শিবের আমলের লোকজনদের মধ্যে একমাত্র শিবরেই একটু আধুনিক মনে হয়–ফ্যাশন কইরা বাঘের চামড়া পরত। বাকিদের গায়ে কোনো কাপড়চোপড় ছিল বইলা কোনো দলিল দেখলাম না। যেমন ধরেন ব্রহ্মা দাদু… শিবের বিয়ার বরযাত্রী যাইয়া শিবের হবুবধু সতীরে বিয়ার কনে সাজাইন্না রূপে দেইখা বিয়ার সভাতেই বীর্যপাত কইরা দিল, আর সবাই চাইয়া চাইয়া বুড়ার কাণ্ডকারখানা দেখল। শিব তো পারলে বুইড়ারে ধইরা খুনই কইরা ফেলায়। তখন শিবের শ্বশুর দক্ষসহ ব্রহ্মার মানসপুত্র নারদরা “মৈবৎ মৈবৎ” অর্থাত ‘করেন কী করেন কী’ বইলা না আগাইয়া আসলে তো ব্রহ্মার খবরই ছিল। আর এই মারার আইডিয়াটা কে দিছিল, আইডিয়া করেন তো। বিষ্ণু হারামজাদা। সে সতীরে দেইখা নিজেরে কোনো রকম সামলাইয়া শিবের কানে কানে কুমন্ত্রণা দিছিল–তোর বউ/হবু বউয়ের দিকে অনেকেই কুদৃষ্টি দিতে পারে, দিলে তারে খুন কইরা ফেলাবি। আর ব্রহ্মা কুদৃষ্টি কাহাকে বলে, উহা কত প্রকার ও কী কী হইতে পারে, উদাহরণসহ দেখাইতে গিয়া এক্কেরে মালআউট কইরা দিল! কাপড়চোপড় পরা থাকলে নিশ্চয়ই এই কেলেঙ্কারীটা হইত না।
================
মার্কণ্ডেয় বলিলেনঃ ভগবান বলিলেন, মহেশ্বর! লক্ষ্মীর পাশে আমি যেমন, দাক্ষায়ণীর সংসর্গে তুমিও তেমন শোভা পাইতেছ। (কালিকাপুরাণ, ১১ঃ২২-২৩, অর্থাৎ কালিকাপুরাণ, শিব বিবাহ, একাদশ অধ্যায়, শ্লোক নাম্বার ২২ এবং ২৩)
হে ভূতনাথ! সতীকে দেখিয়া বা তার রূপলাবণ্যের কথা শুনিয়া যে তাহার প্রতি সাভিলাষ হইবে, কোনো প্রকার তর্ক না করিয়া তুমি তাহাকে বধ করবে। (ঐ, ১১ঃ২৫)
মহাদেব হৃষ্টচিত্তে নারায়ণকে বলিলেন, “তাহাই হইবে।” (ঐ, ১১ঃ২৬)
ব্রহ্মা চারুহাসিনী সতীকে দেখিয়া কামাবিষ্টচিত্তে তাহার মুখাবলোকন করিতে লাগিলেন। (ঐ, ১১ঃ২৭)
ব্রহ্মা বারবার সতীর মুখের দিকে সতৃষ্ণ দৃষ্টিনিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। তখন তিনি অবশ হইয়া আবার ইন্দ্রিয়বিকার প্রাপ্ত হইলেন। (ঐ, ১১ঃ২৮)
তখন উজ্জ্বল দহনসন্নিভ ব্রহ্মবীর্য্য মুনিগণের সমক্ষেই ভূতলে নিপতিত হইল। (ঐ, ১১ঃ২৯)
তখন শঙ্কর নারায়ণের বাক্যস্মরণে শূল উদ্যত করিয়া ব্রহ্মাকে বধ করিতে অভিলাষী হইলেন। (ঐ, ১১ঃ৩২)
মরীচি, নারদ প্রভৃতি দ্বিজবরগণ হাহাকার করিতে লাগিলেন। (ঐ, ১১ঃ৩৩)
দক্ষও শঙ্কিতচিত্তে সত্বর সম্মুখে আসিয়া, হস্ত উত্তোলনপূর্বক “মৈবং মৈবং” (এরূপ করিবেন না, এরূপ করিবেন না) বলিয়া ভূতনাথকে নিষেধ করিতে লাগিলেন। (ঐ, ১১ঃ৩৪)
Leave a Reply