক্কা ও প্রাথমিক মদিনা জীবনের (৬১০-৬২৩ সাল) বিশেষ কিছু গৎবাঁধা শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ড ও আপ্তবাক্যের উদ্ধৃতি। তাঁরা জানেন না (অজ্ঞতা) কিংবা জেনেও ঘুণাক্ষরেও প্রকাশ করেন না (ভণ্ডামি) যে, দুর্বল মুহাম্মদের মক্কা ও প্রাথমিক মদিনা জীবনের শান্তিপূর্ণ সেই সব আপ্তবাক্য শক্তিমান মুহাম্মদের মদিনা অবস্থানকালে নৃশংস ও কঠোর আপ্তবাক্যের মাধ্যমে বাতিল হয়ে গিয়েছে। ইসলামের পরিভাষায় যা “নাসেক মানসুক(Abrogation)” নামে আখ্যায়িত। মুহাম্মদের ১০ বছরের মদিনা জীবনের ইতিহাস হলো তাঁকে অস্বীকারকারী ও বিরুদ্ধবাদীদের প্রতি চরম সন্ত্রাস ও নৃশংসতার ইতিহাস। ইসলামের ইতিহাসের সকল দিকপাল আদি মুসলিম ঐতিহাসিকরা অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় তা বর্ণনা করেছেন।
ইসলামকে সঠিক ভাবে বুঝতে হলে মুহাম্মদের জীবন ইতিহাস সঠিকভাবে জানতেই হবে। এর কোনোই বিকল্প নেই। আর তা জানার জন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা এবং মুক্ত ও নিরপেক্ষ মানসিকতা নিয়ে মুহাম্মদের রচিত আপ্তবাক্য (কুরান) ও আদি উৎসের ঐতিহাসিকদের লিখিত মুহাম্মদের জীবনীগ্রন্থের পর্যালোচনা। “মুহাম্মদের মদিনা জীবনের কর্মকাণ্ড” সঠিকভাবে না জানলে ইসলামের প্রকৃত পরিচয় জানা কারও পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত তথাকথিত মডারেট ইসলামী পণ্ডিতরা সাধারণ মুসলমানদের নিকট মুহাম্মদের মদিনা জীবনের কর্মকাণ্ড বিভিন্ন কৌশলে আড়াল করে এসেছেন অথবা বৈধতা দিয়ে এসেছেন বিভিন্ন চাতুরীর মাধ্যমে। তাই সাধারণ সরলপ্রাণ মুসলমানেরা মদিনায় মুহাম্মদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সামান্যই অবগত।
(চলবে)
পাদটীকা ও তথ্যসূত্র:
[1] a) “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৩০৮-৩১০
b) “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-88706-344-6 [ISBN 0-88706-345-4 (pbk)],
– পৃষ্ঠা (Leiden) ১৩৩৫-১৩৩৮
[2] সহি বুখারী, ভলিউম ১, বই ৯, নম্বর ৪৯৯
Narrated ‘Amr bin Maimuin:
‘Abdullah bin Mas’ud said, “While Allah’s Apostle was praying beside the Ka’ba, there were some Quraish people sitting in a gathering. One of them said, ‘Don’t you see this (who does deeds just to show off)? Who amongst you can go and bring the dung, blood and the abdominal contents (intestines, etc). of the slaughtered camels of the family of so and so and then wait till he prostrates and put that in between his shoulders?’ The most unfortunate amongst them (‘Uqba bin Abi Mu’ait)went (and brought them) and when Allah’s Apostle prostrated, he put them between his shoulders. The Prophet remained in prostration and they laughed so much so that they fell on each other. A passerby went to Fatima, who was a young girl in those days. She came running and the Prophet was still in prostration. She removed them and cursed upon the Quraish on their faces. When Allah’s Apostle completed his prayer, he said, ‘O Allah! Take revenge on Quraish.’ He said so thrice and added, ‘O Allah! take revenge on ‘Amr bin Hisham, ‘Utba bin Rabia, Shaiba bin Rabi’a, Al-Walid bin’Utba, Umaiya bin Khalaf, ‘Uqba bin Abi Mu’ait and ‘Umar a bin Al-Walid.” Abdullah added, “By Allah! I saw all of them dead in the battle field on the day of Badr and they were dragged and thrown in the Qalib (a well) at Badr: Allah’s Apostle then said, ‘Allah’s curse has descended upon the people of the Qalib (well).
[3] Ibid ইবনে ইশাক- পৃষ্ঠা ১৩৩-১৩৪; ১৩৫-১৩৬; ১৬২-১৬৩
[4] কুরান: ৮৩:১৩; ৮:৩১; ২৫:৪-৫; ৪৫:৭-১০
[6] সুন্নাহ আবু দাউদ, বই নম্বর ৮, হাদিস নম্বর ২৬৭৪
[7] আবু ইয়াজিদ সওদার সগোত্রীয় আমির গোত্রের এবং তাঁর আগের স্বামীর ভাই
[8] Ibid ইবনে ইশাক- পৃষ্ঠা ৭৪০
Leave a Reply