ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, এবং রাষ্ট্রীয়–সার্বিক বিপ্লবের পথে এই চারটি ধাপ, বা বাধাও বলা যেতে পারে বলে মনে করি।
প্রথমে, অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, ভেদাভেদ–এসব ব্যক্তিগত বাধাগুলো অতিক্রম করতে না পারলে মুক্ত মনে চিন্তা-চেতনার উন্মেষই ঘটবে না।
২য় ধাপে সংসার-পরিবারের বন্ধন, ভালোবাসা-মায়া-মমতার মোহ, বিষয়-সম্পত্তির লোভ, ভোগ-বিলাস আর বংশরক্ষা করে ভবিষ্যত প্রজন্মের মাধ্যমে বেঁচে থাকার স্বার্থ…
তারপরে সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ভাঙতে গেলে সমাজ-লোকনিন্দার ভয়, অসামাজিক বা সমাজচ্যুত হয়ে যাওয়ার লজ্জা, একা হয়ে যাওয়ার অসহায়ত্বতা…
সবশেষে রাষ্ট্রীয় রক্তচক্ষুর ভয়।
ব্যক্তিগত খোলস থেকে বের হয়ে পরিবারের পিছুটান ঝেড়ে ফেলে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, অহেতুক নিয়ম-নীতি ভেঙে চুরমার করে, আত্মত্যাগের সৎসাহস যতদিন না আসছে, ততদিন সার্বিক পরিবর্তনের আশা করা বোকামী। বিপ্লব অন্যরা এসে করে দেবে, অন্য কেউ পরিবর্তন এনে দেবে–এটা ভাবতে ভাবতেই কয়েক প্রজন্ম কেটে গেছে, কেটে যাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম…
তিন বছর আগে যে বিপ্লবের পদধ্বনি শোনা গিয়েছিল, সে পদধ্বনি অচিরেই কেনো, কোথায়, কোন বাধায় পড়ে, কোন ধাপে এসে বাতাসে মিলিয়ে গেলো আবার, নিজ মনে ভেবে দেখতে পারেন।
একজন মুক্তিযোদ্ধা যখন মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করে খাওয়া শুরু করে তখন বাদ বাকি মানুষ কী না করবে! তার হাত ধরে পথ চলতে গিয়ে আবিষ্কার করেছি সেই পথভ্রষ্ট। অথচ তাকে দিশা মনে করেছিলাম। বিপ্লব কেউ এনে দিবে না, নিজের জায়গা থেকে নিজেকেই শুরু করতে হবে। আর অপেক্ষা নয়, শুরু করতে হবে এই মুহূর্ত থেকে…