লিখেছেন কাফের নাস্তিক
‘বিসমিল্লায় গলদ’ বলে বাংলায় একটা বাগধারা আছে। এর অর্থ – শুরুতেই ভুল। বাংলা যেহেতু হিন্দুয়ানী ভাষা, সেহেতু এটা নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া যায় যে, কোনো কাফের হিন্দুর মাথা থেকেই এটা বেরিয়েছে। কারণ, মুসলমানরা যেখানে বিশ্বাস করে যে, কোরানে কোনো ভুল নেই, সেখানে “বিসমিল্লায় গলদ” অর্থাৎ বিসমিল্লার মধ্যে ভুল আছে, এটা তারা মাথা অর্থাৎ চিন্তাতেই আনতে পারবে না; প্রকাশ করা দূরে থাক।
যা হোক , যে কাফের হিন্দুর মাথা থেকে এটা বেরিয়েছে, ইসলাম সম্পর্কে তার জ্ঞানের গভীরতা দেখে আমি যতই চিন্তা করি, বিস্ময়ে ততই অবাক হই। মাত্র দু’টি শব্দের মাধ্যমে সমগ্র কোরান তথা ইসলামের মূলে সে কীভাবে কুঠারাঘাত করেছে, তা সত্যিই এক চিন্তাজাগানিয়া বিস্ময়ের ব্যাপার। এতক্ষণ ভূমিকা ঝাড়লাম, এখন দেখা যাক সত্যিই সেই বিস্ময়টা কী?
একটা সূরা বাদে কোরানের ১১৩টি সূরার প্রথমেই আছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” – এই কথাটির অর্থ “পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি।”
এখন কথা হচ্ছে মুসলিমরা বলে, সমগ্র কোরানে যা বলা আছে, তার সবটাই আল্লার বাণী। সুতরাং যেহেতু সব সূরার প্রথমেই এই বাক্যটি আছে, সেহেতু এটিও আল্লার কথা বলেই ধরে নিতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আল্লা কেন এই কথা বলতে যাবে যে, “পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি”? কেউ কি নিজের নামে কিছূ শুরু করে ? তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এই কথাটি আল্লা বলেনি। এই কথাটি বলেছে মুহম্মদ। কারণ শুধূ সেক্ষেত্রেই ব্যাকরণের সব নিয়মকানুন ঠিক থাকে। মুহম্মদ মনে করতো, তার উর্ধ্বতন একজন আছে, সে হচ্ছে আল্লা। তাই মুহম্মদ তার নাম স্মরণ করে কিছু শুরু করতেই পারে। সেটাই বিধিসম্মত।
তাহলে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পর এটা প্রমাণিত যে, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” এই বাক্যটি আল্লা বলে নি, বলেছে মুহম্মদ। আর তা-ই যদি হয়, তাহলে এটাও স্পষ্ট যে, কোরানের কোনো সূরাই আল্লা বলেনি, কোরান আল্লার বাণীও নয়, সবই বলেছে মুহম্মদ। তাই সে প্রতিটি সূরা শুরু করার পূর্বে তার কল্পিত আল্লাকে স্মরণ করে বলেছে, “পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি”। মানুষ হিসেবে এটা দোষের নয়।
ধর্মানুভূতি-আক্রান্ত প্রতিটি মানুষই তার ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে কাজ শুরু করতে ভালোবাসে। মুহম্মদও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তখনই, যখন মুহম্মদ বলেছে কোরান আমার নয়, আল্লার বাণী। এমনই আত্মপ্রবঞ্চক মুহম্মদ যে, সে নিজের জিনিসকে নিজের বলে প্রচার করার সাহস করেনি। পাছে লোকে তার কথা না মানে, এ জন্য।
আমার ধারণা, এত সব চিন্তা করে কোরান সৃষ্টির মূল রহস্য উপলব্ধি করে, ইসলাম সম্পর্কে মহাজ্ঞানী সেই হিন্দু কাফের ভবিষ্যতের নাস্তিকদের জন্য মাত্র দুটো শব্দে ইসলামকে মূল্যায়ন করে গেছেন। যে দুটো শব্দ ইসলামের ভিত্তিমূলকে কাঁপিয়ে দিতে পারে, ইসলামকে করতে পারে ধ্বংস। সেই দুটো শব্দ হচ্ছে “বিসমিল্লায় গলদ” অর্থাৎ “শুরুতেই ভুল”। আর যার শুরুতেই ভুল তার প্রায় সমস্তটাই যে ভুলে ভরা হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। ইসলাম কি তা-ই নয়?
আর মাত্র দুটো শব্দে কোরানের ১১৪টি সূরার সঠিক মূল্যায়ন, বিষয়টি কি সত্যিই অবাক করে না?
Leave a Reply