লিখেছেন: আরিফুর রহমান
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে গেলবার বিনপির বিছানা থেকে জামাতকে পতি-হরন করে নিজের বিছানায় নিয়ে এসে রাজ্য জয় করা আওয়ামী লীগ এবারও জামাতকেই নিজের ওপর সওয়ার হবার সুযোগ করে দিচ্ছে।
আমরা বোধহয় ভুলে যাচ্ছি অনেকদিন থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামাত (পড়ুন সউদি / পাকি ইসলামিস্ট এজেন্ট) সবচেয়ে বড়ো খেলোয়ার। পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয় নাই বিধায় তাকে আওয়ামী এবং বিনপি নামক দুটি মুখপত্রকে পরিচালনা করতে হয়।
‘৯১ এবং ২০০১ এর নির্বাচনে জামাত উঠিয়েছিলো বিনপিকে, কারন জামাতের প্রতিপক্ষ প্রগতিশীলতার ধ্বজ্বাধারী হিসেবে আওয়ামী লীগের ‘ফুলের মতো চরিত্র’ বজায় রাখা জরুরী ছিলো। গেমটা ফেয়ার দেখানো নিয়ে কথা। মাঝখানের ১৯৯৬ এর নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে জামাতদের সাথেই তথাকথিত ‘এলায়েন্স’ করেই সরকার গঠন করতে হয়েছিলো। আমরা বেকুব প্রগতিশীলেরা আম্লীগের ছেলেভুলানো কথায় ভুলেই গিয়েছিলাম সে কথা।
এরপরে ২০০৮ এর নির্বাচনেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবার ব্যাপক প্রতিশ্রুতি নিয়ে আবারও ক্ষমতায় এলেও বিচার প্রক্রিয়ায় শুরু করায় টালবাহানা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে যথাযথ লোকবল ও পৌর সুবিধা না দেয়া, সর্বোপরি তদন্ত দলকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখে ‘প্রসিকিউশন’কে মুরগী দেখিয়ে ডাল খাওয়ানোর ভন্ডামি পুরোটাই করা হয়েছে অযথা সময় নষ্ট এবং জামাতের শীর্ষ শক্তিকে বাঁচিয়ে দেবার উছিলায়।
বাংলাদেশের ষোল কোটি জনগন বিচার চায়। চেয়ে এসেছে। আফসোসের বিষয় যারাই ক্ষমতায় ছিলো, অর্থ এবং ব্যবসার লোভে ক্ষমতারোহী এই দলগুলি প্রতক্ষ্য এবং পরোক্ষভাবে জামাতের পারপাসই সার্ভ করে এসেছে।
আমাদের একটা ভুল ভাঙ্গা প্রয়োজন। আমরা জামাতকে সউদি পাকি এজেন্ট হিসেবে জানলেও তাদের ওপরে ছাতা ধরে রাখা ব্রিটেনকে আবার ‘প্রগতিশীল’ মনে করি।
ব্রিটেন মোটেও প্রগতিশীল নয়, অন্ততঃ তাদের ‘ফরেন পলিসি’ যেখানে বিবেচ্য সেখানে তারা সউদি প্রগতিহীনতাকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী।
ইম্পরের চলে গেছে, কিন্তু রেখে গেছে ইসলাম। সউদি সাম্রাজ্যবাদের টুপি দাঁড়ি আমরা চোখের সামনে দেখি, কিন্তু পরোক্ষে শক্তির খেলা চোখে দেখি না এখনো।
যা হোক, ব্রিটেন যেখানে ইসলামিস্টকে আশকারা দেয়, সেখানে আপনি আমি আম্লীগ তো কোন ছার, তাই মনে হয় না??
ভুল।
বাংলাদেশের ভেতরে ষোলকোটি জনগন দেশটার মালিক। ব্রিটেন নয়, সউদি নয়, পাইক্যা জামাতও নয়। সহনশীল এবং মোটাদাগে বেকুব বিধায় চিকন চালাক ব্রিটিশ এবং গাদ্দার সউদির কাছে আমরা, দেশের শান্তিপ্রিয় সহনশীল বোকা জনসাধারন বারে বারে পিট্টি খেয়ে আসছি।
আম্লীগ গত তিন মাসের ভ্রান্ত ইসলামী পলিটিক্সের জের ধরে ভাবছে এবার সে জামাতকে বিছানায় পেয়েছে। সেটা খুবই সঠিক ভেবেছে।
তবে জামাতকে ঠাপানোর বদলে জামাতের হাতেই উপ্তা খাবে এবার আওয়ামী লীগ, ৯৬ এবং ২০০১ এর পরে যেমনটা খেয়েছিলো বিনপি।
পরে থাকবে আ্মলীগ নামের একটা খোসা, যেমনটা এখন হালকা বাতাসেই পড়ে যাচ্ছে বিনপি!
আমাদের, মানে দেশের জনগনের কি আদৌ হুঁশ হবে? কোনদিনও?
Leave a Reply