বইটির শেষে “সমাপ্তি” শিরোনামে তিনি লিখেছেন তাঁর জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। পড়তে গিয়ে কখনও হাহাকার জেগে ওঠে বুকে, শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে, গর্ব হয়, প্রেরণা সঞ্চারিত হয় মনে। কয়েকটি ছোট্ট উদ্ধৃতি:
বর্তমানে আমার বয়স প্রায় ৮৩ বছর। কাজেই আজ আমি যে ‘সমাপ্তি নিবন্ধটি লিখছি, তা বাহ্যত এ পুস্তিকাখানার সমাপ্তি হলেও মূলত আমার জীবনেরও সমাপ্তি। তাই আমার জীবননাট্য সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আলোচনা করছি।…
… ১৩৩৯ সালে আমার মা মারা গেলে আমি আমার মৃত মায়ের ফটো তুলেছিলাম। আমার মাকে দাফন করার উদ্দেশ্যে যে সমস্ত মুন্সী, মৌলভী ও মুছল্লিরা এসেছিলেন, ‘ফটো তোলা হারাম’ বলে তারা আমার মা’র নামাজে জানাজা ও দাফন করা ত্যাগ করে লাশ ফেলে চলে যান। অগত্যা কতিপয় অমুছল্লি নিয়ে জানাজা ছাড়াই আমার মা’কে সৃষ্টিকর্তার হাতে সোপর্দ করতে হয় কবরে। ধমীয় দৃষ্টিতে ছবি তোলা দূষণীয় হলেও সে দোষে দোষী স্বয়ং আমিই, আমার মা নন। তথাপি কেন যে আমার মায়ের অবমাননা করা হলো, তা ভেবে না পেয়ে আমি বিমূঢ় হয়ে মার শিয়রে দাড়িয়ে তাঁর বিদেহী আত্মাকে উদ্দেশ্য করে এই বলে সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, “মা, আজীবন ছিলে তুমি ধর্মের একনিষ্ঠ সাধিকা। আর আজ সেই ধর্মের নামেই হলে তুমি শেয়াল-কুকুরের ভক্ষ্য। সমাজে বিরাজ করছে এখন ধর্মের নামে অসংখ্য অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার। তুমি আমায় আশীৰ্বাদ করো – আমার জীবনের ব্রত হয় যেনো কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস দূরীকরণ অভিযান। আর সে অভিযান সার্থক করে আমি যেনো তোমার কাছে আসতে পারি।”…
… ১৩৫৮ সালে ‘সত্যের সন্ধান’-এ আমার যে বাজনা শুরু হয়েছিলো, ১৩৯০ সালে ‘অনুমান’-এ তার সন্ধ্যা-বিরতি, হয়তোবা সমাপ্তি।
কিন্তু –
এসে জীবনের সন্ধ্যাবেলা,দেখি এ জেহাদ নয়, খেলা।যদি আবহাওয়া থাকে ভালো,তবে নিশীথেও চলবে খেলা,থাকবে যতোক্ষণ আলো।
এ এমন এক বই, যেটা পড়া না থাকলে অতিঅবশ্যপাঠ্য। এমনকি পড়া থাকলেও বারবার পাঠে বিরক্তি জাগে না একবিন্দু, ম্লান হয় না মুগ্ধতা।
ফরম্যাট: পিডিএফ
(অনলাইনে লভ্য সমস্ত বাংলা কুফরী কিতাব এক জায়গায়, এই ঠিকানায়)
Leave a Reply