লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫
বদর যুদ্ধের আদি কারণ; আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারী বিরুদ্ধে কোনোরূপ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে অনিচ্ছুক কুরাইশদের প্রতি স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর সহচরদের সীমাহীন অমানুষিক ঘৃণা ও নৃশংসতার ফসল মুহাম্মদের বিজয়; বিজয়ের পর প্রচণ্ড অবমাননা ও তাচ্ছিল্যে ৭০ জন নিহত কুরাইশ স্বজন ও নিকটাত্মীয়ের লাশ বদর প্রান্তের এক নোংরা শুকনো গর্তে একে একে নিক্ষেপ; তারপর লুণ্ঠিত মালামাল (গণিমত) ও ৭০ জন যুদ্ধ বন্দী কুরাইশ স্বজনদের নিয়ে মদিনায় প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালে পথিমধ্যেই দুইজন বন্দীকে মুহাম্মদ ও তাঁর সহকারীদের ঠাণ্ডা মাথায় খুন – এই বিষয়গুলোর ধারাবাহিক উপাখ্যান আগের ছয়টি পর্বে করা হয়েছে।
মদিনায় প্রত্যাবর্তনের পর যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে কী করা হবে, সে বিষয়ে মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের সাথে আলোচনায় বসেন। তিনি তাঁর বিশিষ্ট সাহাবিদের মতামত জানতে চান। আবু বকর তাঁর সিদ্ধান্তে জানান যে, যেহেতু ধৃত বন্দীরা তাঁদেরই চাচাতো-মামাতো-ফুপাত ভাই, ভাইপো-বোনপো ও সগোত্রীয় – তাই নবীর উচিত তাদেরকে মুক্তি-পণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া। কিন্তু উমর ইবনে আল-খাত্তাব ও অন্য একজন মুহাম্মদ অনুসারী আবু বকরের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত প্রকাশ করেন। তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্তে জানান যে, নবীর উচিত অবশিষ্ট ৬৮ জন বন্দীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা। উমর ইবনে খাত্তাব নবীকে এই বলে পরামর্শ দেন যে, তিনি যেন বন্দী আল-আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবকে [মুহাম্মদের নিজের চাচা] আল-আব্বাসের সহোদর ভাই হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিবের হাতে সোপর্দ করেন যাতে হামজা তার নিজ ভাইয়ের কল্লা কাটতে পারে,আকিল ইবনে আবু তালিবকে [মুহাম্মদের নিজের চাচাত ভাই] সোপর্দ করেন আকিলের সহোদর ভাই আলী ইবনে আবু তালিবের হাতে যাতে আলী তার নিজ ভাইয়ের কল্লা কাটতে পারে এবং আরও কিছু লোককে তাঁর হাতে সোপর্দ করেন যাতে তিনি তাদের কল্লা কাটতে পারেন। মুহাম্মদ আবু বকরের পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং ঘোষণা দেন যে, বন্দীদের একজনও যেন মুক্তিপণ ছাড়া রেহাই না পায়, অথবা যেন তাদের গর্দান যায়। মুহাম্মদ দাবি করেছেন যে, তাঁর এই সিদ্ধান্তের পর তাঁর আল্লাহ হুঁশিয়ারি ও গজবের হুমকি দিয়ে তাঁকে এক অতি কঠিন বার্তা মারফত জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না।
মুহাম্মদের ভাষায় সেই বার্তাটি হলো:
৮:৬৭-৬৯ – “নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর, অথচ আল্লাহ চান আখেরাত। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা। যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেন, তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত।সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।”
আবু জা’ফর মুহাম্মদ বিন জারীর আল-তাবারী ও অন্যান্য আদি ও বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে ঘটনাটি ছিল নিম্নরূপ: [1]
বন্দিদের পরিণতি ব্যাপারে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত:
‘বদর যুদ্ধের ঘটনা শেষ হলে আল্লাহ পাক সে বিষয়ে সম্পূর্ণ সুরা আল-আনফাল [সুরা নম্বর ৮] নাজিল করেন।
‘সালিম বিন জুনাদা <আবু মুয়াবিয়া <আল-আমাশ <আমর বিন মুরাহ <আবু উবাইদা <আবদ আল্লাহ হইতে বর্ণিত:
বদর যুদ্ধের প্রাক্কালে যখন বন্দীদেরকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল, আল্লাহর নবী জিজ্ঞাসা করেন, “এই বন্দীদের ব্যাপারে তোমাদের মতামত কী?”
আবু বকর জবাবে বলেন, “হে আল্লাহর নবী, তারা আপনারই লোক এবং আপনারই পরিবার পরিজন। তাদেরকে ছেড়ে দিন এবং তাদের সময় দিন। সম্ভবত: আল্লাহ তাদের প্রতি সদয় হবে।”
উমর বলেন, “হে আল্লাহর নবী, তারা আপনাকে মিথ্যুক বলেছে ও আপনাকে বিতাড়িত করেছে। তাদেরকে সামনে নিয়ে আসুন এবং তাদের কল্লা কাটুন।”
আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা বলেন, “হে আল্লাহর নবী, প্রচুর জ্বালানি কাঠ সমৃদ্ধ এক জলশূন্য পাথুরিয়ে নদীখাতের মধ্যে তাদেরকে আগুন দিয়ে পোড়ান।” আল-আব্বাস [মুহাম্মদের হাতে বন্দি তাঁর নিজেরই চাচা] তাকে বলেন, “নিজের পরিবারই আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।”
আল্লাহর নবী নীরব ছিলেন এবং তাদের কোনো জবাব দেননি। তারপর তিনি ভিতরে যান। কিছু লোক বলে, “তিনি আবু বকরের পরামর্শ নেবেন।” কিছু লোক বলে, “তিনি উমরের পরামর্শ নেবেন” এবং অন্যরা বলে, “তিনি আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহার পরামর্শ নেবেন।”
আল্লাহর নবী আবার বাহিরে এলেন এবং বললেন, “তোমরা আজ একই পরিবারভুক্ত। এদের একজনও যেন মুক্তিপণ ছাড়া রেহাই না পায়, অথবা যেন তাদের গর্দান যায়।”
আবদ আল্লাহ বিন মাসুদ [জবাবে] বলেন, “ব্যতিক্রম শুধু ‘সুহায়েল বিন বেইদা’ কারণ আমি শুনেছি যে, সে মুক্তকণ্ঠে ইসলাম স্বীকার করেছে।” আল্লাহর নবী নীরব থাকলেন এবং আমি [আবদ আল্লাহ বিন মাসুদ] মনে করি না যে, আমি ঐ দিনের তুলনায় অধিক ভীত আর কখনো হয়েছিলাম, আমি মনে করেছিলাম, আল্লাহর আরশ থেকে আমার ওপর কোনো প্রস্তর পতিত হবে; কিন্তু অবশেষে আল্লাহর নবী পুনরাবৃত্তি করলেন, “ব্যতিক্রম শুধু ‘সুহায়েল বিন বেইদা’।” এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ নাজিল করেছিল,
“নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে| (৮:৬৭) —-‘ তিনটি আয়াতের শেষ পর্যন্ত।”
আহমদ বিন মানসুর <আসিম বিন আলি <ইকরিমা বিন আম্মার <আবু জুমায়েল <আবদ আল্লাহ বিন আব্বাস <উমর বিন আল-খাত্তাব হইতে বর্ণিত:
বদর যুদ্ধের দিনে দুই সেনাদল একে অপরের সম্মুখীন হয়, আল্লাহ মুসরিকদের (polytheist) পরাজিত করে। তাদের ৭০ জনকে খুন ও ৭০ জনকে বন্দী করা হয়। সেদিন আল্লাহর নবী আবু বকর, আলী ও উমরের সাথে পরামর্শ করেন।
আবু বকর বলেন, “হে আল্লাহর নবী, এই লোকগুলি আমাদেরই চাচাতো-মামাতো-ফুপাতো ভাই, আমাদেরই স্বগোত্রীয় ও ভাইপো-বোনপো। আমি মনে করি আপনার উচিত মুক্তি-পণের বিনিময়ে তাদের কে ছেড়ে দেয়া, তাহলে তাদের কাছ থেকে আমাদের যে উপার্জন হবে তা আমাদের শক্তিবৃদ্ধি করবে এবং সম্ভবত: আল্লাহ তদেরকে সঠিকভাবে হেদায়েত করবে যাতে তারা আমাদের সাহায্যে আসতে পারে।”
আল্লাহর নবী বলেন, “আল-খাত্তাব, তোমার কি মনে হয়?”
আমি [উমর বিন আল-খাত্তাব] বললাম, “না, আল্লাহর কসম! আমি আবু বকরের সাথে একমত নই। আমি মনে করি যে, আপনি তাদের অমুক অমুককে আমার হাতে সোপর্দ করবেন, যাতে আমি তাদের কল্লা কাটতে পারি; আপনার উচিত হামজার ভাইকে তার কাছে সোপর্দ করা, যাতে সে তার ভাইয়ের কল্লা কাটতে পারে এবং আকিলকে আলীর কাছে সোপর্দ করা, যাতে সে তার ভাইয়ের কল্লা কাটতে পারে। তাতে আল্লাহ জানবে যে, আমাদের অন্তরে অবিশ্বাসীদের জন্য কোনোরূপ প্রশ্রয় নেই। এই লোকগুলি তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সর্দার।”
আল্লাহর নবী আমার মতামত পছন্দ না করে আবু বকরের মতটি পছন্দ করলেন এবং বন্দীদের জন্য মুক্তিপণ গ্রহণে সম্মত হলেন।
পরের দিন সকালে আমি আল্লাহর নবীর কাছে গেলাম। তিনি আবু বকরের সাথে বসেছিলেন এবং তাঁরা কাঁদছিলেন। আমি বললাম, “হে আল্লাহর নবী, আমাকে বলুন, কী এমন কারণ ঘটেছে যা আপনাকে এবং আপনার সহচরকে কাঁদাচ্ছে? যদি কারণটি কাঁদার মত হয় তবে আমিও আপনাদের সাথে কাঁদবো, আর তা না হলে আমি কাঁদার ভান করবো এই কারণে যে, আপনারা কাঁদছেন।”
আল্লাহর নবী বললেন, “এটি এই কারণে যে, বন্দীদের মুক্তির জন্য মুক্তিপণ নেয়া যা তোমার সহচররা উপস্থাপন করেছিল। এই গাছের (তিনি তাঁর কাছের এক গাছের দিকে নির্দেশ করলেন) চেয়েও অধিক নিকট থেকে আমার সামনে উপস্থাপিত হয়েছে যে, আমি যেন তাদেরকে শাস্তি প্রদান করি।” আল্লাহ নাজিল করেছে,
৮:৬৭- ৬৮– “নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর, অথচ আল্লাহ্ চান আখেরাত। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা| — এখান থেকে ঐ বাক্য পর্যন্ত (“যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ্ লিখে রেখেছেন) –তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌঁছাত।”
তারপরে আল্লাহ লুণ্ঠিত দ্রব্যাদি তাদের জন্য বৈধ [হালাল] করে’। [2][3][4]
>>> এখানে বলা হচ্ছে যে, কুরাইশদের বন্দী করে ধরে নিয়ে আসা এবং মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া মুহাম্মদের উচিত হয়নি। তাঁর উচিত ছিল তাঁদেরকে হত্যা করা (৮:৬৭)। আর তা না করার কারণে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের ওপর “আযাব” অবধারিত ছিল; কিন্তু যেহেতু “আল্লাহ আগে থেকেই এই ঘটনা লিখে রেখেছেন” তাই এই অবধারিত আযাব থেকে তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন (৮:৬৮)। আর তার পরের বাক্যে (৮:৬৯) বলা হয়েছে, “সুতরাং তোমরা খাও গনিমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।”
এভাবেই মুহাম্মদ জোরপূর্বক অপরের সম্পত্তি ও মালামাল লুণ্ঠন (গণিমত) ও মুক্ত মানুষকে ধরে নিয়ে এসে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ উপার্জিত অর্থে তাঁর ও তাঁর অনুসারীদের জীবিকা নির্বাহ হালাল করার স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন।
‘আবু জাফর আল-তাবারী <ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ < মুহাম্মদ ইবনে ইশাক হইতে বর্ণিত:
যখন নাজিল হয় এই আয়াত “‘নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা–“, আল্লাহর নবী বলেন, “যদি আল্লাহর আরশ থেকে গজব অবতীর্ণ হতো, তবে একমাত্র সা’দ বিন মুয়াদ ছাড়া কেহই রক্ষা পেত না, কারণ সে-ই শুধু বলেছিল, ‘হে আল্লাহর নবী, লোকদের জীবিত ছেড়ে দেয়ার চেয়ে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডই আমার বেশি প্রিয়’।”
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুহাজিরদের মোট সংখ্যা ছিল ৮৩, যাদেরকে আল্লাহর নবী তাঁদের ভাগ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এবং পুরস্কৃত করেছিলেন। অংশগ্রহণকারী আল-আউস গোত্রের [মদিনা-বাসী আনসার] মোট লোকসংখ্যা ছিল ৬১, যাদেরকে আল্লাহর নবী তাঁদের ভাগ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এবং আল-খাজরাজ [মদিনা-বাসী আনসার] মোট লোকসংখ্যা ছিল ১৭০। মুসলমানদের মধ্যে মোট শহীদ হয়েছিলেন ১৪ জন, ছয় জন মুহাজির ও আট জন আনসার।
আল-ওয়াকিদির মতে মুশরিকদের সংখ্যা ছিল ৯৫০ জন যোদ্ধা এবং তাদের অশ্বারোহী বাহিনীর ঘোড়া ছিল ১০০ টি’। [5]
[ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। – অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ – লেখক।]
Discussions about the lawfulness of taking captives:
‘When the events of Badr were over, God revealed al-Anfal (Sura 8) in its entirely concerning it.
‘According to Salm b Junadah <Abu Muawiyah <Al-Amash <Amr b Murah <Abu Ubayda <Abd Allah:
When it was the day of Badr and the captives were brought, the Messenger of God asked, “What do you say concerning these captives?”
Abu Bakr replied, “O Messenger of God, they are your people and your family. Spare them and give them time.Perhaps God will relent against them.”
Umar said, “O Messenger of God, they have called you a liar and driven you out. Bring them forward and cut off their heads.”
Abdullah b Rawahah said, “O Messenger of God, look for a Wadi with a lot of firewood in it, put them in it and set fire to it around them.” Al Abbas said to him, “Your own kin have severed the bonds of Kinship.”
The Messenger of God was silent and did not answer them. Then he went indoors, and some people said, “He will take Abu Bakr’s advice,” some said, “He will take Umar’s advice,” and othe people said, “He wil take advice of Abd Allah b Rawahah.”
When the Messenger of God came out again, —said,
“You today are a single household. Let not one of them escape without paying a ransom or losing his head.”
Abd Allah b Masud said, “Except for ‘Suhayl b Bayda’ for I heard him professing Islam.” The messenger of God was silent and I do not think that I have ever been more fearful that stones would fall on me from Heaven than I was that day; but at last the Messenger of God repeated, “Except for Suhayl b Bayda’.”
In respect of this matter God revealed,
“It is not for any Prophet to have captives until he hath made slaughter in the land—(8:67)” to the end of the three verses.
According to Ibn Humayd < Salamah < Muhammad b Ishaq:
When it was revealed, “It is not for any Prophet to have captives –” the Messenger of God said, “If punishment were to descend from Heaven none would escape from it but Sa’d Mu’ad, because he said, ‘O Prophet of God, extensive killing is dearer to me than sparing men’s lives.”
According to Ahmad b Mansur <Asim b Ali <Ikrima b Ammar <Abu Zumayl <Abd Allah b Abbas <Umar b al-Khattab:
On the day of Badr, the two armies meet, and God defeated the polytheist. Seventy of them were killed and sevety were taken captives. On that day the messenger of God consulted Abu Bakr, Ali and Umar.
Abu Bakr said, “O prophet of God, these people are cousins, fellow clansmen and nephews. I think that you should accepet ransoms for them so that what we take from them will strengthen us, and perhaps God will guide them aright so that they may be assistance for us.”
The messenger of God said, “What do you think, Ibn al-Khattab?”
I said, “I say no, by God! I am not of the same opinion as Abu Bakr. I think that you should hand so-and-so over to me so that I can cut of his head, and that you should hand Hamza’s brother [Muhammad’s own uncle Al-Abbas] over to him so that he can cut off his head, and that you should hand over Aqil [Ali’s brother] to Ali so that he can cut off his head. Thus God will know that there is no leniency in our hearts towards the unbelievers. These are their chiefs, their leaders and their formost men.”
The messenger of God liked what Abu Bakar said and did not like what I [Umar b al-Khattab] said and accpepted ransoms for their captives.
The next day I went to the prophet in the morning. He eas sitting with Abu Bakr and they were weeping. I said, “O Messenger of God, tell me what has made you and your companion wipe? If I find cause to weep I will weep with you, and if not I will pretend to weep because you are weeping.”
The Messenger of God said, “It is because of the taking of ransoms which has been laid before your companions. It was laid before me that I should punish them more nearly than this tree (and he pointed to a nearby tree).” God revealed,
8:67-68 – “It is not for any Prophet to have captives until he hath made slaughter in the land” – –to the words, “[Had it not been for an ordinance of Allah which has gone before] –an awful doom had come upon you on account of what ye took.”
After that God made the booty lawful for them—–”. [2][3][4]
According to Abu Jafar al-Tabari from Ibn Humyd from Salama from Ibn Ishaq:
The total number of Emigrants who were present at Badr and who were given a share and a reward from it by the Messenger of God was eighty three. The total number of Al-Aws who were present and received a share was sixty one and the total number of al-Khazraz who were present was one hundred and seventy. The total number of Muslims martyred on that day was fourteen men, six from Emmigrants and eight from the Ansars.
The polytheist, so al-Waqidi asserts, consisted of nine hundred and fifty fighters and their cavalry consisted of hundred horses. [5]
>>> চরম উদার ও সহনশীল ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী মক্কাবাসী কুরাইশদের প্রিয়জনরা মুহাম্মদের দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে সেই ধর্মের কারণেই তাদেরই নিকটাত্মীয়, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব সহ সকল অবিশ্বাসীদের প্রতি যে কী পরিমাণ ঘৃণা দৃষ্টি পোষণের অধিকারী হয়েছে, তা কুরাইশরা ঘুণাক্ষরেও উপলব্ধি করতে পারেননি। আর সেই ঘৃণার বশবর্তী হয়ে তাঁদের ধর্মান্তরিত সন্তানরা বিনা দ্বিধায় তাঁদেরই একান্ত পরিবার-পরিজন ও নিকটাত্মীয়দের অমানুষিক নৃশংসতায় যে খুন করতে পারে, কুরাইশরা তা কল্পনাও করতে পারেননি। অবিশ্বাসীদের প্রতি বিশ্বাসীদের মনোভাব ও কার্যকম কেমন হওয়া উচিত, তা মুহাম্মদ অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বহুবার বহুভাবে ঘোষণা করেছেন।
মুহাম্মদের ভাষায় তার আরো কিছু উদাহরণ:
“কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না ‘যদিও’ তারা পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়!
৫৮:২২ – যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।
৯:২৩ – হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে।আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা সীমালংঘনকারী।
৯:১১৩ – নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করে, যদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী।
৩১:১৫ – পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।
৫:৫৭ – হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না।আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও।
৫৮:১৪ – আপনি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করেননি, যারা আল্লাহর গযবে নিপতিত সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করে? তারা মুসলমানদের দলভুক্ত নয় এবং তাদেরও দলভূক্ত নয়। তারা জেনেশুনে মিথ্যা বিষয়ে শপথ করে।
৬০:১ – মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে। —
৬০:১৩ – মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ কাফেররা নিরাশ হয়ে গেছে।
অনুরূপ বাণী: ৩:২৮, ৩:১১৮, ৪:১৩৭-১৪০, ৪:১৪৪, ৫:৫১, ৯:১৬-১৭, ইত্যাদি।
>>> মুহাম্মদ তাঁর মতবাদ প্রচারের সেই শুরু থেকে (৬১০ খৃষ্টাব্দ) তাঁকে অবিশ্বাসকারী ও তাঁর আগ্রাসী মতবাদ প্রচার ও প্রসারে বাধাদানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে কী পরিমাণ অমানুষিক ঘৃণা, হুমকি, শাসানী, ভীতি প্রদর্শন, অসম্মান, দোষারোপ, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ হুমকি প্রদর্শন করেছেন, তা মুহাম্মদের ব্যক্তি-মানস জীবনী গ্রন্থের পাতায় পাতায় বর্ণিত আছে।
অনিশ্চিত পরমুখাপেক্ষী বেকার জীবনের অভিশাপ থেকে পরিত্রাণের আশায় যে সন্ত্রাসী নবযাত্রা (পর্ব ২৮) মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা শুরু করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় বদর যুদ্ধ জয়ই তাঁদের “সর্বপ্রথম বৃহৎ সফলতা”। নাখলায় বাণিজ্য কাফেলা হামলায় নগদ-প্রাপ্তির তুলনায় বদরের নগদ-প্রাপ্তির পরিমাণ অনেক বেশি। সেখানে মাত্র দু’জন বন্দীর মুক্তিপণের কড়ি মিলেছিল (পর্ব-২৯)। আর এখানে ৬৮ জন বন্দির মুক্তিপণের “বিশাল উপার্জন”-এর সম্ভাবনা! বন্দীদের সবাইকে হত্যা করলে ‘নগদ প্রাপ্তি’ আসবে কোত্থেকে? বন্দিদেরকে হত্যা করলে প্রতিহিংসা চরিতার্থ হয়, কিন্তু কোনো “কড়ি” মেলে না। আবু বকরের মত মুহাম্মদও এই সত্য অনুধাবন করেছিলেন।
উমর ইবনে খাত্তাবের সিদ্ধান্ত [“নিজের ভাইয়ের কল্লা কাটা”] এবং সা’দ বিন মুয়াদের সিদ্ধান্ত [“লোকদের জীবিত ছেড়ে দেয়ার চেয়ে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডই আমার বেশি প্রিয়”] সিদ্ধান্তই যে সঠিক, তা অনুধাবন করে অনুশোচনায় মুহাম্মদ ও আবু বকরের বুকভরা কান্নায় আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ নেই। নিশ্চিতভাবেই এই নরাধম কাফেরদের জবাই করা মুহাম্মদের (আল্লাহ) পছন্দ। তিনি তাঁর উদাহরণ ও রেখেছেন ইতিহাসের পাতায়। এই ঘটনার মাত্র তিন বছর পর ৬২৭ সালের মার্চ মাসে তিনি ও তাঁর অনুসারীরা, মাত্র ৬৮ জন নয়, ৭০০-৯০০ জন কাফেরকে বন্দী অবস্থায় এক দিনে একটা একটা করে ‘জবাই’ করে হত্যা করেছিলেন (পর্ব ১২)।
কিন্তু বদর যুদ্ধে মুহাম্মদ (আল্লাহ) তাঁর এই ইচ্ছে সম্বরণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন পরিস্থিতির কারণে। আর সে কারণেই তাঁর এই অনুশোচনা ও ক্রন্দন!
(চলবে)
[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।
পাদটীকা ও তথ্যসূত্র:
[1] আবু জা’ফর মুহাম্মদ বিন জারীর আল-তাবারী
[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-88706-344-6 [ISBN 0-88706-345-4 (pbk)],
– পৃষ্ঠা (Leiden) ১৩৫৪-১৩৫৫
[3] সহি মুসলিম – বই নম্বর ১৯, হাদিস নম্বর ৪৩৬০
“Abu Zumail said that the badith was narrated to him by Ibn ‘Abbas who said:
———–Then the Messenger of Allah (may peace be upon him) said: What is your opinion. Ibn Khattab? He said: Messenger of Allah. I do not hold the same opinion as Abu Bakr. I am of the opinion that you should hand them over to us so that we may cut off their heads. Hand over ‘Aqil to ‘Ali that he may cut off his head, and hand over such and such relative to me that I may but off his head. They are leaders of the disbelievers and veterans among them—-”.
[4] তফসীর ইবনে কাথির:
[5] Ibid আল তাবারী- পৃষ্ঠা ১৩৫৬-১৩৫৯
Leave a Reply