বিভিন্ন ইসলামিক বর্ণনা মতে এবং মুসলমানদের একটা কমন বিশ্বাস অনুযায়ী এই ব্যাপারটা সবাই জানি যে মহাম্মদ স্বশরীরে বোরাকে চড়ে মেরাজে গেছিলেন। জিব্রাইলের সাথে মসজিদে হারাম থেকে প্রথমে বাইতুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমন করেন। সেখানে মসজিদের দরজার খুঁটির সাথে বোরাক বেঁধে যাত্রা বিরতি করেন এবং সকল নবীর ইমাম হয়ে নামাজ আদায় করেন।
তারপর এক এক করে সাত আসমান ভ্রমণ করেন। প্রথম আসমানে আদমের সাথে দেখা হয়। আদমের সাথে পরিচয় করাই দেয়া হয় আদি পিতা বলে।
দ্বিতীয় আসমানে দেখা হয় ইয়াহইয়া ও ঈসা নবীর সাথে। তৃতীয় আসমানে ইউসুফ নবীর সাথে, চতূর্থ আসমানে ইদ্রীস নবীর সাথে, পঞ্চম আসমানে হারুন নবীর সাথে, ষষ্ঠ আসমানে মূসা নবীর সাথে এবং সব শেষে সপ্তম আসমানে দেখা হয় ইব্রাহীম নবীর সাথে যাকে বংশের আদি পিতা হিসাবে পরিচয় করাই দেয়া হয়। এরা সবাই যে নবীর নবুয়তের কথা স্বীকার করেন, সেটাও বলা হয়।
তারপর যাওয়া হয় সিদরাতূল মোনতাহা নামক গাছের নিকটে। সেখান থেকে উৎপত্তি চারটি নদীর সাথে পরিচয় করাই দেয়া হয়- যার দুটি নদী (সালসাবিল ও কাওসার) ভিতরের দিকে অর্থাৎ বেহেস্তের দিতে প্রবাহিত, এবং বাকি দুটি (মিসরের নীল ও ইরাকের ফোরাত) বাহিরের দিকে অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের দিকে প্রবাহিত। এরপর দেখানো হয় বায়তুল মা’মুর, ফেরেস্তাদের আসমানী কা’বা। তারপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সেখান থেকে রফরফ নামক বাহনে করে ৭০ হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আল্লার দরবারে হাজির হন। সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম পান।
এই হলো মোটামুটি মেরাজের ঘটনা। তবে এর মাঝে জিব্রাইলের সাথে বেহেস্ত ও দোজখ পরিদর্শন করেন। জাহান্নাম দর্শনের সময় প্রথমেই জাহান্নামের দারোগা মালেককে তিনি দেখলেন। মালেক কখনো হাসে না। তার চেহারায় হাসি খুশির কোন ছাপও নেই। জাহান্নামে নবী দেখলেন এতিমের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎকারীদের অবস্থা- তাদের ঠোঁট ছিলো উঁটের ঠোটের মত। তাদের মুখে পাথরের টুকরার মত মত আগুনের পিণ্ড ঢুকানো করানো হচ্ছে আর সেই আগুনের পিণ্ড তাদের গুহ্যদ্বার দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সুদখোরদের ঠোঁটের অবস্থা এতবড় ছিল যে তারা নাড়াচাড়া করতে পারছিল না। ফেরাউনের অনুসারীদের জাহান্নামে নেয়ার সময় তারা এসব সুদখোরকে মাড়িয়ে যাচ্ছিল। জেনাকারীরা সামনে তাজা গোশত থাকা সত্বেও তারা তাজা গোশত রেখে পঁচা গোশত খাচ্ছিল। যারা পরকীয়া করত কিংবা স্বামী বাজে অন্যের বীর্যে সন্তান ধারণ করছিল, সেই সব মহিলার বুকে বড় বড় কাঁটা বিধিয়ে শুন্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
নবীর আল্লার সাথে সাক্ষাত এবং জাহান্নাম পরিদর্শন নিয়ে মুসলমান চিত্রশিল্পীদের আঁকা কিছু ছবিও আছে-
এবার একটু মেরাজের আগে-পরের কাহিনী শোনা যাক-
উম্মেহানির বর্ণনায় মেরাজের যে কাহিনী জানা- ঐ রাতে, মুহাম্মদ, রাতের প্রার্থনা সেরে ঘুমাতে যান। খুব ভোরে মুহাম্মদ উঠে সবাইকে জাগালেন এবং প্রার্থণা সারলেন। উম্মে হানিও তাঁর সাথে প্রার্থণা সারলেন। প্রার্থণা শেষে মুহাম্মদ জানালেন, “ও উম্মেহানি, এই ঘরে আমি তোমাদের সাথে প্রার্থনা করেছি। যেমন তোমরা দেখেছ। তারপর আমি পবিত্র স্থানে গিয়েছি এবং সেখানে প্রার্থনা সেরেছি। এবং তারপর তোমাদের সাথে ভোরের প্রার্থণা সারলাম, যেমন তোমরা দেখছো।”
– অর্থাৎ মেরাজে যাওয়ার আগে নবী উম্মেহানির ঘরে ছিল। সেখানে রাতের প্রার্থনা করে ঘুমাতে গেছে। এবং ভোরবেলা সবাইরে জাগাইয়া “পবিত্র স্থানে গিয়েছি” বলে মেরাজের গল্প ফাঁদছে। তারপর সবার সাথে ভোরের প্রার্থনা সারছে। অর্থাৎ উম্মেহানির ঘরে ঢুকে মেরাজে গেছে, আবার মেরাজ থেকে ফিরে এসে উম্মেহানির ঘর থেকে বের হয়েছে।
আনাছ (রা:) মালেক ইবনে সা’সাআ’হ (রা:) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, “নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে যেই রাত্রে আল্লাহ তাআলা পরিভ্রমণে নিয়া গিয়াছিলেন সেই রাত্রের ঘটনা বর্ণনায় ছাহাবীগণের সম্মুখে তিনি বলিয়াছেন, যখন আমি কা’বা গৃহে উন্মুক্ত অংশ হাতীমে (উপণীত হইলাম এবং তখনও আমি ভাঙ্গা ঘুমে ভারাক্রান্ত) ঊর্ধ্বমুখী শায়িত ছিলাম, হঠাৎ এক আগন্তক (জিব্রাঈল ফেরেশতা) আমার নিকট আসিলেন (এবং আমাকে নিকটবতী/ জমজম কূপের সন্নিকটে নিয়া আসিলেন)। অত:পর আমার বক্ষে ঊধর্ব র্সীমা হইতে পেটের নিম্ন সীমা পর্যন্ত চিরিয়া ফেলিলেন এবং আমার হদয় বা কল্বটাকে বাহির করিলেন। অত:পর একটি স্বর্ণপাত্র উপস্থিত করা হইল, যাহা ঈমান (পরিপক্ব সত্যিকার জ্ঞান বর্ধক) বস্তুতে পরিপূর্ণ ছিল । আমার কল্বটাকে (জমজমের পানিতে) ধৌত করিয়া তাহার ভিতরে ঐ বস্তু ভরিয়া দেওয়া হইল এবং কল্বটাকে নির্ধারিত স্থানে রাখিয়া আমার বক্ষকে ঠিকঠাক করিয়া দেওয়া হইল। অতঃপর…” অতঃপর বোরাকের কাহিনী এবং সেটা চড়ে মেরাজে যাওয়ার ঘটনা।
এবার আরো কিছু ফ্যাক্ট দেখা যাক-
উম্মেহানি কে ছিল? মহাম্মদের চাচাতো বোন। আবু তালিবের মেয়ে। মহাম্মদকে ছোটবেলায় এটিম অবস্থায় দেখভাল করেছিলেন। মহাম্মদ উম্মেহানিকে ভালোবেসেছিল। কিন্তু মহাম্মদ গরীব বলে আবু তালিব তার সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজী হন নাই। তাছাড়া আবু তালিব ছিলেন মুশরিক। সেই থেকেই মহাম্মদ আবু তালিবের উপর একটা চাপা ক্ষোভ ছিল।
মহাম্মদ যখন ঐ রাতে উম্মেহানির ঘরে যায়, তখন ঘরে আর কেউ ছিল না। এবার চিন্তা করেন, আপনার বিয়ে হয়ে গেছে, অথচ প্রথম প্রেমের কথা ভুলতে পারছেন না। পরের দিকে একটা সময় সেই পুরানো প্রেমিক/প্রেমিকা আপনার আয়ত্বের মধ্যে। তখন ফিলিংসটা কেমন হবে? আর ঘটনাটা ঘটে গেলে বা কেউ দেখে ফেললে তখন সেটাই বা লোকজনের কাছে কিভাবে চাপা মেরে বা ধামাচাপা দেয়ার জন্য বলবেন?
এবার একটু কমনসেন্স, সেই সাথে একটু দুষ্টু বুদ্ধি খাটান (সুশীলরা দূরে গিয়া মরেন)-
– উম্মেহানির ঘরে প্রথম যে প্রার্থনার কথা মহাম্মদ বলছে, সেটা প্রথম সেএণ্ডক্স।
– তারপর ঘুমিয়ে পড়ার কাহিনী যেটা মহাম্মদ “ভাঙ্গা ঘুমে ভারাক্রান্ত” হিসাবে বলছে। আসলেই তাই। এরকম পরিস্থিতে একেবারে ঘুমিয়ে পড়া অসম্ভব। পুনরায় সেএণ্ডক্স না ওঠা পর্যন্ত ভাঙা ভাঙা ঘুম…
– “পবিত্র স্থানে গিয়েছি”- ঐ সময়ে প্রথম প্রেমের প্রেমিকার যোনির চাইতে পবিত্র স্থান আর কী হতে পারে!
– ছাহাবীগণের সম্মুখে যে বর্ণনা সেটা পরেরবার সেএণ্ডক্সের কাহিনীটারই রূপক বর্ণনা। জিব্রাঈল ফেরেশতা আর কেউ নয়; উম্মেহানি।
– ভাঙ্গা ঘুমে ভারাক্রান্ত…ঊর্ধ্বমুখী শায়িত – কোন পজিশনের কথা বলা হইছে, আশা করি খুলে বলতে হবে ন।। আর ভাঙা ঘুম মানে সেএণ্ডক্স করে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে আছে, আর উম্মেহানি উপরে বসে একটু একটু করে আবার উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে।
– বক্ষে ঊধর্ব র্সীমা হইতে পেটের নিম্ন সীমা পর্যন্ত চিরিয়া – কাপড় খুলে ফেলার কাহিনী নয়?
– হদয় বা কল্বটাকে বাহির – ঐ মুহুর্তে হৃদয় বলতে লিঙ্গ ছাড়া আর কী হইতে পারে!
– কল্বটাকে (জমজমের পানিতে) ধৌত – উম্মেহানি লিঙ্গটাকে মুখের ভিতর নিয়ে…হায়রে জমজমের পানি!
– ঐ বস্তু ভরিয়া দেওয়া হইল – কিসের মধ্যে কী ভরিয়া দেয়া হইল, সেইটাও যদি না বুঝতে পারেন তো আজীবন বকরী থাকাই উচিত আপনার।
– কল্বটাকে নির্ধারিত স্থানে রাখিয়া আমার বক্ষকে ঠিকঠাক করিয়া দেওয়া হইল – কাজ শেষ!
– অতঃপর…” অতঃপর বোরাকের কাহিনী এবং সেটা চড়ে মেরাজে যাওয়ার ঘটনা। ব্যাপারটা উলটা। উম্মেহানি ঘোড়ায় চড়ছিল। আর গল্পের ফাঁদে পড়ে বোরাকের মুখটা উম্মেহানির মত হয়ে গেল।
এবারে একটু ইসলামিক গিয়ান খাটান-
কেয়ামতে বা শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস ইসলামের মূল বিশ্বাসগুলির একটি| ইসলাম ধর্মে কেয়ামত বা কিয়ামত হলো সেই দিন যে দিন এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে আল্লাহ সৃষ্ট সকল জীবকে পুনরুত্থান করা হবে বিচারের জন্য| সকল জীবকে তার কৃতকর্মের হিসাব দেয়ার জন্যে এবং তার কৃতকর্মের ফলাফল শেষে পুরস্কার বা শাস্তির পরিমান নির্ধারণ শেষে জান্নাত/বেহেশত/স্বর্গ কিংবা জাহান্নাম/দোযখ/নরক এ পাঠানো হবে| [উইকি]
অর্থাত কেয়ামতের আগ পর্যন্ত সবাই কব্বরে আজাব খেতে থাকবে। কেয়ামতের দিন সবাইরে কব্বর থেকে উঠিয়ে বিচার করে তারপর জান্নাত/জাহান্নাম পাঠাবে। অর্থাৎ কেয়ামতের আগে কারো পক্ষে জান্নাত বা জাহান্নামে যাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে মহাম্মদ যে সাত আসমানে ৭ জনরে আর দোজখে গিয়া দুর্নীতিবাজ সুদখোর পরকিয়াকারী প্রভৃতি পাপীষ্ঠাদের দেখল, তারা কেয়ামতের আগেই ওখানে গেল কিভাবে?
আগের সব কথা বাদ দিলেও এই একটা প্যাঁচেই মহাম্মদ এখানে ধরা, এবং মেরাজের কাহিনী যে সম্পূর্ণ ভূয়া, সেটা বুঝতে আর অসুবিধা থাকার কথা নয়, যদি না আপনি আজীবন বকরি হয়ে থাকেন।
Arup Sen
আমীন না বলে গেলাম না।