কয়েকদিন আগে একটা স্ট্যাটাস দিছিলাম এরকম- ইমাজিন : বোরখা পরা বিমানবালা!
ব্যাপারটা আমার নিজেরও মাথার উপর দিয়া গেছে।
আচ্ছা এইবার আরেকটু ডিটেইলস-এ দেখা যাক-
ইমাজিন : বোরখা হিজাব নিকাব পরা নারী পুলিশ কিংবা আর্মি!
ধরুন আমাদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কথা। সেখানে নির্দিষ্ট ড্রেসকোড আছে। সোজা কথায়- জামা-প্যান্ট। আমাদের দেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে প্রচুর নারী সদস্য আছেন। তারা সেই ড্রেসকোড মেনে চলেন। সোজা কথায় জামা-প্যান্ট পরে ডিউটি করেন। জামা-প্যান্ট পরিহিতা এদেরকে কি কখনো বেপর্দা মনে হয়েছে? কখনো কি মনে হয়েছে এরা অশ্লীল পোষাক পরেছেন?
এখন ধরেন কোন নারী পুলিশ বা সেনাসদস্য বললেন তিনি আর ঐ ড্রেস পরবেন না। তার পরিবর্তে তিনি বললেন যে তিনি বোরখা হিজাব নিকাব পরবেন, এবং এসব পরেই ডিউটি করবেন- তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা?
সারা পৃথিবীতে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই নির্দিষ্ট কিছু ড্রেসকোড এবং তাদের নিজস্ব কিছু শর্ত থাকে থাকে। এগুলো আগে থেকেই বলে দেয়া হয়। কেউ যখন সেখানে ভর্তি হন কিংবা কাজের জন্য আবেদন করেন, তখন সেই ড্রেসকোড এবং শর্তাবলী মেনে চলবেন- এমন কথা দিয়েই সেখানে ভর্তি হন। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর যদি সেই কথা না রাখেন, তাহলে কর্তৃপক্ষ যদি ব্যবস্থা নেয়, তাহলে সেটাকে ধর্মীয় ইস্যু করে আজাইরা কাহিনী করলে তারপর কেউ যদি ধর্মকেই কটাক্ষা করতে শুরু করেন, সেটা কি অন্যায় হবে?
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ড্রেসকোড মেনে না চলার জন্য এক ছাত্রীকে কারণ দর্শাও নোটিস দেয়া হয়েছিল। সেখানে কোন ভাবেই পর্দা করতে নিষেধ করা হয় নাই। ড্রেসকোডের শর্তে বলা হয়েছে, শুধু এমনভাবে মুখ ঢাকা যাবে না যাতে চিনতে অন্যদের কোন সমস্যা হয়। সম্প্রতি এই নোটিস দেয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশের ইসলামের হেফাজতকারীরা ইসলাম গেল গেল রব তুলছে। তারা গুজব রটাচ্ছে এই বলে যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি পর্দা করতে নিষেধ করেছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে, ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আর অনেকেই এই গুজবের সাথে তাল দিচ্ছেন আসল ব্যাপারটা না বুঝেই।
সেই নোটিসটি দেখা যাক- আসেন দেখি সেখান কী লেখা আছে-
এখানে স্পষ্ট কারণটি উল্লেখ করা হয়েছে- “face mask of hood of any kind that makes the individual unidentifiable”. এখন কেউ এটা দেখেও যদি না দেখার ভান করে ধর্ম টেনে আনেন, তাহলে পাবলিক প্লেসে ধর্ম টেনে আনার জন্য ধর্মকে কেন পুন্দানো যাবে না?
এবার দেশের নারী পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কিছু ছবি দেখা যাক। কার কার কাছে এগুলা অশ্লীল বা বেপর্দা মনে হচ্ছে, হাত তুলেন-
গুগল করে আরো দেখে নিতে পারেন।
ঘরের বাইরে নারীর পোষাকের সাথে ইসলাম টেনে আনলে এখনে আরো কিছু ব্যাপার চলে আসবে- ইসলাম কি মেয়েদের ঘরের বাইরে যেতে দেয়া সমর্থন করে? কি কি শর্তে বাইরে যাওয়া যাবে? তখন নারীদের সঙ্গে কাকে কাকে থাকতে হবে?- এসব প্রশ্নের উত্তরগুলাও আগে জেনে আসা দরকার। ইসলাম মানতে হলে আপনাকে পুরাটাই মানতে হবে। কিছু মানবো, কিছু মানবো না- এমন কথা ইসলামের কোথাও নাই। তাই কোন কিছুতে ধর্মর কান টেনে আনলে সাথে কিন্তু মাথাটাও চলে আসবে, সেই ব্যাপারটা মাথায় রেখে তবেই সব কিছুতে ধর্ম টানবেন। নইলে পরে ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগলে সেজন্য দায়ী থাকবেন আপনি নিজে!
বিঃদ্রঃ ধর্মানুনুভোদায় আঘাত দিতে পাল্লা বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করে না।
Leave a Reply