১.
মুসলমান বাঙালি নিজের পরিশ্রমের ক্রেডিট অবলীলায় অনায়াসে আল্লাহকে দিয়ে দেয়। এতে তারা মনে মনে শুধু নয় আসলেই বেশ তৃপ্ত হয়। সরিষাক্ষেতের আইল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। মাহবুর ভাই. যিনি ওই ক্ষেতের মালিক, তাঁকে বললাম যে, সরিষা তো বেশ ভালো ফলাইছেন, ভাই। জবাবে তিনি যা বললেন, তা শুনে আর কিছু বলতে পারলাম না: ‘আলহামদুলিল্লাহ!’
আচ্ছা, আল্লাহ কবে কৃষিকাজের সাথে জড়িত ছিলেন?ন সৌদি আরবে কোনোদিন সরিষা আবাদ হয়েছে বলে তো শুনিনি, অথচ সরিষা ফলানোর ক্রেডিট পাইয়া গেল আল্লাহ; তাও বিনা পরিশ্রমে।
২.
হুজুরে ওষুধ কিনতে আসছে ফার্মেসিতে। বলছে, ‘ডাক্তরসাব, আমাশা হইছে অষুদ দেন। বেশি লাগবে না, দুই ডোজ খাইলেই তো ভাল হইয়া যাবে ইনশাল্লাহ।’
ইনশাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ চায় তো। দুইটা মেট্রো আর দুইটা সিপ্রো দিয়া বিদায় করলাম। মনে মনে বললাম, আপনার আল্লাহ এখন যদি নাও চায়, তবু আমার দেয়া ওষুধের কল্যাণে আপনার আমাশয় নিরাময় হবে।
আচ্ছা,মধু আর কালিজিরার মত কোরান-সমর্থিত সর্বরোগের ওষুধ থাকতে হুজুরে আমার কাছে আসছিল কেন?
৩.
হুজুরের সাথে আমার ভাল সম্পর্ক। নিয়মিত ওষুধপাতি নিয়ে থাকেন, ধার-বাকিও থাকে। একদিনের কথা বলি।
‘আমার হিসাবটা কত দাঁড়াল? আজকেরটাও লিখে রাখা যায় না? দিয়ে দেব, দিয়ে দেব। আচ্ছা, একটা কলম দেয়া যায় না? ভাল কলম একটা?’
আমার তো দয়ার শরীর, না বলতে পারি না; দিলাম। কলম হাতে পাইয়া, ‘নতুন? আলহামদুলিল্লাহ।’
আচ্ছা, মানুষ এইরকম হয় কী করে? কলম দিলাম আমি আর সে প্রশংসা করলো আল্লাহর! একটা ধন্যবাদ তো দিতে পারত অন্তত!
৪.
‘আমার হাঁটু নিয়া বড়ই সমস্যায় ছিলাম, নামাজে উঠতে-বসতে কষ্ট হচ্ছিল। আপনার দেওয়া ওষুধ খেয়ে আল্লাহর রহমতে বেশ ভাল আছি।’
হায়রে মুমিন বান্দা, আল্লাহর রহমতও চিনো না ঠিকমতো! আল্লাহর রহমত হইল মধু আর কালিজিরা! ইহুদি-নাছারাদের বানানো ওষুধ খাইবা আর প্রশংসা করবা আল্লাহর! আল্লাহ এদেরকে তুমি তুমার রহমত চেনার তৌফিক দিয়ো।
Leave a Reply