সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ১
দাসী তার প্রভুর জননী হবে; আর নগ্নপদ, বিবস্ত্রদেহ দরিদ্র মেষপালকদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৪৮
বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৫৭
ইল্ম লোপ পাবে, অজ্ঞাতার বিস্তৃতি ঘটবে, মদপান ব্যাপক হবে এবং ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৮১
ইল্ম কমে যাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে তত্ত্বাবধায়ক।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ৫
দাসী তার প্রভূকে জন্ম দেবে। এটি কিয়ামতের আলামতের একটি। বিবস্ত্রদেহ, নগ্নপদ লোক হবে জনগণের নেতা ; এটা কিয়ামতের আলামতের একটি। আর রাখালদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ২৭২৬
আবূ নুমান (রহঃ) আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কিয়ামতের আলামত সমূহের একটি এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যারা পশমের জুতা পরিধান করবে। কিয়ামতের আর একটি আলামত এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যাদের মূখ হবে চওড়া, যেন তাদের মুখমন্ডল পিটানো চামড়ার ঢাল।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ২৯৫২
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিয়ামতের পূর্বের ছয়টি আলামত গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, তারপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, তারপরও তোমাদের মাঝে ঘটবে মহামারী, বকরীর পালের মহামারীর মত, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যাক্তিকে একশ’ দ্বীনার দেওয়া সত্ত্বেও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। তারপর এমন এক ফিতনা আসবে যা আরবের প্রতি ঘরে প্রবেশ করবে। তারপর যুদ্ধ বিরতির চুক্তি-যা তোমাদের ও রোমকদের (খৃষ্টানদের) মধ্যে সম্পাদিত হবে। এরপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং আশিটি পতাকা উত্তোলন করে তোমাদের মোকাবিলায় আসবে; প্রত্যেক পতাকা তলে বার হাজার সৈন্য দল থাকবে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৩৬৫৪
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (১) কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম লক্ষণ হল লেলীহান আগুন যা মানুষকে পুর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে ধাওয়া করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে সমবেত করবে। (২) সর্বপ্রথম আহার্য যা জান্নাতবাসী ভক্ষণ করবে তা হল মাছের কলীজার অতিরিক্ত অংশ (৩) যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার আনুরূপ হয় আর যদি পুরুষের আগে নারীর বির্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের অনুরূপ হয়।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৪৮৫১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ল্লহ্ -কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের আলামতের মধ্যে রয়েছে ইল্ম উঠে যাবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ্য পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা এত অধিক হারে বেড়ে যাবে যে, একজন পুরুষকে পঞ্চাশজন নারীর দেখাশোনা করতে হবে।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ৭
যখন দেখবে, দাসী তার মুনিবকে জন্ম দেবে, এটা কিয়ামতের একটি আলামত। আর যখন দেখবে নগ্নপদ, বস্ত্রহীন, বধির ও মূকেরা দেশের শাসক হয়েছে, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত। আর যখন দেখবে, মেষপালক বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৫০
বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে।
মুসনাদে আহমেদ ৫
ক্রীতদাসী (বাঁদী) তার প্রভূকে প্রসব করবে এবং তুমি দেখতে পাবে খালি মাথা ও খালি পায়ে ছাগলের পালের রাখালরা (অর্থাৎ অশিক্ষিত মূর্খ, অর্বাচীন ও নীচু স্তরের লোকজন) বিশালকায় প্রাসা’দর অধিপতি হয়ে বসবে।
মুসনাদে আহমেদ ৭
যখন তুমি দেখতে পাবে ক্রীতদাসী (বাঁদী) তার প্রভুকে (ছেলে বা মেয়ে) প্রসব করবে (অর্থাৎ বাঁদীর গর্ভে জন্ম গ্রহণকারী সন্তান উত্তরাধিকারী সূত্রে ঐ বাঁদীর মালিক হবে এবং তাকে আযাদ না করে তার সাথে দাসীসূলভ আচরণ করবে) এবং মেষ অথবা ছাগপালকদেরকে দেখতে পাবে তারা বড় বড় প্রাসা’দর অধিপতি হয়ে বসেছে; আরও দেখতে পাবে খালি পা খালি মাথা ক্ষুধার্থ লোকেরা মানুষের নেতা হয়ে বসেছে।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ৬৫৪১
কিয়ামতের আলামত সমূহের অন্যতম হল ইলম উঠে যাওয়া, মুর্খতা প্রতিষ্ঠিত হওয়া, মদ্যপান ও ব্যাভিচারের প্রসার ঘটা।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ৬৫৪২
কিয়ামতের আলামত সমূহের অন্যতম হচ্ছে ইলম উঠে যাবে, মূর্খতা প্রকাশ পাবে, যিনা বিস্তৃত হবে, মদ্যপান প্রচলিত হবে, পূরুষ (এর সংখ্যা) হরাস পাবে, নারীরা অবশিষ্ট থাকবে, এমনকি পঞ্চাশ জন নারীর জন্য একজন পুরুষ তত্ত্বাবধায়ক থাকবে।
সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ৭১০৬
দাজ্জালের আবির্ভাব…
সুনানে নাসাঈ ৬৮৯
সুওয়ায়দ ইবনু নাসর (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-মসজিদের ব্যাপারে লোকের পরম্পরে গর্ব করা কিয়ামতের আলামতের অন্তর্ভুক্ত।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ২৯২৭
০আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের আলামতসমূহের একটি এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যারা পশমের জুতা পরিধান করবে। কিয়ামতের আর একটি আলামত এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমন্ডল হবে চওড়া, তাদের মুখমন্ডল যেন পিটানো চামড়ার ঢাল। (৩৫৯২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭১২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২৭২৩)
সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৩৯৩৮
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (১) কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম আলামত লেলিহান অগ্নি যা মানুষকে পূর্বদিক হতে পশ্চিম দিকে ধাবিত করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে একত্র করবে। (২) সর্বপ্রথম খাদ্য যা জান্নাতবাসী খাবে তা হল মাছের কলিজার বাড়তি অংশ (৩) যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার মত হয় আর যদি পুরুষের আগে নারীর বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের মত হয়।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ) ৬৯৩৫
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না এমন দু’টি দল পরস্পর লড়াই করবে, যাদের দাবী হবে অভিন্ন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬৬)
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৫৭
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যখন আমানত নষ্ট করা হয় তখন কিয়ামতের প্রতীক্ষা করবে। সে বলল, কিভাবে আমানত নষ্ট করা হয়? তিনি বললেনঃ যখন কোন কাজের দায়িত্ব অনুপযুক্ত লোকের প্রতি ন্যাস্ত হয়, তখন তুমি কিয়ামতের প্রতীক্ষা করবে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৮০
ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলঃ ইল্ম লোপ পাবে, অজ্ঞাতার বিস্তৃতি ঘটবে, মদপান ব্যাপক হবে এবং ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৮১
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলঃ ইল্ম কমে যাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে তত্ত্বাবধায়ক।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ৯৭৯
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইল্ম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। (হারজ অর্থ খুনখারাবী) তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ১০০০
মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হল, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় উঠলেন এবং কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন। এরপর তিনি মসজিদে আসেন এবং এর আগে আমি তাঁকে যেমন করতে দেখেছি, তার চাইতে দীর্ঘ সময় ধরে কিয়াম, রুকু ও সিজদা সহকারে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর তিনি বললেনঃ এগুলো হল নিদর্শন যা আল্লাহ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। বরং আল্লাহ তা’লা এর দ্বারা তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। কাজেই যখন তোমরা এর কিছু দেখতে পাবে, তখন ভীত বিহ্বল অবস্থায় আল্লাহর যিকর, দু’আ এবং ইস্তিগফারের দিকে অগ্রসর হবে।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ)১৩২৯
আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমাদের মধ্যে সম্পদ বৃদ্ধি পেয়ে উপচে না পড়বে, এমনকি সম্পদের মালিকগণ তার সা’দকা কে গ্রহণ করবে তা নিয়ে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়বে। যাকেই দান করতে চাইবে সে-ই বলবে, প্রয়োজন নেই।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ১৩৩০
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ রাহাজানির অবস্থা এই যে, কিছু দিন পর এমন সময় আসবে যখন কাফেলা মক্কা পর্যন্ত বিনা পাহারায় পৌছে যাবে। আর দারিদ্র্যের অবস্থা এই যে, তোমাদের কেউ সা’দকা নিয়ে ঘোরাফিরা করবে, কিন্তু তা গ্রহণ করার মত কাউকে পাবে না। এমন সময় না আসা পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ১৪৯৮
বায়তুল্লাহর হাজ্জ (হজ্জ) বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না।
সহীহ বুখারী (ইফাঃ) ২৩১৪।
আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, ইবনু মারয়াম (ঈসা আ) তোমাদের মাঝে ন্যায়বিচারক হয়ে অবতরণ না করা পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। তিনি এসে ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং জিযয়া কর তুলে দিবেন। তখন ধন-সম্পদের এত প্রাচুর্য হবে যে, তা গ্রহণ করার মত কেউ থাকবে না।
এবার ইন্টারনেটে পাওয়া ইসলামিক স্কলারদের লেখা ব্লগ থেকে পাওয়া কেয়ামতের আলামতগুলো এক নজরে দেখা যাক–
কিয়ামত এর আলামত
কিয়ামত কখন বা কোন সময়ে ঘটবে, সে বিষয়ের জ্ঞান একমাত্র মহান আল্লাহর কাছেই
রয়েছে। আর তাই তিনি (আল্লাহ্) পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? আপনি বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তো অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। (সূরা আরাফঃ ১৮৭)
তবে, কিয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে এ বিশ্বাস প্রত্যেক মুসলিমেকেই রাখতে হবে। যদিও মহান আল্লাহ্ কিয়ামতের নির্দিষ্ট সময় মানুষকে বলে দেননি, কিন্তু পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এর বিভিন্ন নিদর্শন বা চিহ্ন বলে দেয়া হয়েছে। এই নিদর্শনগুলো দুই ভাগে বিভক্ত।
১। আলামতে সুগরা বা ছোট আলামত।
২। আলামতে কুবরা বা বড় আলামত।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে কিয়ামতের ছোট ও বড় আলামত নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
আলামতে সুগরা বা ছোট আলামতঃ
কেয়াতের ছোট ছোট আলামতগুলোর অন্যতম হলো-
১। এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা পূর্বে কখনো ঘটেনি এবং ঘটার কোন ধারণাই ছিল না।
২। অমুসলিমদের হাতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদ আহরিত হবে।
৩। মানুষ তার বাসস্থানকে শিল্প কারুকার্জ দিয়ে সুশোভিত করাকে গুরুত্ব দিবে।
৪। জমিনের অংশসমূহ নিকটবর্তী হয়ে যাবে।
৫। শিক্ষায় বিপ্লব ঘটে যাবে কিন্তু দ্বীনি শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যাবে।
৬। মহিলারা অশ্লীলতায় ডুবে যাবে। মহিলাদের সৌন্দর্য চর্চা কেন্দ্রের ব্যাপক বিস্তার ঘটবে।
৭। মহিলারা পুরুষের আকৃতি ধারণ করবে আর পুরুষ মহিলার আকৃতি ধারণ করবে।
৮। কিছু মুসলমান মদ পান করবে অন্য নামে।
৯। মানুষের মধ্যে সুদের ব্যাপক বিস্তার হয়ে যাবে।
১০। অভিনন্দন ও অভিবাদন মানুষের কাছে অভিশাপ হয়ে যাবে।
১১। জমিনের বিভিন্ন অংশে ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে।
১২। হঠাত্ মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাবে আর হত্যা বৃদ্ধি পাবে।
১৩। মানুষ কথায় সুন্দর হবে, আর কাজে অসুন্দর হবে।
১৪। কন্যা সন্তানরা তার মাকে শাসন করবে এবং মায়ের অনুকরণীয় হবে।
১৫। বেপর্দা ব্যক্তিরাই সমাজের নেতৃত্ব দিবে।
১৬। সমাজের নিকৃষ্ট এবং রাখাল শ্রেণীর লোকেরা সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ করবে।
১৭। জগতের লোকেরা সুউচ্চ টাওয়ার নির্মাণে একে অপরে প্রতিযোগিতা করবে।
১৮। মানুষ তার সন্তানের চাইতে কুকুর লালন পালনকে বেশি প্রাধান্য দিবে।
১৯। নারীরা চুলের খোপা মাথার ওপরে এমনভাবে বাঁধবে যেন উটের পিঠের উঁচু জায়গার মতো দেখাবে।
২০। দুনিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা অতিদ্রুত ও সহজ হয়ে যাবে।
২১। সময় তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাবে।
২২। দাসী ও সমাজের নিকৃষ্ট মেয়েরা যে সন্তান জন্ম দেবে সে সমাজের অন্যতম নেতা হবে।
২৩। অবৈধ জারজ সন্তানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে ।
২৪। সমাজে সম্মানিত কুলীন ভদ্রলোকগুলো কোণঠাসা হয়ে যাবে আর নিকৃষ্ট অসম্মানী লোকগুলো বেপরোয়া সাহসী হবে।
২৫। বড়কে সম্মান করবে না। ছোটকে স্নেহ করবে না।
২৬। সমাজে নেতা নেতৃত্ব বেড়ে যাবে বিশ্বস্ততা কমে যাবে।
২৭। উলঙ্গ আর বেহায়াপনার প্রতিযোগিতায় নারীরা ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হবে।
২৮। জেনা ব্যাভিচার আর মদপান বেড়ে যাবে।
২৯। প্রকৃত আত্মীয়দের ছেড়ে বন্ধু-বান্ধবদের আতিথেয়তা বেড়ে যাবে।
৩০। সমাজে ফাসাদ দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
৩১। অযোগ্য ও অসৎ ব্যক্তিরা সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতা নির্বাচিত হবে।
৩২। মসজিদগুলো চাকচিক্য ও জাঁকজমকপূর্ণ হবে। লোকেরা পরস্পর মসজিদ নিয়ে গর্ব
করবে।
৩৩। ঘন ঘন বাজার/মার্কেট নির্মিত হবে।
৩৪। সহজ সরল ব্যক্তিরা অবহেলার পাত্র হবে আর প্রতারকদের চালাক চতুর বলে প্রশংসা করা হবে।
৩৫। দুনিয়ার সম্মান ও সম্পদ অর্জনের জন্য ইসলামী জ্ঞান (ইলম) শিক্ষা ও প্রচার করা হবে।
৩৬। ইহুদী, খৃস্টানদের মত মুসলিমদেরও লক্ষ্য, উদ্দেশ্য হবে দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান আর ক্ষমতা অর্জন।
আলামতে কুবরা বা বড় আলামতঃ
কিয়ামতের ছোট আলামতগুলো প্রকাশিত হয় গেলে হঠাত করেই কিয়ামতের বড় আলামতগুলো প্রকাশিত হতে শুরু করবে। রাসূল (সাঃ) বলেন, মালা ছিড়ে গেলে এর পুতিগুলো যেমন দ্রুত খসে পড়ে ঠিক সেভাবেই কিয়ামতের (বড়) আলামতগুলো একের পর এক প্রকাশিত হতে থাকবে। (তিরমিযী)
কিয়ামতের বড় আলামতগুলো হচ্ছেঃ
১। দুখান (ধোঁয়া)। রক্তিম ধোঁয়া, যা পৃথিবীকে ঢেকে ফেলবে এবং যার প্রভাবে মুমিনদের সামান্য সর্দি-কাশির মত অবস্থা হবে আর কাফেরদের জন্য যা হবে ভয়াবহ আযাব।
২। দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ।
৩। হযরত ঈসা (আঃ) এর অবতরন।
৪। ইয়াজূজ-মাজূজ।
৫। পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়।
৬। দাব্বাতুল র্আদ (প্রাণীবিশেষ যা মাটি ভেদ করে বের হবে)।
৭। তিনটি ভূধ্বস, একটি পূর্ব প্রান্তে, একটি পশ্চিম প্রান্তে আরেকটি জাযীরাতুল আরবে।
৮। আর শেষটি হচ্ছে, ইয়ামান থেকে একটি আগুন বের হবে যা মানুষকে হাশরের ময়দানের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। (মুসলিম)
Leave a Reply