• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

সৌদি নারীদের সত্যি কাহিনী

You are here: Home / ধর্মকারী / সৌদি নারীদের সত্যি কাহিনী
March 20, 2017
মূল: খালেদ ওলীদ
অনুবাদ: আবুল কাশেম

[ভূমিকা: ডিসেম্বর মাসে খালেদ ওলিদের ইসলাম পরিত্যাগের জবানবন্দির অনুবাদ করেছিলাম। তখন লিখেছিলাম, খালেদ আমাকে অনেক ই-মেইলে সৌদি আরাবের ইসলাম সম্পর্কে লিখেছিল। এখানে আমি তার আর একটি লেখা অনুবাদ করে দিলাম। উল্লেখযোগ্য যে খালেদের এই লেখাটি একটা বইতে প্রকাশ হয়েছে। বইটার টাইটেল হলো: Why We Left Islam. – আবুল কাশেম, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১০]

অনেকেই বলে থাকেন, ইসলাম নারীদের শ্রদ্ধা করে এবং তাদের মূল্য দিয়ে থাকে। কিন্তু আমার নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি বলতে পারি, এই ধারণা সর্বৈব মিথ্যা। সৌদি আরবের আদি অধিবাসী হিসেবে আমি স্বচক্ষে দেখেছি, কী ঘৃণ্য ও নীচুভাবে ইসলামী সমাজে নারীদেরকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আমি যা চাক্ষুষ দেখেছি – ইসলামে নারীদের কী দুর্দশাদায়ক ও হীনকর অবস্থা – তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করব এই রচনায়। আমি হলফ করে বলতে পারি: এই রচনার প্রতিটি শব্দ সম্পূর্ণ সত্য এবং সত্য ছাড়া এক বিন্দু মিথ্যা নেই। এই রচনায় কিছুমাত্র মনগড়া বা অতিরঞ্জিত বিষয় নেই। এই লেখা আমি নিজের মন থেকে লিখেছি, কেউই আমাকে বাধ্য কিংবা প্রভাবিত করেনি এই লেখার জন্য। এর কারণ – আমার জন্ম সৌদি আরবে, এবং এই সৌদি আরবেই আমি পাকাপোক্তভাবে থাকি।

আমার আছে তিন ভগিনী। পড়াশোনার জন্য তারা ভীষণ অনুপ্রাণিত। নিজের চেষ্টায় ওরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছিল। কিন্তু আমাদের দেশের নারীদের শিক্ষার ওপর বিভিন্ন অযৌক্তিক, সেকেলে ও অন্যায্য নিয়ম চাপিয়ে দেয়ার জন্য ওরা ওদের পছন্দসই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারল না। আমার শত ইচ্ছা সত্ত্বেও ওদের শিক্ষাকে এগিয়ে নেবার জন্য আমার করার কিছুমাত্র ছিল না। আমার হাত আছে বাঁধা। কারণ আমাদের সমাজে যে-নারী আধুনিক শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিতা হয়, সে সমাজের বিরাগভাজন হয়।

আমার এক ভগিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেষ করে পড়াশোনা ছেড়ে দিল। তার কারণ, সে চাইছিল সে সৌন্দর্যচর্চায় প্রশিক্ষণ নেবে; কিন্তু আমাদের মতো খাঁটি ইসলামি সমাজে তার অভিলাষ পূর্ণ করা সহজ নয়। তার জন্যে বিউটি থেরাপিস্ট হওয়া একেবারেই অলীক কল্পনা মাত্র। আমার অপর দুই ভগিনী বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হতে চাইল। তাই ওরা উচ্চমাধ্যমিক মাত্রায় শিক্ষা সমাপন করল।

আমার পরিষ্কার মনে আছে, আমার ঐ ভগিনীরা যখন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল, তখন ওদের পরিচয়পত্রে ওদের নাম ছিল ঠিকই, কিন্তু ছবি ছিল আমার পিতার। এর অর্থ এই যে, আমার ভগিনীদের কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নাই। ওরা কাগজে আছে নামেমাত্র। পাঠকবৃন্দ, আপনারা এই ধরনের জঘন্য ব্যবস্থা জেনে চমকে যাবেন না। আমাদের সমাজে নারীদেরকে ধরা হয় গৃহপালিত পশুর মতো। গৃহপশুর যেমন সর্বদাই এক মালিক থাকে, তেমনিভাবে আমাদের নারীদের সর্বদাই কেউ না কেউ মালিক হয়। আমাদের নারীরা মানব হিসাবে স্বীকৃতি পেতে পারে না। সৌদি আরবের আইন বলে যে, কোনো কলেজের মেয়ে তার পরিচয়পত্রে তার নিজস্ব ছবি লাগাতে পারবে না। একমাত্র মেয়ের পিতার, ভ্রাতার, স্বামীর অথবা তার আইনী অভিভাবকের (মাহ্‌রম) ছবি থাকবে।

সে যাই হোক। আমার ঐ দুই বোন শিক্ষকতা প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে থাকল। কিন্তু ব্যাপার হলো, চাকরিস্থল আমাদের গৃহের নিকট হতে হবে। কারণ আমার বোনেরা কোনো পরিস্থিতিতেই আমার পিতার নাগালের বাইরে যেতে পারবে না। এর অর্থ হল – ওরা কোনোদিনই চাকরি পাবে না।

একজন বিবেকবান ভ্রাতা হিসাবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের এলাকার অনেক পুরুষের তুলনায় আমার ভগিনীরা বিদুষী, দায়িত্ববান – এমনকি আমার চাইতেও। আমি পরিপূর্ণভাবে জানি যে, ওদেরকে সুযোগ দেওয়া হলে কোনো সমস্যা ছাড়াই ওরা নিজেরাই নিজেদের জীবন সুষ্ঠুভাবে গড়ে নিতে পারবে। সত্যি বলতে কি, ওরা অনেক শক্ত কাজ আমাদের চাইতেও ভালোভাবে সম্পন্ন করার সামর্থ্য রাখে।

কিন্তু, হায় কী দুর্ভাগ্য! এই আমার তিন শিক্ষিতা, জ্ঞানসম্পন্না, উচ্চাকাঙ্খী ও দায়িত্বশীল ভগিনীগন এক নিরক্ষর পিতার হাতে বন্দিনী। আমার পিতা গৃহের বাইরের বিশ্ব সমন্ধে কিছুই জানেন না। তিনি বিশ্বসভ্যতার অগ্রগতি ও বিকাশের কোনো প্রয়োজনীয়তাই দেখেন না। এরই সাথে তিনি আমার তিন বোনকে বাধ্য করছেন তাঁর চৌহদ্দিতে তাদের জীবনকে বেঁধে দিতে।

আমার পিতা আমার বোনদের বিবাহ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। এর কারণ এই যে, আমার পিতা কঠিনভাবে শর্ত দিয়েছেন যে, অ ধূমপানকারী, পাক্কা ইসলামি এবং একই গোত্রের পাত্র ছাড়া আরা কাউকে আমার বোনেরা বিবাহ করতে পারবে না। এখন দেখা যাচ্ছে, এই মূঢ় এবং অনড় শর্তের কারণে আমার বোনদের চিরকুমারী থাকতে হবে। অদূর এবং সুদূর ভবিষ্যতে ওদের বিবাহের কোনো সম্ভাবনাই নেই।

আমাদের এই কঠোর ইসলামি সমাজে যেসব পুরুষ ধুমপান করে অথবা/এবং নামায রীতিমত পড়ে না, তাদেরকে বিবাহের অনুপযুক্ত ধরা হয়। কোনো পুরুষ বিবাহ করতে চাইলে তাকে দু’জন সাক্ষী জোগাড় করতে হবে, যারা সাক্ষ্য দেবে যে, ঐ বিবাহইচ্ছুক পুরুষ ধূমপায়ী নয় এবং মসজিদে নিয়মিত নামায আদায় করে। এই নিয়মটা একেবারেই বাধ্যবাধকতামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। এই প্রক্রিয়াটা সৌদি সমাজে এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, ঐ সাক্ষ্য ছাড়া বিবাহ ভেঙে যেতে পারে। আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এক সৌদি গোত্রের পাত্র অন্য সৌদি গোত্রের পাত্রীকে কোনোক্রমেই বিবাহ করতে পারবে না। যদিও উভয় গোত্রই মুসলমান। এই প্রসঙ্গে এক সৌদি মহিলার অ মুসলিম পাত্রকে বিবাহের কথা না-ই বা লিখলাম। এটা তো সম্পূর্ণ হারাম, চিন্তাই করা যায় না।

আমাদের গোত্রে নারীরা পুরুষদের তুলনায় প্রায় দুই- তিন গুণ বেশি। এর অর্থ হল, আমাদের অনেক মহিলাকে চিরজীবন অবিবাহিত থেকে যেতে হবে। কারণ আমাদের গোত্রের বাইরে বিবাহ করা সম্পূর্ণ অচিন্তনীয়। আমাদের সমাজে পুরুষরা বিশ বছরের নিচের মেয়েদেরকে বিবাহ করতে চায়। তাদের ষোল বছর অথবা তার কম বয়সি মেয়েদের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ। এর পরিণাম এই যে, বিশ বয়সের ঊর্ধ্বের মেয়েদের বিবাহের সম্ভাবনা একদম শূন্য। এইসব মেয়ের জন্য একটাই পথ – তাদেরকে বৃদ্ধ পুরুষ বিবাহ করতে হবে।

কাজেই দেখা যাচ্ছে, এইসব গোঁয়ার ইসলামী নিয়ম কানুনের জন্য আমাদের সমাজের বাড়তি বয়সের মেয়েদের ভবিষ্যৎ বিবাহজীবন একেবারেই দুরূহ।

এখন দেখা যাক আমার পিতার সত্যিকার কারণ: কেন তিনি তাঁর মেয়েদের বিবাহের ব্যাপারে একেবারেই নিরুৎসাহী। এই ব্যাপারে আমি বলতে চাচ্ছি, কেন আমার পিতা তাঁর মেয়েদেরকে অন্য গোত্রের ছেলেদের হাতে তুলে দিতে নারাজ।

বেশিরভাগ সৌদি পুরুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, নারীদের নিজস্ব কোনো আশা, আকাঙ্খা, উচ্চাভিলাষ থাকতে পারে না। তাই বিবাহের ব্যাপারে সৌদি মেয়েদের অভিমত সম্পূর্ণ অবান্তর। একটি সৌদি মেয়ে সম্পূর্ণভাবে তার মালিকের সম্পদ। মেয়েটির মালিক তার মেয়েটির ভাগ্য নির্ধারক। সৌদি পুরুষেরা মনে করে যে, তাদের গোত্রের মেয়েদের অন্য অজানা গোত্রের ছেলের সাথে বিবাহ হওয়া খুবই লজ্জার ব্যাপার। একজন সৌদি কোনো রকমেই এটা মানতে পারবে না যে, তাদের গোত্রের এক মেয়ের ‘সম্মান’ অন্য গোত্রের ছেলে দেখে নেবে। এক সৌদি পিতা চিন্তাই করতে পারে না যে, তার কন্যা অন্য গোত্রের অচেনা ছেলের সাথে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হবে – এমনকি বিবাহের পরেও। যদিও সে মুসলিম। এটাই হচ্ছে আমার পিতার আসল কারণ – কেন তিনি তাঁর মেয়েদের বিবাহে রাজি নন অন্য গোত্রের ছেলের সাথে। তাঁর মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটবে, যখন তিনি জানবেন যে, ঐ বাইরের লোকটি তাঁর মেয়ের সাথে যৌনতায় মিলবে এবং সে তাঁর কন্যার যৌনাঙ্গ দেখে ফেলবে।

ওপরে উল্লেখিত কারণের জন্য প্রচুর সৌদি পিতা দ্বি বিবাহের আয়োজন করেন। অর্থাৎ, আপনি আপনার ছেলেকে দিন আমার কন্যার কাছে, এবং আমি আমার কন্যাকে দিব আপনার ছেলের হাতে। এই নিয়মটা ভগিনী হলেও চলবে। এভাবে উভয়পক্ষ সান্ত্বনা পায় যে, উভয়ের ‘সম্মান’ রক্ষা হলো। আমাদের সমাজে যখন কারও অর্থের প্রয়োজন পড়ে কিংবা নতুন স্ত্রীর প্রয়োজন হয়, তখন মেয়েদের এভাবে পণ হিসাবে ব্যবহার করে কিছু সৌদি মহিলা অর্থোপার্জন করে। কিন্তু তারা যা- ই আয় করে, তার সবটাই চলে যায় তাদের পিতার অথবা স্বামীর পকেটে। অনেক মহিলার পিতা আশঙ্কা করেন যে, তাঁদের কন্যার আয় স্বামীর কাছে চলে যাবে – তাই সেই সব পিতারা চান না যে, তাঁদের কন্যারা বিবাহ করুক। আমার মনে হয়, এটাও হয়ত আমার পিতার একটা কারণ হতে পারে – কেন তিনি একপ্রকার বিবাহ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আমার বোনদের ওপর।

তাহলে এই সমাজে আমার বোনেরা কেমন করে বেঁচে আছে?

(পরবর্তী পর্ব এখানে)

Category: ধর্মকারীTag: রচনা
Previous Post:নিত্য নবীরে স্মরি – ২৭৮
Next Post:পারলৌকিক প্লেবয়

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top