• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা – তৃতীয় অধ্যায়: না ঘরকা না ঘাটকা (পর্ব ২৯)

You are here: Home / ধর্মকারী / কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা – তৃতীয় অধ্যায়: না ঘরকা না ঘাটকা (পর্ব ২৯)
April 3, 2017
লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮
যাহা বলবো সত্য বলবো; যদি কখনও মিথ্যা বলি, স্বীকার করবো! এই সিরিজের প্রথম পর্বেই আংশিক মিথ্যা তথ্য দিয়ে শুরু করেছিলাম! কী করবো, বলুন? উপায় ছিলো না আমার! প্রায় সকল মুসলিম-অমুসলিম-আস্তিক-নাস্তিকের বিরুদ্ধে গিয়ে বিপরীত কথা বলার সাহস পুরোটা করতে পারিনি তখন! আজ একটা উদাহরণ দিয়ে সত্যটা বলি: “মনে করুন, আপনি আপনার পিতা-মাতার একমাত্র জন্ম দেওয়া সন্তান, কিন্তু আপনার মত দেখতে আরও একজন নিজেকে আপনার জমজ হিসেবে দাবি করে! ডি.এন.এ টেষ্টও প্রমাণ দেয়, সে আপনার পিতা-মাতারই সন্তান! কিন্তু আপনার পিতা-মাতা মাত্র একজন সন্তানকেই জন্ম দিয়েছে! প্রশ্ন হচ্ছে: তবে আপনি কে? আপনি কি আপনি-না আপনি আপনার জমজের জমজ? আর আপনার এই জমজটি কোথা থেকে এলো!” 
কিছু বোঝা গেলো না! তাই তো? কী করবো, বলুন? এ কারণেই সিনেমা/সিরিয়াল তৈরি হয় “বোঝে না সে বোঝে না!”
সহজ করে বলি: “প্রথম পর্বে বলেছিলাম, আমরা যে-কোরআন পড়ি, তার সংকলন করেছেন খলিফা উসমান; যে কারণে কোরআনকে উসমানী কোরআন বলা হয়! কিন্তু সুন্নী ইসলামী সমাজে আরও একটি কোরআন আছে, যা শতভাগ বৈধ এবং মদিনার কোরআন প্রিন্টিং প্রেস থেকে দু’ধরনের কোরআন-ই একইসাথে ও একই মর্যাদায় ছাপা হয়! প্রশ্ন হচ্ছে: কোরআন যদি ‍দুইটি থাকে, তবে কোনটি সংকলন করেছেন খলিফা উসমান? এবং তার প্রমাণ কী?

মিথ্যা তথ্যটি ঠিক করি: কোরআন সংকলনের একচ্ছত্র মিথ উসমানের নামে চালু হলেও তার পুরোটা আজ পর্যন্ত প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি! আর তাই সুন্নী সমাজ কোরআনের দু’ধরনের সংস্করণকে ডি.এন.এ টেষ্টের পর বৈধ সন্তান হিসেবে মেনে নিয়েছে! জেনে রাখুন, কোরআন অবিকৃত ও একটিমাত্র নয়! সিরিজের আগামী পর্বে থাকবে বিস্তারিত, ততক্ষণ ধাঁধাঁয় থাকুন! আর আগামী পর্বে মদিনার কোরআন প্রিন্টিং প্রেস থেকে ছাপা দু’টি সংস্করণ আপলোড করে ডাউনলোড লিংক দিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো! ততক্ষণ ভাবতে থাকুন, কীভাবে ইসলামের বৈধ কোরআন দু’টি হতে পারে? আর কোরআন যদি দু’টিই হয়, তবে কি ইসলামের কবর খোঁড়ার কিছু বাকি আছে?
আজ তবে অন্য একটি বিষয় নিয়ে বলি, এমন বিষয়, যা নিয়েও আস্তিক-নাস্তিকসহ সবার মাথাতেই সমান পরিমাণে ভুল তথ্য জমা রয়েছে! আসুন, প্রমাণ করি; কাবার সাথে এখন যতটুকু হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) আছে, তা আপনার হাতের মুঠোর মধ্যে অনায়াসে এঁটে যাবে! কী, অবাক হচ্ছেন শুনে? আমাকে পাগল মনে হচ্ছে?  যা ভাবার ভাবুন, সত্য এটাই! প্রমাণ করতে না পারলে শতকোটির বাজি হারবো আজ..! চলুন, শুরু করি!

হাজরে আসওয়াদ-এর আকার মুহাম্মদের জীবনকালে কতটুকু ছিলো, সঠিক জানা যায় না; তবে ধারণা করা হয়, দু’হাত একসাথে করে ইসলামী মোনাজাত করলে যতটুকু জায়গা পাওয়া যায় তাতে অনায়াসে হাজরে আসওয়াদ এঁটে যেত! মুহাম্মদের মৃত্যুর পর থেকে আজ পর্যন্ত সাত বার হাজরে আসওয়াদের ওপর আঘাত এসেছে, এবং এতে কালো পাথরটি ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি মাপে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে! বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে হাজরে আসওয়াদ-এর ১৬ টি টুকরোর হদিস পাওয়া যায়! এবং এই ১৬ টি টুকরোর মধ্যে মোট আয়তনের অনুপাতে ২০ ভাগের সমপরিমাণ ৮ টি টুকরো এখন আছে কাবার সাথে লাগানো রূপালি ফ্রেমের ধাঁধাঁর মধ্যে! এই ৮ টি টুকরো একসাথে আপনার হাতের মুঠোর মধ্যে অনায়াসে এঁটে যাবে!

সংক্ষেপে বলি; ছবি-১ দেখুন, কালো যে ডিম্বাকার অংশটি দেখছেন তার আকার ৭.৯ বাই ৬.৩ ইঞ্চি; একজন মানুষের পাথরে চুমু খাবার জন্য যথেষ্ট জায়গা; তবে কালো অংশটি পুরোটাই কিন্তু হাজরে আসওয়াদ নয়! এটি একটি কৃত্রিম কংক্রিট মাত্র, যার গায়ে লাগানো আছে ১ মুঠোর সমপরিমান ৮ টি টুকরোয় বিভক্ত আদি-আসল হাজরে আসওয়াদ!
২য় ছবিটি দেখতে থাকুন, প্রথম অংশে মূল হাজরে আসওয়াদ ছাড়া বাকি কালো অংশটুকুর রং পরিবর্তন করা হয়েছে! গুনে দেখুন ৮ টুকরোই আছে! তৃতীয় অংশের ছবিটি স্বচ্ছ পেনসিল ট্রেসিং পেপার হাজরে আসওয়াদের ওপরে রেখে ছাপ নিয়েছিলেন ক্যালিগ্রাফার ‘আল শেখ মুহাম্মদ তাহির আল কুরদী (al-Sheikh Muhammad Tahir Al-kurdi)’, ১৩৭৬ হিজরী (এখন ১৪৩৮ হিজরী চলছে) সালে! বাঁ পাশের ছবিটি বর্তমানের, এতে ডান পাশের ছবির উপরের ‍দু’টুকরোর মাঝে থাকা সবচেয়ে ছোট টুকরোটিকে নতুন করে সংস্কারের সময় নিচে নিয়ে আসা হয়েছে!
হাজরে আসওয়াদের এসব তথ্য প্রায় ১ যুগ আগে থেকে আমি জানতাম! এবং এও জানতাম এই ৮ টি টুকরোর সবচেয়ে বড়টি একটি খেজুরের সমপরিমাণ আকারের! হজ্জের সময় আমার এটি মেপে দেখার সুযোগ হয়েছে (সে এক বিচিত্র ইতিহাস), বড় টুকরোটি (ছবিতে 1) একটি এস.ডি কার্ডের সমান আকারের, আর ছবিতে-2-এর আকৃতি মাইক্রো এস.ডি কার্ডের সমান! আর হ্যাঁ, মাঝখানের হাতটি আমার নিজের; ভয় হচ্ছে হস্তরেখায় আমাকে চিনে না ফেলেন! যাদের চোখে দেখার ক্ষমতা স্বাভাবিক তাদের জন্য আরও একটি ছবি সংযুক্ত করে দিচ্ছি, দৃষ্টি স্থির করে খুঁজলে জবাব পেয়ে যাবেন!
পূর্ণাকারে (৩০৯৭x২০৯২) দেখতে ছবির ওপরে ক্লিক করতে হবে
কাবা আর হাজরে আসওয়াদ নিয়ে আমার বিচিত্র কিছু অভিজ্ঞতা আছে! সেসব বলবো ক্রমশ! তবে আর একটু মাথা ঘামানোর সুযোগ দিয়ে শেষ করি। আগেই বলেছি, পুরো পৃথিবীতে হাজরে আসওয়াদ-এর ১৬ টি টুকরোর হদিস পাওয়া যায়! ৮ টি তো আজ দেখিয়ে দিলাম, বাকি ৮ টি কোথায়? কার-কার কাছে এবং কোথায়-কোথায় আছে? সেগুলো কি দেখা-ছোঁয়া সম্ভব? সবচেয়ে বড় টুকরোটি (যার আয়তন কাবার সাথে থাকা ৮ টির প্রায় সমান) কোথায় আছে? ১৮৯০ সালে এডওয়ার্ড অল্লিয়ার (Edward Ollier)-এর আঁকা পেনসিল স্কেচে কাবার সাথে থাকা ১৫ টুকরোর হদিস পাওয়া যায়; সেগুলো এখন নেই কেন? হাজরে আসওয়াদ আসলে কী? এটি কি সাদা ছিলো কখনও? পানিতে কি সত্যি ভাসে? সাদা রূপালি ফ্রেমটি কি স্ত্রী-যোনী বোঝাতে ব্যবহার করা হয়? কীভাবে এত টুকরো হলো বেহেস্তী (!) পাথর? সব প্রশ্নের উত্তর-তথ্য-প্রমাণ-সূত্র নিয়ে ইবুক আসবে ধর্মকারীতে: “হাজরে আসওয়াদ: মিথ-মিথ্যা-বাস্তবতা!” শিরোনামে! অপেক্ষায় থাকুন! 
কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ২৯ তম পর্ব; এই পর্বে থাকছে মক্কা তৃতীয় অধ্যায়: না ঘরকা না ঘাটকার ৭ম তিন অংশ। অনুবাদের ভাষা একাধিক বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}
একই বিষয়ে অনেকবার বলেছি আগে, যেসব গবেষক পাঠক নিয়মিত এই ‍সিরিজের প্রকাশিত আয়াত পড়ছেন তাদের জন্য কিছু আয়াত হাইলাইট করে দিয়েছি! বয়কটকালীন মুহাম্মদের মনোবৃত্তির চূড়ান্ত প্রকাশ পাওয়া যাবে এসবে! আর ক্লান্ত-বিধস্ত মুহাম্মদের মত আমিও অপেক্ষা করছি, কবে শেষ হবে এই বয়কট!
মুহাম্মদ দ্বারা ১১৫ তম প্রকাশ: সূরা আল আনআম (০৬) (গৃহপালিত পশু), ২০, ২৩, ৯১, ৯৩, ১১৪ বাদে ০১ থেকে ১১৭ আয়াত:
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো, এতদসত্ত্বেও যারা কুফরী করেছে তারা (অন্যকে) তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করিয়েছে।
২. অথচ তিনি তোমাদের মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের জীবনের জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করেছেন, এছাড়া আরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ তাঁর নিকট নির্ধারিত রয়েছে, কিন্তু এরপরেও তোমরা সন্দেহ করে থাক।
৩. আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে ঐ এক আল্লাহই রয়েছেন, তোমাদের অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য সব অবস্থাই তিনি জানেন, আর তোমরা যা কিছু কর, তাও তিনি পূর্ণরূপে অবগত আছেন।
৪. তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী থেকে কোনো নিদর্শন আসেনি; যার প্রতি তারা বিমুখ হয় না।
৫. সুতরাং তাদের নিকট যখন সত্য বাণী এসেছে, ওটাও তারা মিথ্যা জেনেছে। অতএব অতি সত্বরই তাদের নিকট সেই বিষয়ের সংবাদ এসে পৌঁছবে, যে ব্যাপারে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।
৬. তারা কি ভেবে দেখেনি যে, আমি তাদের পূর্বে বহু দল ও সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, যাদেরকে দুনিয়ায় এমন শক্তি সামর্থ্য ও প্রতিপত্তি দিয়েছিলাম, যা তোমাদেরকে দিইনি, আর আমি তাদের প্রতি আকাশ হতে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করেছি এবং তাদের নিম্নভূমি হতে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত করেছি, কিন্তু আমার নিআমাতের শোকর না করার পাপের কারণে আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি, এবং তাদের পর অন্য নতুন নতুন জাতি ও সম্প্রদায়সমূহ সৃষ্টি করেছি।
৭. যদি আমি তোমার প্রতি কাগজে লিখিত কোনো কিতাব অবতীর্ণ করতাম, অতঃপর তারা তা নিজেদের হাত দ্বারা স্পর্শও করত; তবুও কাফির ও অবিশ্বাসী লোকেরা বলত: এটা প্রকাশ্য যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।
৮. আর তারা বলে থাকে, তাদের কাছে কোনো ফেরেশতা কেন পাঠানো হয় না? আমি যদি প্রকৃতই কোন ফেরেশতা অবতীর্ণ করতাম, তাহলে যাবতীয় বিষয়েরই চূড়ান্ত সমাধান হয়ে যেত, অতঃপর তাদেরকে কিছুমাত্রই অবকাশ দেয়া হত না।
৯. আর যদি কোনো ফেরেশতাকেও রাসূল করে পাঠাতাম, তাহলে তাকে মানুষরূপেই পাঠাতাম; এতেও তারা ঐ সন্দেহই করত, যে সন্দেহ ও প্রশ্ন এখন তারা করছে।
১০. তোমার পূর্বে যে সব নাবী-রাসূল এসেছিল, তাদের সাথেও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা হয়েছে, ফলতঃ এই সব ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের পরিণাম ফল বিদ্রূপকারীদেরকেই পরিবেষ্টন করে ফেলেছিল।
১১. তুমি বল: তোমরা ভূ-পৃষ্ঠ পরিভ্রমণ কর, অতঃপর সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণাম কী হয়েছে, তা গভীর অভিনিবেশ সহকারে লক্ষ্য কর।
১২. তুমি জিজ্ঞেস কর: আকাশমণ্ডলী ও ধরাধামে অবস্থিত যা কিছু রয়েছে, তার মালিক কে? তুমি বল: তা সবই আল্লাহর মালিকানায়, অনুগ্রহ করা তিনি তাঁর নীতি বলে গ্রহণ করেছেন, তিনি তোমাদের সকলকে কিয়ামাত দিবসে অবশ্যই সমবেত করবেন, যে দিন সম্পর্কে কোনো সন্দেহই নেই; যারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি ও ধবংসের মুখে ফেলেছে, তারাই বিশ্বাস করে না।
১৩. রাতের অন্ধকারে এবং দিনের আলোয় যা কিছু বসবাস করে ও বর্তমান রয়েছে, তা সব কিছুই আল্লাহর। তিনি সব কিছুই শোনেন ও জানেন।
১৪. বল: আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকেও আমার অভিভাবক রূপে গ্রহণ করব, যিনি হলেন আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা? তিনি রিযিক দান করেন, কিন্তু কারও রিযিক গ্রহণ করেন না। তুমি বল: আমাকে এই আদেশই করা হয়েছে যে, আমি সকলের আগেই ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর সামনে মাথা নত করে দেব। আর তুমি মুশরিকদের মধ্যে শামিল হয়ো না।
১৫. তুমি বল: আপনি বলুন, আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্য হতে ভয় পাই, কেননা, আমি একটি মহাদিবসের শাস্তিকে ভয় করি।
১৬. সেদিন যার উপর হতে শাস্তি প্রত্যাহার করা হবে, তার প্রতি আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহ করবেন, আর এটাই হচ্ছে প্রকাশ্য মহাসাফল্য।
১৭. আল্লাহ যদি কারও ক্ষতিসাধন করেন, তাহলে তিনি ছাড়া সেই ক্ষতি দূর করার আর কেহ নেই, আর যদি তিনি কারও কল্যাণ করেন, (তাহলে আল্লাহ সেটাও করতে পারেন, কেননা) তিনি সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
১৮. তিনিই তাঁর বান্দাদের উপর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী, তিনিই মহাজ্ঞানী ও সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল।
১৯. তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর: কার সাক্ষ্য সবচেয়ে বেশি গণ্য? তুমি বলে দাও: আমার ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহই হচ্ছেন সাক্ষী, আর এই কুরআন আমার নিকট অহীর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে, যেন আমি তোমাদেরকে এবং যাদের নিকট এটি পৌঁছবে, তাদের সকলকে এর দ্বারা সতর্ক করি। বাস্তবিকই তোমরা কি এই সাক্ষ্য দিতে পার যে, আল্লাহর সাথে অন্য কোনো উপাস্যও রয়েছে? তুমি বল: আমি এই সাক্ষ্য দিতে পারি না। তুমি ঘোষণা কর: তিনিই একমাত্র উপাস্য, আর তোমরা যে শিরকে লিপ্ত রয়েছ, আমার সাথে ওর কোনোই সম্পর্ক নেই।
২১. যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করে, কিংবা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? এরূপ যালিম লোক কক্ষনোই সাফল্য লাভ করতে পারবে না।
২২. স্মরণ করে সে দিনকে, যে দিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করব আর যারা শিরক করেছিল, তাদেরকে বলব – যাদেরকে তোমরা আমার শরীক মনে করতে তারা কোথায়?
২৪. লক্ষ্য কর, তারা নিজেদের সম্পর্কে কেমন মিথ্যে কথা বলবে, আর তারা মিছেমিছি যা উদ্ভাবন করেছিল তা নিষ্ফল হয়ে যাবে। [
২৫. তাদের মধ্যে কতক লোক আছে যারা তোমার দিকে কান পাতে। তাদের অন্তরের ওপর আমি পর্দা ঢেলে দিয়েছি, যাতে তারা উপলব্ধি করতে না পারে, তাদের কানে আছে বধিরতা, সমস্ত নিদর্শন দেখলেও তারা তাতে ঈমান আনবে না, এমনকি যখন তারা তোমার কাছে আসে তোমার সাথে বিতর্ক করে। কাফিরগণ বলে, এটা তো পূর্বেকার লোকেদের গল্প-কাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়।
২৬. তারা তা (শোনা) থেকে অন্যদের বিরত করে, আর নিজেরাও তাত্থেকে দূরে সরে থাকে, তারা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস সাধন করে, কিন্তু সে বোধ তাদের নেই।
২৭. যদি তুমি দেখতে যখন তাদেরকে জাহান্নামের কিনারায় দাঁড় করানো হবে, তখন তারা বলবে, হায়! আমাদেরকে যদি আবার (পৃথিবীতে) পাঠানো হত, তাহলে আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলীকে মিথ্যে মনে করতাম না, আর আমরা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
২৮. বরং (আসল ব্যাপার হল) আগে (দুনিয়াতে) তারা (মিথ্যের আবরণে) যা গোপন করে রাখত, এখন তা তাদের কাছে প্রকাশ করা হয়েছে আর তাদেরকে (পৃথিবীতে) ফিরিয়ে দেয়া হলে তারা আবার তা-ই করবে, যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, নিশ্চয় তারা হল মিথ্যুক।
২৯. তারা বলে, আমাদের দুনিয়ার জীবন ছাড়া আর কোনো জীবন নেই, আমাদেরকে আবার (জীবিত করে) ওঠানো হবে না।
৩০. তুমি যদি দেখতে যখন তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের সামনে দাঁড় করানো হবে, তখন তিনি বলবেন, (তোমরা এখন যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছ) তা কি সত্য নয়? তারা বলবে, আমাদের রবের কসম, তা সত্য। তিনি বলবেন, তোমরা কুফরী করেছিলে, তার জন্য এখন শাস্তি ভোগ কর।
৩১. যারা আল্লাহর সাক্ষাতকে মিথ্যে জেনেছিল, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। এমনকি যখন কিয়ামাত হঠাৎ তাদের কাছে হাজির হবে, তখন তারা বলবে, হায় আক্ষেপ! আমরা এ ব্যাপারে অবহেলা করেছিলাম। তারা তাদের পিঠে তাদের পাপের বোঝা বহন করবে। দেখ, তারা যা বহন করবে, তা কতই না নিকৃষ্ট!
৩২. এই পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ও আমোদ প্রমোদের ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, পরকালের জীবনই হবে তাদের জন্য উৎকৃষ্টতর। তোমরা কি চিন্তা ভাবনা করবে না?
৩৩. তাদের কথাবার্তায় তোমার যে দুঃখ ও মনঃকষ্ট হয় তা আমি খুব ভালভাবেই জানি, তারা শুধুমাত্র তোমাকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে না, বরং এই পাপিষ্ঠ যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকেও অস্বীকার ও অমান্য করছে।
৩৪. তোমার পূর্বে বহু নাবী ও রাসূলকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, অতঃপর তারা এই মিথ্যা প্রতিপন্নকে এবং তাদের প্রতি কৃত নির্যাতন ও উৎপীড়নকে অম্লান বদনে সহ্য করেছে, যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আমার সাহায্য এসে পৌঁছেছে। আল্লাহর আদেশকে পরিবর্তন করার কেউ নেই। তোমার কাছে পূর্ববর্তী কোনো কোনো নাবীর কিছু কিছু সংবাদ ও কাহিনী তো পৌঁছে গেছে।
৩৫. আর যদি তাদের অনাগ্রহ ও উপেক্ষা সহ্য করা তোমার কাছে কঠিন হয়ে পড়ে, তাহলে ক্ষমতা থাকলে মাটির কোনো সুড়ঙ্গ পথ অনুসন্ধান কর অথবা আকাশে সিঁড়ি লাগিয়ে দাও; অতঃপর তাদের কাছে কোনো নিদর্শন নিয়ে এসো, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের সকলকে হিদায়াতের ওপর সমবেত করতেন। সুতরাং তুমি অবুঝদের মত হয়ো না।
৩৬. যারা শোনে, তারাই সত্যের ডাকে সাড়া দেয়। আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করে ওঠাবেন, অতঃপর তারা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
৩৭. তারা বলেঃ তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোনো নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন? তুমি বলে দাও: আল্লাহ নিদর্শন অবতরণ করতে পূর্ণ সক্ষম; কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
৩৮. ভূ-পৃষ্ঠে চলাচলকারী প্রতিটি জীব এবং বায়ুমণ্ডলে ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখীই তোমাদের ন্যায় এক একটি জাতি, আমি কিতাবে কোনো বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে।
৩৯. আর যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা মনে করে, তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত মূক ও বধির, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হিদায়াতের সরল সহজ পথের সন্ধান দেন।
৪০. তুমি তাদেরকে বল: তোমরা যদি নিজেদের আদর্শে সত্যবাদী হও, তাহলে চিন্তা করে দেখ, যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি এসে পড়ে অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামাত দিবস এসে উপস্থিত হয়, তখনও কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে?
৪১. বরং তাঁকেই তোমরা ডাকতে থাকবে। অতএব যে বিপদের জন্য তোমরা তাঁকে ডাকছো, ইচ্ছা করলে তিনি তা তোমাদের থেকে দূর করে দেবেন, আর যাদেরকে তোমরা অংশী করেছিলে, তাদের কথা ভুলে যাবে।
৪২. আর অবশ্যই আমি তোমার পূর্বে বিভিন্ন জাতির কাছে রাসূল প্রেরণ করেছি। অতঃপর আমি তাদেরকে দারিদ্র্য ও দুঃখ দ্বারা পাকড়াও করেছি, যাতে তারা অনুনয় বিনয় করে।
৪৩. সুতরাং তাদের প্রতি যখন আমার শাস্তি এসে পৌঁছল, তখন তারা কেন নম্রতা ও বিনয় প্রকাশ করল না? বরং তাদের অন্তর আরও কঠিন হয়ে পড়ল, আর শাইতান তাদের কাজকে তাদের চোখের সামনে সুশোভিত করে দেখাল।
৪৪. অতঃপর তাদেরকে যা কিছু উপদেশ ও নাসীহাত করা হয়েছিল, তা যখন তারা ভুলে গেল, তখন আমি সুখ শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদেরকে দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হল, তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল।
৪৫. অতঃপর জালেমদের মূল শিকড় কর্তিত হল। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যে, যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা।
৪৬. তুমি জিজ্ঞেস কর: আল্লাহ যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেন এবং তোমাদের মনের কপাটে তালা লাগিয়ে মোহর এটে দেন, তাহলে এই শক্তি তোমাদেরকে আবার দান করতে পারে এমন কোন সত্তা আল্লাহ ব্যতীত আছে কি? লক্ষ্য কর তো! আমি আমার নিদর্শনসমূহ ও দলীল প্রমাণাদী কিভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করছি। এর পরেও তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়!
৪৭. তুমি আরও জিজ্ঞেস কর: আল্লাহর শাস্তি যদি হঠাৎ করে অথবা প্রকাশ্যে তোমাদের ওপর এসে পড়ে তাহলে কি অত্যাচারীরা ছাড়া আর কেহ ধ্বংস হবে?
৪৮. আমি তো রসূলদেরকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী করে পাঠিয়েছি, অতঃপর (রসূলের আনুগত্য করে) যারা ঈমান আনে ও নিজেকে সংশোধন করে, তাদের নেই কোনো ভয়, নেই তাদের কোনো দুঃখ।
৪৯. আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যে মনে করে, শাস্তি তাদেরকে স্পর্শ করবে, কেননা তারা নাফরমানীতে লিপ্ত ছিল।
৫০. তুমি বল: আমি তোমাদেরকে এ কথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন-ভাণ্ডার রয়েছে, আর আমি অদৃশ্য জগতেরও কোন জ্ঞান রাখি না, এবং আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা। আমার কাছে যা কিছু অহী রূপে পাঠানো হয়, আমি শুধুমাত্র তারই অনুসরণ করে থাকি। তুমি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস কর: অন্ধ ও চক্ষুস্মান কি সমান হতে পারে? সুতরাং তোমরা কেন চিন্তা ভাবনা কর না?
৫১. তুমি এর (কুরআন) সাহায্যে ঐ সব লোককে ভীতি প্রদর্শন কর যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের কাছে এমন অবস্থায় সমবেত করা হবে যেখানে তিনি ছাড়া তাদের না কোনো সাহায্যকারী থাকবে, আর না থাকবে কোনো সুপারিশকারী, হয়ত তারা সাবধান হবে।
৫২. আর যে সব লোক সকাল-সন্ধ্যায় তাদের পালকর্তার ইবাদাত করে এবং এর মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টিই কামনা করে, তাদেরকে তুমি দূরে সরিয়ে দেবে না, তাদের হিসাব-নিকাশের কোনোকিছুর দায়িত্ব তোমার ওপর নয় এবং তোমার হিসাব-নিকাশের কোনোকিছুর দায়িত্বও তাদের ওপর নয়। এর পরও যদি তুমি তাদেরকে দূরে সরিয়ে দাও, তাহলে তুমি যালিমদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে।
৫৩. এভাবেই আমি কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা পরীক্ষায় নিপতিত করি। তারা বলতে থাকে: এরাই কি ঐ সব লোক, আমাদের মধ্য থেকে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ ও মেহেরবাণী করেছেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের সম্পর্কে অবগত নন?
৫৪. আমার আয়াতসমূহের ওপর বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যখন তোমার নিকট আসে, তখন তাদেরকে বল: তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের রাব্ব নিজের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করার নীতি বাধ্যতামূলক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজ্ঞতা ও মূর্খতাবশতঃ কোনো খারাপ কাজ করে, অতঃপর সে যদি তাওবাহ করে এবং নিজেকে সংশোধন করে, তাহলে জানবে যে, তিনি হচ্ছেন ক্ষমাপরায়ণ, করুণাময়।
৫৫. এমনিভাবে আমি আমার আয়াত ও নিদর্শনসমূহ সবিস্তার বর্ণনা করে থাকি যেন, অপরাধী লোকদের পথটি সুস্পষ্ট হয়ে পড়ে।
৫৬. তুমি কাফিরদেরকে বলে দাও: তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যার ইবাদাত কর, আমাকে তার ইবাদাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। বল: আমি তোমাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করব না, তাহলে আমি পথভ্রান্ত হয়ে যাব এবং আমি আর পথ প্রাপ্তদের মধ্যে শামিল থাকব না।
৫৭. বল, আমি আমার প্রতিপালকের নিকট থেকে পাওয়া এক উজ্জ্বল প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত; অথচ তোমরা তা মিথ্যে মনে করেছ। যা তোমরা খুব তাড়াতাড়ি পেতে চাও (অর্থাৎ আল্লাহর আযাব) তা আমার আয়ত্তে নেই। হুকুম বা কর্তৃত্বের মালিকানা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে নেই। তিনিই সত্যকথা বর্ণনা করেন, আর তিনিই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী।
৫৮. তুমি বল: তোমরা যে বস্তুটি তাড়াতাড়ি পেতে চাও, তা যদি আমার এখতিয়ারভুক্ত থাকতো, তাহলে তো আমার ও তোমাদের মধ্যে চূড়ান্ত ফাইসালা অনেক আগেই হয়ে যেত, যালিমদেরকে আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন।
৫৯. অদৃশ্য জগতের চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে; তিনি ছাড়া আর কেউই তা জ্ঞাত নয়। পৃথিবীতে ও সমুদ্রের সব কিছুই তিনি অবগত আছেন, তাঁর অবগতি ব্যতীত বৃক্ষ হতে একটি পাতাও ঝরে পড়েনা এবং ভূ-পৃষ্ঠের অন্ধকারের মধ্যে একটি দানাও পতিত হয় না, এমনিভাবে কোনো সরস ও নিরস বস্তুও পতিত হয় না; সমস্ত কিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।
৬০. আর সেই মহান সত্তা রাতে নিদ্রারূপে তোমাদের এক প্রকার মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন, আর দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর, তিনি সেটাও সম্যক পরিজ্ঞাত; অতঃপর তিনি নির্দিষ্ট সময়কাল পূরণের নিমিত্ত তোমাদেরকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে, তখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন।
৬১. আর আল্লাহই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রতাপশালী, তিনি তোমাদের ওপর রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠিয়ে থাকেন, এমনকি যখন তোমাদের কারও মৃত্যু সময় সমুপস্থিত হয়, তখন আমার প্রেরিত দূতগণ তার প্রাণ হরণ করে নেয়, এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র ক্রটি করে না।
৬২. তারপর সকলকে তাদের সত্যিকার অভিভাবক আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত করানো হয়। তোমরা জেনে রেখ যে, ঐ দিন একমাত্র আল্লাহই রায় প্রদানকারী হবেন, আর তিনি খুবই ত্বরিৎ হিসাব গ্রহণকারী।
৬৩. তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর: স্থলভাগ ও পানিস্থিত অন্ধকার (বিপদ) থেকে তোমাদেরকে কে পরিত্রাণ দিয়ে থাকেন, যখন কাতর কন্ঠে বিনীতভাবে এবং চুপে চুপে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে থাক, আর বলতে থাক: তিনি যদি আমাদেরকে এই বিপদ থেকে মুক্তি দেন, তাহলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব।
৬৪. তুমি বলে দাও: আল্লাহই তোমাদেরকে ঐ বিপদ এবং অন্যান্য প্রতিটি বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন, কিন্তু এরপরও তোমরা শিরক কর।
৬৫. তুমি বলে দাও: আল্লাহ তোমাদের ঊর্ধ্বলোক হতে এবং তোমাদের পায়ের তলদেশ হতে শাস্তি প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান, অথবা তোমাদেরকে দলে দলে বিচ্ছিন্ন করে এক দলের দ্বারা অপর দলের শক্তির স্বাদ গ্রহণ করাবেন; লক্ষ্য কর! আমি বার বার বিভিন্ন উপায়ে আমার নিদর্শন ও যুক্তি প্রমাণ বর্ণনা করছি – উদ্দেশ্য হল, যেন বিষয়টিকে তারা পূর্ণ রূপে জ্ঞানায়ত্ব ও হৃদয়ঙ্গম করে নিতে পারে।
৬৬. তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা ওকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে, অথচ ওটা প্রমানিত সত্য। তুমি বলে দাও: আমি তোমাদের উকিল হয়ে আসিনি।
৬৭. প্রত্যেকটি সংবাদ প্রকাশের একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে এবং অচিরেই তোমরা তা জানতে পারবে।
৬৮. যখন তুমি দেখবে যে, লোকেরা আমার আয়াতসমূহে দোষ-ক্রটি অনুসন্ধান করছে, তখন তুমি তাদের নিকট হতে দূরে সরে যাবে, যতক্ষণ না তারা অন্য কোন প্রসঙ্গে নিমগ্ন হয়। শাইতান যদি তোমাকে এটা বিস্মৃত করে, তাহলে স্মরণ হওয়ার পর আর ঐ যালিম লোকদের সাথে তুমি বসবে না।
৬৯. এদের যখন বিচার করা হবে, তখন ধর্মপরায়ণদের উপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না; কিন্তু তাদের দায়িত্ব উপদেশ দান করা যাতে ওরা ভীত হয়।
৭০. যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে, তুমি তাদেরকে বর্জন করে চলবে, পার্থিব জীবন যাদেরকে সম্মোহিত করে ধোঁকায় নিপতিত করেছে, কুরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিতে থাক, যাতে কোনো ব্যক্তি স্বীয় কাজ দোষে ধ্বংস হয়ে না যায়। আল্লাহ ছাড়া তার কোন বন্ধু, সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না, আর যেন এই অবস্থার সম্মুখীন না হয় যে, দুনিয়ার সমস্ত কিছুর বিনিময় দিয়েও মুক্তি পেতে চাইলে সেই বিনিময় গ্রহণ করা হবে না। তারা এমনই লোক যারা নিজেদের কর্মদোষে আটকা পড়ে গেছে; তাদের কুফরী করার কারণে তাদের জন্য ফুটন্ত গরম পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
৭১. তুমি বলে দাও: আমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদাত করব, যারা আমাদের কোনো উপকার করতে পারবে না এবং আমাদের কোনো ক্ষতিও করতে পারবে না? অধিকন্তু আমাদেরকে সুপথ প্রদর্শনের পর আমরা কি উল্টা পথে ফিরে যাব? আমরা কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় হব, যাকে শাইতান মরুভূমির মধ্যে বিভ্রান্ত করে ফেলেছে এবং যে দিশেহারা-লক্ষ্যহারা হয়ে ঘুরে মরছে? তার সহচরেরা তাকে হিদায়াতের দিকে ডেকে বলছে – তুমি আমাদের সঙ্গে এসো। তুমি বল: আল্লাহর হিদায়াতই হচ্ছে সত্যিকারের সঠিক হিদায়াত, আর আমাকে সারা জাহানের রবের সামনে মাথা নত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
৭২. এবং তা এই যে, নামায কায়েম কর এবং তাঁকে ভয় কর। তাঁর সামনেই তোমরা একত্রিত হবে।
৭৩. সেই সত্তা আকাশমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেন: ‘হাশর হও’, সেদিন হাশর হয়ে যাবে। তাঁর কথা খুবই যথার্থ বাস্তবানুগ। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন একমাত্র তাঁরই হবে বাদশাহী ও রাজত্ব। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছু তাঁর জ্ঞানায়ত্বে। তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞাময়, সর্ববিদিত।
৭৪. স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম পিতা আযরকে বললেন: তুমি কি প্রতিমাসমূহকে উপাস্য মনে কর? আমি দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ও তোমার সম্প্রদায় প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট।
৭৫. আমি এরূপ ভাবেই ইব্রাহীমকে নভোমণ্ডল ও ভুমণ্ডলের অত্যাশ্চর্য বস্তুসমূহ দেখাতে লাগলাম, যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে যায়।
৭৬. যখন রাতের অন্ধকার তাকে আবৃত করল, তখন সে আকাশের একটি নক্ষত্র দেখতে পেল, আর বলল: এটাই আমার প্রতিপালক! কিন্তু যখন ওটা অস্তমিত হল, তখন সে বলল: আমি অস্তমিত বস্তুকে ভালবাসি না।
৭৭. অতঃপর যখন চন্দ্রকে ঝলমল করতে দেখল, বলল: এটি আমার প্রতিপালক। অনন্তর যখন তা অদৃশ্য হয়ে গেল, তখন বলল যদি আমার প্রতিপালক আমাকে পথ প্রদর্শন না করেন, তবে অবশ্যই আমি বিভ্রান্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।
৭৮. অতঃপর যখন সূর্যকে চকচক করতে দেখল, বলল: এটি আমার পালনকর্তা, এটি বৃহত্তর। অতপর যখন তা ডুবে গেল, তখন বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা যেসব বিষয়কে শরীক কর, আমি ওসব থেকে মুক্ত।
৭৯. আমার মুখমণ্ডলকে আমি একনিষ্ঠভাবে সেই মহান সত্তার দিকে ফেরাচ্ছি, যিনি নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডল সৃষ্টি করেছেন, আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।
৮০. আর তার জাতির লোকেরা তার সাথে ঝগড়া করতে থাকলে সে তাদেরকে বলল: তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো? অথচ তিনি আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন! তোমরা আল্লাহর সাথে যা কিছু শরীক করছো, আমি ওদের ভয় করি না, তবে যদি আমার পালনকর্তা কিছু চান। প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে আমার পালনকর্তার জ্ঞান খুবই ব্যাপক, এর পরেও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?
৮১. তোমাদের মনগড়া ও বানানো শরীকদেরকে আমি কীরূপে ভয় করতে পারি? অথচ তোমরা এই ভয় করছ না যে, আল্লাহর সাথে যাদেরকে তোমরা শরীক করছ, তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদের কাছে কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আমাদের দুই দলের মধ্যে কারা অধিকতর শান্তি ও নিরাপত্তা লাভের অধিকারী, যদি তোমাদের জানা থাকে তাহলে বলত?
৮২. প্রকৃত পক্ষে তারাই শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী এবং তারাই সঠিক পথে পরিচালিত, যারা নিজেদের ঈমানকে যুলমের সাথে (শির্‌কের সাথে) মিশ্রিত করেনি।
৮৩. এ হল আমার যুক্তি-প্রমাণ যা আমি ইবরাহীমকে দিয়েছিলাম তার কাওমের বিপক্ষে, আমি যাকে ইচ্ছে মর্যাদায় উন্নীত করি। তোমাদের প্রতিপালক নিশ্চয়ই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
৮৪. আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শন করেছি – তাঁর সন্তানদের মধ্যে দাউদ, সোলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারুনকে। এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
৮৫. আর ও যাকারিয়া, ইয়াহিয়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
৮৬. এবং ইসরাঈল, ইয়াসা, ইউনূস, লূতকে প্রত্যেককেই আমি সারা বিশ্বের ওপর গৌরবান্বিত করেছি।
৮৭. আর এদের বাপ-দাদা, সন্তান, সন্ততি ও ভাইদের মধ্যে অনেককে আমি মনোনীত করে সঠিক ও সোজা পথে পরিচালিত করেছি।
৮৮. এটাই আল্লাহর হিদায়াত; তিনি তাঁর বান্দার মধ্যে যাকে চান, এই পথে পরিচালিত করেন। কিন্তু তারা যদি শির্‌ক করত, তাহলে তারা যা কিছুই করত, সবই ব্যর্থ হয়ে যেত।
৮৯. এরা ছিল সেই লোক, যাদেরকে আমি কিতাব, শাসনভার ও নবুওয়াত দান করেছি। সুতরাং যদি এরা তোমার নবুওয়াতকে অস্বীকার করে, তাহলে তাদের স্থলে আমি এমন এক জাতিকে নিয়োগ করব, যারা ওটা অস্বীকার করে না।
৯০. এরা এমন ছিল, যাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেছিলেন। অতএব, আপনিও তাদের পথ অনুসরণ করুন। আপনি বলে দিন: আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটি সারা বিশ্বের জন্যে একটি উপদেশমাত্র।
৯২. এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামায সংরক্ষণ করে।
৯৪. (ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ বলবেন) তোমরা আমার নিকট তেমনই নিঃসঙ্গ অবস্থায় হাজির হয়েছ, যেমনভাবে আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, তোমাদেরকে যা (নি’মাতরাজি) দান করেছিলাম, তা তোমরা তোমাদের পেছনে ফেলে রেখে এসেছ, আর তোমাদের সাথে সেই সুপারিশকারীগণকেও দেখছি না, যাদের সম্পর্কে তোমরা ধারণা করতে যে, তোমাদের কার্য উদ্ধারের ব্যাপারে তাদের অংশ আছে। তোমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক একেবারেই ছিন্ন হয়ে গেছে, আর তোমরা যে সব ধারণা করতে, সে সব অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
৯৫. আল্লাহই হচ্ছেন শস্য দানা ও বীজ বিদীর্ণকারী, তিনি মৃত থেকে জীবন্তকে বের করেন এবং জীবন্ত থেকে মৃতকে। এই হচ্ছেন আল্লাহ; সৎ পথ থেকে তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছ?
৯৬. তিনিই রাতের আবরণ বিদীর্ণ করে রঙিন প্রভাতের উন্মেষকারী, তিনিই রাতকে বিশ্রামকাল এবং সূর্য ও চাঁদকে সময়ের নিরূপক করে দিয়েছেন; এটা হচ্ছে সেই পরম পরাক্রান্ত ও সর্ব পরিজ্ঞাতার (আল্লাহর) নির্ধারণ।
৯৭. আর তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্ররাজিকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ওগুলির সাহায্যে অন্ধকারে পথের সন্ধান পেতে পার স্থলভাগে এবং সমুদ্রে। নিশ্চয়ই আমি প্রমাণসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি ঐ সমস্ত লোকের জন্য যারা জ্ঞান রাখে।
৯৮. তিনিই তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর (প্রত্যেকের জন্য) একটি স্থান অধিক দিন থাকার জন্য এবং একটি স্থান অল্প দিন থাকার জন্য রয়েছে, এই নিদর্শনসমূহ আমি তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করলাম, যাদের বুদ্ধি-বিবেচনা আছে।
৯৯. আর তিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, ওর সাহায্যে সব রকমের উদ্ভিদ আমি (আল্লাহ) উৎপন্ন করি; অতঃপর তা থেকে সবুজ শাখা বের করি, ফলতঃ তা থেকে আমি উপর্যুপরি উত্থিত বীজ উৎপন্ন করি। এবং খেজুর বৃক্ষ থেকে অর্থাৎ ওর পুষ্পকণিকা থেকে ছড়া হয় যা নিম্ন দিকে ঝুঁকে পড়ে, আর আঙুরসমূহের উদ্যান এবং যাইতূন ও আনার যা পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত। প্রত্যেক ফলের প্রতি লক্ষ্য কর, যখন ওটা ফলে এবং ওর পরিপক্ক হওয়ার প্রতি লক্ষ্য কর। এই সমুদয়ের মধ্যে নিদর্শনসমূহ রয়েছে তাদেরই জন্য, যারা ঈমান রাখে।
১০০. আর এই (অজ্ঞ) লোকেরা জিনদেরকে আল্লাহর শরীক বানিয়ে নিয়েছে, অথচ আল্লাহই ঐগুলিকে সৃষ্টি করেছেন, আর না জেনে না বুঝে তারা তাঁর জন্য পুত্র কন্যা রচনা করে; তিনি মহিমান্বিত (পবিত্র), এদের আরোপিত বিশেষণগুলি হতে বহু উর্ধ্বে তিনি।
১০১. তিনি আকাশমণ্ডলী ও ভূমণ্ডলের আদি স্রষ্টা। কীরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোনো সঙ্গী নেই? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ।
১০২. তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তিনি প্রত্যেক বস্তুর কার্যনির্বাহী।
১০৩. কোনো মানব-দৃষ্টি তাঁকে দেখতে পারে না, অথচ তিনি সকল কিছুই দেখতে পান এবং তিনি অতীব সূক্ষ্মদর্শী এবং সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল।
১০৪. তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিদর্শনাবলী এসে গেছে। অতএব, যে প্রত্যক্ষ করবে, সে নিজেরই উপকার করবে এবং যে অন্ধ হবে, সে নিজেরই ক্ষতি করবে। আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই।
১০৫. এ রূপেই আমি নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করি, যেন লোকেরা না বলে – তুমি কারও নিকট থেকে পাঠ করে নিয়েছ, আর যেন আমি একে বুদ্ধিমান লোকদের জন্য প্রকাশ করে দিই।
১০৬. তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যে ওয়াহী পাও, তার অনুসরণ কর, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোনো উপাস্য নেই, তুমি মুশরিকদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও।
১০৭. যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শেরক করত না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন।
১০৮. এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত (পূজা-অর্চনা) করে, তোমরা তাদেরকে গালাগালি কর না, তাহলে তারা অজ্ঞতাবশতঃ বৈরীভাবে আল্লাহকেই গালাগালি দিতে শুরু করবে। আমি তো এ রূপেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের ‘আমলকে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ততাদেরকে তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে, তখন তারা কী কী কাজ করেছিল, তা তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন।
১০৯. তারা আল্লাহর নামে কঠিন শপথ করে বলে – তাদের নিকট যদি কোনো নিদর্শন আসত, তবে তারা অবশ্যই তাঁর প্রতি ঈমান আনত। বল, নিদর্শন (আনার ব্যাপারটি) হল আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। নিদর্শন আসলেও তারা যে ঈমান আনবে না, এ কথা কীভাবে তোমাদেরকে বোঝানো যাবে?
১১০. আর যেহেতু তারা প্রথমবার ঈমান আনেনি, এর ফলে তাদের মনোভাবের ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দেব এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার মধ্যেই বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দেব।
১১১. আমি যদি তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ করতাম আর মৃতরা তাদের সাথে কথা বলত আর আমি তাদের সামনে যাবতীয় বস্তু হাজির করে দিতাম, তবুও আল্লাহর ইচ্ছে ব্যতীত তারা ঈমান আনত না, মূলতঃ তাদের অধিকাংশই অজ্ঞতাপূর্ণ কাজ করে।
১১২. এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান, মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়। যদি আপনার পালনকর্তা চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না।
১১৩. যারা পরকালের প্রতি ঈমান রাখে না, তাদের অন্তরকে ঐ দিকে অনুরক্ত হতে দাও; এবং তারা যেন তাতে সন্তুষ্ট থাকে, আর তারা যেসব কাজ করে, তা যেন তারা আরও করতে থাকে।
১১৫. তোমার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোনো পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।
১১৬. তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যূত করে ফেলবে, তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে, আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে।
১১৭. তোমার প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে খুব জ্ঞাত রয়েছেন, যারা তাঁর পথ থেকে বিপথগামী হয় এবং তিনি তাদেরকেও খুব ভাল করে জানেন, যারা তাঁর পথে অনুগমন করে।
মুহাম্মদ দ্বারা ১১৬ তম প্রকাশ: সূরা আল আনকাবূত (২৯) (মাকড়শা), ১২ থেকে ৬৯ আয়াত:
১২. কাফেররা মুমিনদেরকে বলে, আমাদের পথ অনুসরণ কর। আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব। অথচ তারা পাপভার কিছুতেই বহন করবে না। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।
১৩. তারা নিজেদের পাপভার এবং তার সাথে আরও কিছু পাপভার বহন করবে। অবশ্য তারা যে সব মিথ্যা কথা উদ্ভাবন করে, সে সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে।
১৪. আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।
১৫. অতঃপর আমি তাঁকে ও নৌকারোহীগণকে রক্ষা করলাম এবং নৌকাকে নিদর্শন করলাম বিশ্ববাসীর জন্যে।
১৬. স্মরণ কর ইবরাহীমের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল: তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাঁকে ভয় কর, তোমাদের জন্য এটাই শ্রেয় যদি তোমরা জানতে।
১৭. তোমরা তো আল্লাহ ব্যতীত শুধু মূর্তি পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা কর, তারা তোমাদের জীবনোপকরনের মালিক নয়। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ কামনা কর আল্লাহর নিকট এবং তাঁরই ইবাদাত কর ও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।
১৮. তোমরা যদি আমাকে মিথ্যাবাদী বলে, তাহলে জেনে রেখ যে, তোমাদের পূর্ববর্তীরাও নবীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা ছাড়া রাসূলের আর কোনো দায়িত্ব নেই।
১৯. তারা কি লক্ষ্য করে না যে, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন। এটাতো আল্লাহর জন্য সহজ।
২০. বল: পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর কীভাবে তিনি সৃষ্টি শুরু করেছেন? অতঃপর আল্লাহ পুনর্বার সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহ তো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
২১. তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন, যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।
২২. তোমরা (আল্লাহকে) না পৃথিবীতে ব্যর্থ করতে পারবে আর না আকাশে, আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য নেই কোনো অভিভাবক, নেই কোন সাহায্যকারী।
২৩. যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে আর তাঁর সাক্ষাৎকে অস্বীকার করে, তারা আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে আর তাদের জন্য আছে ভয়াবহ শাস্তি।
২৪. সুতরাং ইবরাহীমের সম্প্রদায়ের লোকেরা এ ছাড়া কোন জবাব দিল না, তারা বলল: তাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর। অতঃপর আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য।
২৫. ইবরাহীম বলল: তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে মূর্তিগুলিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে; কিন্তু কিয়ামাত দিবসে তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পরকে অভিসম্পাত দিবে। তোমাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।
২৬. লূত তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল। (ইবরাহীম) বলল: আমি আমার রবের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করছি। তিনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
২৭. আমি ইবরাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকূব এবং তার বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবুওয়াত ও কিতাব এবং আমি তাকে পুরস্কৃত করেছিলাম দুনিয়ায় এবং আখিরাতেও। নিশ্চয়ই সে হবে সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম।
২৮. স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল: তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছো, যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেউ করেনি।
২৯. তোমরা পুরুষের উপর উপগত হচ্ছ এবং তোমরা রাহাজানি করে থাক এবং তোমরা নিজেদের মজলিশে প্রকাশ্য ঘৃণ্য কাজ করে থাক। উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু এই বলল: আমাদের ওপর আল্লাহর শাস্তি আনয়ন কর, যদি তুমি সত্যবাদী হও।
৩০. সে বলল – হে আমার প্রতিপালক! ফাসাদ সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।
৩১. যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা সুসংবাদসহ ইবরাহীমের নিকট এলো, তারা বলেছিল: আমরা এই জনপদবাসীকে ধ্বংস করব, এর অধিবাসী তো সীমা লংঘনকারী।
৩২. ইবরাহীম বলল: এই জনপদে লূত রয়েছে। তারা বলল: সেখানে কারা আছে তা আমরা ভাল জানি; আমরা তো লূতকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে রক্ষা করবই, তাঁর স্ত্রীকে ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
৩৩. এবং যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা লূতের নিকট এলো তখন তাদের জন্য সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল। তারা বলল: ভয় কর না, দুঃখও কর না; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
৩৪. আমরা এই জনপদবাসীর ওপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ তারা ছিল পাপাচারী।
৩৫. আমি বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি।
৩৬. আমি মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোআয়বকে প্রেরণ করেছি। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, শেষ দিবসের আশা রাখ এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না।
৩৭. কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল; ফলে তারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।
৩৮. এবং আমি ‘আদ ও ছামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; তাদের বাড়ীঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। শাইতান তাদের কাজকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং তাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল, যদিও তারা ছিল বিচক্ষণ।
৩৯. স্মরণ কর কারূন, ফিরআউন ও হামানকে; মূসা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল; তখন তারা দেশে দম্ভ করত; কিন্তু তারা আমার শাস্তি এড়াতে পারেনি।
৪০. ওদের প্রত্যেককেই আমি তার পাপের কারণে পাকড়াও করেছিলাম। তাদের কারো প্রতি আমি পাঠিয়েছিলাম পাথরসহ ঝটিকা, কারো প্রতি আঘাত হেনেছিল বজ্রের প্রচণ্ড আওয়াজ, কাউকে আমি প্রোথিত করেছি ভূগর্ভে আর কাউকে দিয়েছিলাম ডুবিয়ে। তাদের প্রতি আল্লাহ কোন যুলম করেননি, তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল।
৪১. আল্লাহর পরিবর্তে যারা অপরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সা, যে নিজের জন্য ঘর তৈরি করে; এবং ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো দুর্বলতম, যদি তারা জানত।
৪২. তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে আহবান করে, আল্লাহ তা জানেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
৪৩. মানুষের জন্য এ সব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে থাকি, কিন্তু শুধু জ্ঞানী ব্যক্তিরাই এটা বোঝে।
৪৪. আল্লাহ যথাযথভাবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য।
৪৫. তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব আবৃত্তি কর এবং নামায প্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয়ই নামায বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা জানেন।
৪৬. তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না, তবে তাদের সাথে করতে পার যারা তাদের মধ্যে সীমালংঘনকারী এবং বল: আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য তো একই এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী।
৪৭. এভাবেই আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম, তারা এতে বিশ্বাস করে এবং এদেরও (মাক্কাবাসী) কেহ কেহ এতে বিশ্বাস করে। শুধু কাফিরেরাই আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে।
৪৮. তুমি তো এর পূর্বে কোনো কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোনোদিন কিতাব লেখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।
৪৯. বস্তুতঃ যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটা স্পষ্ট নিদর্শন। শুধু যালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে।
৫০. তারা বলে – তার কাছে তার প্রতিপালকের নিকট হতে কোনো নিদর্শন অবতীর্ণ হয় না কেন? বল, নিদর্শন তো আছে আল্লাহর কাছে, আমি কেবল একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
৫১. এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার নিকট কুরআন অবতীর্ণ করেছি, যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়? এতে অবশ্যই বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে।
৫২. বল: আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা তিনি অবগত। যারা বাতিলকে বিশ্বাস করে ও আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
৫৩. তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে; যদি নির্ধারিত সময় না থাকত তাহলে শাস্তি তাদের উপর এসে যেত। নিশ্চয়ই তাদের উপর শাস্তি আসবে আকস্মিকভাবে, তাদের অজ্ঞাতসারে।
৫৪. তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, জাহান্নাম তো কাফিরদেরকে পরিবেষ্টন করবেই।
৫৫. সেদিন শাস্তি তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে ঊর্ধ্ব ও অধঃদেশ হতে এবং তিনি বলবেন: তোমরা যা করতে তার স্বাদ আস্বাদন কর।
৫৬. হে আমার বান্দারা! যারা ঈমান এনেছ, আমার পৃথিবী প্রশস্ত, কাজেই তোমরা একমাত্র আমারই ইবাদাত কর।
৫৭. জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী; অতঃপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।
৫৮. যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আমি অবশ্যই তাদের বসবাসের জন্য সুউচ্চ প্রাসাদ দান করব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, কত উত্তম প্রতিদান সৎ কর্মশীলদের
৫৯. যারা সবর করে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে।
৬০. এমন অনেক জন্তু আছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহই রিযিক দেন তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
৬১. যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর: কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ-সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন? তারা অবশ্যই বলবে: আল্লাহ! তাহলে তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?
৬২. আল্লাহ্ই তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছে রিযক প্রশস্ত করেন, আর যার জন্য ইচ্ছে সীমাবদ্ধ করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বাধিক অবগত।
৬৩. যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর: ভূমি মৃত হওয়ার পর আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে কে ওকে সঞ্জীবিত করে? তারা অবশ্যই বলবে: আল্লাহ! বলঃ প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা অনুভব করে না।
৬৪. এই পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানতো।
৬৫. তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধ চিত্তে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে; অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখন তারা শিরকে লিপ্ত হয়।
৬৬. তাদের প্রতি আমার দান তারা অস্বীকার করে এবং ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে; অচিরেই তারা জানতে পারবে।
৬৭. তারা কি দেখে না যে, আমি হারামকে নিরাপদ স্থান করেছি, অথচ এর চতুর্পাশে যে সব মানুষ আছে তাদের ওপর হামলা করা হয়; তাহলে কি তারা অসত্যেই বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?
৬৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর নিকট হতে আগত সত্যকে অস্বীকার করে, তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? জাহান্নামই কি কাফিরদের আবাসস্থল নয়?
৬৯. যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।
মুহাম্মদ দ্বারা ১১৭ তম প্রকাশ: সূরা ইউনুস (১০) (নবী ইউনুস), ৯৪ থেকে ৯৬ বাদে ৭১ থেকে ১০৯ আয়াত:
৭১. তাদেরকে নূহের কাহিনী পড়ে শোনাও। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি আর আল্লাহর আয়াতসমূহ দ্বারা তোমাদের প্রতি আমার উপদেশ দান যদি তোমাদের নিকট অসহ্য মনে হয় (তাতে আমার কোন পরোয়া নেই) কারণ আমি ভরসা করি আল্লাহর উপর। তোমরা তোমাদের শরীকদেরকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর, পরে তোমাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তোমাদের মাঝে যেন অস্পষ্টতা না থাকে, অতঃপর আমার উপর তা কার্যকর কর আর আমাকে কোনো অবকাশই দিও না।
৭২. আর যদি তোমরা (আমার আহবান থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও (তাতে আমার কোনো ক্ষতি হবে না), আমি তো তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছি না, আমার পারিশ্রমিক আছে কেবল আল্লাহরই নিকট, আমাকে আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে শামিল হওয়ারই আদেশ দেয়া হয়েছে।
৭৩. কিন্তু তারা তাকে মিথ্যে বলে অমান্য করল। তখন আমি তাকে আর তার সঙ্গে যারা নৌকায় ছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম আর তাদেরকে (পৃথিবীতে) উত্তরাধিকারী বানালাম, আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যে বলে অমান্য করেছিল তাদেরকে ডুবিয়ে মারলাম। এখন দেখ, যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল (তারা সতর্ক না হওয়ায়) তাদের কী পরিণাম ঘটেছিল।
৭৪. নূহের পর আমি রসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম, তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পূর্বে তারা মিথ্যে জেনে প্রত্যাখ্যান করায় পরে আর ঈমান আনতে প্রস্তুত হয়নি। সীমালঙ্ঘনকারীদের হৃদয়ে এভাবেই আমি মোহর লাগিয়ে দিই।
৭৫. তাদের পর আমি মূসা ও হারূনকে আমার নিদর্শন সহকারে ফির’আওন ও তার প্রধানদের নিকট পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তারা অহঙ্কার করে, তারা ছিল এক অপরাধী সম্প্রদায়।
৭৬. অতঃপর যখন তাদের প্রতি আমার সন্নিধান হতে প্রমাণ পৌঁছল, তখন তারা বলতে লাগল, নিশ্চয়ই এটা সুস্পষ্ট যাদু।
৭৭. মূসা বলল: তোমরা কি এই যথার্থ প্রমাণ সম্পর্কে এমন কথা বলছ, যখন ওটা তোমাদের নিকট পৌঁছল? এটা কি যাদু? অথচ যাদুকররা তো সফলকাম হয় না!
৭৮. তারা বলতে লাগল: তুমি কি আমাদের নিকট এ জন্য এসেছ যে, আমাদেরকে সরিয়ে দাও সেই তরীকা হতে, যাতে আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি, আর পৃথিবীতে তোমাদের দুজনের আধিপত্য স্থাপিত হয়ে যায়? আমরা তোমাদের দুজনকে কখনও মানব না।
৭৯. আর ফেরাউন বলল, আমার কাছে নিয়ে এস সুদক্ষ যাদুকরদিগকে।
৮০. তারপর যখন যাদুকররা এল, মূসা তাদেরকে বলল, নিক্ষেপ কর, তোমরা যা কিছু নিক্ষেপ করে থাক।
৮১. অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল, মূসা বলল, যা কিছু তোমরা এনেছ, তা সবই যাদু – এবার আল্লাহ এসব ভণ্ডুল করে দিচ্ছেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দুষ্কর্মীদের কর্মকে সুষ্ঠুতা দান করেন না।
৮২. আল্লাহ সত্যকে সত্যে পরিণত করেন স্বীয় নির্দেশে, যদিও পাপীদের তা মনঃপুত নয়।
৮৩. মূসার ওপর তার জাতির মধ্য হতে গুটিকয়েক লোক ব্যতীত কেউ ঈমান আনেনি ফির’আওন ও তার প্রধানদের নির্যাতনের ভয়ে। বাস্তবিকই ফির’আওন দুনিয়াতে খুবই উদ্ধত ছিল, আর সে ছিল অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
৮৪. মূসা বলেছিল, “হে আমার জাতির লোকেরা! তোমরা যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাক তাহলে তোমরা তাঁরই ওপর ভরসা কর, যদি তোমরা আত্মসমর্পণকারী হও।”
৮৫. তখন তারা বলল, “আমরা আল্লাহর উপরই ভরসা করি, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে যালিম জাতির অত্যাচারের পাত্র করো না,
৮৬. আর তোমার অনুগ্রহে আমাদেরকে কাফির সম্প্রদায় থেকে রক্ষা কর।”
৮৭. আর আমি মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি অহী পাঠালাম: তোমরা উভয়ে তোমাদের এই লোকদের জন্য মিসরে বাসস্থান বহাল রাখ, আর (সালাতের সময়) তোমরা সবাই নিজেদের সেই গৃহগুলিকে সালাত আদায় করার স্থান রূপে গণ্য কর এবং নামায কায়েম কর, আর মুমিনদেরকে শুভ সংবাদ জানিয়ে দাও।
৮৮. মূসা বলল, “হে আমার প্রতিপালক! তুমি ফিরআওন আর তার প্রধানদেরকে এ পার্থিব জগতে চাকচিক্য আর ধন সম্পদ দান করেছ আর এর দ্বারা হে আমাদের রবব! তারা মানুষকে তোমার পথ থেকে বিচ্যুত করছে, হে আমার প্রতিপালক! তাদের সম্পদ ধ্বংস করে দাও, আর তাদের হৃদয়কে কঠিন করে দাও, যাতে তারা ভয়াবহ আযাব দেখার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান আনতে সক্ষম না হয় (যেহেতু তারা বার বার আল্লাহর নিদর্শন দেখেও সত্য দ্বীনের শত্রুতায় অটল হয়ে আছে)।
৮৯. তিনি (আল্লাহ) বললেন: তোমাদের উভয়ের দুআ কবূল করা হল। অতএব তোমরা দৃঢ় থেক এবং তাদের পথ অনুসরণ করনা যাদের জ্ঞান নেই।
৯০. আমি বানী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে নিলাম আর ফির’আওন ও তার সৈন্য সামন্ত ঔদ্ধত্য ও সীমালঙ্ঘন করে তাদের পেছনে ছুটল, অতঃপর যখন সে ডুবতে শুরু করল তখন সে বলল, ‘আমি ঈমান আনছি যে, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, যাঁর প্রতি বানী ইসরাঈল ঈমান এনেছে, আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’
৯১. “এখন (ঈমান আনছ), আগে তো অমান্য করেছ আর ফাসাদকারীদের অন্তর্ভুক্ত থেকেছ।
৯২. আজ আমি তোমার দেহকে রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পার।” অধিকাংশ মানুষই আমার নিদর্শনাবলী সম্পর্কে নিশ্চিতই উদাসীন।”
৯৩. আর আমি বানী ইসরাঈলকে থাকার জন্য অতি উত্তম বাসস্থান প্রদান করলাম, আর আমি তাদেরকে আহার করার জন্য উৎকৃষ্ট বস্তুসমূহ দান করলাম, তারা মতভেদ করেনি ঐ পর্যন্ত যতক্ষণ তাদের নিকট (আহকামের) জ্ঞান পৌঁছল। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব কিয়ামাত দিবসে তাদের মধ্যে সেই সব বিষয়ের মীমাংসা করবেন, যাতে তারা মতভেদ করছিল।
৯৭. যদিও তাদের নিকট সমস্ত প্রমাণ পৌঁছে যায়, যে পর্যন্ত না তারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
৯৮. সুতরাং এমন কোনো জনপদই ঈমান আনেনি যে, তাদের ঈমান আনা উপকারী হয়েছে, ইউনুসের কাওম ছাড়া। যখন তারা ঈমান আনল, তখন আমি তাদের থেকে পার্থিব জীবনের অপমানজনক শাস্তি বিদূরিত করলাম এবং তাদেরকে সুখ স্বাচ্ছন্দে থাকতে দিলাম এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত।
৯৯. তোমার প্রতিপালক ইচ্ছে করলে দুনিয়ার সমস্ত লোক অবশ্যই ঈমান আনত, তাহলে কি তুমি ঈমান আনার জন্য মানুষদের উপর জবরদস্তি করবে?
১০০. আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে কেউ ঈমান আনতে পারবে না, আর যারা বিবেক বুদ্ধি খাটায় না, আল্লাহ তাদের ওপর অপবিত্রতা চাপিয়ে দেন।
১০১. বলে দাও: তোমরা লক্ষ্য কর, যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে; আর যারা ঈমান আনেনা, প্রমাণাদী ও ভয় প্রদর্শন তাদের কোনো উপকার সাধন করতে পারে না।
১০২. অতএব তারা শুধু ঐ লোকদের অনুরূপ ঘটনাবলীর প্রতীক্ষা করছে, যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে। তুমি বলে দাও: আচ্ছা তাহলে তোমরা ওর প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষারতদের মধ্যে রইলাম।
১০৩. শেষ পর্যন্ত আমি স্বীয় রাসূলদেরকে এবং মুমিনদেরকে নাজাত দিলাম, এ রূপেই আমি মুমিনদেরকে নাজাত দিয়ে থাকি।
১০৪. বলে দাও – হে মানবকুল, তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে থাক, তবে (জেনো) আমি তাদের এবাদত করি না, যাদের এবাদত তোমরা কর আল্লাহ ব্যতীত। কিন্তু আমি এবাদত করি আল্লাহ তায়ালার, যিনি তুলে নেন তোমাদেরকে। আর আমার প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে আমি ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত থাকি।
১০৫. আর যেন সোজা দ্বীনের প্রতি মুখ করি সরল হয়ে এবং যেন মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত না হই।
১০৬. আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকবে না, যে তোমার ভাল করবে না মন্দও করবে না। বস্তুতঃ তুমি যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
১০৭. আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কোনো কষ্ট আরোপ করেন, তাহলে কেউ নেই তা খণ্ডাবার মত তাঁকে ছাড়া। পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান করেন, তবে তার মেহেরবানীকে রহিত করার মতও কেউ নেই। তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ দান করতে চান, স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত; তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু।
১০৮. বলে দাও, হে মানবকুল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে। এমন যে কেউ পথে আসে, সেপথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্য। আর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই।
১০৯. আর তুমি চল সে অনুযায়ী, যেমন নির্দেশ আসে তোমার প্রতি এবং সবর কর, যতক্ষণ না ফয়সালা করেন আল্লাহ। বস্তুতঃ তিনি হচ্ছেন সর্বোত্তম ফয়সালাকারী।
আয়াত প্রকাশের মনোজগত:- মুহাম্মদের পক্ষের কুরাইশগন দেন-দরবার শুরু করে দিয়েছেন বয়কট বাতিলের জন্য, ফলাফল আসতে কিছুটা সময় লাগবে; তবে মুহাম্মদ এখনও জানেন না তার সামনে আসবে বয়কটের চেয়ে শতগুণ জটিল পরিস্থিতি! মুহাম্মদ বলতে বাধ্য হবেন: আগেই তো এরচেয়ে ভাল ছিলাম!
গত পর্বে করা প্রশ্নটির উত্তর: উম্মু আয়মান বারাকা, পিতার নাম: সালাবা ইবনে আমর। তিনি মুহাম্মদের লালন-পালন করতেন। মুহাম্মদকে কোলে-কাঁখে করে যাঁরা বড় করেন, তিনি তাঁদের একজন। পিতার সূত্রে মুহাম্মদ সাতটি ছাগল পেয়েছিলেন (৭ সংখ্যার প্রতি প্রেমের কারণ!), উম্মু আয়মান সেগুলো চরাতেন। মুহাম্মদের বয়স যখন ছয় বছর, তখন মা আমিনা এই দাসীকে সঙ্গে করে মদিনায় যান স্বামীর কবর যিয়ারতের জন্য।
(চলবে)
Category: ধর্মকারীTag: ইসলামের নবী, কোরানের বাণী, ছবি, রচনা
Previous Post:হারাম স্মাইলি
Next Post:নিমো হুজুরের খুতবা – ৩৮

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top