লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯> পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭ > পর্ব ৭৮ > পর্ব ৭৯ > পর্ব ৮০ > পর্ব ৮১ > পর্ব ৮২ > পর্ব ৮৩
সাদ বিন মুয়াদ নামের এক অন্যতম মুহাম্মদ অনুসারী খন্দক যুদ্ধে হিববান বিন কায়েস বিন আল-আরিকা নামের এক কুরাইশের নিক্ষিপ্ত তীরের আঘাতে কীরূপে গুরুতর আহত হয়েছিলেন; তীরবিদ্ধ ক্ষতস্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুপথযাত্রী এই মুহাম্মদ অনুসারী তাঁর মৃত্যুর আগে “বনি কুরাইজা গোত্রের উপর তার আকাঙ্ক্ষা”প্রত্যক্ষ করার মনোভাব কীভাবে ব্যক্ত করেছিলেন; তাঁর সেই অন্তিম আকাঙ্ক্ষাটি কীরূপ বীভৎস ছিল; স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কীভাবে তাঁর এই প্রিয় অনুসারীর জিঘাংসা চরিতার্থ করার ব্যবস্থা করেছিলেন – ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।
মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনার পুনরারম্ভ: [1] [2]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ৮৩) পর:
ইয়াহিয়া বিন আববাদ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-যুবায়ের, তার পিতা আববাদ এর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] যা জানিয়েছেন তা হলো:
‘সাফিয়া বিনতে আবদুল মুত্তালিব অবস্থান নিয়েছিলে ‘ফারি’ তে, যেটি ছিল হাসান বিন থাবিত–এর দুর্গ। [3] [4]
তিনি [সাফিয়া] বলেন, “মহিলা ও শিশুদের নিয়ে হাসান আমাদের সঙ্গেই ছিল, যখন এক ইহুদি সেখানে আসে ও দুর্গের চারদিকে হাঁটা শুরু করে। বানু কুরাইজা আল্লাহর নবীর সাথে চুক্তিভঙ্গ করে যুদ্ধে যায়। আল্লাহর নবী ও মুসলমানেরা শত্রুর মোকাবিলায় ছিল ব্যস্ত, তাই কেউ আমাদের বিরুদ্ধে বেঁকে বসলে তারা শত্রুদের পরিত্যাগ করে আমাদের কাছে আসতে পারতো না।
আমি হাসানকে বলি যে, সে হয়তো দেখেছে যে, এই ইহুদিটি দুর্গের চারপাশে হাঁটছে এবং আমার আশঙ্কা এই যে, সে হয়তো আমাদের দুর্বলতা আবিষ্কার করে আমাদের পেছনে অবস্থানকারী ইহুদিদের জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহর নবী ও তাঁর অনুসারীরা এত ব্যস্ত যে, তারা আমাদেরকে কোনো সাহায্য করতে পারবে না; তাই অবশ্যই যেন সে নিচে যায় ও তাকে খুন করে।
সে বলে, “মাবুদ তোমাকে ক্ষমা করুক, তুমি ভাল করেই জানো যে, আমি এমন লোক নই, যে এটা করতে পারে।”
যখন সে এটা বলে ও আমি দেখি যে, তার কাছ থেকে কোন সাহায্যের আশা নেই, আমি গাঁট বেঁধে প্রস্তুত হই এবং একটা মুগুর নিয়ে দুর্গের ওপর থেকে তার কাছে নিচে নেমে আসি ও সেই মুগুর দিয়ে তাকে আঘাত করতে থাকি যতক্ষণে না তার মৃত্যু হয়।
তাকে শেষ করার পর আমি দুর্গের মধ্যে ফিরে আসি ও হাসানকে বলি যে, সে যেন নিচে গিয়ে তার কাপড়-চোপড় খুলে নেয়; সে পুরুষ মানুষ বিধায় আমি নিজে তা করতে পারিনি।
সে বলে, “বিনতে আবদুল মুত্তালিব, তার কাপড় খুলে নেয়ার প্রয়োজন আমার নেই। (তাবারী: ‘তার সামগ্রী লুণ্ঠনের প্রয়োজন আমার নেই)।” [5]
– অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ – লেখক।
(Yahya b. ‘Abbad b. ‘Abdullah b. al-Zubayr from his father ‘Abbad told me as follows:
Safiya d. ‘Abdu’l-Muttalib was in Fari’,the fort of Hassan b. Thabit. She said: ‘Hassan was with us there with the women and children, when a Jew came along and began to go round the fort. The B. Qurayza had gone to war and cut our communications with the apostle, and there was no one to protect us while the apostle and the Muslims were at the enemy’s throats unable to leave them to come to us if anyone turned up.
I told Hassan that he could see this Jew going round the fort and I feared that he would discover our weakness and inform the Jews who were in our rear while the apostle and his companions were too occupies to help us, so he must go down and kill him.
“God forgive you,” he said. “You know quite well that I am not the man to do that.”
When he said that and I saw that no help was to be expected from him I girded myself and took a club, and went down to him from the fort above and hit him with the club until I killed him.
This done I went back to the fort and told Hassan to go down and strip him: I could not do it myself because he was a man.
He said, “I have no need to strip him Bint ‘Abdu’l-Muttalib.”‘ (Tabari: “I have no need for his spoils, daughter of Abd Al-Muttalib.”)
>>> ইসলামের ইতিহাসে খন্দক যুদ্ধ যে কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তার অন্যতম হলো খন্দক যুদ্ধের অব্যবহিত পরেই শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত বংশ-বংশানুক্রমে বসবাসরত মদিনার তিনটি সম্পদশালী বড় ইহুদি গোত্রের দুইটিকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করার পর, মদিনায় তখনও অবশিষ্ট সর্বশেষ ইহুদি গোত্রর ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের সংঘটিত নৃশংস ও পাশবিক গণহত্যায় তাঁদের সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের হত্যা, সকল অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু ও মহিলাদের দাস ও যৌনদাসীকরণের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করণ ও ধর্ষণ ও তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন!
এই জঘন্য অপরাধের সপক্ষে মুহাম্মদ তাঁর নিবেদিতপ্রাণ অনুসারীদের অজুহাত এই যে, “তাহারা চুক্তিভঙ্গ করিয়া মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করিয়াছিল!”
কিন্তু, তাঁদের এই অজুহাতের সত্যতার সপক্ষে কোনোরূপ প্রামাণিক তথ্য (Evidence) আদি উৎসের ইসলামে নিবেদিতপ্রাণ বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই লিখিত খন্দক যুদ্ধের বর্ণনার কোথাও নেই।
শুধু তাইই নয়,
আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জনাতে পারি যে কোনোরূপ প্রমাণ ছাড়াই, শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে এক মুহাম্মদ অনুসারী বনি কুরাইজার এক লোককে মুগুর হাতে আক্রমণ করে ও সেই মুগুরের আঘাতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে! এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরেও বনি কুরাইজা গোত্রের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে প্রতিহিংসা বশে কোনোমুহাম্মদ–অনুসারীকে কোনোরূপ আক্রমণ অথবা হত্যা চেষ্টা করেছিলেন, এমন আভাসকোথাও নেই। ওপরে উল্লেখিত বর্ণনায় মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র অত্যন্ত স্পষ্ট।
খন্দক যুদ্ধে বনি কুরাইজা গোত্রের ভূমিকা কী ছিল ও মুহাম্মদ ও মদিনাবাসী ইহুদিদের সাথে অনুষ্ঠিত তথাকথিত শান্তিচুক্তির অস্তিত্ব যদি শতভাগ সত্যও হয়, তথাপি সেই চুক্তির শর্ত খন্দক যুদ্ধ শুরু হওয়ার বহু পূর্বেই মুহাম্মদ স্বয়ং তা কীভাবে ভঙ্গ করেছেন তার বিস্তারিত আলোচনা পর্ব: ৮০-তে করা হয়েছে।
(চলবে)
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৫৮
[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৭৯-১৪৮০
[3] সাফিয়া ছিলেন মুহাম্মদের নিজের ফুপু, আবদুল মুত্তালিবের সর্বশেষ স্ত্রীর গর্ভজাত কন্যা। তিনি ছিলেন বয়সে মুহাম্মদের চেয়ে সামান্য ছোট। (পর্ব:১২)।
[4] হাসান বিন থাবিত ছিলেন মদিনার খাযরাজ গোত্রের এক কবি। তিনি ছিলেন মুহাম্মদকে সমর্থনকারী বিশিষ্ট কবিদের একজন।
[5] “ভাষ্যকার (কায়রো সংস্করণের সম্পাদক) মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের এই উপাখ্যান (Tradition) পছন্দ করেন না এই বিবেচনায় যে এই ঘটনার বর্ণনায় নবীর এক অনুসারীর সম্মানহানি ঘটেছে। আল-সুহায়েলির [১১১৪-১১৮৫ খ্রিষ্টাব্দ] মতে, অনেক পণ্ডিত এই উপাখ্যান প্রত্যাখ্যান করেন এই বিবেচনায় যে এই ঘটনার বর্ণনায় ইসনাদ [পর পর যাদের কাছ থেকে ঘটনাটি বিবৃত] বিঘ্নিত হয়েছে। উপরন্তু, যদি হাসানের কাপুরুষতা সত্য হতো তবে যে কবিরা তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করতো (যেমন: কবি দিরার [Dirar] ও ইবনে আল-যিবারা [Al-Zibara]), তারা তা উল্লেখ করতেন। যেহেতু তারা তা উল্লেখ করেন নাই, এই উপাখ্যানের ভিত্তি অবশ্যই দুর্বল। আর অন্যদিকে যদি ঘটনাটি সত্য হয় তবে, হয়তো এমন ঘটেছিল যে হাসান ছিল অসুস্থ; সে কারণে সে যুদ্ধ করতে পারেন নাই। আল-যারকানি এই উপাখ্যানটি বিশ্বাস করেন। “এই ঘটনাটি সত্য হলে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী কবিরা তা উল্লেখ করতেন” – এই যুক্তিটি তিনি পরিহার করেন এই বলে যে, যা সত্য তা হলো তিনি ছিলেন নবীর সহচর যে তাকে রক্ষা করেছে; এ বিষয়ে তাদের নীরবতায় হলো নবীর নবুয়তেরই আর এক প্রমাণ।”
আল-সুহায়েলি: https://en.wikipedia.org/wiki/Al-Suhayli
Leave a Reply